উদ্ধোধনের অপেক্ষায় বাঙালির স্বপ্নের বহুমুখী পদ্মা সেতু। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতুর শুভ উদ্ধোধন করবেন। প্রস্তুতিও চলছে জোরেসোরে। দিন যত ঘনিয়ে আসছে বাঙালির আবেগও উচ্ছ্বসিত হচ্ছে সেতুকে ঘিরে। সঙ্গে বাড়ছে নিত্য নতুন ষড়যন্ত্রের ডালপালা। এই বাংলায় পদ্মা সেতু হবে না, সেতু করা সম্ভব না এই রকম নানা কথাবার্তা দিয়ে নানা রকম ষড়যন্ত্র হয়েছে অতীতে। সাম্প্রতিক সময়ে পদ্ম সেতু নিয়ে আবার নতুন করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বিএনপি। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্ধোধন করেছিলেন। অন্যদিকে লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়াও সাম্প্রতিক লন্ডনের এক আলোচনা একই দাবি করেন। তিনি দাবি করেন, ২০০৫ সালে খালেদা জিয়া প্রথম পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্ধোধন করেন। আজকের এই পদ্মা সেতু তারই ধারাবাহিকতার সফল বলে তিনি দাবি করেন। যা নিত্যান্ত একটি ডাহা মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়।
বেগম খালেদা জিয়ার পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্ধোধন করেছিলেন এ ব্যাপারে পদ্মা সেতুর ইতিবৃত্ত বলছে ভিন্ন কথা। পদ্মা সেতুর নথিপত্র ঘেটে দেখা গেছে যে, বাংলাদেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীসহ পূর্বাঞ্চলের একটি উন্নত ও নিরবচ্ছিন্ন সড়ক ও রেল যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে পদ্মা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের প্রথম মেয়াদে ১৯৯৯ সালে একটি প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের মধ্য দিয়ে এ প্রক্রিয়া শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে জাপান সরকারের সহায়তায় ২০০৫ সালে পদ্মা সেতুর সম্ভাব্যতা যাচাই সমাপ্ত হলে প্রকল্পটি কারিগরি ও অর্থনৈতিক দিক থেকে গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হয়। তবে এরই মধ্যে জননেত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারের প্রথম মেয়াদের শেষ দিকে ৪ জুলাই ২০০১-এ মাওয়ায় সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি ক্ষমতাসীন হলে পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে নেয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এ প্রকল্পকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে ঘোষণা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র-নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘মনসেল-এইকম’কে ডিজাইন পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ করা হয়। প্রকল্পের অর্থায়নের জন্য বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ১ হাজার ২০০ মিলিয়ন, এডিপির সঙ্গে ৬১৫ মিলিয়ন ও জাইকার সঙ্গে ৪৩০ মিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সঙ্গেও ১৪০ মিলিয়ন ডলার ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এর ইতিবাচক প্রভাব নিয়ে বিএনপি বেশ উদ্বিগ্ন। এই উদ্বিগ্নতা দলটিকে কুড়েঁ কুড়েঁ খাচ্ছে। কারণ পদ্মা সেতু উদ্ধোধন হয়ে গেলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ টি জেলার মানুষের রোষানলে পড়বে বিএনপি। এই পদ্মা সেতু ওই অঞ্চলের মানুষদের ভাগ্য পরিবর্তন করার সাথে সাথে তাদের আর্থ-সামাজিক অবন্থার ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ফলে এসমস্ত অঞ্চলে বিএনপির যা ভোটার আছে সেগুলো হারানো শঙ্কা করছে দলটি। দলটি চাইচ্ছে দেশের জনগণের দৃষ্টি পদ্মা সেতু থেকে অন্যদিকে ঘুরাতে। যেকারণে পদ্মা সেতু নিয়ে দলটি এখন আবার নতুন করে মিথ্যাচার শুরু করেছে। বিএনপি জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চাইচ্ছে। দলটির মহাসচিরের কথা মতে যদি পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর বেগম খালেদা জিয়ার প্রথম উদ্ধোধন করে থাকেন তাহলে দলটি এই তথ্য আগে কেন দিল না বলে প্রশ্ন তুলেছে বিশ্লেষকরা। তাহলে বেগম জিয়াই বা কেন বলেছিলেন যে, এই বাংলায় পদ্মা সেতু করা সম্ভব নয়, পদ্মা সেতু হবে না। পদ্মা সেতু নিয়ে বাংলার প্রায় ১৭ কোটি মানুষ যখন উচ্ছ্বসিত তখন দলটি জনগণকে বিভ্রান্ত করতে এমন ডাহা মিথ্যাচার করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এ ধরনের মিথ্যাচার দিয়ে দলটি আবার পদ্মা সেতু নিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত।
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
আজিজ আহমেদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসলে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদীর দিকে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান বলেও আম আদমি পার্টির এই নেতা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আর এই বক্তব্য নিয়েই বিএনপির মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির নেতারা শুধু ইউটিউবেই এটি রিপোস্ট করেনি, তারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারেও এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ভারত বিরোধী প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভারতের সমালোচনা করা এবং ভারত এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে এমন বক্তব্য বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল। যদিও ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বার্তা দিয়েছেন। ভারতের অন্য একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসও আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান সরকারের সমর্থক। বিজেপি গত এক দশকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এরকম অবস্থায় ভারতের নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যত্যয় হবে না বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
এর মধ্যে আম আদমি পার্টির বক্তব্য নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস নিয়ে অনেকেই নানারকম টীকা-টিপ্পনি কেটেছেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, এর আগে যখন কংগ্রেসকে হারিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন তখনও বিএনপির মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি নেতারা মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। তাদের ধারণা ছিল যে, কংগ্রেস চলে গেলেই আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, বিজেপির সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এখন কেজরিওয়ালের নির্বাচনের মাঠের বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপি আশায় বুক বেঁধে আছে। মুখে মুখে ভারত বিরোধীতা করলেও ভারতের অনুগত এবং ভারতের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য বিএনপি কম চেষ্টা করেনি।
আর এখনও বিএনপি যে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় তার প্রমাণ পাওয়া গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্যকে নিজেদের দলের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেন যে, একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক বক্তব্য, আর ক্ষমতায় এসে তার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড- দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেউলিয়া রাজনীতির কারণে বিএনপি সবসময় অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে কেজরিওয়ালের বক্তব্য বিএনপির ইউটিউবে ছাড়ার মধ্য দিয়ে সেই দেউলিয়াত্ব আরেকবার প্রকাশিত হল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অরবিন্দ কেজরিওয়াল রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
কিছুদিন আগেও বিএনপি যুক্তরাষ্ট্র বলতে অন্ধ থাকত। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে ফোন আসলে বিএনপির নেতারা নাওয়া খাওয়া ভুলে ছুটে যেতেন। এমনকি কোনদিন সকালে মার্কিন দূতাবাসে প্রাতরাশ, রাতে নৈশভোজেও দেখা গেছে বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তারা অবতার হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশে গণতন্ত্র এনে দেবে, যুক্তরাষ্ট্রই এই সরকারের পতন ঘটাবে এমন একটা স্থির বিশ্বাস ছিল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। কিন্তু বিএনপির মধ্যে সেই মোহভঙ্গ ঘটেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনাগ্রহী বিএনপি। এটা যেন অনেকটা আঙুল ফল টকের মতো ঘটনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইতোমধ্যে তিনি একটি হ্যাটট্রিক করেছেন। টানা তিন তিনবার আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র যিনি আওয়ামী লীগের তিনবার বা তার বেশি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এখন ওবায়দুল কাদেরও আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। এবার তিনি আরেক রকম হ্যাটট্রিক করলেন।
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।