ইনসাইড পলিটিক্স

যেভাবে বিতর্কিত হলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা-নেপথ্যে কারা?

প্রকাশ: ০৬:২০ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩


Thumbnail

প্রায় তিন দশক আগে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু ছিল দেশের নির্বাচন পদ্ধতি। কার অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে? ক্ষমতাসীন সরকার, নাকি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার? যে বিতর্কটি দ্বাদশ নির্বাচনের আগে আবারও সামনে এনেছে বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো। তবে সেই সময়ে সেই বিতর্কের অবসান হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। তখন ক্ষমতাসীন বিএনপি প্রবল বিক্ষোভের মুখে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে বাধ্য হয়। কিন্তু ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ সংবিধান থেকে এই নির্বাচন পদ্ধতি বাতিল করে দেয়। বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বাতিল করা হয়।

সূত্রমতে, ২০১১ সালের ১০ মে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় প্রদান করেন। এ সময় দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মৌলিক বেশ কিছু দুর্বলতা দেখিয়ে অনির্বাচিত ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত ৩ মাসের সরকারের উদাহরণ তুলে ধরেন। এছাড়া নির্ধারিত ৯০ দিন সময় অতিক্রম করার নজির স্থাপনের সম্ভাবনাটিও- ২০০৫ থেকে ০৮ সাল পর্যন্ত পরিচালিত, ১/১১ সরকারের ঘটনার উদাহরণ তুলে ধরেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। ফলে সে সময় থেকেই বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হয়ে যায়।   

কিন্তু এখন এই বিতর্ক নতুন করে মাথা-চাড়া দিয়ে উঠেছে। নব্বই-এর দশকে আওয়ামী লীগ ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীদার। কিন্তু ২০২৩ সালে বিএনপি বলছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তারা নির্বাচনে যাবে না। কিন্তু ১৯৯৬ এর পরবর্তী ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ২০০১-০৬ সালের বিএনপি সরকারের একটি সিদ্ধান্ত এমন একটি প্রক্রিয়া শুরু করেছিল, যেটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বিতর্কের মুখে ফেলে দিয়েছে। 

এছাড়াও  ২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর রাজনৈতিক অস্থিরতার মাঝে রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ড. ইয়াজউদ্দিন আহমেদকে প্রধান উপদেষ্টা করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করে বিএনপি। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব ছেড়ে দেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ড. ইয়াজউদ্দিন আহমেদ। সে সময় প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফখরুদ্দিন আহমদ। রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ড. ইয়াজউদ্দিন আহমেদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ভেঙে দিয়ে জরুরি অবস্থা জারি করেন। তখনকার সেনাপ্রধান জেনারেল মইন উ আহমদ জরুরি অবস্থা জারির পর থেকে সব আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন এবং তিনিই এক অনুষ্ঠানে ১১ জানুয়ারির জরুরি অবস্থা জারির দিনটিকে ওয়ান-ইলেভেন বা এক-এগারো (১/১১) নামে আখ্যায়িত করেন।

এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বিভিন্ন অভিযোগের দায়ে দেশের প্রধান দুই দলের দুই নেত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াসহ শীর্ষ নেতাদের প্রায় সবাইকেই গ্রেপ্তার করা হয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপি এখন যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার দাবি করছে, তার পেছনে বিএনপির কোনো দূরভিসন্ধি রয়েছে। কেননা ২০০৬ সালে বিএনপি- জামায়াত জোট সরকারের ক্ষমতা শেষ হলে বিএনপি সমর্থিত ইয়াজউদ্দিন আহমেদকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানের আসনে বসায় বিএনপি। এর পেছনেও রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের একটি দূরভিসন্ধি ছিল। পরে বিরোধী দলগুলোর আন্দোলনের তোপে এই সরকার টেকেনি। ফলে ১/১১ এর সৃষ্টি হয়। মূলত বিএনপির কারণেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিতর্কিত হয়েছিল। এছাড়াও, ১৯৯৪ সালে বিএনপির ক্ষমতাকালীন সময়ে বিরোধী দলগুলোকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আড়াই বছর আন্দোলন করতে হয়েছিল। আন্দোলনের মধ্যেই ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফ্রেব্রুয়ারি বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে বিতর্কিত একতরফা নির্বাচন দেয় তৎকালীন বিএনপি সরকার।

এছাড়াও ২০০৩ সালের জুন মাসের শেষের দিকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান কে এম হাসান। কে এম হাসানের নিয়োগ নিয়েও বিএনপির ক্ষমতা দখলের  রাজনৈতিক দূরভিসন্ধি ছিল। তখন বিএনপি সরকারের পছন্দের কারণেই জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে কে এম হাসানকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করা হয়েছিল। এছাড়া সে ময়ে সংবিধানের সংশোধনী এনে বিচারপতিদের চাকরির মেয়াদ ৬৫ বছর থেকে ৬৭ বছর করা হয়েছিল। এর অন্যতম প্রধান কারণ ছিল বিচারপতি কে এম হাসানকে পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করা। এখানেও বিএনপির ক্ষমতা দখলের রাজনৈতিক দূরভিসন্ধি লক্ষ্য করা গেছে। এসব কারণেই বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা এখন বিতর্কিত। আর এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বিতর্কিত করেছে বিএনপি।      

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ক্ষমতার পালাবদল

দেশের রাজনৈতিক ইতিহাস বলছে, ১৯৯০ সালে সামরিক শাসক জেনারেল এরশাদের পতনের পর  নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে চারটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এসব নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে বারবার ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত কোন একটি দল পরপর দুইবার ক্ষমতায় আসতে পারেনি। পরাজিত দল নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেও এসব নির্বাচনের ফলাফল দেশে এবং আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়েছিল।

১৯৯১ সালে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলেও সে ধরণের সরকার ব্যবস্থা সংবিধানের অংশ ছিল না। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে সে নির্বাচন হয়েছিল। কিন্তু ১৯৯৪ সাল থেকে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলো নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনের দাবি তুলে ধরে এক যোগে সংসদ থেকে পদত্যাগ করে। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিএনপি সরকার সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করে, যেটা সকল বিরোধী দল শুধু বর্জন নয়, ব্যাপক বিক্ষোভের মাধ্যমে প্রতিহত করার চেষ্টা করে।

বিতর্কিত এই নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগসহ তৎকালীন বিরোধী দলগুলোর প্রবল আন্দোলনের মুখে ১৯৯৬ সালের ২৬শে মার্চ বিএনপি সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে বাধ্য হয়। এরপর ১৯৯৬ সালের জুন মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ সরকার। দেশে-বিদেশে সে নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিল। নির্বাচনে পরাজিত দল বিএনপি নির্বাচনে ‘পুকুর চুরির’ অভিযোগ আনলেও, তাদের সেই দাবি গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০১ সালে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে। সে নির্বাচনে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামী জোট ব্যাপকভাবে জয়লাভ করে। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে পক্ষপাতিত্ব এবং কারচুপির অভিযোগ আনে আওয়ামী লীগ। কিন্তু সেটিও হালে পানি পায়নি; ২০০১ সালের সে নির্বাচনও আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিল।

 তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি

২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার কয়েক বছর পরেই সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হয়। এই সংবিধানে সংশোধনের কয়েকটি দিক ছিল। এই সংশোধনীর মাধ্যমে সংরক্ষিত মহিলা আসন ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৪৫টি করা হয়েছিল। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অবসর নেবার বয়স ৬৫ থেকে বাড়িয়ে ৬৭ করা হয়েছিল। সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত সব প্রতিষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ছবি প্রদর্শনের বিধানও করা হয়েছিল। ২০০৪ সালের ১৬ই মে সংসদে এই সংশোধনীর জন্য বিল উত্থাপন করেন তৎকালীন আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ।

যার মধ্যে সবচয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অবসরের বয়স বাড়ানো। সংবিধানের এই সংশোধনী একেবারেই কোন ছোটখাটো বিষয় ছিল না। এর পেছনে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনকে বিএনপির প্রভাবিত করার লুকায়িত ইচ্ছা ছিল বলেই অনেকে মনে করেন। কারণ, তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু ছিল। সংবিধান অনুযায়ী সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হবেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান। তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ অভিযোগ তোলে, বিএনপি তাদের পছন্দসই ব্যক্তিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা করার জন্য নানা আয়োজন করেছে।

২০০৩ সালের জুন মাসের শেষের দিকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান কে এম হাসান। তখন অভিযোগ উঠেছিল, বিএনপি সরকারের পছন্দের কারণেই জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে কে এম হাসানকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করা হয়েছিল।

রাজনৈতিক বিশ্লেকদের মতে, কে এম হাসানকে তখন বয়জেষ্ঠ্য দুজনকে ডিঙিয়ে ১৩তম প্রধান বিচারপতি করা হয়; সেই অর্থে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের পথ বিএনপিই দেখিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অবসরের বয়স-সীমা বাড়ানোর মূল উদ্দেশ্য ছিল, তৎকালীন প্রধান বিচারপতি কেএম হাসান অবসরের পরপরই যাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হতে পারেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার   বিএনপি   সংবিধান   নির্দলীয় সরকার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

সরকার দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ০২:১২ পিএম, ১২ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার মনে করেছে নির্বাচনের পর সংকট উতরে গেছে। তা হয়নি, বরং আরও বেড়েছে। সরকার দেশকে পরিকল্পিতভাবে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।  

রোববার (১২ মে) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।

গত বুধবার অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচনের পূর্বে বহু নেতাকর্মীকে একতরফাভাবে সাজা দেওয়া হয়েছে। এর তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। এখনো গুরুত্বপূর্ণ অনেক নেতা কারাগারে রয়েছেন। বিরাজনীতিকরণ করতে ২ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দল যেন না থাকে। মানুষের সর্বশেষ আশা ভরসারস্থল হচ্ছে কোর্ট, কিন্তু সেখানেও কেউ কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না।

সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ, এটি একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র। সরকার দেশকে পরিকল্পিতভাবে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। এটি অনেক আগে থেকেই বলে আসছি। একটি রাষ্ট্র তখন ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়, যখন অর্থনীতির মেরুদন্ড ভেঙে যায়, রাজনৈতিক পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়। গোটা রাষ্ট্র একটি নৈরাজ্যে পরিণত হয়েছে। ঘুষ ছাড়া চাকরি হয় না। তাও আবার ক্ষমতাসীন দলের ছাড়া সম্ভব নয়। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। সরকারের এমপি-মন্ত্রীরা টাকা পাচার করে সেটি বিনিয়োগ করেছে বিদেশে, অথচ বাংলাদশের মানুষের অবস্থা খারাপ।

ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে আসছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কে আসলো তাতে ইন্টারেস্ট নেই। জনগণই বিএনপির শক্তি। সরকার মনে করছে নির্বাচনের পর সংকট উতরে গেছে। কিন্তু সংকট আরও বেড়েছে। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য খুবই খারাপ। তাকে হাসপাতালে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টাই তিনি চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে আছেন। 


মির্জা ফখরুল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচন: কুমিল্লায় চার স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যের চার স্বজন প্রার্থী

প্রকাশ: ০৯:৩৯ এএম, ১২ মে, ২০২৪


Thumbnail

কুমিল্লায় তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া চারটি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র চার সংসদ সদস্যের চার স্বজন প্রার্থী হয়েছেন। ওই চার সংসদ সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হলেও তাঁরা আওয়ামী লীগের নেতা। এ অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা করছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও ভোটাররা।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচনে কুমিল্লার চারটি আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় চার নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচিত হন।

কুমিল্লা-২ (হোমনা ও মেঘনা) আসনের সংসদ সদস্য হোমনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবদুল মজিদের স্ত্রী রেহানা বেগম হোমনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হন। রেহানা বেগম কুমিল্লা উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য।

জানতে চাইলে রেহানা বেগম বলেন, ‘২০১৯ সালেও আমি চেয়ারম্যান হয়েছি নৌকা প্রতীক নিয়ে। এবার দল সবার জন্য প্রার্থিতা উন্মুক্ত রেখেছে। নেতা-কর্মীদের চাপে প্রার্থী হয়েছি।’

কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম সরকারের ছেলে আহসানুল আলম সরকার উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী হয়েছেন। ২০১৯ সালেও আহসানুল চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীক নিয়ে জয়ী হন। আহসানুল আলম সরকার মুরাদনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।

কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (বর্তমানে বহিষ্কৃত) আবুল কালাম আজাদের ছোট ভাই মামুনুর রশিদ কুমিল্লা উত্তর জেলা যুবলীগের সদস্য। তিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন।

কুমিল্লা-৫ ( বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক এম এ জাহেরের বড় ভাইয়ের ছেলে আবু তৈয়ব ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তৃতীয় ধাপে প্রার্থী হয়েছেন। আবু তৈয়ব কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন।

স্বজনদের প্রার্থী হওয়া বিষয়ে সংসদ সদস্য মো. আবদুল মজিদ ও জাহাঙ্গীর আলম সরকারে ভাষ্য, প্রার্থীরা গতবার নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন। তাই এবারও তাঁরা প্রার্থী।

সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, দল প্রার্থিতা সবার জন্য উন্মুক্ত রেখেছে। সারা দেশে বড় নেতাদের ভাই, ছেলে, স্ত্রী, সন্তানেরা প্রার্থী হয়ে ইতিমধ্যে অনেকে জয়ী হয়েছেন। দেবীদ্বারের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা মামুনুরকে চান। অনেকটা একই রকম বক্তব্য দিয়েছেন সংসদ সদস্য এম এ জাহের। 


উপজেলা   নির্বাচন   কুমিল্লা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিলুপ্তির পথে জাতীয় পার্টি?

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

কাগজে কলমে জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধীদল তারা। কিন্তু দলটি সাংগঠনিক অবস্থা এত নাজুক যে, এই দলটি কবে বিলুপ্ত হবে তার দিনক্ষণ এখনও গননা হচ্ছে। জাতীয় পার্টি এখন অস্তিত্বের সংকটে। আওয়ামী লীগের কৃপায় বেঁচে থাকা এই দলটি এখন আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করে কোন রকমে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ জাতীয় পার্টিকে মনে করছে না সরকারি দলের না বিরোধী দলের! সবকিছু মিলিয়ে একটি বিভ্রান্ত আদর্শিক অবস্থা জাতীয় পার্টিকে ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু করতে করতে এখন বিলীন প্রায় করে ফেলেছে।

স্বৈরাচারী হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ জাতীয় পার্টি গঠন করেছিলেন ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ ক্ষমতা গ্রহণ করে। তার পর আস্তে আস্তে ক্ষমতায় থেকে ক্ষমতার সুযোগ সুবিধা ভোগ করে বিভিন্ন দলছুট উচ্ছিষ্টভোগীদের কে নিয়ে এই জাতীয় পার্টি গঠন করেছিলেন। জাতীয় পার্টি গঠিত হওয়ার পর দীর্ঘদিন ক্ষমতায় ছিল এবং ক্ষমতার হালুয়া রুটি খাওয়াই জাতীয় পার্টির নেতা কর্মীদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল। ৯০ এর দশকে স্বৈরাচার পতনের পর অনেকে ধারণা করেছিলেন যে জাতীয় পার্টি কালের গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। কিন্তু সেই সময় অস্তিত্বের পরীক্ষায় নাটকীয়ভাবে জয়ী হয় জাতীয় পার্টি। বিশেষ করে জাতীয় পার্টি সেই সময়ে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মিজানুর রহমান চৌধুরী অসাধারণ ভূমিকা রাখেন। তার কারণেই স্বৈরাচারের পতনের পর ১৯৯১ এর নির্বাচনে জাতীয় পার্টি তৃতীয় স্থান লাভ করে এবং সকলকে চমকে দেয়। এর পর জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগ, বিএনপি যখন যায়, তখন তারা এই নীতি অনুসরণ করে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখে।

বাংলাদেশে বাংলাদেশের রাজনীতিতে জাতীয় পার্টি একটা ফ্যাক্টর হয়ে ওঠে। জাতীয় পার্টিকে ছাড়া ক্ষমতা গঠন করা, কোনও দলের পক্ষে সরকার গঠন করা প্রায় অসম্ভব এ রকম একটি রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হয়। যে সমীকরণের সুবিধা নিয়ে জাতীয় পার্টি এখনও টিকে আছে। ২০০১ সালে নির্বাচনে দলটি সমর্থন দেয় বিএনপিকে। বিএনপি ক্ষমতায় আসে। আবার ২০০৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সঙ্গে মহাজোট গঠণ করে। সেই থেকে মহাজোটেই আছে জাতীয় পার্টি। কিন্তু জাতীয় পার্টির প্রধান নেতা এরশাদের মৃত্যুর পর জতীয় পার্টি এখন শুধু মাত্র নেতৃত্বের সংকট নয় অস্তিত্বের সংকটই হচ্ছে। এরশাদের মৃত্যুর পর জাতীয় পার্টির হাল ধরেছেন তার ছোট ভাই জিএম কাদের। জিএম কাদের একজন সৎ পরিচ্ছন্ন মানুষ কিন্তু রাজনীতির অভিজ্ঞতায় তিনি একেবারেই কাঁচা পরিপক্ক এবং অদূরদর্শী বটে। রাজনীতিতে তার অবস্থান কি সেটি সুস্পষ্ট নয়। আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকেই জাতীয় পার্টি ক্ষমতার ভাগবাটোয়ারা করেছে। কিন্তু ২০১৮ সালে এসে জাতীয় পার্টি সম্পূর্ণ উল্টো অবস্থান নেয় এবং সরকারের বিরোধিতার একটা আবরণ পড়ে। কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে এই আবরণ গ্রহণযোগ্যতা হয়নি। জাতীয় পার্টি ২০২৪ নির্বাচন বর্জন করার কথাও ভেবেছিল কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং নির্বাচনে হতাশাজনক ফলাফল পায়।

জাতীয় পার্টির এই দিকবদল এবং বার বার অবস্থান পরিবর্তন সাধারণ মানুষের কাছে একটা নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করেছে। আর এ কারণেই সাধারণ মানুষ জাতীয় পার্টি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এর মধ্যে রওশন এরশাদের পৃথক অবস্থান জাতীয় পার্টির নেতাদেরকে বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে। দলটিতে নতুন কর্মীর আগমণ ঘটছেনা। পুরোনো নেতারা নানা রকম সুযোগ সুবিধার আসায় দিনের বেলায় সরকারের সঙ্গে যোগসাজশ করছেন। রাতের বেলায় তাদেরকে দেখা যাচ্ছে ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডে। জাতীয় পার্টিতে এখন পার্ট টাইম রাজনীতির প্রধান্য আর এ সমস্ত রাজনীতিবিদরা দলের চেয়ে নিজের স্বার্থরক্ষার জন্যেই বেশি ব্যস্ত।

এখন জিএম কাদের জাতীয় পার্টিকে কোন রকমের টেনে তোলার চেষ্টা করছেন বটে কিন্তু এরশাদের যেরকম সারা দেশ জুড়ে একটা আলাদা ইমেজ ছিল, একটা জনপ্রিয়তা ছিল জি এম কাদেরের তা নেই। তার একমাত্র পরিচয় তিনি হোসেন মুহাম্মাদ এরশাদের ছোট ভাই। আর এ কারণেই জাতীয় পার্টির প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ এখন আর নেই। এই রাজনৈতিক দলটিযে তৃতীয় শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার সম্ভাবনা জাগিয়েছিল তা এখন বিলীন হওয়ার পথে।


জাতীয় পার্টি   জি এম কাদের   রওশন এরশাদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ডোনাল্ড লু’র ঢাকা সফরে ক্ষমতায় আসার স্বপ্নে চাঙ্গা বিএনপি: কাদের

প্রকাশ: ০৭:২৩ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মার্কিন কূটনীতিক ডোনাল্ড লু’ ঢাকায় সফর করায় আবারও ক্ষমতায় আসার স্বপ্নে চাঙ্গা বিএনপি।

শনিবার (১১ মে) সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আরে বেকুবের দল, লু আসছেন বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে। বিএনপির স্বপ্ন পূরণের জন্য আমেরিকাও আর আসবে না, কেউ আসবে না।

তিনি বলেন, ‘গয়েশ্বর রায় কোথায় পালিয়ে ছিলেন, ভারতে? মাথায় তো একটা গান্ধী টুপি দিয়েছেন। তিনি আমাদের বলেন ভারতের দালাল। এই অপবাদ আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া, জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়ার সময় থেকে অনেক শুনেছি। দালালি কারা করে? ভারতে নরেন্দ্র মোদির বিজয়ের পরে ভোর হওয়ার আগে ফুল আর মিষ্টি নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। দালালি কারা করে? ভারত সফরের সময় খালেদা জিয়া তিস্তা চুক্তির কথা ভুলে গিয়েছিল। দালাল কারা?’ 

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘ভারত আমাদের বন্ধু। ৪২ শতাংশ লোক আমাদের ভোট দিয়েছিল। শেখ হাসিনার অর্জন, উন্নয়নকে স্বীকৃতি দিয়েছিল দেশের ৪২ শতাংশ জনগণ। নির্বাচনে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। আমরা ক্ষমতা চাই না, বন্ধুত্ব চাই। শত্রুতা আমাদের ক্ষতি করেছে। আমরা সেই অবস্থা আর ফিরে পেতে চাই না।’

বিএনপির উপজেলা নির্বাচন প্রত্যাখ্যানের দাবি প্রসঙ্গে কাদের বলেন, যে ৩৬ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছেন তারা কারা? তারা এই দেশের জনগণ। তারা শেখ হাসিনার উন্নয়নে মুগ্ধ।


আওয়ামী লীগ   ওবায়দুল কাদের   মার্কিন কূটনীতিক ডোনাল্ড লু’  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের ‘ফ্রি স্টাইল’ নেতারা নজরদারীতে

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচনে দলীয় নির্দেশ যারা অমান্য করেছে তাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ এখন পর্যন্ত কোন আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এমনকি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এমন কোন ইঙ্গিতও পাওয়া যায়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৌশলগত কারণে ৩০ এপ্রিল দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এই প্রসঙ্গটি উত্থাপনই করেননি। কিন্তু যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছেন তারা যে পার পেয়ে যাবেন বা ছাড় পাবেন এমনটি নয়। এরকম দাবী করছেন আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ স্থানীয় নেতা। যেসমস্ত নেতারা দলের শৃঙ্খলা লঙ্ঘণ করেছেন এবং ‘ফ্রি স্টাইলে’ কাজ-কর্ম করছেন তারা নজরদারিতে আছেন এবং শীঘ্রই তাদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ব্যবস্থা দেখা যাবে বলেও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানাচ্ছে।

আরও পড়ুন: ওবায়দুল কাদের-একরাম চৌধুরীর নোয়াখালীর বিরোধ: যেখান থেকে শুরু

তবে আওয়ামী লীগ বহিষ্কার বা দল থেকে বের করে দেয়ার মতো অবস্থানে যাবে না। আওয়ামী লীগের শাস্তি হবে কৌশলগত এবং সুদূর প্রসারী। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছেন এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের জন্য চেষ্টা করেছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে ৩ ধরনের নির্দেশনা ছিল।

প্রথমত, উপজেলা নির্বাচনে কোন প্রার্থীকে দলগতভাবে সমর্থন করা যাবে না। আওয়ামী লীগ দলগতভাবে নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকবে।

দ্বিতীয়ত, মন্ত্রী এমপিদের আত্মীয়-স্বজনরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না এবং মাই ম্যান’দের জিতিয়ে আনার চেষ্টা করা যাবে না।

তৃতীয়ত, নির্বাচনে যেন কেউ প্রভাব বিস্তার করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর যেসমস্ত আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এই সমস্ত নির্দেশনা ভঙ্গ করেছেন, তাদেরকে চিহ্নিত করা হয়েছে তারা নজরদারীতে আছেন।

আরও পড়ুন: ভারত বিরোধীতা সামনে আনছে বিএনপি

লক্ষ্য করা গেছে, তারা শুধু এবার নয় অতীতেও দলের অবস্থানের বিপরীতে ফ্রি স্টাইলে’ নিজেদের অবস্থান ব্যক্ত করতেন। তারা যা বিবেচনা করতেন সেটি বলতেন এবং এর ফলে অনেক ক্ষেত্রে দলের স্বার্থ লঙ্ঘিত হতো।

শাজাহান খান

শাজাহান খান এমন একজন ব্যক্তি যিনি দলের নির্দেশ অমান্য করে তার পুত্রকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন। শাজাহান খান এর আগেও আওয়ামী লীগের দলীয় অবস্থানের বিপরীতে বিভিন্ন বক্তব্য রেখেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। শাজাহান খানের বিষয়টি আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। এবং তিনি আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের নজরদারীর মধ্যে আছেন।

ড. আব্দুর রাজ্জাক

ড. আব্দুর রাজ্জাক তার ভাইকে এবার উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন। যদিও আব্দুর রাজ্জাকের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছে, তার ভাই আগে থেকেই উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। কিন্তু এবার যেহেতু পরিস্থিতি ভিন্ন সেহেতু এবার তার ভাইয়ের প্রার্থী হওয়াটা দলগতভাবে পছন্দ করা হয়নি। তাছাড়া স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ড. রাজ্জাকের ভাইয়ের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে বিরোধীতা করেছিলেন এবং এ নির্বাচনে ড. রাজ্জাকের বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগও করা হয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। ড. রাজ্জাক নির্বাচনের আগেও বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোচনায় ছিলেন। অনেকে মনে করেন, এই বিতর্কিত মন্তব্যের কারণেই এবার তিনি মন্ত্রীত্ব হারিয়েছেন। আর একারণেই ড. আব্দুর রাজ্জাক এখন আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকদের নজরদারীতে আছেন। ভবিষ্যতে যদি ড. রাজ্জাক বা শাজাহান খানের প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ চলে যায় তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

একরামুল করিম চৌধুরী

একরামুল করিম চৌধুরী নোয়াখালী-৪ আসনের এমপি। এবার তিনি তার ছেলে সাবাব চৌধুরীকে সুবর্ণচর উপজেলায় চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। ঐ উপজেলায় চেয়ারম্যান ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে হারিয়ে দিয়ে নিজের পুত্রকে নির্বাচিত করার বিষয়টি আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারক মহলে ইতিবাচক হিসেবে দেখা হয়নি। তারা বিষয়টিকে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের সামিল বলে মনে করছেন। একরামুল করিম চৌধুরীর পরিণতি কি হয় তা ভবিষ্যতে বোঝা যাবে।

গাজী গোলাম দস্তগীর

গাজী গোলাম দস্তগীর পুরো রূপগঞ্জকে গাজীগঞ্জ বানিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার নিজস্ব আত্মীয় স্বজন সর্বত্র সবকিছু দখল করে নিয়ে এমন অভিযোগও রয়েছে। গাজী গোলাম দস্তগীর এবার মন্ত্রীত্ব পাননি। ভবিষ্যতে তিনি নতুন রাজনৈতিক সংকটে পড়লেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।   


আওয়ামী লীগ   শাজাহান খান   ড. আব্দুর রাজ্জাক   একরামুল করিম চৌধুরী   গাজী গোলাম দস্তগীর  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন