নির্বাচনের সময় বিএনপি নাকে খত দিয়ে অংশ নেবে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এ্যডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির এখন ভালো না লাগার রোগ হয়েছে। কারণ দেশের জনগণ বিএনপিকে লাল কার্ড দেখিয়েছে। কিন্তু নির্বাচনের সময় গনিনে এলে বিএনপি নাকে খত দিয়ে অংশ নেবে।
বুধবার (২৩ মার্চ) বিকালে সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ মাঠে জামালপুর জেলা ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, খালেদা জিয়া ছাত্র সমাজের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। বিএনপির সময় শিক্ষা ছিল গুলশান, বনানীর ছেলে-মেয়ের জন্য। বিদ্যালয়বিহীন অবস্থায় ছিল দেশের ১ হাজার ৪৯৫ গ্রাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই গ্রামগুলোতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করে দিয়েছেন। দেশের সব বেসরকারি ও রেজিস্ট্রার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন শিক্ষার আলো।
তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগ অন্য কোন ছাত্র সংগঠন দলের মত নয়, ছাত্রলীগ সৃষ্টি করেছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৪৮ সাল থেকে ছাত্রলীগের যাত্রা শুরু। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে প্রথম দায়িত্ব পালন করেছিলেন এই ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতা নানক বলেন, ছাত্রলীগের সম্মেলন প্রতিবছর হতে হবে, ৭ বছর পর ১২ বছর পর ছাত্রলীগের সম্মেলন হতে পারে না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যখন ছয়দফা দাবি আদায়ের কথা বলেছিলেন তখন এই ছাত্রলীগ ছয়দফা দাবি আদায়ে বাংলার একপ্রান্তে থেকে অন্যপ্রান্তে ঘুরে বেড়িয়েছিলেন। সেদিন ছাত্রলীগ রাজপথে স্লোগানের মাধ্যমে রাজপথ কাপিয়ে দিয়েছিল।
আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথেই হাঁটতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকেও শক্তিশালী করতে হবে। সারাদেশে ভোটারদের ঘরে ঘরে বিগত দিনে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন জনগণের সামনে তুলে ধরলে আওয়ামী লীগকে আবারো দেশের জনগণ ক্ষমতায় আনবে। নেতাকর্মীদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, নির্বাচন গনিয়ে আসলে নানা সড়যন্ত্র হতে পারে। কিন্তু আমাদের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে এধরনের সকল সড়যন্ত্র পতিহত করা যাবে। বিএনপির জানে নির্বাচনের মাধ্যমে তারা এ দেশের ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তাই তারা নানা ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় আসতে চায়। আবারো ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। তাদের এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হলে তৃণমূল থেকে দলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিহাদুল আলম নিহাদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ বিন জালাল প্লাবনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এমপি, সদস্য মারুফা আক্তার পপি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী, বীরমুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মো. মোজাফ্ফর হোসেন এমপি, বেগম হোসনে আরা এমপি, জামালপুর পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন ছানু ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলমসহ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।
সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদে খাবিরুল ইসলাম খান বাবু ও নাফিউল করিম রাব্বিকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়।