ইনসাইড পলিটিক্স

ঢাকা উত্তর বিএনপিতে পদত্যাগের মহোৎসব!

প্রকাশ: ০৮:০৫ পিএম, ২১ ডিসেম্বর, ২০২২


Thumbnail

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ওয়ার্ড কমিটি গঠনে পদ বাণিজ্য এবং আঞ্চলিক সম্পর্ককে প্রাধান্য দেওয়ার অভিযোগে  অন্তত এক ডজন নেতা পদত্যাগ করেছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজ নিজ আইডি থেকে পদত্যাগের বিষয়টি পোস্ট করেছেন পদত্যাগকারীরা।

সম্প্রতি ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ১০ ওয়ার্ডে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। সংগঠনের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ্ আমান ও সদস্য সচিব আমিনুল হক এ কমিটির অনুমোদন দেন।  

এর মধ্যে রয়েছে রূপনগর থানার ৬নং আঞ্চলিক ওয়ার্ড, শাহআলী থানার ৮ ও ৯৩নং ওয়ার্ড, কাফরুল থানার ৪নং ওয়ার্ড, আদাবর থানার ৩০ ও ১০০নং ওয়ার্ড, মোহাম্মদপুর থানার ৩১, ৩২, ও ৩৩নং ওয়ার্ড এবং বনানী থানার ১৯নং ওয়ার্ড।

এই কমিটি ঘোষণা করার পর থেকেই উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে মোহাম্মদপুর থানার ৩৩নং ওয়ার্ডের অন্তত এক ডজন নেতা পদত্যাগ করেছেন।  

অভিযোগ রয়েছে, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ওয়ার্ড কমিটি ঘিরে এলাকাপ্রীতি এবং পদ-বাণিজ্য হয়েছে। যাদের বাড়ি ভোলা তারা কাউন্সিলে পাস করেছেন। আবার যারা অর্থ দিচ্ছেন তারাও কমিটিতে জায়গা পাচ্ছেন।  

এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় বিএনপি নেতারা ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান এবং সদস্য সচিব আমিনুল হকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। পদত্যাগের মহোৎসব থামানোর জন্য আমিনুল হক হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।  

৩৩নং ওয়ার্ড বিএনপির নবগঠিত কমিটির যারা পদত্যাগ করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন- শামসুর রহমান শাহীন-২নং-সহসভাপতি, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ৩৩নং ওয়ার্ড বিএনপি; মো. জাহাঙ্গীর-সহসভাপতি, সাবেক সহ-হকার্স কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদপুর  থানা বিএনপি; মো. কফিল উদ্দিন কফিল- কোষাধ্যক্ষ, সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ৩৩নং ওয়ার্ড বিএনপি; মো. সালাউদ্দিন মৃধা-স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক; মো. কামাল- সহকোষাধ্যক্ষ, সাবেক সহ-প্রচার বিষয়ক সম্পাদক; মো. সোহাগ- সহ দপ্তরবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সদস্য আহ্বায়ক কমিটি; মো. লোকমান- সহ স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সদস্য ৩৩নং ওয়ার্ড বিএনপি; মো. ইউসুফ- সদস্য ও সাবেক সদস্য ৩৩নং ওয়ার্ড বিএনপি, সাবেক সভাপতি ইউনিট বিএনপি; মো. মনির হোসেন পালোয়ান সদস্য ও সাবেক সদস্য ৩৩নং ওয়ার্ড বিএনপি আহ্বায়ক কমিটি।  

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ১০০নং ওয়ার্ড বিএনপির অন্তত আরও দুই ডজন নেতা পদত্যাগ করবেন।

অভিযোগ রয়েছে, অর্থ লেনদেনের বিনিময়ে অযোগ্যদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে। কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িত 'শীর্ষ সন্ত্রাসী কিলার' বাদলের সহযোগী মোল্লা কাউসারকে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে।  

বিভিন্ন ইউনিট থেকে অন্তত ১৫ জনকে এনে ওয়ার্ডের সদস্য করা হয়েছে। যদিও ইউনিটের কারো ওয়ার্ডে আসার সুযোগ নেই।

 ৩২নং ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. বিল্লাল হোসেনকে একই ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে। মোহাম্মদপুর থানা কৃষকদলের সহ-সভাপতি ফজলুর রহমান ভিকুকে ৩৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য করা হয়েছে। মোহাম্মদপুর থানা বিএনপির সাবেক সহ-হকার্স কল্যাণ সম্পাদককে ৩৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি বানানো হয়েছে। অথচ নিয়ম করা হয়েছে থানা কমিটির কেউ ওয়ার্ড কমিটিতে আসতে পারবে না।

 ৩৩নং ওয়ার্ড বিএনপির কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক পদে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া শাওন আহমেদ স্বপনকে পূর্ণাঙ্গ কমিটির কোথাও রাখা হয়নি। সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বীকারী হাজী মো. মোস্তফাকেও কোনো পদে রাখা হয়নি।  

৩৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সদ্য সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক কফিল উদ্দীন কফিলকে অবমূল্যায়ন করে নতুন কমিটিতে ক্যাশিয়ার বানানো হয়েছে। ৩৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সদ্য সাবেক ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক কারা নির্যাতিত রজ্জব আলী সুমনকে অবমূল্যায়ন করে নতুন কমিটিতে সহ-সম্পাদক করা হয়েছে। সাবেক সাংগঠনিক জহির হোসেন শাকিলকেও কোনো পদে রাখা হয়নি।

এছাড়া ৩০নং ওয়ার্ড বিএনপির কমিটিতে কারা নির্যাতিত নেতা সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হাসান জীবনের অনুসারী কাউকে কোনো পদে রাখা হয়নি। এই ওয়ার্ড এর কমিটি গঠিত হয়েছে বর্তমান আওয়ামী লীগ থেকে মনোয়নপ্রাপ্ত কমিশনার আবুল কাশেমের ছোট ভাই বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আমেরিকা ফেরত স্বাধীনের নির্দেশে। অভিযোগ আছে আহ্বায়ক কমিটিতে বিশাল অংকের টাকার বিনিময়ে রাজনীতির মাঠে সম্পূর্ণ নিস্ক্রিয় স্বাধীনকে ১নং যুগ্ম আহবায়ক করা হয়।

 ৩১নং ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আহসান উল্লাহ শহীদের অনুসারী কাউকে কোনো পদে রাখা হয়নি। ৩৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ফয়সাল ভূইয়া সোহেল, সভাপতি পদপ্রার্থী খাইরুল বাশার মুক্তি ও মহানগর বিএনপির সদস্য হাজী ইউসুফের অনুসারীদের কমিটিতে রাখা হয়নি। ২৯নং ওয়ার্ড এর সাবেক কাউন্সিলর পদপ্রার্থী লিটন মাহমুদ বাবু, সাবেক সাধারণ আব্দুল কাদেরের অনুসারীদের কাউকে কমিটিতে রাখা হয়নি।

হাউজিং ব্যবসায়ী ও সাবেক সভাপতি এম এস আহমাদ আলী এবং বর্তমান সভাপতি মান্নান হোসেনের নির্দেশে ৩৩নং ওয়ার্ড কমিটি গঠিত হয়েছে। এছাড়া ২৯নং ওয়ার্ড কমিটি গঠিত হয়েছে মোহাম্মদপুর থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. এনায়েতুল হাফিজের নির্দেশে। ওয়ার্ডের অন্যান্য সিনিয়র নেতাদের মতামতকে উপেক্ষা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।  

 ৩৪নং ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠিত হয়েছে ঢাকা-১৩ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি সাদেক খানের ভাতিজা, মোহাম্মদপুর থানা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক, বর্তমানে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি, বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী মাসুম খান রাজেশের নির্দেশে। এই ওয়ার্ডের কমিটি গঠনের বেলায় কাউন্সিলে সর্বোচ্চ দ্বিতীয় ভোট প্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থীদেরও অবমূল্যায়ন করা হয়েছে।

৩১নং ওয়ার্ড কমিটি গঠিত হয়েছে শীর্ষ সন্ত্রাসী কারাবন্দি পিচ্চি হেলাল ও তার অনুসারী কমিশনার রাজু হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামী সদ্য জেল থেকে মুক্তি প্রাপ্ত পাপ্পুর নির্দেশে। পাপ্পুকে বিভিন্ন সমাবেশে দেখা গিয়েছে ৮০-৯০টি মোটর সাইকেল দিয়ে প্রটোকল দিতে ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুলকে। বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতাদের হুমকি সহ ৩৩নং ওয়ার্ডের এক সম্পাদকের গায়ে হাত তোলার অভিযোগ আছে এই পাপ্পুর বিরুদ্ধে।

এতসব অভিযোগের বিষয়ে ২৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের বলেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ওয়ার্ড সম্মেলন ঘিরে এলাকা প্রীতি এবং পদ বাণিজ্য হয়েছে। যাদের বাড়ি ভোলা তাদের চাল চুলা কিছু না থাকলেও তারা কাউন্সিলে পাস করেছেন। কারণ মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হকের বাড়ি ভোলায়। আবার যারা অর্থ দিয়েছেন তারাও কমিটিতে জায়গা পাচ্ছেন।  

পদত্যাগকারী শামসুর রহমান শাহীন বলেন, ত্যাগী কর্মীদের মূল্যায়ন না করার কারণেই আমরা পদত্যাগ করেছি। আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিব হয়তো মনে করেন আমাদেরকে মোহাম্মদপুরে দরকার নেই, এজন্য অবমূল্যায়ন করেছেন। যাদেরকে কমিটিতে রাখা হয়েছে তাদের মধ্যে অধিকাংশ নতুন মুখ। শুনেছি কমিটিকে কেন্দ্র করে অর্থ লেনদেন হয়েছে। অনেকে পয়সার বিনিময়ে পদ পেয়েছেন।  

১৪ টি মামলার আসামি শামসুর রহমান শাহীন। তাদের গ্রুপ থেকে চারজন এবং আরেকটি গ্রুপ থেকে ৮জনসহ মোট ১২ জন পদত্যাগ করেছেন।

জানতে চাইলে আরেকজন পদত্যাগকারী মোহাম্মদ কফিল উদ্দিন কফিল বলেন, রাজপথের ত্যাগী পরীক্ষিত নেতাদেরকে বাদ দিয়ে নতুন লোক দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। অন্যান্য ইউনিট থেকে লোক এনে এখানে পদায়ন করা হয়েছে। দলের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার জন্য বিভিন্ন চাপের কারণে দীর্ঘদিন পর্যন্ত বাড়ির বাইরে থাকতে হয়েছে। এমনকি ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ করার পর থেকে এখন পর্যন্ত বাড়ির বাইরে রয়েছে। পূর্বের কমিটিতে যে পদে ছিলাম সেখান থেকে ডিমোশন কিভাবে দিচ্ছে! আপনি কমিটিতে রাখতে না পারলে বাদ দিয়ে দেবেন, কিন্তু অবমূল্যায়নতো করতে পারেন না। যাদের টাকা-পয়সা রয়েছে তারা ভালো পদ পেয়েছেন। আমার টাকা থাকলে হয়তো আমিও ভালো পদে যেতে পারতাম। যাদের কখনো আন্দোলন, সংগ্রাম ও রাজপথে দেখিনি তাদেরকে এনে কমিটিতে বসানো হয়েছে। ত্যাগী নেতাদের অবমূল্যায়ণ করার কারণে আমিসহ আরো অনেকেই গণপদত্যাগ করেছি।

ঢাকা উত্তর বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। লোক মারফতে শুনতে পেরেছি। অনেকে হয়তো তাদের কাঙ্ক্ষিত পদ-পদবী না পাওয়ার কারণে অসন্তুষ্ট হয়ে পদত্যাগ করতে পারেন।  

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক বলেন, কারা পদত্যাগ করেছে কিংবা কেন করেছে এমন কোনো তথ্য এখনো আমাদের কাছে আসেনি। কোনো অভিযোগ পাইনি। এরপরও যদি কেউ পদত্যাগ করে থাকে, আমাদের লিখিতভাবে জানায় তাহলে আমরা কারণ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করে দেখব।  

কমিটিতে প্রভাব ও অর্থ লেনদেনে জড়িত থাকা কিংবা তার ওপর অসন্তষের বিষয়ে জানতে চাইলে আমিনুল হক বলেন, অভিযোগ রাজনীতির বড় একটি অংশ। আমার বিরুদ্ধে যারা অভিযোগ করেছে এটা সত্য নয়। যে বা যারা করেছে এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট।

এর আগে গত ২ জুলাই ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির মোহাম্মদপুর থানার ৫ টি ওয়ার্ড ২৯, ৩১, ৩২,৩৩ ও ৩৪ কমিটির সন্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনে কমিটি গঠনে পদ বাণিজ্য এবং আঞ্চলিক সম্পর্ককে প্রাধান্য দেয়ার অভিযোগ উঠে। এসময় বিক্ষুব্ধ একটা গ্রুপ প্রতিপক্ষের উপর হামলা চালিয়ে মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান এবং সদস্য সচিব আমিনুল হককে লাঞ্ছিত করে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের কয়েকজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

ঢাকা উত্তর বিএনপি   পদত্যাগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ডোনাল্ড লু’র ঢাকা সফর: যা বললেন আওয়ামী লীগ-বিএনপির শীর্ষ নেতারা

প্রকাশ: ১১:০০ পিএম, ১৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু আগামীকাল মঙ্গলবার ঢাকায় আসছেন। এ সফরে তিনি ব্যবসা-বিনিয়োগ, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন, নাগরিক অধিকারসহ দুই দেশের অগ্রাধিকারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে আলোচনা করবেন বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গত বছর ডোনাল্ড লু’র সফর ছিল বেশ আলোচনায়। সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন করা বিএনপি বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠেছিল। ভোট হয়ে যাওয়ার চার মাস পর যুক্তরাষ্ট্রের এই সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবার ঢাকায় আসছেন। রাজনৈতিক অঙ্গনে তাঁর ঢাকা সফর নিয়ে বেশ আলোচনা হলেও ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে লু’র সফর নিয়ে যেভাবে বিভিন্ন ধরনের গুঞ্জন বা আতঙ্কের কথা শোনা গিয়েছিল এবার সেটি হচ্ছে না। কিন্তু তারপরও তাঁর ঢাকা সফর নিয়ে কথা বলেছেন আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে কথা বাহাস লক্ষ্য করা গেছে।


লু’র ঢাকা সফর নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কে আসলো আর কে গেলো তা নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় নেই। যদিও নির্বাচনের আগে লু’র ঢাকা সফর নিয়ে সবচেয়ে বেশি উচ্ছ্বসিত ছিল বিএনপির নেতারা। তবে এবার দলটির মহাসচিব সুর পাল্টে বলছেন, ‘কে আসলো আর কে গেলো তা নিয়ে মাথাঘামানোর সময় নেই। তিনি বলছেন তার দলের প্রধান শক্তি হলো জনগণ।’

লু’র ঢাকায় আসাটা গুরুত্বপূর্ণ নয় উল্লেখ্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র আসা-না আসায় কিছু যায়-আসে না। লু তো অনেক দূরের কথা। আমরা শঙ্কিত দেশের অবস্থা নিয়ে। 


এদিকে লু’র এবারের সফর দুই দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে মনে করছে আওয়ামী লীগ। দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ডোনাল্ড লু বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে কথাবার্তা বলবেন। দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক এগিয়ে নিতে তিনি আসবেন। বিএনপি মনে করেছে, আবার নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেবে কি না। এই ধরনের উদ্ভট চিন্তা করছে। এ রকম উদ্ভট চিন্তা তারা আগেও করেছিল।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিদেশিদের কাছে বারবার ধরর্না দিয়ে কোনো কিছুই করতে পারেনি বিএনপি। এজন্য লু’র ঢাকা সফর নিয়ে প্রকাশ্যে উচ্ছ্বাস দেখাচ্ছেনা বিএনপি। দেশে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হওয়া এবং বর্তমান সরকারের সাথে কাজ করার ঘোষণা দেওয়ায় বিএনপির মোহভঙ্গ হয়েছে। তাই প্রকাশ্যে লু’র সফর নিয়ে উচ্ছ্বাস দেখাচ্ছে না বিএনপির নেতারা।



ডোনাল্ড লু   আওয়ামী লীগ   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

কারামুক্ত হলেন বিএনপি নেতা হাবিব উন নবী সোহেল

প্রকাশ: ০৯:৩৩ পিএম, ১৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

জামিনে কেরাণীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল।

সোমবার (১৩ মে) সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জ থেকে মুক্তি লাভ করেন তিনি। এ সময় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরসহ বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেন।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, মুক্তি পাওয়ার পর তিনি নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান। 
এর আগে গত ৩১ মার্চ আদালতে জামিন নিতে গেলে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয় সোহেলকে।

বিএনপি   হাবিব উন নবী সোহেল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ইইউ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক

প্রকাশ: ০৯:২৮ পিএম, ১৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি নেতারা। সোমবার (১৩ মে) দুপুরে ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির সঙ্গে তার গুলশানস্থ বাসভবনে এ বৈঠক হয়।

বৈঠকে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ এবং ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

তবে বৈঠকের বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

ইইউ রাষ্ট্রদূত   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

চীন সফরে ৯ বাম নেতা

প্রকাশ: ০৮:৫২ পিএম, ১৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

চীন সফরে গেছেন ক্ষমতাসীন ১৪ দলের শরিক দল জাসদ, ওর্য়ার্কাস পার্টি ও সাম্যবাদী দলের নয় সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল।

সোমবার (১৩ মে) বিকেল ৩টায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চায়না ইস্টার্নের একটি বিমানে চীনের কুংমিংয়ের উদ্দেশে যাত্রা করেন তারা। বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত প্রতিনিধি দলকে বিদায় জানান। এ সময় জাসদের দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেনও উপস্থিত ছিলেন।
 
সফরে যাওয়া বাম নেতারা হলেন- ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাম্যবাদী দলের সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, জাসদের কার্যকারী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল আলম, জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহম্মদ মোহসীন, ওয়ার্কার্স পার্টির নারী নেত্রী লুৎফুন্নেছা খান, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য মোস্তফা লুৎফুল্লাহ, সাম্যবাদী দলের অধ্যাপক তৃপ্তি বড়ুয়া ও হ মোশাহিদ প্রমুখ।
 
জানা গেছে, সফরকালে বাম নেতারা কুনমিংয়ে ইউনান একাডেমি অব এগ্রিকালচার সাইন্স একাডেমি, কেপিসি ফার্মাসিউটিক্যালস পরিদর্শন করবেন। নেতারা রুট (ওয়েলিন কমিউনিটি) লেভেলে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি কার্যক্রম সম্পর্কে জানবেন। এছাড়া প্রতিনিধি দলটি চীনা কমিউনিস্ট পার্টি, ইউনান প্রদেশের সরকারের বৈদেশিক শাখার প্রধানসহ অন্যদের সঙ্গে পরিবর্তিত বিশ্বপরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় অংশ নেবেন। সফর শেষে আগামী ১৮ মে দেশে ফেরার কথা প্রতিনিধি দলটির।

চীন সফর   বাম দল   জাসদ   ওর্য়ার্কাস পার্টি   সাম্যবাদী দল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

দলে শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

অবশেষে আর ছাড় নয়, আওয়ামী লীগ তাঁর দলের শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্রগুলো বলছে, দলের ভেতর যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে, দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করছে এবং দলের ভেতরের কোন্দল করছে তাদেরকে আর ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে এবং এই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে কোন্দলরত এলাকাগুলোতে কমিটি বাতিল করে দেওয়া হবে। যারা কোন্দলের সঙ্গে জড়িত তাদেরকে আহ্বায়ক কমিটিতে রাখা হবে না। 

একই সাথে যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে আত্মীয় স্বজনদেরকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের প্রার্থিতা পর্যালোচনা করা হবে এবং তারা এলাকায় কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য এ ধরনের কর্মকাণ্ড করেছেন কি না সেটি যাচাই বাছাই করা হবে। যাচাই বাছাই শেষে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে তাদেরকে স্থানীয় পর্যায়ের কমিটিগুলো থেকে বাদ দেওয়া হবে এবং ভবিষ্যতে তাদের বিরুদ্ধে আরও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আপাতত আওয়ামী লীগ কোন্দল কমানোর জন্য যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তা হল কমিটি বিলুপ্ত করা এবং কমিটি থেকে বাদ দেওয়া। 

এ বছরের ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর থেকেই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলে আসছিলেন যে দলের ভেতর যারা নির্বাচন কেন্দ্রিক করেছেন সেই কোন্দল যেন অবিলম্বে বন্ধ করা হয় এবং যা হয়েছে সেটা ভুলে গিয়ে মিলে মিশে সকলে মিলে যেন কাজ করে। কিন্তু বাস্তবে আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা মান্য করেনি অধিকাংশ নেতা কর্মীরা। বরং নির্বাচনের পর কর্তৃত্ব দখলের লড়াই আরও জাঁকিয়ে বসে। বিশেষ করে যে সমস্ত নির্বাচনী এলাকাগুলোতে স্বতন্ত্রদের সাথে আওয়ামী লীগের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছিল, সে সমস্ত এলাকাগুলোতে সংঘাত সহিংসতার ঘটনা আরও বেড়ে যায়। এরকম পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি সবাইকে সতর্কবার্তা দেন। কিন্তু তারপরও এই বিরোধ মিটছে না। এখন আওয়ামী লীগ অ্যাকশনে যাচ্ছে। 

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, বিবদমান এলাকাগুলোকে চিহ্নিত করার জন্য এবং সেই সমস্ত এলাকায় কারা দায়ী তাদেরকে শনাক্ত করার জন্য সাংগঠনিক সম্পাদকদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সাংগঠনিক সম্পাদকরা এই বিষয়টি নিয়ে খতিয়ে দেখছে। 

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলছেন, আগামী ২৩ জুন আওয়ামী লীগের ৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এবার ৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আওয়ামী লীগ অনেক জামজমকপূর্ণ ভাবে ঘটা করে করতে চায়। এ জন্য প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে। এরপপর যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছেন, দলের অবস্থানের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

উপজেলা নির্বাচনগুলোতেও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে, দলের ভেতর যেন স্বজনরা প্রার্থী না হন। কিন্তু তারপরও যারা এই সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছেন তাদের কমিটি থেকে বাদ দেওয়া বলে আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।


শৃঙ্খলা   আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন