পর্দার আড়ালে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সরকার দরকষাকষি করছে। এ ব্যাপারে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। দরকষাকষির অংশ হিসেবেই বেগম খালেদা জিয়া সম্প্রতি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে বেগম খালেদা জিয়া বিএনপির বিভিন্ন নেতার সঙ্গেও টেলিফোনে আলাপ আলোচনা করছেন, সরকারের একাধিক প্রতিনিধির সঙ্গে তার কথাবার্তা হচ্ছে। যে কথাবার্তার মধ্যস্থতা করছেন তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার।
একাধিক
দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, বেগম খালেদা
জিয়া আগামী নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করা এবং গণতান্ত্রিক
প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার জন্য ৫ দফা
দাবি উপস্থাপন করেছেন। এই ৫ দফা
দাবি মানা হলে তিনি
তাঁর দল বিএনপিকে নির্বাচনে যাওয়ার নির্দেশ প্রদান করবে বলে একাধিক
সূত্র নিশ্চিত করেছে। এই ৫ দফার
মধ্যে রয়েছে:
২। বিএনপি যে সমস্ত আটক
নেতা-কর্মী রয়েছে তাদের মুক্তির ব্যবস্থা করা এবং রাজনৈতিক
হয়রানিমূলক মামলাগুলো প্রত্যাহার করা।
৩। তারেক জিয়ার মামলা প্রত্যাহার এবং তাকে নিরাপদে
দেশে আসার সুযোগ তৈরি
করে দেওয়া। তাকে গ্রেপ্তার, হয়রানি
ইত্যাদি না করা।
৪। বিএনপির যে সমস্ত নেতাকর্মীরা
দেশের বাইরে পলাতক জীবন যাপন করছে
তাদের দেশে আসার সুযোগ
করে দেওয়া এবং কোনরকম হয়রানি
বা প্রতিহিংসামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ না করা।
৫। নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ
করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা
গ্রহণ করা এবং একটি
নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের মাধ্যমে অবাধ সুষ্ঠু ও
নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা।
সংশ্লিষ্ট
সূত্রগুলো বলছে যে, সরকারের
কাছে ইতোমধ্যেই খালেদা জিয়ার পাল্টা প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। সরকার
এই ৫ দফায় ব্যাপারে
হ্যাঁ বা না কোনো
কিছুই বলেনি। তবে ৫ দফার
কিছু কিছু বিষয় নিয়ে
সরকারের মধ্যে প্রতিক্রিয়া রয়েছে বলে জানা গেছে।
যেমন বেগম খালেদা জিয়ার
মামলা প্রত্যাহারের বিষয় সম্পর্কে সরকারের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি
বলেছেন যে, এটি সরকারের
এখতিয়ারে নেই। কারণ মামলার
রায় দিয়েছে আদালত। কাজেই এই মামলা প্রত্যাহার
করার ক্ষমতা একটি রাজনৈতিক সরকারের
নেই। আদালতের মাধ্যমেই এটি পরিষ্কার করতে
হবে। তবে নির্বাহী আদেশে
সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে
উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবার
অনুমতি দিতে পারে বা
তার দণ্ড মওকুফ করতে
পারে। তাছাড়া রাষ্ট্রপতির কাছে যদি বেগম
খালেদা জিয়া আবেদন করেন তাহলে রাষ্ট্রপতি
তাকে ক্ষমা প্রদর্শন করতে পারে। এ
বিষয়ে রাষ্ট্রপতির সাংবিধানিক ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করেই একজন
দণ্ডিত ব্যক্তি যার দন্ড হাইকোর্টও
বহাল রেখেছে তার মামলা সরকার
প্রত্যাহার করতে পারে না
বলে সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে।
দ্বিতীয়ত,
বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের যে বিষয়, সে
ব্যাপারে সরকার মনে করছে যে
কোনো মামলাই হয়রানিমূলক নয়। তবে যদি
কোনো রাজনৈতিক কারণে যদি কারো বিরুদ্ধে
মামলা থাকে তাহলে সেই
মামলাগুলো ব্যাপারে সরকার তদন্ত করবে এবং প্রয়োজনে
সেই মামলাগুলোর গতিপ্রকৃতি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য সরকার
একটি সেল গঠন করবে।
তৃতীয়ত,
তারেক জিয়ার যে মামলা প্রত্যাহার
এই ব্যাপারে সরকার অনড় অবস্থানে থাকবে
এবং সরকার কোন অবস্থাতেই তারেক
জিয়ার মামলা প্রত্যাহার করবে না বলে
জানা গেছে এবং তারেক
যদি দেশে আসে তাহলে
তাকে আইনি প্রক্রিয়া অবলম্বন
করেই দেশে আসতে হবে।
একাধিক সূত্র বলছে যে ২১
আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন দন্ড পেয়েছে তারেক
জিয়া। কাজেই এই মামলা প্রত্যাহারের
কোনো সুযোগ নেই।
চতুর্থ
যে দাবি, বিএনপি’র নেতাকর্মীদের যারা
বিদেশে আছে তাদের দেশে
ফিরিয়ে আনা, সেটির ব্যাপারেও
সরকার বিবেচনা করতে পারে বলে
ধারণা করা হচ্ছে।
এবং
পঞ্চম দাবি, অবাধ সুষ্ঠু ও
নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা
গ্রহণ করা, সে ব্যাপারে
সরকার বদ্ধপরিকর। সরকারের একাধিক সুত্র বলছে যে, প্রধানমন্ত্রী
এবার অবাধ সুষ্ঠু ও
নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং
তিনি এই বার্তাটি স্পষ্টভাবে
জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি এটাও বলেছেন
যে, যাই হোক না
কেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হতে হবে। আওয়ামী
লীগ দৃষ্টান্তমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে চায় আগামী
নির্বাচনে। এখন দেখার বিষয়
যে খালেদা জিয়ার পাঁচ দফা দাবির
ব্যাপারে কে কতটুকু ছাড়
দেয় এবং শেষ পর্যন্ত
এই দাবিগুলো কতটুকু মেনে একটি রাজনৈতিক
সমঝোতা হয়।
বিএনপি খালেদা জিয়া ৫ দফা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নাশকতা মামলা বিএনপি ইশরাক হোসেন
মন্তব্য করুন
‘ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?
রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত ২ নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।
রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
‘ব্যাংক মাফিয়া মাস্তান ঋণখেলাপি
মন্তব্য করুন
সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।
তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি যেন কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। নির্বাচন পরবর্তী কোন্দল বন্ধে বিভিন্ন রকম উদ্যোগও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই একাধিক বার দলীয় কোন্দল বন্ধের জন্য তাগাদা দিয়েছেন। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। বরং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাংগঠনিক অবস্থা রীতিমতো ভেঙে পড়েছে। এই কোন্দল এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন বা অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই। দলের এই কোন্দল এতদিন তৃণমূল পর্যায় থাকলেও সেটি এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও শুরু হয়েছে।