শেষ পর্যন্ত দূরত্ব কমিয়ে রাজধানী ঢাকার নয়াপল্টন থেকে মগবাজার মোড় পর্যন্ত গণমিছিল করবে বিএনপি। শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে এই গণমিছিল করার কর্মসূচি অগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। আড়াই কিলোমিটার দূরত্বের এই পথের বিভিন্ন স্থান থেকে গণমিছিলে যুক্ত হবেন বিএনপিসহ ১৩টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা। এ ছাড়া এলডিপি ও জামায়াতে ইসলামী আলাদা এবং তিনটি পৃথক জোটও ছয়টি স্থান থেকে গণমিছিল করবে বলে জানিয়েছে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র।
বিএনপিসহ অন্যান্য দল ও জোটের নেতারা জানিয়েছেন, তাঁরা আজ শান্তিপূর্ণভাবে গণমিছিলের কর্মসূচি সম্পন্ন করতে চান। যুগপৎ আন্দোলনের এই কর্মসূচি থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। রাজবন্দীদের মুক্তি এবং দেশব্যাপী বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা ও গায়েবি’ মামলা করার বিরুদ্ধে ‘প্রতিবাদী গণ-অবস্থান’ কর্মসূচি দেওয়া হতে পারে। আগামী ১১ জানুয়ারি ঢাকাসহ সব বিভাগীয় শহরে একযোগে এ কর্মসূচি পালন করা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।
বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, পুলিশ প্রশাসনের অনুরোধে শেষ মুহূর্তে গণমিছিলের দূরত্ব কমানো হয়েছে। বিএনপি নয়াপল্টন থেকে কাকরাইল, শান্তিনগর, মালিবাগ, মগবাজার হয়ে বাংলামোটর পর্যন্ত গণমিছিল করতে চেয়েছিল। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার বিএনপিকে মগবাজার চৌরাস্তা পর্যন্ত গণমিছিল করতে বলেছেন।
বিএনপি সূত্র জানায়, মূল দলসহ সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনকে আজকের গণমিছিলের স্থান নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। জুমার নামাজের পর বেলা আড়াইটায় রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নেতা-কর্মীরা জমায়েত হবেন। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের পর নয়াপল্টন থেকে গণমিছিল শুরু হয়ে কাকরাইল, শান্তিনগর, মালিবাগ হয়ে মগবাজার মোড়ে গিয়ে শেষ হবে। দলের জ্যেষ্ঠ নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন গণমিছিল-পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য দেবেন।
দলের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, গণমিছিলের জন্য ফকিরাপুল-দৈনিক বাংলা সড়ক থেকে নাইটিঙ্গেল পর্যন্ত কে কোন জায়গায় থাকবেন, সেটি মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপিসহ ১৩টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনকে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে মূল মঞ্চে থাকবেন স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা।
বিএনপির সূত্র জানায়, গণমিছিলের সম্মুখে থাকবে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল। তাদের নাইটিঙ্গেল মোড়ে থাকতে বলা হয়েছে। মিছিলে মহিলা দলের পর থাকবে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি। এরপর নয়াপল্টনের ভিআইপি সড়কের ঢাকা ব্যাংকের সামনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, আনন্দ ভবনের সামনে কৃষক দল, হকস বে’র সামনে স্বেচ্ছাসেবক দল, ভিক্টরি হোটেলের সামনে পেশাজীবী ও মুক্তিযোদ্ধা দল, কড়াই গোশত রেস্টুরেন্টের সামনে যুবদল, চায়না টাউন মার্কেটের সামনে ঢাকা জেলা বিএনপি, জোনাকি সিনেমা হলের সামনে শ্রমিক দল, পল্টন থানার বিপরীত পাশে মৎস্যজীবী দল, তাঁতি দল, ওলামা দল এবং জাসাস থাকবে। এ ছাড়া ফকিরাপুল থেকে দৈনিক বাংলা মোড় পর্যন্ত সড়কে থাকতে বলা হয়েছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপিকে। প্রতিটি স্থানের জন্য বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সুনির্দিষ্ট করে দায়িত্ব বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
গণমিছিলের ট্রাকে থাকবেন স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও শাহজাহান ওমর, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত।
২৪ ডিসেম্বর বিএনপিসহ জোটের দলগুলো সব বিভাগীয় ও জেলা সদরে গণমিছিল করেছে। ঢাকায়ও ওই দিন গণমিছিল করার কথা ছিল। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সম্মেলনের কারণে ওই দিনের ঢাকার কর্মসূচি পিছিয়ে আজ ৩০ ডিসেম্বর করা হয়। একই দিন রংপুর মহানগরেও গণমিছিল হবে। তবে ২৪ ডিসেম্বর সারা দেশে বিএনপি ও জামায়াত কর্মসূচি পালন করলেও অন্যান্য দলকে সেভাবে দেখা যায়নি। কার্যত ঢাকায় আজই সরকারবিরোধী সব দল ও জোট যুগপৎ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে।
বিএনপির কাছাকাছি সময়ে ১২-দলীয় জোট বিজয়নগর পানির ট্যাংক, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট বেলা তিনটায় জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে শাপলা চত্বর পর্যন্ত, এলডিপি এফডিসি-সংলগ্ন দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মগবাজার হয়ে মালিবাগ পর্যন্ত মিছিল বের করবে। এ ছাড়া দলের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা পৃথক মিছিল বের করবে বলে জানিয়েছে জামায়াত।
গতকাল জামায়াত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, তারা জাতীয় বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর পাশ থেকে বেলা সাড়ে তিনটায় গণমিছিলের অনুমতি চেয়ে ডিএমপি কমিশনার বরাবর এক দফা অনলাইনে আবেদন করার পর গতকাল সকালে আবার লিখিত আবেদনপত্র জমা দিয়েছে। জামায়াতের তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল ডিএমপি কার্যালয়ে গিয়ে আবেদনপত্র জমা দেয়। প্রতিনিধিদলে ছিলেন গোলাম রহমান, জালাল উদ্দিন ও সাইফুর রহমান। তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং দলের আইনজীবী শাখার দায়িত্বে রয়েছেন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বাতিল, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনসহ ১০ দফা দাবিতে বিএনপিসহ সমমনা ৩২টি রাজনৈতিক দল যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ঢাকায় এ গণমিছিল করছে। ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গোলাপবাগে বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে বিএনপি এ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিল।
এ বিষয়ে গতকাল ঠাকুরগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি করলে কোনো আপত্তি নেই। যদি বিএনপি ভাঙচুর করে, অগ্নিসংযোগ করে, রাস্তায় ব্যারিকেড দেয় এবং রাস্তায় বসে অবরোধ করে, তাহলে নিরাপত্তা বাহিনী বসে থাকবে না, নিরাপত্তা বাহিনী তাদের কাজ করবে।’
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ দুর্নীতির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে দেশে ফিরে আসতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘বেনজীর আহমেদ যদি দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয় তাহলে তাকে দেশে ফিরে আসতেই হবে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বেনজীর যেখানেই থাকুক, আইন নিজস্ব গতিতে চলবে। বিচার হবেই, একদিন না একদিন তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।’ বেনজীর ইস্যুতে যদি অন্য কারও গাফিলতি থাকে তবে তাদেরও বিচার হবে বলে জানান তিনি।
রোববার (২ জুন) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বেনজীর আহমেদের বিষয়টি দুদক তদন্ত করছে। এটা একটা প্রক্রিয়া। সরকার আগবাড়িয়ে কিছু করতে পারে না।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মানি লন্ডারিংয়ের কথা বলতে হলে তারেক রহমানের কথা আগে বলতে হবে। তারেক দণ্ডিত হয়ে পাচারকৃত টাকা দিয়ে বিদেশে বসে আয়েশি জীবনযাপন করছে।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, বেনজীর আহমেদ যে এত অন্যায় করল তখন গণমাধ্যম কী করতেছিল। সাংবাদিকরা একটা সংবাদও প্রচার করল না কেন?
মন্তব্য করুন
২৩ জুন দেশের প্রাচীন ও বৃহত্তম রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। প্রতিষ্ঠার ৭৫ বছর-‘প্লাটিনাম জয়ন্তী’ উদযাপন করবে দলটি।শনিবার (১ জুন) রাতে এক সংবাদ বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
দলের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের মানুষের ভালোবাসা ও আকাঙ্ক্ষাকে ধারন করেই আওয়ামী লীগ পথ চলেছে এবং ভবিষ্যতেও চলবে। গত সাড়ে সাত দশক ধরে আওয়ামী লীগের পথচলা ছিল গৌরবোজ্জ্বল।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে স্বাধীনতা সংগ্রামের পথ ধরে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়। এদেশের মানুষের যা কিছু মহৎ অর্জন তা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই অর্জিত হয়েছে। কালের বিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আজ ডিজিটাল বাংলাদেশের পথ পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বাপ্নিক অভিযাত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। দীর্ঘ সাফল্য-সংগ্রামের পথ ধরে সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।
প্লাটিনাম জয়ন্তী উপলক্ষ্যে ১০ দফা কর্মসূচি
১. ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ আয়োজন। এতে বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এবং নাগরিক সমাজ ও পেশাজীবীদের আমন্ত্রণ।
২. দলের সব সাংগঠনিক শাখায় বছরব্যাপী উপযোগী কর্মসূচি গ্রহণ। তৃণমূলের কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণ।
৩. রাজধানীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও আনন্দ র্যালির আয়োজন। একইসঙ্গে সকল দলীয় কার্যালয় ও স্থাপনায় আলোকসজ্জা, আনন্দ র্যালি, সভা-সমাবেশ, সেমিনার ও আলোচনা সভা আয়োজন।
৪. সারাদেশে এতিমখানা ও হাসপাতালে এবং কর্মজীবী, গরীব, অসহায় ও দুস্থ মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ।।
৫. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা এবং পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আয়োজন।
৬. ক্রোড়পত্র, বিশেষ স্মরণিকা ও গ্রন্থ প্রকাশ এবং পোস্টার, ব্যানার ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী। বিশেষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপযোগী পোস্টার, ব্যানার ও ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট প্রচার
৭. বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন।
৮. ডকুমেন্টারি ও চিত্র প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন উপযোগী কর্মসূচি গ্রহণ।
৯. দলের সর্বস্তরের প্রবীণ নেতাদের সম্মাননা প্রদান।
১০. প্লাটিনাম জয়ন্তী উপলক্ষ্যে ‘সবুজ ধরিত্রী’ কর্মসূচি গ্রহণ।
বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জেলা/মহানগর, উপজেলা/থানা, পৌর, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডসহ সকল শাখাসমূহে কর্মসূচি গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের জন্য সাংগঠনিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন ওবায়দুল কাদের।
প্লাটিনাম জয়ন্তী আওয়ামী লীগ কর্মসূচি
মন্তব্য করুন
সামাজিকভাবে বিয়ের স্বীকৃতি ও স্ত্রীর মর্যাদা দাবি করতে গিয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সহসভাপতির কাছে মারধরের শিকার হয়েছেন এক তরুণী। তার ভাষ্য, ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠনের ওই নেতা তাকে বিয়ে করেছেন এবং জোর করে গর্ভপাত ঘটিয়েছেন। অভিযোগকারী তরুণী ইডেন কলেজের ছাত্রলীগ
নেত্রী। তবে বন্ধুত্বের বাইরে অন্য কোনো সম্পর্ক নেই দাবি করে শাহাদাত বলছেন, তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগই ভিত্তিহীন। বন্ধুত্বের বাইরে তাদের আর কোনো সম্পর্ক ছিল না; বরং অনেক দিন ধরে তাকেই মানহানিসহ নানা ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, শাহাদাতের প্রতারণা ও নির্যাতনের অভিযোগ তুলে এর প্রতিকার চেয়ে গত ২৪ মে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে লিখিত অভিযোগ করেন ওই তরুণী। এতে বলা হয়, ফুয়াদ হোসেন শাহাদাতের সঙ্গে তার ১০ বছরের সম্পর্ক। এই দীর্ঘ সময়ে তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া নানা ধরনের অন্যায়ের বিষয়ে তিনি গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে অবহিত করেন। ওবায়দুল কাদের বিষয়টি মীমাংসার জন্য ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে দায়িত্ব দেন। সে অনুযায়ী গত ৫ এপ্রিল মীমাংসার সময় নির্ধারণ করা হয়।
কিন্তু এর দুদিন আগে পারিবারিকভাবে সমাধানের কথা বলে শাহাদাত তাকে বাসায় ডেকে নিয়ে যান। ভুক্তভোগী তরুণীর দাবি, বাসায় যাওয়ার পর সমাধানের পরিবর্তে শাহাদাত তাকে এলোপাতাড়ি লাথি মারে এবং গুরুতর জখম করে। নিরুপায় হয়ে তিনি ৯৯৯-এ কল করেন। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। সেখান থেকে বেরিয়ে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফকে বিষয়টি জানান। পরে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন। এ ঘটনায় তিনি মানসিক ও শারীরিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন।
অভিযোগপত্রে ওই তরুণী বলেন, ‘আমি সামাজিকভাবে স্বীকৃতি চাওয়ার পর থেকেই শাহাদাত আমার পরিবারের সবার নামে মামলা দেওয়া এবং বিভিন্নভাবে ক্ষতি করার হুমকি দেয়। এমনকি আমাকে প্রতিনিয়ত প্রাণনাশের হুমকি প্রদান ও আমার মান-সম্মান যাতে না থাকে, সেই ব্যবস্থা করার হুমকি দেয়। তাই তার এসব কার্যকলাপে আমি আতঙ্কিত। ২০১৬ সালে মুসলিম আইন অনুসারে আমাদের বিয়ে হয় এবং সব ডকুমেন্ট নিজের কাছে আটকে রাখে। পরে তা অস্বীকার করে।’
বিষয়টি নিয়ে গত ২৬ মে হাজারীবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী। এতে বলা হয়, ‘ফুয়াদ হোসেন শাহাদাত আমার স্বামী। তার সঙ্গে আমার বিয়ে হয় ২০১৬ সালে। পারিবারিক কলহের পর সে গত ১৮ মে আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে কল করে মেরে ফেলার হুমকি দেয় এবং মিথ্যা মামলা দেবে বলে হুমকি প্রদান করেছে।’ এর আগে গত বছরের ৩ নভেম্বর একই থানায় ওই তরুণীর বিরুদ্ধে ফুয়াদ হোসেন শাহাদাত একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন।
চলতি বছরের এপ্রিলে শাহবাগ থানায় করা আরেকটি জিডিতে তিনি (ফুয়াদ হোসেন শাহাদাত) উল্লেখ করেন, গত ৩ এপ্রিল ওই তরুণী হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে কল দিয়ে শাহাদাতকে বলেন, তার (তরুণী) কথা যদি শাহাদাত না শোনেন এবং কথামতো যদি কাজ না করেন, তাহলে তিনি তার কণ্ঠ নকল করে এআই বা অ্যাপের মাধ্যমে অপ্রীতিকর মন্তব্য ছোট ছোট অডিও ক্লিপ বানিয়ে সবার কাছে পাঠাবেন। কণ্ঠ ক্লোন করে এসব ক্লিপ বানানো হবে গুরুত্বপূর্ণ মানুষকে নিয়ে, যাতে প্রয়োগ করা হবে খারাপ ও অশ্লীল শব্দ।’
সার্বিক বিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, ‘গত ২৪ মে এ বিষয়ে আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে সাংগঠনিক ব্যস্ততা থাকায় এ নিয়ে কাজ করতে পারিনি। শিগগির আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব এবং তদন্তসাপেক্ষে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
মন্তব্য করুন
সরকার পতনের এক দাবি আদায়ের আন্দোলন ব্যর্থ হলেও হাল ছাড়েনি রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। বরং নির্বাচনের পরও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করেছে দলটি। এখনও প্রতিনিয়ত সরকারের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করছেন দলের নেতারা। শিগগিরই সরকারের পতন হবে বলেও বক্তব্য রাখছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। দলটি আবার নতুন করে আন্দোলন শুরু করবে বলেও দাবি নেতাকর্মীদের। ইতোমধ্যে সমমনাদের সঙ্গে আলোচনাও শুরু করেছে বিএনপি। গত মে ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপির লিয়াজো কমিটি। কিন্তু বিএনপি যখন আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ঠিক সে সময় আন্দোলনের মাঠ ছেড়ে বিদেশে অবস্থান করছেন দলটির দুই ডজনের বেশি কেন্দ্রীয় নেতা। ফলে সরকারবিরোধী আন্দোলনে কেন্দ্রীয় নেতাদের ভূমিকা নিয়েই নানা প্রশ্ন উঠেছে।
সামাজিকভাবে বিয়ের স্বীকৃতি ও স্ত্রীর মর্যাদা দাবি করতে গিয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সহসভাপতির কাছে মারধরের শিকার হয়েছেন এক তরুণী। তার ভাষ্য, ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠনের ওই নেতা তাকে বিয়ে করেছেন এবং জোর করে গর্ভপাত ঘটিয়েছেন। অভিযোগকারী তরুণী ইডেন কলেজের ছাত্রলীগ নেত্রী। তবে বন্ধুত্বের বাইরে অন্য কোনো সম্পর্ক নেই দাবি করে শাহাদাত বলছেন, তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগই ভিত্তিহীন। বন্ধুত্বের বাইরে তাদের আর কোনো সম্পর্ক ছিল না; বরং অনেক দিন ধরে তাকেই মানহানিসহ নানা ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।