জাতীয় সংসদ নির্বাচন দড়জায় কড়া নাড়ছে। আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যেই নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। সারাদেশে মাঠ জরিপসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ দেশের রাজনীতিকে নির্বাচনমুখী করতে চাইছে। কিন্তু এর মধ্যে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ার এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত করা হয়নি। কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগের নির্বাচন কমিটির কো-চেয়ার?- তা নিয়ে নানামুখী আলোচনা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন এখনই নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ার চূড়ান্ত করা প্রয়োজন। কারণ, নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়নসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে কো-চেয়ারের ভূমিকা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
উল্লেখ্য যে, ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের আগে থেকেই নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারের পদটি আলোচনায় আসে। সে সময় সাবেক সচিব কূটনীতিক শাহ এ এম এস কিবরিয়াকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি প্রধানমন্ত্রীর সাথে পরামর্শক্রমে নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তার এ তৎপরতা বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হয়েছিল। ওই নির্বাচনে দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। ২০০১-এর নির্বাচনেও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ার ছিলেন শাহ এ এম এস কিবরিয়া। অবশ্য সেবার তিনি নিজেকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখেননি। বরং নিজেও প্রার্থী হয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হয়।
শাহ এ এম এস কিবরিয়ার মৃত্যুর পর হোসেন তৌফিম ইমাম বা এইচ টি ইমামকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ার নিযুক্ত করা হয়। তিনি নির্বাচন পরিচালনার আগেই ২০০৭ সালে ১/১১-এর সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন এবং ২০০৮-এর নির্বাচনে কো-চেয়ার হিসেবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছিলেন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ভূমিধ্বস বিজয় পায়। ২০১৪ সালের নির্বাচনেও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ার হিসেবে এইচ টি ইমাম দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০১৮-এর নির্বাচনেও তিনি কো-চেয়ার হিসেবে নির্বাচনের সামগ্রিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনে ব্যস্ত থাকেন। তিনি সারাদেশের নির্বাচনী প্রচারাভিযানের কাজে থাকেন। এই জন্য কো-চেয়ারম্যানের পদটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যিনি দলীয় কার্যালয়ে বসে সারাদেশে নির্বাচনের অবস্থান পর্যবেক্ষণ করেন, কোথায় কি লাগবে? কোথায় কি সমস্যা?- তা তদারকি করেন। এছাড়াও নির্বাচনের আগের যে কর্মকাণ্ডগুলো- যেমন নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন করা, নির্বাচন ব্যবস্থাপনা, নির্বাচন কমিশনের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করা- ইত্যাদি কাজ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ার করে থাকেন।
এইচ টি ইমাম মারা যাওয়ার পর আওয়ামী লীগ এখন পর্যন্ত কাউকে নির্বাচন পরিচালনা কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেননি। আওয়ামী লীগের মধ্যে আলোচনা ছিল, সাবেক জনপ্রশাসন সচিব রশিদুল আলমকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ার করা হবে। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত এবং আওয়ামী লীগ সভাপতির একজন আস্থাভাজন ব্যক্তি।
কিন্তু হঠাৎ করেই ১৯ দিনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিব হন কবির বিন আনোয়ার। মন্ত্রিপরিষদ সচিব থেকে অবসরের পর তিনি সস্ত্রীক আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রী তাকে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যক্রমগুলো দেখভাল করার কথা বলেন। এ রকম পরিস্থিতির মধ্যেই কবির বিন আনোয়ার ধানমন্ডি ৩ নম্বরে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে যান, সেখানে তাকে ফুল দিয়ে বরণ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া তাকে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ার, প্রয়াত এইচটি ইমামের কক্ষে নিয়ে যান এবং এইচ টি ইমামের চেয়ারেও তাকে বসান।
এ নিয়েও আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভিন্নমুখী প্রতিক্রিয়া হয়েছিল। কিন্তু তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ার হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি। জানা গেছে, কিছু আইনগত সমস্যার কারণে কবির বিন আনোয়ারকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ার করা হয়নি। কারণ, কবির বিন আনোয়ার এখনও পিএলআর-এ আছেন। অবসরোত্তর ছুটিতে থাকা একজন সরকারি কর্মকর্তা সরসরি রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পারেন না। এজন্যই তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে কো-চেয়ার করা হয়নি বলে বিভিন্ন সূত্রগুলো জানিয়েছে।
ইদানিং নির্বাচন পরিচালনা কিমিটির কো-চেয়ার হিসেবে আরেকটি নাম আলোচনা হচ্ছে, তিনি হলেন সাবেক মুখ্য সচিব এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির সমন্বয়কারী ড. কামাল নাসের চৌধুরী। কামাল নাসের চৌধুরী এখন আওয়ামী লীগের নির্বাচন কার্যক্রমগুলো দেখছেন। তবে এখন পর্যন্ত তিনজনের মধ্যে কাউকেই ঘোষণা দিয়ে কো-চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়নি। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি দেশে ফেরার পর, এইচ টি ইমামের মৃত্যুর পর দীর্ঘদিন শূন্য থাকা এই পদটি পূরণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
আওয়ামী লীগ নির্বাচন পরিচালনা কমিটি কো-চেয়ার
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নাশকতা মামলা বিএনপি ইশরাক হোসেন
মন্তব্য করুন
‘ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?
রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত ২ নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।
রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
‘ব্যাংক মাফিয়া মাস্তান ঋণখেলাপি
মন্তব্য করুন
সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।
তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি যেন কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। নির্বাচন পরবর্তী কোন্দল বন্ধে বিভিন্ন রকম উদ্যোগও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই একাধিক বার দলীয় কোন্দল বন্ধের জন্য তাগাদা দিয়েছেন। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। বরং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাংগঠনিক অবস্থা রীতিমতো ভেঙে পড়েছে। এই কোন্দল এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন বা অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই। দলের এই কোন্দল এতদিন তৃণমূল পর্যায় থাকলেও সেটি এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও শুরু হয়েছে।