ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যোগ্য হয়েছে অযোগ্য ঠিকাদার

প্রকাশ: ০১:৫৮ পিএম, ০৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্পের প্রায় শতকোটি টাকার কেনাকাটায় বড় ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ৯টি দরপত্রে প্রায় শতকোটি টাকার জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম কেনার উদ্যোগ নেয় সরকার। এদিকে বাংলাদেশ সায়েন্স হাউস এসব কেনাকাটায় সর্বনিম্ন দরদাতা না হয়েও ৬৪ কোটি টাকার বেশি ৫টি কাজ পেয়েছে। বাকি চারটি কাজও এই প্রতিষ্ঠানকে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

একাধিক দরদাতা জানান, বাংলাদেশ সায়েন্স হাউস নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্পের কাজ পাইয়ে দিতে সব অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ও হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলরুবা ইয়াসমিন লিজা। সর্বনিম্ন দরদাতাকে বাদ দিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানকে পাঁচটি দরপত্রের প্রায় ৬৪ কোটি ৩৫ লাখ ৮০ হাজার টাকার কাজ পাইয়ে দিয়েছেন। আরও চারটি দরপত্রের কাজ পাইয়ে দিতে সব আয়োজন শেষ করেছেন। প্রকল্প পরিচালকের (পিডি) স্বামী ও একই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মশিউর রহমান যন্ত্রপাতি ক্রয়ে কারিগরি কমিটি বা মূল্যায়ন কমিটিতে না থেকেও পছন্দের কোম্পানিকে কাজ পাইয়ে দিতে পেছন থেকে কলকাঠি নেড়েছেন। স্বামী-স্ত্রী ছাড়াও এই কাজে আরও জড়িত ছিলেন ন্যাশনাল ইলেকট্রো-মেডিকেল ইকুইপমেন্ট মেইনটেন্যান্স ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারের সহকারী প্রকৌশলী মাইনুর শুভ, কারিগরি কমিটিতে সদস্য সচিব রেডিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সুমন কুমার বালা, দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য গাইনি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট মোসা. ফেরদৌসী আক্তার, টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন কমিটির সভাপতি সিনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি) ডা. মনিরুল ইসলাম।

দরপত্রের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, পটুয়াখালী সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্পের আওতায় নয়টি দরপত্রে ৯৬ কোটি ৪০ লাখ ১ হাজার টাকার যন্ত্রপাতি কেনার উদ্যোগ নেয় সরকার। সেই লক্ষ্যে গত ২৪ ডিসেম্বর দরপত্র আহ্বান করা হয়। এর মধ্যে ১৭ কোটি ৪০ লাখ টাকায় একটি সিটি স্ক্যান মেশিন, দুইটি ফোর ডি আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন সঙ্গে ভিডিও প্রিন্টার এবং আরও দুটি সাধারণ আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। অন্য লটে ৬ কোটি ১৩ লাখ ৯৮ হাজার টাকায় ফিজিওলজি বিভিাগ, বায়োক্যামিস্ট্রি ও ফার্মাকোলজি বিভাগের আওতায় ৮৫ ধরনের ২ হাজার ২৫২টি যন্ত্রপাতি ও রি-এজেন্ট, ৫ কোটি ৪১ লাখ ২৯ হাজার টাকায় প্যাথলজি ও ইমুনলজি বিভাগে ৬৪ ধরনের ২ হাজার ২০টি যন্ত্রপাতি ও রি-এজেন্ট, ৬ কোটি ৪৪ লাখ ৭৪ হাজার টাকায় মাইক্রো বায়োলজি ও ভাইরোলজি বিভাগে ১২৩ ধরনের ১ হাজার ৭০৭টি যন্ত্রপাতি ও রি-এজেন্ট, ১২ কোটি ৯১ লাখ ২ হাজার টাকায় ব্লাড ব্যাংক ও ল্যাবরেটরি মেডিসিন বিভাগে ৫০ ধরনের ৬৯০টি যন্ত্রপাতি ও রি-এজেন্ট, ৯ কোটি ১৯ লাখ ৩৮ হাজার টাকায় অপারেশন থিয়েটার ও হেমাটোলজি বিভাগে ২৮ ধরনের ২৫৪টি সরঞ্জাম, ১৯ কোটি টাকায় একটি এমআরআই মেশিন, ৯ কোটি ৮৯ লাখ ৬০ হাজার টাকায় অ্যানেস্থেসিওলজি ও আইসিইউ এবং স্টেলাইজার রুম স্থাপনে ১১ ধরনের ১০৮টি সরঞ্জাম এবং ১০ কোটি টাকা এক্স-রে বিভাগে ৫ ধরনের ৭টি সরঞ্জাম কেনাকাটার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
৯টি দরপত্রে বাংলাদেশ সায়েন্স হাউস, বগুড়া ট্রেড সেন্টার, জেনেসিস ট্রেডিং, এইচটিএমএস লিমিটেড, মাইক্রো ট্রেডার্স, আনিফকো হেলথ কেয়ার, নিউ ভিশন মেডিসিস্টেম, ওশান এন্টারপ্রাইজ, ট্রেড ভিশন, আরপি এন্টারপ্রাইজ, ইনোভেশন টেকনোলজিস্ট ও মেডিলিঙ্ক টেকনো হাটসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।

এক অনুসন্ধানে জানা যায়,  প্রকল্পের ৯২৭৬১০ আইডির ব্লাড ব্যাংক ও ল্যাবরেটরি মেডিসিন বিভাগের দরপত্রে মাইক্রো ট্রেডার্স, জেনেসিস ট্রেডিং, বাংলাদেশ সায়েন্স হাউস, এইচটিএমএস ও বগুড়া ট্রেড সেন্টার অংশ নেয়। সেখানে সর্বনিম্ন দরদাতা ছিল মাইক্রো ট্রেডার্স। তারা দর দিয়েছিল ৯ কোটি ৯৫ লাখ ৭০ হাজার ২৪৯ টাকা। তার চেয়ে ২ কোটি ৪ লাখ ২ হাজার ৭৫০ টাকা বেশি দর দিয়ে ১১ কোটি ৯৯ লাখ ৭৩ হাজার টাকায় তৃতীয় দরদাতা হয়েও দরপত্রটি পেয়েছে বাংলাদেশ সায়েন্স হাউস। ৯২৭৬১২ আইডির অ্যানেস্থেসিওলজি এবং আইসিইউ বিভাগের দরপত্রে নিউভিশন মেডিসিস্টেম, এইচটিএমএস, আনিফকো হেলথ কেয়ার, বাংলাদেশ সায়েন্স হাউস ও বগুড়া ট্রেড সেন্টার অংশ নেয়। সেখানে সর্বনিম্ন দরদাতা ছিলেন নিউ ভিশন মেডিসিস্টেম। তারা দর দিয়েছিল ৬ কোটি ২৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা। তার চেয়ে ২ কোটি ৬৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা বেশি দর দিয়ে ৮ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার টাকায় চতুর্থ দরদাতা হয়েও দরপত্রটি পেয়েছে বাংলাদেশ সায়েন্স হাউস। এ ছাড়া ৯২৭৬১৩ আইডির এক্স-রে মেশিন কেনাকাটার দরপত্রে এইচটিএমএস, বাংলাদেশ সায়েন্স হাউস, বগুড়া ট্রেড সেন্টার ও ট্রেড ভিশন অংশ নেয়। সেখানে সর্বনিম্ন দরদাতা ৭ কোটি ৮৮ লাখ ৯৫ হাজার ৯১২ কোটি টাকা দর দিয়েছিল এইচটিএমএস। তার চেয়ে ১ কোটি ২৯ লাখ ৪ হাজার ৮৮ টাকা বেশি দর দিয়ে দ্বিতীয় দরদাতা হিসেবে ৯ কোটি ১৮ লাখ টাকায় কাজটি পেয়েছে বাংলাদেশ সায়েন্স হাউস। ৯২৭৬১৫ আইডির ১৮ কোটি ৮০ লাখ টাকায় এমআরআই মেশিন ও ৯২৭৬১৪ আইডির ১৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকায় সিটি স্ক্যান মেশিন কেনাকাটার কাজের সর্বনিম্ন দরদাতা না হয়েও প্রকল্প পরিচালকের যোগসাজশে ৬৪ কোটি ৩৫ লাখ ৮০ হাজার টাকার কাজ বাগিয়ে নেয় বাংলাদেশ সায়েন্স হাউস। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা সহযোগী আমিনুল ইসলাম বলেন, উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে আমরা কাজ পেয়েছি। দরপত্রের সব শর্ত মেনে যোগ্য হলে পাঁচটি নয়, সব কাজও পেতে পারি–এতে তো কোনো বাধা নেই। এরপরেও অভিযোগ থাকলে মূল্যায়ন কমিটিকে বলেন।

পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট (গাইনি) ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য মোসা. ফেরদৌসী আক্তার বলেন, সরকারি সব নিয়ম বা শর্ত মেনে যারা দরপত্রের আহ্বান করা হয়। যারা সব শর্ত মেনে আবেদন করছে, তারাই কাজ পেয়েছে।

পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও প্রকল্প পরিচালক ডা. দিলরুবা ইয়াসমিন লিজা বলেন, টেন্ডার কমিটির আহ্বানকৃত দরপত্রের শর্তাবলি অনুযায়ী যারা দরপত্র দাখিল করেছেন, শুধু তাদের দরপত্র গৃহীত হয়েছে। আর যারা দরপত্রের শর্তাবলি এবং কর্তৃপক্ষের চাহিদাকৃত মালামালের বর্ণনা অনুযায়ী দরপত্র দাখিল করতে পারেনি তাদের দরপত্র বাতিল করা হয়েছে। এখানে কোনো অনিয়ম কিংবা পক্ষপাতিত্ব করা হয়নি।


পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল   প্রকল্প   অনিয়মের অভিযোগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

সাবেক ভূমিমন্ত্রীর দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে দুদকে আবেদন

প্রকাশ: ০৪:১১ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি এবং সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদকে) আবেদন করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রিগ্যান।

বুধবার (১ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

চিঠিতে আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রিগ্যান বলেন, গত ২০ ফেব্রুয়ারি দৈনিক সমকাল পত্রিকায় “সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সাম্রাজ্য যুক্তরাজ্যে” শিরোনামে এবং মানবজমিন পত্রিকায় “ব্রিটেনে বাংলাদেশি রাজনীতিবিদের ২০০ মিলিয়ন পাউন্ডের সাম্রাজ্য" শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ব্লুমবার্গের অনুসন্ধান প্রতিবেদন থেকে এ দুটি সংবাদ প্রকাশিত হবার পরেও কর্তৃপক্ষ যথাযথ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এর ফলে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি দমন কমিশনের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস ক্ষুণ্ণ করে। 

এ কারণে চিঠির মাধ্যমে এ বিষয়ে যথাযথ অনুসন্ধান করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য দুদককে বিশেষভাবে অনুরোধ করেন এই আইনজীবী।

সাবেক ভূমিমন্ত্রী   দুর্নীতি   দুদক   সাইফুজ্জামান চৌধুরী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

‘মিতুকে আমার ছেলেই খুন করেছে, তাকে আপনি মাফ করে দিন’

প্রকাশ: ১০:৪৯ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিয়েছেন মিতুর মা শাহেদা মোশাররফ। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে এসব কথা বলেছেন নিহত মাহমুদার মা শাহেদা মোশাররফ।

সাক্ষ্যে বলেন, ‘মিশন শেষ করে ফিরে এসেই বাবুল চীনে চলে যায়। সেখানে বসেই মিতুকে মারার পরিকল্পনা করে। মিতুকে খুন করার জন্য মুসাকে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে অস্ত্র কিনে দেয়, মুসার স্ত্রী এ কথা বলেছেন। আর ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারীর সঙ্গে বাবুলের বিয়েবর্হিভূত সম্পর্কের জেরেই মিতুকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে।’

মিতু হত্যা মামলার ৪৯তম সাক্ষী হিসেবে আদালতকে তিনি বলেন, ‘২০১৭ সালে বাবুল আক্তারের মা মারা যাওয়ার ১৫ দিন আগে আমাকে কল করেন। বলেন- বেয়াইন, মিতুকে আমার ছেলে খুন করেছে। তাকে আপনি মাফ করে দেন। আমি তাকে বলি- বাবুল মরলে কি এ কথা আপনি বলতেন? এসব আমি তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে বলেছি। তদন্তে সবকিছু উঠে আসেনি।’

আদালত সূত্র জানায়, সাক্ষ্যে শাহেদা মোশাররফ আদালতকে বলেন, ২০০২ সালের ২৬ এপ্রিল বাবুল ও মাহমুদার বিয়ে হয়। এরপর তাঁরা মোটামুটি সুখী ছিলেন। বাবুল পুলিশের চাকরিতে যোগদানের পর মাহমুদার সঙ্গে আচরণ পাল্টে যায়। বাবুল কক্সবাজারে বদলি হওয়ার পর সেখানে এক বিদেশি নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তখন মাহমুদা বিষয়টি তাঁকে জানিয়েছিলেন।

শাহেদা মোশাররফ আদালতকে বলেন, বাবুল কক্সবাজারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে কর্মরত থাকাকালে সেখানে একটি হোটেলে ওঠেন। একই হোটেলে মাহমুদাও ওঠেন। বাবুল ও একটি বিদেশি সংস্থায় কর্মরত সেই নারীকে একটি কক্ষে দেখতে পান মাহমুদা।

মাহমুদার মা জানান, ২০১৪ সালে বাবুল জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে যান। বাসায় রেখে যান তাঁর একটি মুঠোফোন। তাতে বেশ কয়েকটি খুদে বার্তা পান মাহমুদা। বাবুলের সঙ্গে সম্পর্ক থাকা সেই নারী বাবুলকে খুদে বার্তাগুলো দিয়েছিলেন।

মিশন থেকে দেশে ফেরার পর বাবুল চীনে যান জানিয়ে শাহেদা মোশাররফ বলেন, ‘মূলত সেখানে বসে বাবুল মাহমুদাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী অস্ত্র কেনার জন্য বাবুল তাঁর সোর্স (তথ্যদাতা) কামরুল শিকদার ওরফে মুসাকে ৭০ হাজার টাকা দেন। আর পুরো খুনের ঘটনায় মুসা তাঁর সহযোগীদের ব্যবহার করেন। মাহমুদাকে খুনের জন্য বাবুল যে তিন লাখ টাকা দেন, তা ছিল মাহমুদার ব্যবসার টাকা।’

আদালতে সাক্ষীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে শাহেদা মোশারফ মেয়ের হত্যার পেছনের ঘটনা বলার সময় কিছুক্ষণ পরপর কাঁদতে থাকেন। চোখ মুছে আবার কথা বলেন। এ সময় আসামির কাঠগড়ায় ছিলেন বাবুল আক্তার। পুরোটা সময় বাবুল ছিলেন নীরব।

আজ শাহেদা মোশারফের সাক্ষ্য শুরুর আগে দুপুরে তৎকালীন পাঁচলাইশ থানার ওসি মহিউদ্দিন মাহমুদ সাক্ষ্য দেন। তিনি আদালতে বলেন, ঘটনার সময় তিনি পাঁচলাইশ থানার ওসি ছিলেন। ওসি হিসেবে তখন মামলা রেকর্ড করেছিলেন।

চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আবদুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, সাক্ষ্য শেষ হওয়ার পর শাহেদা মোশাররফকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। পরে আদালত জেরা মুলতবি রেখে বুধবার পরবর্তী দিন রাখেন।

২০১৬ সালের ৫ জুন চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় গুলি ও ছুরিকাঘাতে নিহত হন মাহমুদা খানম। এই ঘটনায় করা মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ২০২২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর বাবুলসহ সাতজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। এই মামলায় ৪৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে।


মাহমুদা খানম মিতু   পুলিশ সুপার   বাবুল আক্তার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

আলমারির ভেতরে লুকিয়ে ছিলেন কুকি-চিনের প্রধান সমন্বয়ক

প্রকাশ: ০৭:১২ পিএম, ০৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বান্দরবানে বিশেষ অভিযান চালিয়ে পাহাড়ি সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ‘প্রধান সমন্বয়ক’ চেওসিম বমকে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১৫। 

রোববার (৭ এপ্রিল) বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের শ্যারনপাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাব জানায়, কেএনএফের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক চেওসিম বমকে আটক করে হয়েছে। নিজ ঘরে আলমারির ভেতর লুকিয়ে ছিলেন তিনি। র‌্যাবের বিশেষ দল সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। 

এর আগে রোববার (৭ এপ্রিল) বান্দরবানের থানচি ও রুমায় কয়েক দফা সন্ত্রাসী হামলার পর সেখানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনে যৌথ বাহিনীর কম্বিং অপারেশন শুরুর কথা গণমাধ্যমকে জানান সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।

উল্লেখ্য, ২ এপ্রিল রাতে বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকের শাখায় ফিল্মি কায়দায় হামলা চালিয়ে টাকা লুট করে সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। এ সময় ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ করা হয়।আগের রাতের এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই পরদিন ৩ এপ্রিল সকালে থানচি উপজেলার সোনালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের শাখায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। পরে এসব ঘটনায় ৭টি মামলা করা হয়। তবে এ মামলায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর কোনো নেতা ও সশস্ত্র সদস্যদের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়নি।

কুকি-চিন   কেএনএফ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

পাঁচ হাজার টাকার বাতি ২৭ হাজারে কিনেছে রেলওয়ে

প্রকাশ: ০৬:০৫ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

পাঁচ হাজার টাকার বাতি ২৭ হাজার টাকায় কিনেছে রেলওয়ে। যন্ত্রাংশ কেনাকাটা সহ নানা অনিয়মের এমন প্রমাণ চিত্র পাওয়া গেছে চট্টগ্রাম রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযান চালিয়ে এমন তথ্য প্রমাণ পায়।

দুদক বলেছে, ‘বাজারে যেসব এলইডি বাতির দাম সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা, সেসব বাতি রেলওয়ে কিনেছে ২৭ হাজার টাকায়।’

দুদকের সহকারী পরিচালক এনামুল হক বলেন, ‘রেলওয়েতে লিফটিং জ্যাক, ড্রিলিং মেশিন ও কাটিং জ্যাক ক্রয়সংক্রান্ত ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে দেখা যায়, এই পণ্যগুলোর প্রাক্কলিত দর ১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। সেখানে এই পণ্যগুলো ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকার অধিক ব্যয়ে কেনা হয়। যা পিপিপি ও পিপিআরের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ ছাড়া আরও কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালিয়ে অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। আমরা এগুলো ভালো করে পর্যালোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।’

তিনি বলেন, ‘রেলওয়ের বৈদ্যুতিক প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে ৯০টি এলইডি লাইট ও এলইডি ল্যাম্প কেনার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সেগুলোর ক্রয়সংক্রান্ত ডকুমেন্ট সংগ্রহের পর পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতিটি এলইডি লাইট ২৭ হাজার ৭০০ টাকায় কেনা হয়েছে, যেগুলোর দাম বাজারে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা।’

তিনি আরও বলেন, ‘পাহাড়তলীতে রেলওয়ের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক ও জেলা সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। সেখানে অভিযোগসংশ্লিষ্ট আরঅ্যান্ডআইয়ের মেরামত করা কক্ষ পরিদর্শন করা হয়। এ সময় ওয়াকিটকি ক্রয়সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করা হয়। পর্যালোচনায় প্রাথমিকভাবে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়।’

জানা গেছে, ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশ করে একই ঠিকানায় নিবন্ধিত দুটি প্রতিষ্ঠানকে দরপত্রে অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে তাদের মধ্যে একটিকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এই অনিয়ম প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত হয়। এ ছাড়া বাজারমূল্য নির্ধারণ কমিটি কিসের ওপর ভিত্তি করে ওইসব পণ্যের বাজারমূল্য নির্ধারণ করেছে, সেসব সংক্রান্ত কোনো তথ্যউপাত্ত পায়নি দুদক।

দুদক   দুর্নীতি   রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

সাবেক ১২ মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু হচ্ছে?

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২০ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগ সরকার টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতা গ্রহণ করছে। গত ১১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেছে। এর আগে তিন মেয়াদে যারা বিভিন্ন সময়ে মন্ত্রী ছিলেন এবং সরকারের ভিতর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের অনেকেরই দায়িত্ব পালনের সময়টি স্বচ্ছতার ছিল না। তারা নিজেদেরকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখতে পারেননি। আর এ কারণেই তাদের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। গত তিন মেয়াদ এ রকম অন্তত এক ডজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এই দুর্নীতির অভিযোগ এখন বিভিন্ন সংস্থাগুলো তদন্ত করছে। 

বর্তমান সরকার তার নির্বাচনী ইস্তেহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি ঘোষণা করেছে। এই নীতির আওতায় দুর্নীতিবাজ যেই হোক না কেন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর এই কারণেই সাবেক এই সব মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগগুলো নতুন করে খতিয়ে দেখা শুরু হচ্ছে। এই অভিযোগ তদন্ত শেষে  অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

যে এক ডজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে ২০০৯ থেকে ২০১৪ মেয়াদে মন্ত্রী মন্ত্রী ছিলেন এরকম অন্তত চার জন মন্ত্রী রয়েছেন। এই চারজন মন্ত্রীর মধ্যে আবার দুজন ২০১৪ থেকে ২০১৮ মন্ত্রিসভায় মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। ২০১৪ থেকে ২০১৮ মন্ত্রিসভায় মোট চারজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে এবং সেটি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। এছাড়া ২০১৮ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত সময়ে যে সমস্ত মন্ত্রীরা ছিলেন, তাদের চারজনের বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে।

সর্বশেষ মন্ত্রিসভায় যারা ছিলেন, তাদের মধ্যে একজন অত্যন্ত ক্লিন ইমেজের মন্ত্রী ছিলেন। বিদেশে তার বিপুল সম্পদের তথ্য সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত হয়েছে। আর এই সম্পদ তিনি বৈধ পথে উপার্জন করেছেন, দেশ থেকে পাচার করেননি এ বক্তব্য রেখে ওই সাবেক মন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ব্যাপারে সরকারকে তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। এই বিষয়টি নিয়ে সরকার এখন নীরবে তদন্ত করছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এছাড়াও ২০১৪ ও ১৮ মেয়াদে প্রতিমন্ত্রী থেকে ২০১৮ সালে পূর্ণমন্ত্রী হওয়া আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী এবং তার পুত্রের বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি এবং অনিয়মের অভিযোগ আছে। মন্ত্রণালয়ে থাকা অবস্থায় মন্ত্রণালয়ের কাজ এবং মন্ত্রণালয়ের বাইরে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম অভিযোগ রয়েছে। ওই মন্ত্রী তার নির্বাচনী এলাকায় একটি ভূমি অধিগ্রহণে মূল্যস্ফীতির ঘটনায় এখন তদন্তের মুখোমুখি হয়েছেন বলে জানা গেছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মন্ত্রী, পুত্র এবং তার সাবেক এপিএস এর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এই তদন্তে একাধিক বিষয় সামনে এসেছে। এছাড়াও ২০০৯ সালের মন্ত্রিসভায় একজন গুরুত্বপূর্ণ পেশাজীবী মন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরকারি কেনাকাটায় বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ নতুন করে তদন্ত শুরু হয়েছিল। ওই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আগে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করেছিল, সেই তদন্ত এখন পুনরায় শুরু করা হয়েছে। ওই সময় গৃহায়ন ও গণপূর্ত বিভাগে দায়িত্বে থাকা একজন প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ এখন তদন্তের আওতায় পড়েছে।

২০১৪ থেকে ২০১৮ সালে যারা মন্ত্রী ছিলেন তাদের মধ্যে দুজন প্রভাবশালী হেভিওয়েট মন্ত্রীর মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম এবং স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়টি এখন তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। মোট ১২ জন সাবেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এরকম দুর্নীতির অভিযোগ এখন তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বুঝা যাবে তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো আদৌ সত্যি নাকি এই অভিযোগগুলো নেহাতে তাদের বিরুদ্ধে ঈর্ষা পরায়ণ হয়ে করা হয়েছে। তবে দুর্নীতি দশন কমিশনের এবাধিক সূত্র বলছে, নির্মোহ ভাবে তদন্ত করা হবে এবং সরকার এব্যাপারে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি অনুসরণ করছে।

সাবেক মন্ত্রী   দুর্নীতি   তদন্ত  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন