ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

শ্রম আইন না মেনে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষে বদলি আতঙ্ক!


Thumbnail শ্রম আইন না মেনে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষে বদলি আতঙ্ক!

আসছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শ্রম আইন না মেনে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের একাধিক কর্মচারীকে বদলির অভিযোগ উঠেছে। এসব বদলির ক্ষেত্রে বিএনপি-জামায়াতের সময়ে নিয়োগপ্রাপ্ত, দুর্নীতিতে দায়গ্রস্থ এবং দুদকের মামলায় অভিযুক্ত বেশ কিছু কর্মচারীদের সপদে বহাল রেখে ট্রেড ইউনিয়নের অধিভুক্ত আওয়ামীপন্থি নিরীহ কর্মচারী এবং সিবিএ নেতাদের বেছে বেছে বদলি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সূত্র। সূত্রটি বলছে, এই বদলির ফলে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষে একটি বদলি আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং যার প্রভাব আসছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও পড়বে। মূলত জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের (জাগৃক) চেয়ারম্যানের স্বেচ্ছাচারিতার কারণেই শ্রম আইন না মেনে এ ধরনের বদলিগুলো করা হচ্ছে। 

জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক (প্রশাসন ও প্রশিক্ষণ) মো. মুশফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এই বদলি সংক্রান্ত একটি চিঠি বাংলা ইনসাইডারের হাতে এসেছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ভূমি ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা বিভাগের হিসাব সহকারী মো. মালেকিন নাসিরকে কুমিল্লা উপবিভাগে এবং একই বিভাগের হিসাব সহকারী মুহাম্মদ আশরাফুল আলমকে সিলেট ডিভিশনে বদলি করা হলো।    

তবে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন, বদলি একটি অফিসিয়াল প্রক্রিয়া। অফিস প্রধান হিসেবে এটা আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলি করা। এ পর্যন্ত তিন জনকে বদলি করা হয়েছে। সামনে আরও বদলি করা হবে। 

জানা গেছে, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষে ট্রেড ইউনিয়নের আওতাধীন সেন্ট্রাল বার্গেনিং এজেন্ট (সিবিএ) নেতা মো. মালেকিন নাসিরকে কুমিল্লায় এবং মুহাম্মদ আশরাফুল আলমকে সিলেট ডিভিশনে বদলি করা হয়েছে। অথচ বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১৮৭ ধারায় বলা হয়েছে, ‘সিবিএ-এর সভাপতি ও কতিপয় কর্মকর্তা বদলি করা যাইবে না। কোনো ট্রেড ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ কোনো কর্মকর্তাকে তাহাদের সম্মতি ব্যতিরেকে এক জেলা হইতে অন্য জেলায় বদলি করা যাইবে না।’ অথচ বদলিকৃত এসব ব্যক্তিদের তাদের নিজের সম্মতি ব্যতিরেকে অনেকটা জোরপূর্বকভাবেই অন্য জেলায় বদলি করা হচ্ছে।  সেন্ট্রাল বার্গেনিং এজেন্টের (সিবিএ) কাজ হচ্ছে, কর্তৃপক্ষের সাথে বার্গেনিং করে শ্রমিক কর্মচারীদের অধিকার আদায় করা। কিন্তু ট্রেড ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতাদেরই বদলি করা হচ্ছে, সেক্ষেত্রে শ্রমিক কর্মচারীদের অধিকার আদায় স্থিমিত হয়ে পড়বে- যা বাংলাদেশ শ্রম আইন পরিপন্থি।  অথচ দুদক মামলার আসামীদের বদলি করা হচ্ছে না, যেখানে দুদক তাদের দোষী সাব্যস্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছে।

সূত্র জানায়, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রায় ৪২ জনের কাছ থেকে ১৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এই প্রতারক চক্রের খপ্পরে মামলায় পড়ে জেলও খেটেছেন ভুক্তভোগীরা। এদের মধ্যে মোস্তফা কামাল শাহীন নামে একজন কর্মচারী অন্যতম। এছাড়াও জামাল উদ্দিন মাস্টার নামে অপর এক ব্যক্তি এই প্রতাণার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। মোস্তফা কামাল শাহীনের বিরুদ্ধে দুদকে মামলা হয়েছে। মোস্তফা কামালকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালতে প্রতিবেদনও দাখিল করেছে দুদক। কিন্তু মোস্তফা কামাল শাহীন জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষে সপদে বহাল থেকে চাকরি করছেন।

দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা এবং তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী হয়েও অবৈধ উপায়ে গড়েছেন কোটি টাকার সম্পদ- জাগৃক’র বেশ কয়েকজন কর্তকর্তা-কর্মচারী। বিএনপি-জামায়াতের কোটায় চাকরি পেলেও এখন তারা বনে গেছেন সামনের সারির আওয়ামী লীগ অনুসারী। এদের মধ্যে একজন হচ্ছেন এস এম সামছুদ্দোহা। সামছুদ্দোহা ১৯৯৪ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে রাজনৈতিক পরিচয়ে স্টেনোগ্রাফার হিসেবে চাকরি পান। চাকরির শুরুতে অর্থনৈতিক অবস্থা খুব খারাপ হলেও অবৈধ উপায়ে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেন কয়েক বছরের মধ্যেই। তার আরেক সহযোগী মোস্তফা কামাল শাহীন। গণপূর্তের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী হয়েও গড়েছেন অঢেল সম্পদ। তাদের দু’জনের বিরুদ্ধেই দুদকে মামলা হয়েছে, দুদক তাদেরকে অভিযুক্ত করেছে। অথচ তারা সপদে বহাল রয়েছেন। অদৃশ্য এক কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।                

দুদকের অভিযুক্ত কর্মকতা-কর্মচারী, যাদের বিরুদ্ধে দুদকের দায়েরকৃত মামলা চলমান, কিংবা যাদের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছে দুদক, তারা কি চাকুরিতে বহাল থাকতে পারেন?- এমন প্রশ্নের জবাবে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. মুনিম হাসান বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, এটি তদন্ত করছে দুদক, সেক্ষেত্রে আমার কি সমস্যা? দুদক যদি তদন্ত শেষ না করে, সেটাতো আমার কিছু করার নেই। আমিতো দুদককে বলতেও পারি না যে, কেন তদন্ত শেষ করছেন না? দুদক আমার কাছে কোনো সহযোগিতা চাইলে সেটা আমি করতে পারি। 

জাগৃক চেয়ারম্যান বলেন, যতদিন পর্যন্ত কেউ অভিযুক্ত না হচ্ছে, অর্থাৎ তদন্তকালীন সময়ে চাকরিতে থাকতে কোনো বাধা নেই। দুদক যদি চার্জশিট দিয়ে তাদেরকে দোষী সাব্যস্ত করতো, সেক্ষেত্রে আমি কোনো ব্যবস্থা নিতে পারতাম। কিন্তু এ ধরনের কোনো কাগজপত্র আমি পাইনি। বদলিটা করা যায়, মাত্র তিন জন লোক বদলি হয়েছে, এরপর আরও হবে। সামনে আরও কিছু লোক বদলি হবে।

বিএনপি-জামায়াতের লোকদেরকে রেখে আওয়ামী লীগের লোকদের বদলি করা হচ্ছে, এ ধরনের একটি কথা শোনা যাচ্ছে- এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কি? - এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমাদের সরকারি চাকরিতে- আমরা যারা সরকারি চাকরি করি, এখানে আওয়ামী লীগ, বিএনপি-জামায়াত কোনো কিছু নেই। সবাই সরকারি কর্মচারী এবং সরকারি নিয়োগে এটা সরাসরি বলা আছে, আমরা রাজনীতি করতে পারবো না। এখানে ওইভাবে বিবেচনা করার কোনো সুযোগ নেই।    


শ্রম আইন   জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ   বদলি   আতঙ্ক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

সাবেক ভূমিমন্ত্রীর দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে দুদকে আবেদন

প্রকাশ: ০৪:১১ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি এবং সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদকে) আবেদন করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রিগ্যান।

বুধবার (১ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

চিঠিতে আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রিগ্যান বলেন, গত ২০ ফেব্রুয়ারি দৈনিক সমকাল পত্রিকায় “সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সাম্রাজ্য যুক্তরাজ্যে” শিরোনামে এবং মানবজমিন পত্রিকায় “ব্রিটেনে বাংলাদেশি রাজনীতিবিদের ২০০ মিলিয়ন পাউন্ডের সাম্রাজ্য" শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ব্লুমবার্গের অনুসন্ধান প্রতিবেদন থেকে এ দুটি সংবাদ প্রকাশিত হবার পরেও কর্তৃপক্ষ যথাযথ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এর ফলে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি দমন কমিশনের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস ক্ষুণ্ণ করে। 

এ কারণে চিঠির মাধ্যমে এ বিষয়ে যথাযথ অনুসন্ধান করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য দুদককে বিশেষভাবে অনুরোধ করেন এই আইনজীবী।

সাবেক ভূমিমন্ত্রী   দুর্নীতি   দুদক   সাইফুজ্জামান চৌধুরী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

‘মিতুকে আমার ছেলেই খুন করেছে, তাকে আপনি মাফ করে দিন’

প্রকাশ: ১০:৪৯ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিয়েছেন মিতুর মা শাহেদা মোশাররফ। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে এসব কথা বলেছেন নিহত মাহমুদার মা শাহেদা মোশাররফ।

সাক্ষ্যে বলেন, ‘মিশন শেষ করে ফিরে এসেই বাবুল চীনে চলে যায়। সেখানে বসেই মিতুকে মারার পরিকল্পনা করে। মিতুকে খুন করার জন্য মুসাকে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে অস্ত্র কিনে দেয়, মুসার স্ত্রী এ কথা বলেছেন। আর ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারীর সঙ্গে বাবুলের বিয়েবর্হিভূত সম্পর্কের জেরেই মিতুকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে।’

মিতু হত্যা মামলার ৪৯তম সাক্ষী হিসেবে আদালতকে তিনি বলেন, ‘২০১৭ সালে বাবুল আক্তারের মা মারা যাওয়ার ১৫ দিন আগে আমাকে কল করেন। বলেন- বেয়াইন, মিতুকে আমার ছেলে খুন করেছে। তাকে আপনি মাফ করে দেন। আমি তাকে বলি- বাবুল মরলে কি এ কথা আপনি বলতেন? এসব আমি তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে বলেছি। তদন্তে সবকিছু উঠে আসেনি।’

আদালত সূত্র জানায়, সাক্ষ্যে শাহেদা মোশাররফ আদালতকে বলেন, ২০০২ সালের ২৬ এপ্রিল বাবুল ও মাহমুদার বিয়ে হয়। এরপর তাঁরা মোটামুটি সুখী ছিলেন। বাবুল পুলিশের চাকরিতে যোগদানের পর মাহমুদার সঙ্গে আচরণ পাল্টে যায়। বাবুল কক্সবাজারে বদলি হওয়ার পর সেখানে এক বিদেশি নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তখন মাহমুদা বিষয়টি তাঁকে জানিয়েছিলেন।

শাহেদা মোশাররফ আদালতকে বলেন, বাবুল কক্সবাজারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে কর্মরত থাকাকালে সেখানে একটি হোটেলে ওঠেন। একই হোটেলে মাহমুদাও ওঠেন। বাবুল ও একটি বিদেশি সংস্থায় কর্মরত সেই নারীকে একটি কক্ষে দেখতে পান মাহমুদা।

মাহমুদার মা জানান, ২০১৪ সালে বাবুল জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে যান। বাসায় রেখে যান তাঁর একটি মুঠোফোন। তাতে বেশ কয়েকটি খুদে বার্তা পান মাহমুদা। বাবুলের সঙ্গে সম্পর্ক থাকা সেই নারী বাবুলকে খুদে বার্তাগুলো দিয়েছিলেন।

মিশন থেকে দেশে ফেরার পর বাবুল চীনে যান জানিয়ে শাহেদা মোশাররফ বলেন, ‘মূলত সেখানে বসে বাবুল মাহমুদাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী অস্ত্র কেনার জন্য বাবুল তাঁর সোর্স (তথ্যদাতা) কামরুল শিকদার ওরফে মুসাকে ৭০ হাজার টাকা দেন। আর পুরো খুনের ঘটনায় মুসা তাঁর সহযোগীদের ব্যবহার করেন। মাহমুদাকে খুনের জন্য বাবুল যে তিন লাখ টাকা দেন, তা ছিল মাহমুদার ব্যবসার টাকা।’

আদালতে সাক্ষীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে শাহেদা মোশারফ মেয়ের হত্যার পেছনের ঘটনা বলার সময় কিছুক্ষণ পরপর কাঁদতে থাকেন। চোখ মুছে আবার কথা বলেন। এ সময় আসামির কাঠগড়ায় ছিলেন বাবুল আক্তার। পুরোটা সময় বাবুল ছিলেন নীরব।

আজ শাহেদা মোশারফের সাক্ষ্য শুরুর আগে দুপুরে তৎকালীন পাঁচলাইশ থানার ওসি মহিউদ্দিন মাহমুদ সাক্ষ্য দেন। তিনি আদালতে বলেন, ঘটনার সময় তিনি পাঁচলাইশ থানার ওসি ছিলেন। ওসি হিসেবে তখন মামলা রেকর্ড করেছিলেন।

চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আবদুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, সাক্ষ্য শেষ হওয়ার পর শাহেদা মোশাররফকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। পরে আদালত জেরা মুলতবি রেখে বুধবার পরবর্তী দিন রাখেন।

২০১৬ সালের ৫ জুন চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় গুলি ও ছুরিকাঘাতে নিহত হন মাহমুদা খানম। এই ঘটনায় করা মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ২০২২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর বাবুলসহ সাতজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। এই মামলায় ৪৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে।


মাহমুদা খানম মিতু   পুলিশ সুপার   বাবুল আক্তার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

আলমারির ভেতরে লুকিয়ে ছিলেন কুকি-চিনের প্রধান সমন্বয়ক

প্রকাশ: ০৭:১২ পিএম, ০৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বান্দরবানে বিশেষ অভিযান চালিয়ে পাহাড়ি সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ‘প্রধান সমন্বয়ক’ চেওসিম বমকে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১৫। 

রোববার (৭ এপ্রিল) বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের শ্যারনপাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাব জানায়, কেএনএফের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক চেওসিম বমকে আটক করে হয়েছে। নিজ ঘরে আলমারির ভেতর লুকিয়ে ছিলেন তিনি। র‌্যাবের বিশেষ দল সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। 

এর আগে রোববার (৭ এপ্রিল) বান্দরবানের থানচি ও রুমায় কয়েক দফা সন্ত্রাসী হামলার পর সেখানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনে যৌথ বাহিনীর কম্বিং অপারেশন শুরুর কথা গণমাধ্যমকে জানান সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।

উল্লেখ্য, ২ এপ্রিল রাতে বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকের শাখায় ফিল্মি কায়দায় হামলা চালিয়ে টাকা লুট করে সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। এ সময় ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ করা হয়।আগের রাতের এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই পরদিন ৩ এপ্রিল সকালে থানচি উপজেলার সোনালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের শাখায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। পরে এসব ঘটনায় ৭টি মামলা করা হয়। তবে এ মামলায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর কোনো নেতা ও সশস্ত্র সদস্যদের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়নি।

কুকি-চিন   কেএনএফ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

পাঁচ হাজার টাকার বাতি ২৭ হাজারে কিনেছে রেলওয়ে

প্রকাশ: ০৬:০৫ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

পাঁচ হাজার টাকার বাতি ২৭ হাজার টাকায় কিনেছে রেলওয়ে। যন্ত্রাংশ কেনাকাটা সহ নানা অনিয়মের এমন প্রমাণ চিত্র পাওয়া গেছে চট্টগ্রাম রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযান চালিয়ে এমন তথ্য প্রমাণ পায়।

দুদক বলেছে, ‘বাজারে যেসব এলইডি বাতির দাম সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা, সেসব বাতি রেলওয়ে কিনেছে ২৭ হাজার টাকায়।’

দুদকের সহকারী পরিচালক এনামুল হক বলেন, ‘রেলওয়েতে লিফটিং জ্যাক, ড্রিলিং মেশিন ও কাটিং জ্যাক ক্রয়সংক্রান্ত ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে দেখা যায়, এই পণ্যগুলোর প্রাক্কলিত দর ১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। সেখানে এই পণ্যগুলো ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকার অধিক ব্যয়ে কেনা হয়। যা পিপিপি ও পিপিআরের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ ছাড়া আরও কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালিয়ে অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। আমরা এগুলো ভালো করে পর্যালোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।’

তিনি বলেন, ‘রেলওয়ের বৈদ্যুতিক প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে ৯০টি এলইডি লাইট ও এলইডি ল্যাম্প কেনার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সেগুলোর ক্রয়সংক্রান্ত ডকুমেন্ট সংগ্রহের পর পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতিটি এলইডি লাইট ২৭ হাজার ৭০০ টাকায় কেনা হয়েছে, যেগুলোর দাম বাজারে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা।’

তিনি আরও বলেন, ‘পাহাড়তলীতে রেলওয়ের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক ও জেলা সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। সেখানে অভিযোগসংশ্লিষ্ট আরঅ্যান্ডআইয়ের মেরামত করা কক্ষ পরিদর্শন করা হয়। এ সময় ওয়াকিটকি ক্রয়সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করা হয়। পর্যালোচনায় প্রাথমিকভাবে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়।’

জানা গেছে, ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশ করে একই ঠিকানায় নিবন্ধিত দুটি প্রতিষ্ঠানকে দরপত্রে অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে তাদের মধ্যে একটিকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এই অনিয়ম প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত হয়। এ ছাড়া বাজারমূল্য নির্ধারণ কমিটি কিসের ওপর ভিত্তি করে ওইসব পণ্যের বাজারমূল্য নির্ধারণ করেছে, সেসব সংক্রান্ত কোনো তথ্যউপাত্ত পায়নি দুদক।

দুদক   দুর্নীতি   রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

সাবেক ১২ মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু হচ্ছে?

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২০ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগ সরকার টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতা গ্রহণ করছে। গত ১১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেছে। এর আগে তিন মেয়াদে যারা বিভিন্ন সময়ে মন্ত্রী ছিলেন এবং সরকারের ভিতর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের অনেকেরই দায়িত্ব পালনের সময়টি স্বচ্ছতার ছিল না। তারা নিজেদেরকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখতে পারেননি। আর এ কারণেই তাদের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। গত তিন মেয়াদ এ রকম অন্তত এক ডজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এই দুর্নীতির অভিযোগ এখন বিভিন্ন সংস্থাগুলো তদন্ত করছে। 

বর্তমান সরকার তার নির্বাচনী ইস্তেহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি ঘোষণা করেছে। এই নীতির আওতায় দুর্নীতিবাজ যেই হোক না কেন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর এই কারণেই সাবেক এই সব মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগগুলো নতুন করে খতিয়ে দেখা শুরু হচ্ছে। এই অভিযোগ তদন্ত শেষে  অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

যে এক ডজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে ২০০৯ থেকে ২০১৪ মেয়াদে মন্ত্রী মন্ত্রী ছিলেন এরকম অন্তত চার জন মন্ত্রী রয়েছেন। এই চারজন মন্ত্রীর মধ্যে আবার দুজন ২০১৪ থেকে ২০১৮ মন্ত্রিসভায় মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। ২০১৪ থেকে ২০১৮ মন্ত্রিসভায় মোট চারজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে এবং সেটি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। এছাড়া ২০১৮ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত সময়ে যে সমস্ত মন্ত্রীরা ছিলেন, তাদের চারজনের বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে।

সর্বশেষ মন্ত্রিসভায় যারা ছিলেন, তাদের মধ্যে একজন অত্যন্ত ক্লিন ইমেজের মন্ত্রী ছিলেন। বিদেশে তার বিপুল সম্পদের তথ্য সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত হয়েছে। আর এই সম্পদ তিনি বৈধ পথে উপার্জন করেছেন, দেশ থেকে পাচার করেননি এ বক্তব্য রেখে ওই সাবেক মন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ব্যাপারে সরকারকে তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। এই বিষয়টি নিয়ে সরকার এখন নীরবে তদন্ত করছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এছাড়াও ২০১৪ ও ১৮ মেয়াদে প্রতিমন্ত্রী থেকে ২০১৮ সালে পূর্ণমন্ত্রী হওয়া আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী এবং তার পুত্রের বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি এবং অনিয়মের অভিযোগ আছে। মন্ত্রণালয়ে থাকা অবস্থায় মন্ত্রণালয়ের কাজ এবং মন্ত্রণালয়ের বাইরে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম অভিযোগ রয়েছে। ওই মন্ত্রী তার নির্বাচনী এলাকায় একটি ভূমি অধিগ্রহণে মূল্যস্ফীতির ঘটনায় এখন তদন্তের মুখোমুখি হয়েছেন বলে জানা গেছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মন্ত্রী, পুত্র এবং তার সাবেক এপিএস এর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এই তদন্তে একাধিক বিষয় সামনে এসেছে। এছাড়াও ২০০৯ সালের মন্ত্রিসভায় একজন গুরুত্বপূর্ণ পেশাজীবী মন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরকারি কেনাকাটায় বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ নতুন করে তদন্ত শুরু হয়েছিল। ওই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আগে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করেছিল, সেই তদন্ত এখন পুনরায় শুরু করা হয়েছে। ওই সময় গৃহায়ন ও গণপূর্ত বিভাগে দায়িত্বে থাকা একজন প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ এখন তদন্তের আওতায় পড়েছে।

২০১৪ থেকে ২০১৮ সালে যারা মন্ত্রী ছিলেন তাদের মধ্যে দুজন প্রভাবশালী হেভিওয়েট মন্ত্রীর মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম এবং স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়টি এখন তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। মোট ১২ জন সাবেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এরকম দুর্নীতির অভিযোগ এখন তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বুঝা যাবে তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো আদৌ সত্যি নাকি এই অভিযোগগুলো নেহাতে তাদের বিরুদ্ধে ঈর্ষা পরায়ণ হয়ে করা হয়েছে। তবে দুর্নীতি দশন কমিশনের এবাধিক সূত্র বলছে, নির্মোহ ভাবে তদন্ত করা হবে এবং সরকার এব্যাপারে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি অনুসরণ করছে।

সাবেক মন্ত্রী   দুর্নীতি   তদন্ত  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন