সুশীলরা নড়েচড়ে বসে আছেন। বিএনপির আন্দোলন শুরু হবে, ভাঙচুর হবে, রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হবে, সন্ত্রাস-সহিংসতার রাজত্ব কায়েম হবে। তারপর তারা প্রাদপ্রদীপে আসবেন এবং সিংহাসন দখল করবেন। কিন্তু তেমন আন্দোলন বিএনপি গড়ে তুলতে পারছে না। বিএনপির সঙ্গে সুশীলদের এক ধরনের সমঝোতা ছিল এবং এর সঙ্গে পশ্চিমা দেশের কয়েকটি দূতাবাসও জড়িত ছিল। তাদের পরিকল্পনা ছিল, গত ডিসেম্বরের মধ্যেই বড় ধরনের একটি আন্দোলনের মাধ্যমে রাজপথ উত্তপ্ত করা হবে। সহিংসতা, ভাঙচুর এবং নারকিয়তার মধ্য দিয়ে জনজীবনে অস্থিরতা তৈরি করা হবে। এর প্রেক্ষিতে তৃতীয় শক্তি ক্ষমতায় আসার সুযোগ পাবে।
রাজনৈতিক অস্থিরতা যদি না হয়, জ্বালাও-পোড়াও ভাঙচুর যদি না হয়, তাহলে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন অসম্ভব। আর রাজনৈতিক পট পরিবর্তন না হলে সুশীলদের ক্ষমতায় আরোহনও সম্ভব নয়। বাংলাদেশে ২০০৭ সালের এক-এগারো এসেছিল এরকম একটি প্রেক্ষাপটে। সেসময় আওয়ামী লীগ-বিএনপির রাজনৈতিক সহিংসতা, উত্তেজনা- এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছিল যে, জনজীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছিল। এই প্রেক্ষাপটে মঈন ইউ আহমেদের নেতৃত্বে এক-এগারো সরকার ক্ষমতায় এসেছিল। বিএনপিকে এরকমই একটি তেজী আন্দোলন করার পরামর্শ দিয়েছিলেন সুশীলরা। আর এক কারণেই সুশীল নিয়ন্ত্রিত কয়েকটি গণমাধ্যম উঠেপড়ে লেগেছিল।
একদিকে যেমন তারা সরকারের সমালোচনা, অন্যদিকে বিএনপিকে উস্কানি দিয়ে উজ্জীবিত করা- এই নীতিতেই তারা এগোচ্ছিল। কিন্তু ডিসেম্বরে ঢাকায় সমাবেশের মধ্য দিয়ে বিএনপি যে চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা ছিল- তা শেষ পর্যন্ত হালে পানি পায়নি। বরং ঢাকায় সমাবেশের মাধ্যমে বিএনপি ঢাকায় যে স্থায়ীভাবে অবস্থান গ্রহণ এবং সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা নিয়েছিল,তা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাহসী এবং সময়চ্যুত পদক্ষেপে ভেস্তে যায়। এরপর বিএনপির আন্দোলনও স্তিমিত হয়ে পড়ে। এখন বিএনপি নতুন করে আন্দোলন শুরুর চেষ্টা করছে, সুশীলরাও সেই আন্দোলনের অপেক্ষায় আছে।
তবে সুশীল সমাজ মনে করছে, সাংগঠনিক দুর্বলতা, বিএনপির মধ্যে অনৈক্য এবং নানা রকম ব্যর্থতার কারণে আন্দোলন বেগ পাচ্ছে না। আর আন্দোলন বেগবান না হলে সুশীলদের জন্য ক্ষমতা গ্রহণও এতো সহজ হবে না। সুশীলরা মনে করছেন যে, একমাত্র জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর এবং অরাজক পরিস্থিতি ছাড়া রাজনীতিতে ক্ষমতায় তৃতীয় শক্তি আসা অসম্ভব। আর এ কারণেই এখন সুশীলরা মনে করছে, বিএনপির হাত থেকে সময় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। শেষ পর্যন্ত যদি সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে বড় ধরনের আন্দোলন বিএনপি গড়ে তুলতে না পারে, তাহলে সরকার পতন এবং সুশীলদের ক্ষমতায় আসার সুযোগ নষ্ট হয়ে যাবে। এ কারণেই এখন বিএনপির মধ্যেও অন্য রকম হিসেব নিকেশ চলছে।
অবার বিএনপির অনেক নেতা মনে করছেন, এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করা যাবে না, যেখানে তৃতীয় শক্তি সুযোগ পায়। আর এ কারণেই বিএনপি আন্দোলনের ক্ষেত্রে লাগাম টেনে ধরছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছে, বিএনপির আন্দোলন ঢিমেতালে চলছে পরিকল্পনার কারণে। পরিকল্পিতভাবে নয়, বরং তাদের সাংগঠনিক শক্তি এখন অনেক দুর্বল। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, সাধারণ মানুষ এখন জ্বালাও-পোড়াও, হরতাল, অবরোধের রাজনীতিকে পছন্দ করে না। মানুষ কর্মচাঞ্চল্যের মধ্যে থাকতে চায়। আর এ কারণেই জনগণ এখনও বিএনপির আন্দোলন থেকে নিজেদেরকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। আর এ কারণেই সুশীলদের আপেক্ষা বাড়ছে।
সামনে তাদের হাতে সময় আছে আর মাত্র চার মাস। বিএনপিও দেখছে এই চার মাসে তারা বড় ধরনের আন্দোলন করতে পারে কি না। আর যদি না পারে, শেষ পর্যন্ত বিএনপি হয়তো সুশীলদের ছেড়ে নির্বাচনের পথেই হাটবে।
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগ ঢাকা-৮
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।