বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে জনগণের পকেটের টাকা কেটে নিয়ে জনপ্রশাসনের লোকদের বেতন, সুযোগসুবিধা বাড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, এবারের বাজেটে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে জনপ্রশাসনে। ওদের বেতন বাড়াচ্ছে, বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বাড়াচ্ছে। জনগণের পকেট থেকে টাকা কেটে তাদের এটা বাড়াচ্ছে।
শুক্রবার (১০ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই দেশের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা এতটুকু বাড়েনি। সরকার অনেক বড় বড় কথা বলে। জিডিপি বেড়েছে, পার ক্যাপিটা আয় বেড়েছে। কার আয় বেড়েছে? আজকে বাজেটে দেখবেন সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে জনপ্রশাসনে। জনপ্রশাসন কী? জনপ্রশাসন হচ্ছে পুলিশ। জনপ্রশাসন হলো-ম্যাজিস্ট্রেট, ডিসি, ইউএনও। ওদের বেতন বাড়াচ্ছে, বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বাড়াচ্ছে। জনগণের পকেট থেকে টাকা কেটে তাদের এটা বাড়াচ্ছে।
তিনি বলেন, আজকে কিসের জন্য এই সভা। যখন মানুষ চাল-ডাল-তেল-লবন কিনতে হিমশিম খাচ্ছে ওই সময় আবার মরার ওপর খড়ার ঘা হিসেবে গ্যাসের দাম ২২ শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছে। তার অর্থ এই সরকারের মানুষের প্রতি কোনো ভালোবাসা নেই। এরপরে কালকে আবার বাজেট দিয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে এই সরকার একটা অনির্বাচিত সরকার। জনগণের বাজেট দেওয়ার তাদের কোনো এখতিয়ার নাই। গত ১৫বছরে যে দুঃশাসন সেই দুঃশাসনে তারা প্রমাণ করেছে তারা বাংলাদেশের মানুষের শত্রু। এরা এখন গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে। আমরা বাজেটের অনেক কিছু বুঝি না। সাধারণ মানুষ দেখে কোনটার দাম কমলো, কোনটার দাম বাড়ল। বাস ভাড়া বাড়লো কি না। বাসে উঠবেন বলবে গ্যাসের দাম বেড়ে গেছে। চুলা প্রতি দামতো বাড়বেই। সারের দাম তিনগুন বাড়বে। শিল্প কারখানার গ্যাসের দাম বাড়বে। তাহলে প্রত্যেকটা জিনিসের দাম এইভাবে বাড়বে।
বাজেটে লুণ্ঠনকারীদের সাহায্য করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, যারা টাকা চুরি করলো, ডাকাতি করলো, লুণ্ঠন করলো, পিকে হালদারের মতো বিদেশে পাচার করলো। তারা ৭ শতাংশ ট্যাক্স দিয়ে টাকা ফেরত আনতে পারবে এবং কেউ প্রশ্ন করতে পারবে না। হাইকোর্ট থেকেও প্রশ্ন করা যাবে না। আমি এখন কি বলবো? যারা বাজেট দিলো তারা কি সাধারণ মানুষের সরকার নাকি লুটেরা চোর ডাকাতদের সরকার?
এদিকে বলে উন্নয়ন, এত উন্নয়ন যে সোনা দিয়ে মুড়ে দিচ্ছে। আমাদের রুমিন ফারহানা বৃহস্পতিবার ভালো বলেছেন, পদ্মা ব্রিজ হলো গোল্ডেন ব্রিজ। সোনা দিয়ে মোড়ানো ব্রিজ। আমরা যখন ছাত্র আন্দোলন করতাম তখন বিভিন্ন রকম স্লোগান দিতাম। তখন তেলের দাম দশ টাকা বাড়লে বড় ব্যাপার ছিল। তখন আমরা বলতাম দশ টাকার তেল খেয়ে স্বর্গে যাবো। এখন বলতে চাই টোল দিয়ে পদ্মা ব্রিজ দিয়ে আমরা স্বর্গে যাবো।
জনগণের জন্য এই সরকারের ভালোবাসা নেই দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে আওয়ামী লীগের উন্নয়নে কি হয়েছে? শতকরা ৪২ ভাগ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে চলে গেছে। অর্থাৎ ১০০ জনের মধ্যে ৪২ জন হলেন দরিদ্র। ক্রয় ক্ষমতা নাই। সেই মানুষগুলোর জন্য এই বাজেটে বা আগের বাজেটে কিছুই করেনি।
পুলিশের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি আশা করবো পুলিশ ভাইদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। আপনারা আওয়ামী লীগকে মিটিং মিছিল করতে দেন, আমাদেরকেও মিটিং মিছিল করতে দিতে হবে। আর যদি বাধার সৃষ্টি করেন তাহলে জনগণ আর সেই বাধা মানবে না। আপনারা মানুষের ওপর অন্যায় অত্যাচার করবেন না। বিনা কারণে মানুষকে তুলে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করবেন না। তাহলে একদিন না একদিন আপনাদের জবাবদিহী করতেই হবে।
সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, অন্যথায় এই দেশের জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না। আপনারা পালাবারও পথ পাবেন না।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশ পরিচালনা করেন মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু।
এর আগে দলীয় নেতাকর্মীরা সকাল ৯টা থেকে রাজধানীর বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হন। তারা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে নানা স্লোগান দেন।
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নাশকতা মামলা বিএনপি ইশরাক হোসেন
মন্তব্য করুন
‘ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?
রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত ২ নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।
রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
‘ব্যাংক মাফিয়া মাস্তান ঋণখেলাপি
মন্তব্য করুন
সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।
তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি যেন কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। নির্বাচন পরবর্তী কোন্দল বন্ধে বিভিন্ন রকম উদ্যোগও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই একাধিক বার দলীয় কোন্দল বন্ধের জন্য তাগাদা দিয়েছেন। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। বরং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাংগঠনিক অবস্থা রীতিমতো ভেঙে পড়েছে। এই কোন্দল এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন বা অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই। দলের এই কোন্দল এতদিন তৃণমূল পর্যায় থাকলেও সেটি এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও শুরু হয়েছে।