ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিতে শৃঙ্খলা ফেরানোর একমাত্র উপায় কি নেতাকর্মীদের বহিষ্কার?

প্রকাশ: ১২:০৭ পিএম, ০৯ এপ্রিল, ২০২২


Thumbnail বিএনপিতে শৃঙ্খলা ফেরানোর একমাত্র উপায় কি নেতাকর্মীদের বহিষ্কার?

মাঠের রাজনীতির বিরোধীদল বিএনপি। এই দলটি দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর ক্ষমতার বাইরে রয়েছে। নেতৃত্ব সংকট, দলীয় কোন্দলসহ নানা ধরনের সমস্যায় জর্জরিত দলটি। বারবার নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনের কথা বলেও সংগঠনের দৈনদশা তাদের সেই আন্দোলনে দিকে বেশি দূর এগোতে দেয়নি। সব সময়ই কোনো না কোনো কারণে তাদের নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনের বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে গেছে। নানা কর্মসূচিতে ব্যর্থতা এবং দলীয় তেমন কোনো কর্মসূচি না থাকায় দেশের মানুষও দলটিকে ভুলতে বসেছে। এই অবস্থায় বিএনপি তাদের দলে শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর অবস্থান নিচ্ছে বলে জানা গেছে। দৃঢ়তার সঙ্গে দলীয় শৃঙ্খলা ধরে রাখতে তারা কাজ শুরু করেছে। লন্ডনে পলাতক দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া এই এই বিষয়ে কাজ করছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। 

জানা গেছে, দলের শৃঙ্খলা ফেরাতে তারেক তার মা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অতিরিক্ত ক্ষমাসুলভ আচরণে লাগাম টানার কৌশল নিয়েছেন। গত এক বছরে সারা দেশে দল ও অঙ্গ সংগঠনের অর্ধ শতাধিক নেতা-কর্মীকে বহিষ্কারসহ নানা কারণে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বহিষ্কৃতদের অধিকাংশই দলীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থী কাজে জড়িত থাকার দায়ে বিএনপির গঠনতন্ত্রের ৫ (গ) ধারা মোতাবেক প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার হন বলে দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। স্থায়ী ও নির্বাহী কমিটির আরও পাঁচজন সদস্যকে খুব শিগগিরই সতর্ক করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।   

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় গণমাধ্যমকে বলেন, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া অনেক উদার। শত অপরাধ করলেও তিনি মাফ করে দিতেন। তবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ততটা উদার নন। যে কোনো মূল্যে তিনি দলের মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চান। সংশ্লিষ্ট নেতা-কর্মীদের মধ্যে সেই বার্তা দিতেই শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকান্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। 

জানা গেছে, কিছুদিনের মধ্যেই দলের স্থায়ী কমিটির দুজন সদস্য, নির্বাহী কমিটির দুজন ভাইস চেয়ারম্যান ও একজন যুগ্ম মহাসচিবকে নতুন করে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেবে দলীয় হাইকমান্ড। দর্শানো কারণ সন্তোষজনক না হলে তাদেরও পর্যায়ক্রমে বহিষ্কার করা হতে পারে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে সর্বশেষ গত বুধবার কারণ দর্শানো হয়- দলের অন্যতম ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদকে। কারণ তিনি দলীয় অনুমোদন ছাড়াই গত ২৭ মার্চ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সম্মিলিত পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। একই দিনে নেত্রকোনা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি আশরাফউদ্দিন খান, চাঁদপুরের ইঞ্জিনিয়ার মোমিনুল ইসলামসহ আরও কয়েকজনকে কারণ দর্শানো চিঠি প্রদানের মাধ্যমে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। সাবেক প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহছানুল হক মিলনকে পদাবনতি করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক থেকে সরিয়ে তাকে দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য করা হয়েছে। তবে বিএনপির ত্যাগী নেতাদের ওপর এসব বহিষ্কারাদেশ, শোকজ নোটিশ, দলীয় পদ-পদবি কেড়ে নেওয়া, পদাবনতি দেওয়া, আবার প্রত্যাহার করার বিষয়গুলো নিয়ে দলের ভিতরে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। 

অনেকে এসব কার্যক্রমকে দলের ভিতরের একটা গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষার্থে করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন। তারা এটাকে দল ধ্বংসের ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়ে বলেছেন, একে একে বিএনপির জনপ্রিয় ও ত্যাগী নেতাদের বেছে বেছে  দল থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে বিএনপির ভাঙন চূড়ান্ত ধাপে এসে পৌঁছেছে। আর এ ভাঙনের প্রক্রিয়া হিসেবেই বিভিন্ন এলাকার জনপ্রিয় নেতাদের বহিষ্কার করা হচ্ছে। খুলনার জনপ্রিয় নেতা নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে বহিষ্কার করার পর বহিষ্কার হন নারায়ণগঞ্জের তৈমূর আলম খন্দকার। আর সর্বশেষ বহিষ্কার হলেন সাবেক এমপি ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান। 

বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতার অভিযোগ, ‘বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার চেয়ে শেখ হাসিনার শাসনামল অনেক ভালো’, ‘বিএনপির কোনো ভিশন নেই’, ‘নেতাদের শরম হবে যখন কর্মীরা তাদের জুতাপেটা করবে’, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে ‘বেয়াদব’ বলে আখ্যায়িত করাসহ দলের জন্য অবমাননাকর এমন সব বক্তব্যের কারণে একাধিকবার দলের পক্ষ থেকে আখতারুজ্জামানকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়। কিন্তু তিনি তা না মানায়  শেষ পর্যন্ত দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে কারও কারও মতে, এসব বহিষ্কারের মধ্য দিয়ে দলের অভ্যন্তরীণ গ্রুপিং যেমন বেড়ে চলেছে, তেমনি ভাঙন প্রক্রিয়াও ত্বরান্বিত হচ্ছে।  

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে বলেন, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী যে-ই হন না কেন, তার বিরুদ্ধেই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় দলীয় শৃঙ্খলা ধরে রাখা যাবে না। জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপিতে প্রথম মতবিরোধ তীব্র আকার ধারণ করে নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে। এ প্রক্রিয়ায় অনেকে মনে করেছিলেন যে বিএনপির এতে অংশগ্রহণ করা উচিত ছিল। বিশেষ করে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার হোক বা না হোক, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠিত না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন অসম্ভব ব্যাপার। কিন্তু বিএনপি একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দল হিসেবে যে ভূমিকা, সে ভূমিকা পালনে অক্ষমতা প্রকাশ করে। যে কারণে তাদের এ ধরনের আচরণে বিএনপির মধ্যেও এক ধরনের অসন্তোষ তৈরি করেছে। যারাই সাংগঠনিকভাবে একটু বেশি জনপ্রিয় এবং দলের জন্য চিন্তিত, তাদেরই দল থেকে ছেঁটে ফেলা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে দলের ভিতরে ক্ষোভ-অসন্তোষ দানা বেধে উঠছে।   

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি এখন এমনিতেই একটি ভঙ্গুর রাজনৈতিক দল। এর মধ্যে দলীয় শৃঙ্খলার নাম করে দলের ত্যাগী নেতাদের বহিষ্কার দলটিকে আরও দুর্বল করে দিচ্ছে। এখানে দেখা যাচ্ছে আসলে বিএনপির মধ্যেই দুই ভাগ হয়ে গেছে। বেগম জিয়া অসুস্থ্য থাকায় তিনি এখন দলের বিষয়ে ততটা ওয়াকিবহাল না। এই সুযোগে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া বেগম জিয়ার অনুসারীদের এক এক করে বহিষ্কার করছেন। এর ফলে দলটি অবস্থা দিনের পর দিন আরও খারাপ হচ্ছে। আর এই বহিষ্কার রাজনীতিকে তারেক জিয়া নাম দিয়েছেন দলীয় শৃঙ্খলা। এখন দেখা যাক দলের নেতাকর্মীদের বহিষ্কার করে এই দলীয় শৃঙ্খলা কতটা শক্ত করতে পারেন তারেক জিয়া। 

বিএনপি   রাজনীতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করায় বিএনপির ৪৫ নেতাকে শোকজ

প্রকাশ: ১১:৩৯ এএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৪৫ নেতাকে শোকজ করে চিঠি দিয়েছে বিএনপি। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত চিঠিতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাদের শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ মে) দেওয়া চিঠির বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, যারা দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে তাদেরকে শোকজ দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কেন তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে না, তার জবাব দিতে বলা হয়েছে।

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে চার ধাপের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়া  প্রায় ৩০০ শতাধিক নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করে বিএনপি। তবে, বহিষ্কৃত অনেক নেতা নির্বাচনের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এই প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, অনেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। এই কারণে এখন পর্যন্ত কতজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে তার সংখ্যা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়।

প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কারণে বিএনপি ৮২ জন নেতাকর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করে। দ্বিতীয় ধাপে ৬৬ জনকে বহিষ্কার করে। আর তৃতীয় ধাপে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কারণে কতজনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে তার সঠিক সংখ্যাটি পাওয়া যায়নি।

গত ৮ মে প্রথম ধাপের নির্বাচনে বহিষ্কৃতদের মধ্যে সাতজন চেয়ারম্যান এবং তিনজন ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বলেও জানা গেছে।

জানা গেছে, তৃতীয় ধাপের ভোটে বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতা প্রার্থী হয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে এরইমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আর ৪৫ জনকে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। শোকজ নোটিশপ্রাপ্ত নেতার মধ্যে ১৮ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী। বাকি নেতারা ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন।


বিএনপি   শোকজ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

সরকারি খরচে হজে যাচ্ছেন বাম নেতা

প্রকাশ: ০৫:৪৫ পিএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

এ বছর সরকারি খরচে হজে যাচ্ছেন ৭১ জন। তাদের মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত সচিব, বর্তমান বিচারপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও সরকারি কর্মচারী রয়েছেন। তালিকায় প্রবীণ রাজনীতিক বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মো. মঞ্জুরুল আহসান খানের নাম রয়েছে।

সরকারের আর্থিক সহায়তায় হজ পালনে যাওয়া ব্যক্তিদের নামে ইতিমধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। তাতে বলা হয়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট পাওয়া সাপেক্ষে তারা আগামী ৬ জুন সৌদি আরব যাবেন। হজ শেষে তাদের দেশে ফেরার কথা আগামী ১০ জুলাই।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এতে সরকারের খরচ হবে প্রায় তিন কোটি টাকা।

এবার সরকারি খরচে হজে যাওয়া ব্যক্তিরা বিমানের টিকিট বাবদ ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা জমা দেবেন। এ ছাড়া প্রত্যেককে ৩৫ হাজার টাকা করে হজ অফিসে জমা দিতে হবে খাওয়া বাবদ।

উল্লেখ্য, শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের দায়ে চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি মনজুরুল আহসান খানকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) উপদেষ্টার পদ থেকে স্থায়ী অব্যাহতি দেওয়া হয়।

সরকারি খরচ   হজ   মঞ্জুরুল আহসান খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

যুক্তরাষ্ট্র-বিএনপির সম্পর্কে দূরত্ব কেন?

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে এসেছেন। আজ তিনি আওয়ামী লীগের বেসরকারি বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে নৈশভোজে মিলিত হবেন। এছাড়াও তিনি সরকারের জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশ মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। সুশীল সমাজের সঙ্গে বৈঠক করবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সৌজন্য সাক্ষাতেরও কথা রয়েছে। আর এই সফর সূচিতে বিএনপির সঙ্গে তাদের কোনো বৈঠক নেই। বিএনপি এখন ডোনাল্ড লু কে নিয়ে সুর পাল্টেছে, ভিন্ন সুরে কথা বলছেন।  


বিএনপি নেতারা বলছেন, ডোনাল্ড লু’র ব্যাপারে তাদের কোন আগ্রহ নেই। এই সফর নিয়েও তারা উৎসাহি নয়। কিন্তু এর আগে যখন ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন তখন বিএনপির উত্তেজনা এবং আগ্রহ কেউ চাপিয়ে রাখতে পারেনি। বরং বিএনপির নেতারা এ নিয়ে তাদের আনন্দ অনুভূতি প্রকাশ্যে উচ্চারণ করেছিলেন। সেই সময় বিএনপি নেতারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে হটিয়ে দিবে এমন প্রত্যাশায় বিভোর ছিল। কিন্তু বাস্তবে সেটি হয়নি। এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কের এক ধরনের ফাটল লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সঙ্গেও বিএনপি নেতাদেরকে মাত্র দু’টি সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে দেখা গেছে। 

আফরিন আখতার বাংলাদেশের সফরে এলে বিএনপি নেতারা ওয়েস্টিন হোটেলে একটি বৈঠক করেন৷ তবে সেই বৈঠক ইতিবাচক ছিল না। তাছাড়া এখন মার্কিন রাষ্ট্রদূতের পক্ষ থেকেও বিএনপির সঙ্গে আগের মতো আর যোগাযোগ করা হয় না। তাহলে কি বিএনপি-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ফাটল ধরেছে? বিএনপির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দূরত্ব তৈরি করতে চাইছে?

এরকম প্রশ্নের উত্তরে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, নানা কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আর এটি বোঝার কারণেই বিএনপি এখন নিজেদেরকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবমুক্ত হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করছে। 

অন্যদিকে বিএনপির কোন কোন নেতা মনে করছেন যে, ৭ জানুয়ারি নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আসলে আওয়ামী লীগের পক্ষেই কাজ করেছে এবং বিএনপি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতির কারণে প্রতারিত হয়েছে। 

বিএনপির নেতা গোলাম মাওলা রনি বিভিন্ন টকশোতে বলছেন, ‘মার্কিন রাষ্ট্রদূত আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেছেন বিএনপি তা বুঝতে পারেননি।’ আর এ ধরনের বক্তব্য এখন বিএনপির প্রায় সব নেতাই করছেন।

বিএনপির বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনার জন্য ভারতের পক্ষে কাজ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যদিও কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা এই ধরনের বক্তব্যের কোনো যৌক্তিকতা পায়নি। তবে বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিএনপির যে একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে তা সহজেই অনুমান করা যায়। এই দূরত্বের কারণ একাধিক। 


১.  ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ না করা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চেয়েছিল ৭ জানুয়ারি নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হোক এবং এই নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দলগুলো অংশগ্রহণ করে। বিএনপিকে যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য অনুরোধও জানিয়েছিলো। কিন্তু বিএনপি তাদের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে। নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্র ক্ষমতার পালাবদলের অন্য কোন উপায় নেই। বিএনপির এই নির্বাচনে না যাওয়াটাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একপ্রকার হতাশা হিসেবে দেখছে। 

২. বিএনপির নেতৃত্বশূন্যতা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির ওপর কিছুটা বিরক্ত বলেও কূটনৈতিক মহল আভাস দিয়েছেন। কারণ তাদের সিদ্ধান্ত দেওয়ার মতো কোন নেতা নেই। বিএনপির কাছে যখন কোন সিদ্ধান্ত জানতে চাওয়া হয় তখন বিএনপি নেতারা তাৎক্ষণিকভাবে কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন না। দলে যারা ক্রিয়াশীল এবং যারা কাজ করছেন তারা কেউই বিএনপির নেতৃত্বের মধ্যে নেই। আর একারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির উপর আস্থা রাখতে পারছে না।

আরও পড়ুন: স্ত্রীকে নিয়ে সিঙ্গাপুর গেলেন মির্জা আব্বাস 

৩. জামায়াতের সাথে সম্পর্ক: তারা আবার স্বাধীনতা বিরোধী, উগ্র মৌলবাদি দলের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করছে। এ বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের নজরে এসেছে আর তাই তারা এখন বিএনপির ব্যাপারে তেমন একটা আগ্রহী নয়।


বিএনপি   লু   যুক্তরাষ্ট্র  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপি নেতানিয়াহুর দোসরে পরিণত হয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশ: ০২:১৮ পিএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের পক্ষে না দাঁড়িয়ে বিএনপি ইসরায়েলের দোসরে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

মঙ্গলবার (১৪ মে) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ ও বিএনপির দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে এক মানববন্ধন ও সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ফিলিস্তিনের পক্ষে না দাঁড়িয়ে ইসরায়েলের দোসরে পরিণত হয়েছে, নেতানিয়াহুর দোসরে পরিণত হয়েছে। ইসরায়েলের এজেন্টদের সঙ্গে মিলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। আমাদের কাছে তথ্য প্রমাণ আছে। এদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে।

তিনি বলেন, পুরো পৃথিবী এই বর্বরতার প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি বিএনপি ও জামায়াত, যারা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করে, এই মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিরুদ্ধে একটা শব্দও উচ্চারণ করেনি। কারণ কেউ অসন্তুষ্ট হতে পারে। গত নির্বাচনে তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ার পর ইসরায়েলি লবিস্টদের সঙ্গে মিলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। 

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে কিছু ইসলামী দল আছে, তারা কারণে-অকারণে বায়তুল মোকাররমের দাঁড়িয়ে যান। আপনারা কোথায় এখন? আপনাদের কেন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নির্বাচনের আগে সরকার নামানোর জন্য বায়তুল মোকাররমের সামনে এসে আন্দোলন করেন, কই ফিলিস্তিনি ভাইদের পক্ষে, ইসরায়েলের বিপক্ষে তো একটা বড় মিছিল করতে দেখলাম না।

সামাজিক মাধ্যমে সরকারের সমালোচনাকারীদের নিয়ে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেককেই দেখি সরকারের বিরুদ্ধে বড় বড় ভাষণ দেয়, সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে। নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে তাদের কথা বলতে তো শুনলাম না। এরা কোথায়? এরা কোথায় লুকিয়ে আছে? এরা আসলে ইসলাম প্রেমী নয়, এরা হলো মুখোশধারী ধর্ম ব্যবসায়ী। এদের মুখোশও উন্মোচন করতে হবে।

এরপর ফিলিস্তিনি মানুষদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ইসরায়েলি বর্বরতার কারণে যারা নিহিত হয়েছেন তাদের মাগফেরাত কামনা করি। যারা আহত হয়েছেন তাদের প্রতি সহানুভূতি জানাই। বাংলাদেশের মানুষের অবস্থান সবসময় মুক্তিকামী মানুষের পক্ষে ছিল। আমাদের নীতি ফিলিস্তিনি মুক্তিকামী মানুষের পক্ষে।


বিএনপি   নেতানিয়াহু   দোসর   হাছান মাহমুদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

স্ত্রীকে নিয়ে সিঙ্গাপুর গেলেন মির্জা আব্বাস

প্রকাশ: ০১:৪৫ পিএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও তার স্ত্রী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়েছেন। 

মঙ্গলবার (১৪ মে) সকালে হযতর শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে সিঙ্গাপুর যান তারা। 

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান গণমাধ্যমকে জানান, মঙ্গলবার সকালে মির্জা আব্বাস ও তার স্ত্রী আফরোজা দুইজনই চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গিয়েছেন। চিকিৎসা শেষে তারা কবে দেশে ফিরবেন সেটা এখনি বলতে পারছেন না তিনি। 


সিঙ্গাপুর   মির্জা আব্বাস   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন