ইনসাইড পলিটিক্স

কী হলো জাতীয় পার্টির?

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩


Thumbnail

জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ এবং উপনেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। কিন্তু এই বিরোধী দলীয় নেতা ইস্যুকে কেন্দ্র করে ফের আলোচনায় জাতীয় পার্টি। বলা হয়ে থাকে, জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ কোন্দল যখনই বাড়বে বা রাজনীতিতে জাতীয় পার্টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠবে, বুঝতে হবে তখনই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসছে। সংসদীয় গণতন্ত্রে বিরোধী দলের ভূমিকা অনেক। কিন্তু বাংলাদেশের সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে দশম সংসদে জাতীয় পার্টি দেখিয়েছে, কী করে 'বিরোধী দল' হতে হয়। আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরেও ফের আলোচনায় আসছে জাতীয় পার্টি। এখন প্রশ্ন ওঠেছে আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদে ফের কি বিরোধী দল হচ্ছে জাতীয় পার্টি?  

জানা গেছে, এবার জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ কোন্দল শুরু হয়েছে সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ইস্যুকে কেন্দ্র করে। সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ। কিন্তু এই চেয়ারে বসতে চান তার দেবর, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের সংক্ষেপে জিএম কাদের। এই নিয়েই অভ্যন্তরীণ কোন্দল দিন দিন ঘণীভূত হচ্ছে। ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর জাপা থেকে বহিষ্কৃত জিয়াউল হক মৃধা জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে এক মামলা করেন। বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ অক্টোবর ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদেরের যাবতীয় দলীয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞার অস্থায়ী আদেশ দেন। 

পরে চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা কেটে যায় গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরের। নিম্ন আদালতের রায় স্থগিত করে হাইকোর্ট। বিচারপতি মুহাম্মদ আব্দুল হাফিজের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ  নিম্ন আদালতের রায় স্থগিত করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদেরের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের পথ প্রসস্থ করেন। সেই সঙ্গে নিম্ন আদালতের এই রায় কেন চূড়ান্তভাবে বাতিল করা হবেনা, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেন হাইকোর্ট। 

তবে আগামী দিনের রাজনীতিতে জাতীয় পার্টির ভূমিকা কী হবে; বিশেষ করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জোট গঠন ও ভাঙনে এই দলটি কী করবে, তা নিয়ে এখনই আলোচনা শুরু হয়েছে। তাই এই দলটির একটি অংশ অর্থাৎ দলটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন অনুসারীরা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাথে জোটে থাকতে পারেন এবং অপরদিকে জিএম কাদেরের অনুসারীরা বিএনপি অথবা সরকার বিরোধী জোটে যেতে পারেন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। 

জানা গেছে, দলটির রওশনপন্থী নেতা মসিউর রহমন রাঙ্গা জাতীয় পার্টি থেকে এখনও বহিষ্কৃত রয়েছেন। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে চেয়ারম্যান জিএম কাদের ২০২২ সালের ১৪ সেপ্টম্বর তাকে বহিষ্কার করেন। মসিউর রহমান রাঙ্গা জি এম কাদেরসহ চার জনের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় বলা হয়, ২০২২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর জিএম কাদের অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধাকেও জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার করেন, যা সম্পূর্ণ অবৈধ। মামলার বিবরণীতে বলা হয়, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। এরপর বিবাদী জি এম কাদের হাইকোর্ট বিভাগের একটি রিট মামলা বিচারাধীন থাকার পরও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ওই বছরের ২৮ ডিসেম্বর কাউন্সিল করে নিজেকে চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন।

সূত্র জানায়, ১৯৮৬ সালে গঠিত জাতীয় পার্টি এখন ৪ ভাগে বিভক্ত। এরশাদের নেতৃত্বে ছিল মূল দল (প্রতীক লাঙল, নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন নম্বর ১২)। তার মৃত্যুর পরে মূল দলের নেতৃত্ব নিয়েই এখন দেবর-ভাবির লড়াই। আবার এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশাকেও বেশ সক্রিয় বলে মনে হচ্ছে। রাস্তার পাশে তার ছবি সম্বলিত পোস্টারও চোখে পড়ে। সাবেক স্বামী এরশাদকে নিয়ে যিনি লিখেছিলেন দুটি আলোচিত বই, 'শত্রুর সঙ্গে বসবাস' ও 'স্বৈরাচারের প্রেমপত্র'।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি জাতীয় পার্টির ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনায় বিদিশা বলেছিলেন, 'জাতীয় পার্টিতে চমকের পর চমক আসবে।' কয়েক মাস পরেই তার সন্তান এরিকের বয়স ২১ হবে উল্লেখ করে বিদিশা বলেন, ভুলে গেলে চলবে না, এরশাদ সাহেব সেনা পরিবারের একজন সদস্য ছিলেন। তিনি ছিলেন সেনাবাহিনীর প্রধান। এরিক আজ একা না। এরিকের সঙ্গে সেনাবাহিনীর চৌকস অফিসার এবং এরশাদকে যারা ভালোবাসে, তারা আছে। উল্লেখ্য, এরশাদের সঙ্গে বিয়ের পর বিদিশা জাতীয় পার্টিতে পদ পেলেও বিচ্ছেদের পর তাকে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়। এরশাদের মৃত্যুর পরে তিনি তার পুত্রকে নিয়ে ফের জাতীয় পার্টিতে সক্রিয় হতে চাইছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা জানান, এরশাদের জীবদ্দশাতেই দলটি ৪ ভাগে ভাগ হয়েছে। মূল দলের বাইরেও রয়েছে জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা ও মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি- জেপি (প্রতীক বাইসাইকেল, নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন নম্বর ২); নাজিউর রহমান মঞ্জুরের নেতৃত্বে গঠিত বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি (প্রতীক গরুর গাড়ি, নিবন্ধন নং ১৮), যার বর্তমান সভাপতি আন্দালিব রহমান পার্থ; এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টি নেতা কাজী জাফর আহমদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (প্রতীক কাঁঠাল, নিবন্ধন নং ২৮), যার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ডা. এম এ মুকিত। এইচ এম এরশাদ জীবিত থাকাকালেই জাতীয় পার্টির ভেতরে নানারকম সংকট দানা বাঁধছিল, যা তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে আরও তীব্র হয়েছে। সবশেষ কোন্দাল বেঁধেছে সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ইস্যুকে কেন্দ্র করে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের জুলাইয়ে জাতীয় পার্টির নেতা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পরে ওই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর তার স্ত্রী রওশন এরশাদ এবং ছোট ভাই জি এম কাদের ২ জনই নিজেকে দলটির চেয়ারম্যান বলে ঘোষণা দেন। এরশাদের মৃত্যুর পর থেকে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছিলেন জি এম কাদের। উপরন্তু এই সময়ে তারা ২ জনই সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা হতে চেয়ে স্পিকারের কাছে চিঠি দেন। তখন রওশন ও কাদেরের মধ্যে একটা সমঝোতা হয় যে, রওশন হবেন বিরোধী দলীয় নেতা আর জি এম কাদের হবেন বিরোধী দলীয় উপনেতা ও দলের চেয়ারম্যান। ওই বছরের ২৭ ডিসেম্বর দলীয় কাউন্সিলে ৩ বছরের জন্য দলের চেয়ারম্যান হন জি এম কাদের।

কিন্তু সম্প্রতি জি এম কাদেরকে বিরোধী দলীয় নেতা বানানোর জন্য দলের সংসদীয় বোর্ড স্পিকারকে চিঠি দেয়। শুধু তাই নয়, তাকে বিরোধী দলীয় নেতা না বানালে জাতীয় পার্টির এমপিরা সংসদে যাবেন না বলেও হুমকি দেন। তবে ২০২২ সালের ৩১ অক্টোবর জানা যায়, স্পিকারের আশ্বাসে তারা সংসদে যাচ্ছেন। বিদিশার ভাষায় এটিও হয়তো 'চমক'। কিন্তু এখানেই কি শেষ?

গণমাধ্যমের খবর বলছে, ২০২২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে দলীয় মনোনয়ন বাণিজ্য করে অবৈধ অর্থ আদায়ের যে অভিযোগ এনেছেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক মো. ইদ্রিস আলী, সেটি তদন্ত ক‌রে ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে আদেশ দি‌য়ে‌ছেন হাইকোর্ট। আরেকটি খবরে বলা হয়, এরশাদের সই জাল করে জি এম কাদেরের পার্টির চেয়ারম্যান হওয়ার অভিযোগ তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদের মুখপাত্র কাজী মামুনুর রশীদের বরাতে খবরে বলা হয়, জি এম কাদের এখন আর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান নন। সারাদেশে পার্টির তৃণমূল নেতাকর্মীদের করা ৫-৬টি মামলার আদেশ বা নির্দেশে জাপার চেয়ারম্যান হিসেবে তার (জি এম কাদের) রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে; বিশেষ করে জি এম কাদের যে গুরুতর অপরাধ করেছেন (এরশাদের সই জাল করে) তাতে তিনি আর জাপার চেয়ারম্যান পদে থাকতে পারেন না।

রওশনের মুখপাত্রের দাবি অনুযায়ী জি এম কাদের এখন আর দলের চেয়ারম্যান নন। তাহলে চেয়ারম্যান কে? কাউন্সিলের আগে কাউকে নতুন চেয়ারম্যান বলা যায়? অথবা চেয়ারম্যানকে অব্যাহতি দিয়ে কাউকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কি করা হয়েছে? হয়নি। কারণ জাতীয় পার্টি এমন একটি দল যে এখানে যেকোনো সময় যেকোনো সিনিয়র নেতা যেকোনো কিছু বলতে পারেন এবং এই দলে যেকোনো সময় যেকোনো কিছু ঘটতে পারে। 

জাতীয় পার্টির মূল দলে এখন কমিটি ৩টি। জি এম কাদের বর্তমানে পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা; সাবেক স্ত্রী বিদিশা নিজেকে পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা দিয়ে আরেকটি কমিটি করেছেন; আবার সম্প্রতি রওশন এরশাদ নিজেকে আহ্বায়ক করে ৮ সদস্যের আরেকটি কমিটি ঘোষণা করেছেন। এই কমিটি ২০০২ সালের ২৬ নভেম্বর দলের দশম জাতীয় কাউন্সিল ডেকেছে। আবার রওশন এরশাদের এই আহ্বায়ক কমিটিকে সমর্থন দিয়েছে বিদিশার কমিটি। এরকম অদ্ভুত ঘটনাকে 'চমক' বলাই বোধ হয় শ্রেয়।

যেদিন রওশন এরশাদের এই কমিটি ঘোষণা করা হয়, সেই রাতেই দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের এই কমিটি গঠনকে সম্পূর্ণ অবৈধ, অনৈতিক ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থী বলে দাবি করেন। পরে জাতীয় পার্টির ২৬ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ২৪ জনের সম্মতি নিয়ে জি এম কাদেরকে সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা করার প্রস্তাব করা হয় এবং জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে চিঠি দেওয়া হয়। ওই চিঠিতে সই করেননি কেবল রওশন এরশাদ ও তার ছেলে সংসদ সদস্য সাদ এরশাদ। তার মানে এখন এটা স্পষ্ট যে, জাতীয় পার্টির সংসদ সদ্যদের মধ্যে রওশন ও সাদ বাদে সকলেই জি এম কাদেরের পক্ষে আছেন। তবে যেহেতু দলটির নাম জাতীয় পার্টি, ফলে এটিও হয়তো শেষ কথা নয়।


একাদশ   জাতীয় সংসদ   বিরোধী দল   জাতীয় পার্টি   অভ্যন্তরীণ কোন্দল   নেতা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ডোনাল্ড লু’র ঢাকা সফর: যা বললেন আওয়ামী লীগ-বিএনপির শীর্ষ নেতারা

প্রকাশ: ১১:০০ পিএম, ১৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু আগামীকাল মঙ্গলবার ঢাকায় আসছেন। এ সফরে তিনি ব্যবসা-বিনিয়োগ, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন, নাগরিক অধিকারসহ দুই দেশের অগ্রাধিকারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে আলোচনা করবেন বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গত বছর ডোনাল্ড লু’র সফর ছিল বেশ আলোচনায়। সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন করা বিএনপি বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠেছিল। ভোট হয়ে যাওয়ার চার মাস পর যুক্তরাষ্ট্রের এই সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবার ঢাকায় আসছেন। রাজনৈতিক অঙ্গনে তাঁর ঢাকা সফর নিয়ে বেশ আলোচনা হলেও ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে লু’র সফর নিয়ে যেভাবে বিভিন্ন ধরনের গুঞ্জন বা আতঙ্কের কথা শোনা গিয়েছিল এবার সেটি হচ্ছে না। কিন্তু তারপরও তাঁর ঢাকা সফর নিয়ে কথা বলেছেন আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে কথা বাহাস লক্ষ্য করা গেছে।


লু’র ঢাকা সফর নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কে আসলো আর কে গেলো তা নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় নেই। যদিও নির্বাচনের আগে লু’র ঢাকা সফর নিয়ে সবচেয়ে বেশি উচ্ছ্বসিত ছিল বিএনপির নেতারা। তবে এবার দলটির মহাসচিব সুর পাল্টে বলছেন, ‘কে আসলো আর কে গেলো তা নিয়ে মাথাঘামানোর সময় নেই। তিনি বলছেন তার দলের প্রধান শক্তি হলো জনগণ।’

লু’র ঢাকায় আসাটা গুরুত্বপূর্ণ নয় উল্লেখ্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র আসা-না আসায় কিছু যায়-আসে না। লু তো অনেক দূরের কথা। আমরা শঙ্কিত দেশের অবস্থা নিয়ে। 


এদিকে লু’র এবারের সফর দুই দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে মনে করছে আওয়ামী লীগ। দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ডোনাল্ড লু বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে কথাবার্তা বলবেন। দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক এগিয়ে নিতে তিনি আসবেন। বিএনপি মনে করেছে, আবার নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেবে কি না। এই ধরনের উদ্ভট চিন্তা করছে। এ রকম উদ্ভট চিন্তা তারা আগেও করেছিল।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিদেশিদের কাছে বারবার ধরর্না দিয়ে কোনো কিছুই করতে পারেনি বিএনপি। এজন্য লু’র ঢাকা সফর নিয়ে প্রকাশ্যে উচ্ছ্বাস দেখাচ্ছেনা বিএনপি। দেশে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হওয়া এবং বর্তমান সরকারের সাথে কাজ করার ঘোষণা দেওয়ায় বিএনপির মোহভঙ্গ হয়েছে। তাই প্রকাশ্যে লু’র সফর নিয়ে উচ্ছ্বাস দেখাচ্ছে না বিএনপির নেতারা।



ডোনাল্ড লু   আওয়ামী লীগ   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

কারামুক্ত হলেন বিএনপি নেতা হাবিব উন নবী সোহেল

প্রকাশ: ০৯:৩৩ পিএম, ১৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

জামিনে কেরাণীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল।

সোমবার (১৩ মে) সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জ থেকে মুক্তি লাভ করেন তিনি। এ সময় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরসহ বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেন।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, মুক্তি পাওয়ার পর তিনি নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান। 
এর আগে গত ৩১ মার্চ আদালতে জামিন নিতে গেলে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয় সোহেলকে।

বিএনপি   হাবিব উন নবী সোহেল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ইইউ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক

প্রকাশ: ০৯:২৮ পিএম, ১৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি নেতারা। সোমবার (১৩ মে) দুপুরে ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির সঙ্গে তার গুলশানস্থ বাসভবনে এ বৈঠক হয়।

বৈঠকে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ এবং ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

তবে বৈঠকের বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

ইইউ রাষ্ট্রদূত   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

চীন সফরে ৯ বাম নেতা

প্রকাশ: ০৮:৫২ পিএম, ১৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

চীন সফরে গেছেন ক্ষমতাসীন ১৪ দলের শরিক দল জাসদ, ওর্য়ার্কাস পার্টি ও সাম্যবাদী দলের নয় সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল।

সোমবার (১৩ মে) বিকেল ৩টায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চায়না ইস্টার্নের একটি বিমানে চীনের কুংমিংয়ের উদ্দেশে যাত্রা করেন তারা। বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত প্রতিনিধি দলকে বিদায় জানান। এ সময় জাসদের দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেনও উপস্থিত ছিলেন।
 
সফরে যাওয়া বাম নেতারা হলেন- ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাম্যবাদী দলের সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, জাসদের কার্যকারী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল আলম, জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহম্মদ মোহসীন, ওয়ার্কার্স পার্টির নারী নেত্রী লুৎফুন্নেছা খান, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য মোস্তফা লুৎফুল্লাহ, সাম্যবাদী দলের অধ্যাপক তৃপ্তি বড়ুয়া ও হ মোশাহিদ প্রমুখ।
 
জানা গেছে, সফরকালে বাম নেতারা কুনমিংয়ে ইউনান একাডেমি অব এগ্রিকালচার সাইন্স একাডেমি, কেপিসি ফার্মাসিউটিক্যালস পরিদর্শন করবেন। নেতারা রুট (ওয়েলিন কমিউনিটি) লেভেলে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি কার্যক্রম সম্পর্কে জানবেন। এছাড়া প্রতিনিধি দলটি চীনা কমিউনিস্ট পার্টি, ইউনান প্রদেশের সরকারের বৈদেশিক শাখার প্রধানসহ অন্যদের সঙ্গে পরিবর্তিত বিশ্বপরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় অংশ নেবেন। সফর শেষে আগামী ১৮ মে দেশে ফেরার কথা প্রতিনিধি দলটির।

চীন সফর   বাম দল   জাসদ   ওর্য়ার্কাস পার্টি   সাম্যবাদী দল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

দলে শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

অবশেষে আর ছাড় নয়, আওয়ামী লীগ তাঁর দলের শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্রগুলো বলছে, দলের ভেতর যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে, দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করছে এবং দলের ভেতরের কোন্দল করছে তাদেরকে আর ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে এবং এই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে কোন্দলরত এলাকাগুলোতে কমিটি বাতিল করে দেওয়া হবে। যারা কোন্দলের সঙ্গে জড়িত তাদেরকে আহ্বায়ক কমিটিতে রাখা হবে না। 

একই সাথে যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে আত্মীয় স্বজনদেরকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের প্রার্থিতা পর্যালোচনা করা হবে এবং তারা এলাকায় কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য এ ধরনের কর্মকাণ্ড করেছেন কি না সেটি যাচাই বাছাই করা হবে। যাচাই বাছাই শেষে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে তাদেরকে স্থানীয় পর্যায়ের কমিটিগুলো থেকে বাদ দেওয়া হবে এবং ভবিষ্যতে তাদের বিরুদ্ধে আরও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আপাতত আওয়ামী লীগ কোন্দল কমানোর জন্য যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তা হল কমিটি বিলুপ্ত করা এবং কমিটি থেকে বাদ দেওয়া। 

এ বছরের ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর থেকেই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলে আসছিলেন যে দলের ভেতর যারা নির্বাচন কেন্দ্রিক করেছেন সেই কোন্দল যেন অবিলম্বে বন্ধ করা হয় এবং যা হয়েছে সেটা ভুলে গিয়ে মিলে মিশে সকলে মিলে যেন কাজ করে। কিন্তু বাস্তবে আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা মান্য করেনি অধিকাংশ নেতা কর্মীরা। বরং নির্বাচনের পর কর্তৃত্ব দখলের লড়াই আরও জাঁকিয়ে বসে। বিশেষ করে যে সমস্ত নির্বাচনী এলাকাগুলোতে স্বতন্ত্রদের সাথে আওয়ামী লীগের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছিল, সে সমস্ত এলাকাগুলোতে সংঘাত সহিংসতার ঘটনা আরও বেড়ে যায়। এরকম পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি সবাইকে সতর্কবার্তা দেন। কিন্তু তারপরও এই বিরোধ মিটছে না। এখন আওয়ামী লীগ অ্যাকশনে যাচ্ছে। 

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, বিবদমান এলাকাগুলোকে চিহ্নিত করার জন্য এবং সেই সমস্ত এলাকায় কারা দায়ী তাদেরকে শনাক্ত করার জন্য সাংগঠনিক সম্পাদকদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সাংগঠনিক সম্পাদকরা এই বিষয়টি নিয়ে খতিয়ে দেখছে। 

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলছেন, আগামী ২৩ জুন আওয়ামী লীগের ৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এবার ৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আওয়ামী লীগ অনেক জামজমকপূর্ণ ভাবে ঘটা করে করতে চায়। এ জন্য প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে। এরপপর যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছেন, দলের অবস্থানের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

উপজেলা নির্বাচনগুলোতেও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে, দলের ভেতর যেন স্বজনরা প্রার্থী না হন। কিন্তু তারপরও যারা এই সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছেন তাদের কমিটি থেকে বাদ দেওয়া বলে আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।


শৃঙ্খলা   আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন