ইনসাইড পলিটিক্স

ভাঙলো গণতন্ত্র মঞ্চ, ভেস্তে যাচ্ছে বিএনপির যুগপৎ আন্দোলন!


Thumbnail

মাত্র নয় মাসের মাথায় ভেঙে গেল সাত দলীয় জোট ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’। ড. রেজা কিবরিয়া ও নুরুল হক নূর নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদ গণতন্ত্র মঞ্চ নামের এ জোট থেকে ইতিমধ্যেই বেরিয়ে গেছে। শনিবার (৬ মে) রাজধানীর পল্টনে দলটির কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের মাসিক সভায় এ সিদ্ধান্ত জানায় গণঅধিকার পরিষদ। সাত দলীয় ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ নামের এই জোটটি বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর একটি। 

একাধিক সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, বিএনপি ঘোষিত যুগপৎ আন্দোলনে গণতন্ত্র মঞ্চ সংহতি প্রকাশ করে সরকার বিরোধী আন্দোলনে মাঠে থাকলেও বিএনপির সাথে গণঅধিকার পরিষদের প্রথম থেকেই বনিবনা হচ্ছিল না। এ বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে তাদের দুইটি বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু বৈঠক ফলপ্রসু হয়নি। ফলে বিএনপির যুগপৎ আন্দোলন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরে যাওয়ার ঘোষণা না দিলেও গণতন্ত্র মঞ্চ থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ।         

তবে গণঅধিকার পরিষদের নেতারা জানিয়েছেন, গণতন্ত্র মঞ্চের কাছ থেকে বিরূপ আচরণ ও যথাযথ মূল্যায়ন না পাওয়ার কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে জনসম্পৃক্ত নানা ইস্যুতে একক কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকবেন তারা। একই সঙ্গে সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনেও থাকছেন তারা। 

অন্যদিকে পাল্টা অভিযোগ করে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা জানিয়েছেন, গণঅধিকার পরিষদের শৃঙ্খলাবিরোধী কাজের ব্যাপারে আগে থেকেই অস্বস্তি ছিল। আজ মঞ্চের বৈঠক রয়েছে। সেখানে বিষয়টি এজেন্ডায়ও রাখা হয়েছে। 

গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নূর জানান, গণতন্ত্র মঞ্চে এখন থেকে গণঅধিকার পরিষদ নেই। জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কিছু কারণ তো নিশ্চয় আছে। তবে চলমান আন্দোলকে নিজেদের জায়গা থেকে আরও বেগবান করার জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে এককভাবে বিভিন্ন ইস্যুতে কর্মসূচি পালন করব। একই সঙ্গে সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনেও থাকব।  

তিনি আরও বলেন, বাম, ডান দলমত নির্বিশেষে মানুষের একটা প্রত্যাশা যে, আমরা শুধু ছয়টা সংগঠনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে সবাইকে নিয়ে একটা বৃহৎ আন্দোলনের দিকে এগিয়ে যাই। যে কারণে চেষ্টা করছি নিজেদের সেই জায়গা থেকে একটা বৃহৎ ভূমিকায় নেওয়ার। যেটা গণতন্ত্র মঞ্চে থাকলে চাইলেই নিজেদের মতো করে করা যায় না। এজন্যই সিদ্ধান্ত নেওয়া। 

দলটির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, মঞ্চ গঠনের শুরু থেকেই গণঅধিকার পরিষদের তরুণ নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেওয়া, সমাবেশে অংশগ্রহণসহ অনেক বিষয়ে অসন্তোষ ছিল। বিগত রমজানে এই অসন্তোষ আরও বেড়ে যায়। 

গণঅধিকার পরিষদের জোট ত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক জানান, গণঅধিকার পরিষদ নেতাদের বেশ কিছু অরাজনৈতিক বক্তব্য, রাজনৈতিক তৎপরতা এবং মঞ্চের শৃঙ্খলাবিরোধী কাজের ব্যাপারে শরিক দলগুলোর মধ্যে অস্বস্তি ছিল, আপত্তি আছে। এ নিয়ে বেশ কিছু সমালোচনাও আছে। এসব আমাদের মধ্যে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। রোববার গণতন্ত্র মঞ্চের বৈঠক রয়েছে। ওই বৈঠকে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের অসাংগঠনিক আচরণসহ আরও বিষয় মিলে আলোচনা হওয়ার কথা। সর্বশেষ ২ মে অনুষ্ঠিত মঞ্চের বৈঠকে তাদের নেতা রাশেদ খানসহ তিনজন এসেছিলেন। ওই সময় এ এজেন্ডা ওদের সামনেই ঠিক করা হয়েছিল। 

গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ জানান, এখন থেকে গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। গণতন্ত্র মঞ্চের দলগুলো মূলত বাম ধারার রাজনীতি করতে চায়। কিন্তু গণঅধিকার পরিষদ বাম-ডান নয়, দেশের স্বার্থে সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে এই ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে চায়। এই জায়গায় গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে মঞ্চের মতপার্থক্য। 

তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে ভিন্ন কথা। সূত্র জানায়, গত বছরের ১৬ মার্চ (বৃহস্পতিবার) রাজধানী বনানীর একটি হোটেলে ন্যাশনাল কমিটি ফর সিভিল রাইটস জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির এক সুধী সমাবেশ ও নৈশভোজের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিএনপির সন্দেহের সৃষ্টি হয়। সংগঠনটির আহ্বায়ক কলামিস্ট ফরহাদ মজহার এবং সদস্য সচিব সাংবাদিক শওকত মাহমুদের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিতিকে কেন্দ্র করেই মূলত বিএনপির সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের সম্পর্কের মধ্যে একটি সন্দেহের ডালপালা বিস্তার লাভ করে। যে অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদকে আনুষ্ঠানিকভাবে বহিষ্কার করেছিল দলটি। কিন্তু ওই অুনষ্ঠানে অন্যান্য শরিক দলগুলোর নেতৃবৃন্দের উপস্থিতির বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ না করলেও গণতন্ত্র মঞ্চের নেতৃবৃন্দসহ যারাই ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, তাদেরকেই নজরদারির আওতায় আনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। যার ফলশ্রুতিতে গণতন্ত্র মঞ্চের মধ্যে ভাঙনের ব্যঞ্জনা দেখা দিয়েছে।      

উল্লেখ্য যে, গত বছরের ৮ আগস্ট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সাত দলীয় জোট ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ আত্মপ্রকাশ করে। সে সময় এই জোটে ছিল- জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, ভাষানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। ডিসেম্বর থেকে এ জোট বিএনপির নেতৃত্বে সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলন করে আসছে। গণঅধিকার পরিষদ বেরিয়ে যাওয়ায় গণতন্ত্র মঞ্চে আর থাকলো ছয়টি দল। 

মূলত গণঅধিকার পরিষদ সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনে মাঠে থাকার কথা বললেও এই আন্দোলন ঘিরে গণতন্ত্র মঞ্চ নামে যে জোটটি গড়ে ওঠেছিল, সেটি এখন কার্যত ভেঙ্গে গেছে। এর মূল কারণ হিসেবে গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের বিএনপির সন্দেহের তালিকায় চলে আসাকেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০ দলীয় জোট ভেঙ্গে দিয়ে বিএনপি এবং এর সমমনা দলগুলো যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে গণতন্ত্র মঞ্চসহ, ১১ দলীয় জোট, ১২ দলীয় জোট নামে যে সকল জোটগুলো গড়ে তুলেছে, তাদের মধ্যে একটি জোট ইতিমধ্যেই ভেঙ্গে গেছে। অদূর ভবিষ্যতে অন্যান্য এসব জোটগুলোতেও ভাঙন দেখা যাবে। ফলে বিএনপি ঘোষিত যুগপৎ আন্দোলন জমে ওঠার কোনো সম্ভাবনা নেই। প্রকৃতপক্ষে এসব জোটগুলোর অস্তিত্ব ক্রমেই বিলীন হয়ে যাবে। তবে এখন দেখার বিষয় গণঅধিকার পরিষদের সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনে থাকার যে ঘোষণা, সেটা কতদিন স্থায়ী হয়।

গণতন্ত্র মঞ্চ   বিএনপি   যুগপৎ আন্দোলন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয়?

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

গতকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গটি আলোচনাই হয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে কেবল সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনার জন্য নির্দেশনা দেন। ফলে আওয়ামী লীগের কোন নেতাই আর উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আলোচনায় নিয়ে আসেনি।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বৈঠকে উপস্থিত অন্তত দুজন নেতা বলেছেন যে, আগামী ২৩ জুন দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কীভাবে জাকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করা যায় ও ২১ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা করা এবং শেষদিনে বড় সমাবেশ করার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। এবার আওয়ামী লীগ ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে করবে। সেই প্রসঙ্গটি সামনে নিয়ে আসা হয়।

আর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইচ্ছে করেই উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আনেননি বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু তাই বলে আওয়ামী লীগ সভাপতি যারা উপজেলা নির্বাচনে শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছে, দলের নির্দেশনা অমান্য করে আত্মীয় স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন, তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে মনে করলে ভুল হবে।

বিএনপিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হটকারী ভাবে। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদেরকে বহিষ্কার করে সবকিছু শেষ করে দেওয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন রাজনৈতিক প্রজ্ঞায়, ধীরস্থিরভাবে, আস্তে আস্তে।

জাতীয় সংসদে একবার সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন যে, বাঘে ধরলেও ছাড়ে, কিন্তু শেখ হাসিনা যাকে ধরে তাকে ছাড়ে না। যারা উপজেলা নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন তারা দীর্ঘমেয়াদি প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করবেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তারা শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লেখালে রাজনৈতিক পরিণতি কী হয় তা অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়।

এক এগারোর সময় যারা শেখ হাসিনাকে মাইনাস করতে চেয়েছিলেন সেই সমস্ত ডাকসাইটে নেতাদের কাউকেই তিনি দল থেকে বহিষ্কার করেননি। কিন্তু দলে তাদের অকার্য করেছেন, নিষ্ক্রিয় করেছেন। তাদের প্রায়শ্চিত্ত উপলব্ধি করার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছেন। এটাই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল।

শেখ হাসিনা এক এগারোর পর সংস্কারপন্থিদেরকে দুই ভাগে ভাগ করেছিলেন। যারা কম সংস্কারপন্থী ছিলেন, কম ষড়যন্ত্র করেছেন- তাদেরকে তিনি নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন। প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ দিয়েছেন। তাদের অনেক হেভিওয়েট নেতাকে প্রেসিডিয়াম থেকে সরিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের আলঙ্কারিক পদ দিয়ে শাস্তি দিয়েছেন। এই শাস্তি দল থেকে বহিষ্কারের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তিনি রাজনীতিতে নতুন করে বিদ্রোহী এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করার সুযোগ দেননি। বরং দলে তাদেরকে শাস্তি দিয়ে দলের ঐক্য অটুট রেখেছেন।

আর দ্বিতীয় প্রকার যারা ছিল এক এগারোর সংস্কারপন্থীর মূল হোতা তাদেরকে তিনি মনোনয়ন দেননি। মনোনয়ন না দিয়ে তাদেরকে দলে নিষ্ক্রিয় করেছেন। এদের মধ্যে অনেকে মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে নতুন দল করেছে। কিন্তু রাজনীতিতে জীর্ণ শীর্ণ ভিখারীতে পরিণত হয়েছে। এটাই শেখ হাসিনার কৌশল।

কাজেই এবার যারা উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে, তারা আসলে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেনি, তারা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে। শাস্তি তাদের পেতেই হবে। তবে তারা কবে কীভাবে পাবেন এবং দীর্ঘমেয়াদে তাদের কী হবে সেটি একটি বড় প্রশ্ন।

কারণ যারা আত্মীয়স্বজনদেরকে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী করেছেন তারা অবশ্যই আওয়ামী লীগ সভাপতির কালো খাতায় নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয় তা অতীতে অনেক নেতাই উপলব্ধি করেছেন। অনেকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে।

বহিষ্কার হলে একজন রাজনৈতিক নেতা পরিত্রাণ পায়, নির্বাণ লাভ করে। তিনি নতুন সুযোগ পান অন্য কিছু করার। কিন্তু একজন রাজনৈতিক নেতা যখন দলেই উপেক্ষিত হন, অনাহূত হন, পরিত্যক্ত ঘোষিত হন- তখন তার রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে। আর শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হতে বাধ্য।


শেখ   হাসিনা   আওয়ামী লীগ   তৃণমূল   উপজেলা নির্বাচন   রাজনীতি   ড. আব্দুর রাজ্জাক   শাজাহান খান   জাহিদ মালেক   মোস্তফা কামাল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়া

প্রকাশ: ০৭:৩৮ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

জরুরি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

বুধবার (১ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে রওনা হয়ে ৭টা ৫ মিনিটে তিনি হাসপাতালে পৌঁছান।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডামের অবস্থা আগের মতই। তিনি চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসকরা কিছু পরীক্ষা দিয়েছেন সেটা করাতে নিয়মিত চেকআপের অংশ হিসেবে উনাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ গত ৩১ মার্চ খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রেখে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ওই দফায় তিনদিন হাসপাতাল থাকার পর গুলাশানের বাসায় ফেরেন তিনি।

দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়া এবং দেশের বাইরে না যাওয়ার শর্তে ২০২০ সালের মার্চে সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয়।

৭৯ বয়সী এই রাজনীতিবিদ লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, কিডনি ও ফুসফুস জটিলতাসহ নানা রোগে ভুগছেন। গত কয়েক বছর ধরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তার চিকিৎসা চলছে।

এভারকেয়ার হাসপাতাল   খালেদা জিয়া   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আরও ৬৬ জনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত বিএনপির

প্রকাশ: ০৭:২১ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় এবার একযোগে ৬৬ জন নেতাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। দু–এক দিনের মধ্যেই তাদের দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে। বিএনপির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নিতে দল থেকে নির্দেশনার পরও এ সব নেতারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। একই কারণে সম্প্রতি তৃণমূলের ৭৫ জন নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দুই ধাপে বিএনপির নেতাদের বহিষ্কারের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ১৪১।

জানা গেছে, দ্বিতীয় দফায় বহিষ্কারের তালিকায় থাকা ৬৬ জনের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন ২৯ জন। ২০ জন নেতা হয়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী; আর মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ১৭ জন। এর বাইরে দ্বিতীয় ধাপে প্রার্থী হওয়া নেতাদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬ জন ও ভাইস চেয়ারম্যান পদের ২ জন প্রার্থী নিজেদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী, এবার কমবেশি ৪৮০ উপজেলা পরিষদে চার ধাপে ভোট হবে। প্রথম ধাপে ভোট হবে ৮ মে। এরপর ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে, ২৯ মে তৃতীয় ও ৫ জুন চতুর্থ ধাপের নির্বাচন হবে। ইতিমধ্যে সব ধাপের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।

বহিষ্কার   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

তারেকের উদ্ভট সিদ্ধান্তের নেপথ্যে কারা?

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপিতে এখন তারেক জিয়া উদ্ভট সিদ্ধান্তের জন্য আলোচিত নাম। একের পর এক তিনি উদ্ভট অবাস্তব সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন। বিএনপির নেতারাও এধরনের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিচলিত। 

গতকাল বিএনপির সিনিয়র দু’জন নেতা তারেক জিয়ার সাথে কথা বলছিলেন এবং সে সময় তিনি অবহিত করছিলেন যে, বহিষ্কারাদেশের নির্দেশনা দেওয়ার পরও দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে বিএনপির বেশ কিছু নেতা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। দুই নেতার এই বক্তব্যের পর তারেক জিয়া তাদেরকে জানিয়ে দেয়, যারাই নির্বাচন করবে তাদেরকেই বহিষ্কার করতে হবে এটাই তার সাফ কথা। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা তারেককে বুঝানোর চেষ্টা করেন যে, এ বহিষ্কারাদেশ কোন সমাধান নয়। দলের নেতারা যদি এভাবে বহিষ্কার হতে থাকে তাহলে এক সময় স্থানীয় পর্যায়ে সংগঠন শক্তিহীন হয়ে যাবে। তারেক জিয়া তাদেরকে বলে দেন যে, সংগঠন না থাকলেও তার কিছু যায় আসে না। কিন্তু শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের কোন রকম ছাড় দেওয়া হবে না। এরপর বিএনপির দুই নেতা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন। 

বিএনপিতে এখন সবচেয়ে বড় আলোচনার বিষয় হচ্ছে, তারেক জিয়া এই ধরনের উদ্ভট সিদ্ধান্তগুলো কেন নিচ্ছেন এবং কার পরামর্শে নিচ্ছেন। 

বিএনপি নেতারা মনে করেন যে, তারেক জিয়া এ ধরনের উদ্ভট এবং অবাস্তব সিদ্ধান্তগুলো নিচ্ছেন দূরত্বের কারণে। তিনি বাংলাদেশের রাজনীতির বাস্তবতা উপলব্ধি করতে পারছেন না, নেতাকর্মীদের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে তার কোন ধারণা নেই এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দেশ কিভাবে পরিচালনা করছে সে সম্পর্কেও কোন ন্যূনতম সঠিক ধারণাও তারেক জিয়ার নেই। যার কারণে তিনি একের পর এক উদ্ভট সিদ্ধান্তগুলো দিচ্ছেন। এবং তার এসমস্ত সিদ্ধান্তগুলোর মাশুল দিতে হচ্ছে দলকে। 

একজন নেতাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো যে, তারেক জিয়া এ সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য দলের নেতাদের পরমর্শ নেন কিনা? উত্তরে তিনি স্বীকার করেছেন যে, তারেক জিয়া আসলে কারো পরামর্শই গ্রহণ করেন না। তিনি লন্ডনে কিছু ব্যক্তি রয়েছেন, সেই ব্যক্তিদের পরমর্শেই এই ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, ২০০১ সালের পর তারেক জিয়া হাওয়া ভবনে অনেক স্তাবক সৃষ্টি করেছিলেন। গিয়াস উদ্দিন আল মামুন সহ এই স্তাবকের দলই সে সময় তারেক জিয়াকে সে সময় তারেক জিয়াকে সব বিষয়ে পরামর্শ দিত এবং যে সমস্ত পরামর্শ ছিল দলের জন্য ক্ষতিকর। তারেক তখনো দলের অন্য সিনিয়র নেতাদের কথা না শুনে শুধুমাত্র তার কিছু চাটুকার, কিছু অপরিপক্ক দুর্নীতিবাজ দুর্বৃত্তদের পরামর্শে বিভিন্ন রকমের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতেন। এখন লন্ডনে সেসমস্ত দুর্নীতিবাজ, চাটুকার দুর্বৃত্ত যারা তারেক জিয়াকে ডুবিয়েছে, বিএনপিকে ডুবিয়েছে। তারা আবার জড়ো হয়েছে। তাদের সাথে পরামর্শ করেই এই ধরনের বাস্তবতা বিবর্জিত সিদ্ধান্তগুলো নিচ্ছেন তারেক জিয়া। 

বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যান স্বীকার করেছেন যে, তারেক জিয়ার সঙ্গগুলো অত্যন্ত বিপদজ্জনক এবং তারা শুধু দল না, দেশের জন্যও ক্ষতিকর। ঐ নেতা বলেন যে, ২০০১ সালের নির্বাচনের পর হাওয়া ভবনে তারেক জিয়া একটি ছায়া সরকার গঠন করেছিল এবং এ ছায়া সরকারের মাধ্যমে দল এবং সরকার পরিচালিত হতো। সিনিয়র নেতারা ছিল পুতুল। এবারও সেই একইরকম ঘটনা ঘটেছে। তারেক জিয়াকে এখন ঘিরে রেখেছেন কিছু চাটুকার। যেসমস্ত চাটুকাররা হাওয়া ভবনে ছিলেন। তারাই এখন ঘুরে ফিরে আবার লন্ডনে গেছেন এবং লন্ডনে তারা নতুন করে হাওয়া ভবন করেছেন। আর এরাই এখন বিএনপির কফিনের শেষ পেরেক ঠুকছেন বলে মনে করেন বিএনপির অনেক সিনিয়র নেতা। 

তারেক জিয়া   বহিষ্কার   বিএনপি   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

লোকসভা নির্বাচন দেখতে আওয়ামী লীগকে বিজেপির আমন্ত্রণ

প্রকাশ: ০৬:১৪ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

সাতটি ধাপে ভারতের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি ও প্রচারণা দেখতে বাংলাদেশ থেকে আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)।

বুধবার (১ মে) আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে সাতটি ধাপে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ক্ষমতাসীন বিজেপি এই নির্বাচনে তাদের সার্বিক প্রস্তুতি ও প্রচারণা দেখানোর জন্য বিদেশি কিছু রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে একমাত্র আওয়ামী লীগকে তারা আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, ভারতে বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায়। অন্যদিকে, বাংলাদেশে পরপর চারটি জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশভাবে জয়লাভ করে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। এই সময়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে যুগান্তকারী উন্নয়ন হয়েছে। এই উন্নয়ন পুরো পৃথিবীকে অবাক করেছে।

ভারতের ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ গণতন্ত্র ভারত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি যে আস্থাশীল এবং আওয়ামী লীগকে যে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও তাদের প্রকৃত বন্ধু মনে করে, এই আমন্ত্রণ সেই ইঙ্গিতই বহন করে।

বিজেপির নির্বাচনী প্রস্তুতি ও প্রচারণা পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে পাঠানো আমন্ত্রণপত্রে তারা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি পাঠাতে অনুরোধ করেছে। এই আমন্ত্রণের প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হিসেবে দলের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং সংসদ সদস্য ড. সেলিম মাহমুদকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ভারত সফরে মনোনীত করেছেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, এই সফরটি মূলত পাঁচ দিনের। ১ মে থেকে ৫ মে পর্যন্ত। সফরে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধির সাথে বিজেপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের বৈঠক রয়েছে। দিল্লির বাইরে বিজেপির নির্বাচনী প্রচারণা সরেজমিনে দেখানোর জন্য বিজেপি আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিকে ছত্রিশগড়ে নিয়ে যাবে। ভারতের নির্বাচন ১৯ এপ্রিল শুরু হয়েছে, যা ১ জুন পর্যন্ত চলবে। ৪ জুন ভোটের ফলাফল ঘোষিত হবে।

লোকসভা নির্বাচন   আওয়ামী লীগ   বিজেপি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন