নির্দলীয় নিরপেক্ষ
তত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে আন্দোলন করছে বিএনপি। কিন্তু তাদের আন্দোলন ক্রমশ সহিংস
হয়ে পড়ছে। গত কিছুদিন ধরে ঢাকা এবং বিভিন্ন জেলায় বিএনপি’র সঙ্গে পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা
রক্ষাকারী বাহিনীর সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে এবং এ সহিংসতা আরও বাড়তে পারে বলেও ধারণা
করা হচ্ছে। বিএনপি’র পরিকল্পনা ছিল, সেপ্টেম্বর অক্টোবর থেকে তারা চূড়ান্ত আন্দোলনে
যাবে এবং সেই সময় তারা হরতাল ঘেরাও কর্মসুচি পালন করবে। কিন্তু সেই অবস্থান থেকে বিএনপি
সরে গেছে। বিএনপি’র মধ্যে যারা উগ্রপন্থী রয়েছেন, যারা ধ্বংসাত্মক রাজনীতি আবার ফিরিয়ে
আনতে চান, তারা আর অপেক্ষা করতে চায় না। বিএনপি’র একাধিক নেতা বলছেন যে, সেপ্টেম্বর
অক্টোবরে আন্দোলন করলে নির্বাচন বাধা দেয়া যাবে না এবং সরকারেরও পতন হবে না। তাই তখন
নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোন বিকল্প থাকবে না। একারণেই বিএনপি আর অপেক্ষা করতে রাজি নয়।
তারা এখনই আন্দোলন করছে। আর এই আন্দোলোন তারা আপাতত জোটবদ্ধভাবে করবেন না বলেও জানা
গেছে।
উল্লেখ্য যে,
বিএনপি গত এক বছর ধরেই সরকার পতনের দাবীতে ধাপে ধাপে আন্দোলন করছে। গত বছর নভেম্বর
ডিসেম্বর মাসে তারা সারা দেশে বিভাগীয় সমাবেশ করে। এই বিভাগীয় সমাবেশের পর ঢাকা থেকে
চূড়ান্ত আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে এমনটি জানিয়েছিল বিএনপি। ঢাকায় সমাবেশের
তারিখ ছিল গত বছর ১০ ডিসেম্বর। ঐ সমাবেশের আগে বিএনপি নেতা আমানুল্লাহ আমান বলেছিলেন,
১০ ডিসেম্বরের পর সরকার থাকবে না। খালেদা জিয়ার কথায় সবকিছু চলবে। ১০ ডিসেম্বরকে ঘিরে
বিএনপির নাশকতা এবং এক ধরণের ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনাও ছিল বলে মনে করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী
বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা। তাদের বক্তব্যের সত্যতা মেলে যখন ৭ ডিসেম্বর বিএনপি
নেতারা নয়া পল্টনে বিএনপি’র কার্যালয়ের জড়ো হয় এবং সেখানে কর্মীদের জমায়াত করতে শুরু
করে। কিন্তু পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল
ইসলাম আলমগীর, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ একাধিক নেতাদের গ্রেফতার করা
হয়। এরপর বিএনপি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রস্তাবিত স্থানেই সামাবেশ করতে রাজি
হয় এবং সেই সমাবেশ থেকে বিএনপি তাদের ৬ জন সংসদ সদস্যের পদত্যাগের ঘোষণা দেয়।
সেদিনের সমাবেশ
থেকে কোন চূড়ান্ত আন্দোলনের কর্মসূচি বিএনপি ঘোষণা করতে পারেনি। এর পর থেকেই বিএনপি’র
আন্দোলন স্থবির হয়ে পরে। এটি নিয়ে বিএনপি’র মধ্যে একধরণের উত্তেজনা তৈরি হয়। বিএনপি’র
অধিকাংশ কর্মীরা মনে করছিলেন যে, তাদের নেতারা বোধহয় সরকারের সাথে আপোষের পথ খুঁজছে।
এ জন্যই তারা এখন আন্দোলনের লাগাম টেনে ধরেছেন। আর এর ফলে বিএনপি’র ভেতরে চাপ বেড়ে
যায়। এখন বিএনপি’র শীর্ষ নেতাদের মধ্যেও এক ধরণের অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। তারা মনে করছেন,
নির্বাচনের আর বাকি আছে ৭ মাসেরও কম সময়। এই সময়ের মধ্যে সরকারের উপর বড় ধরণের কোন
চাপ যদি সৃষ্টি করা না যায়, তাহলে সরকারের পতন অসম্ভব হয়ে যাবে এবং সরকার বিএনপিকে
ছাড়াই নির্বাচন করবে।
বিএনপি’র অনেক
নেতাই মনে করেন সরকার এখন একটি ছক কষে এগোচ্ছে। তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে
বাইরে রেখে অন্যন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে করার পরিকল্পনা করছে। একই সাথে বিভিন্ন
রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করলে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে। ফলে আন্তর্জাতিক মহলে
তারা এটি দেখাতে সক্ষম হবে যে, নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে। আর এ কারণেই
বিএনপি আর অপেক্ষা করতে রাজি নয়। তারা এখন থেকেই চূড়ান্ত আন্দোলন করতে চায়। চূড়ান্ত
আন্দোলন বলতে তারা সহিংস অবস্থায় আন্দোলনকে ফিরিয়ে আনতে চায় এবং সেই সহিংসতার মাধ্যমে
তারা নির্বাচনকেই অনিশ্চিত করতে চায়। এখন দেখার বিষয় বিএনপি’র এই কৌশল সফল হয় কিনা।
মন্তব্য করুন
কোটা সংস্কার আন্দোলনে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী তান্ডবের সময় মাঠে ছিলেন না আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীরা। কোথাও কোথাও ছিলেন নীরব দর্শক। সহিংস তান্ডবের সময়ে এমপি-মন্ত্রীদের অনেকেই ছিলেন নিরাপদ আশ্রয়ে। কেউ কেউ নিজ বাসা বা অফিসে বসে টেলিভিশনে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। পরিস্থিতি ঘোলাটে দেখে কেউ কেউ অসুস্থতার কথা বলে পাড়ি জমিয়েছেন বিদেশে, কেউ ছিলেন হাসপাতালে। পরিস্থিতির অবনতি দেখে কেউ কেউ মন্ত্রীপাড়ার বাসা কিংবা ন্যামভবন থেকে বাইরে বের হননি। রাজধানী, বিভাগীয় শহরসহ সারা দেশেই একই চিত্র পাওয়া গেছে।
হাতে গোনা কয়েকজন মন্ত্রী-এমপির উপস্থিতি কেবল লক্ষ্য করা গেছে আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ও দলীয় সভানেত্রীর ধানমন্ডি কার্যালয়ে। এ রকম দুটি কার্যালয়ই অরক্ষিত ছিল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, তান্ডবের সময়ে যদি এমপি-মন্ত্রীরা নিজ নিজ কর্মিবাহিনী নিয়ে মাঠে থাকতেন তাহলে সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করাসহ রক্ষা করা যেত রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ও স্থাপনাগুলো। এমনকি আওয়ামী লীগের অফিস, প্রভাবশালী নেতা-মন্ত্রীদের বাসাবাড়িতে হামলা হতো না। টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দেউলিয়াপনা ফুটে উঠত না। এমপি-মন্ত্রীই নয়, দায়িত্বশীল নেতারাও ছিলেন গা ঢাকা দিয়ে। সংকটের সময়ে নিজেদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ থাকার বদলে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে আওয়ামী লীগের কর্মিবাহিনী। এমপি-মন্ত্রী ও দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা নেতাদের কর্মকান্ডে ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড।
কোটা আন্দোলন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ১৬ জুলাই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে মারাও যান কয়েকজন। ওই দিন রাজধানীসহ অধিকাংশ এলাকায় এমপিরা খন্ড খন্ড মিছিল করে নিজেদের অবস্থান জানান দেন। কেউ কেউ লাঠি হাতে বিক্ষোভ মিছিল করে সেগুলো নিজেদের ফেসবুকেও পোস্ট করেন। জেলা শহরগুলোতেও একই চিত্র চোখে পড়ে। পরদিন ১৭ জুলাই থেকে পরিস্থিতি বেশি খারাপ হয়। ওইদিন আরও অনেকেই মারা যান। এরপর থেকেই এমপি-মন্ত্রীরা লাপাত্তা হয়ে যান। তাদের অনেকেই ফোন বন্ধ করে রাখেন। বিশেষ করে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, রংপুর, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, নরসিংদী, মাদারীপুরে এমপি-মন্ত্রীদের দেখা যায়নি। এসব জায়গায় তান্ডব চালায় বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা। এতে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দুর্বলতা চরমভাবে ফুটে ওঠে।
রংপুরে ক্ষয়ক্ষতির এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানও দলীয় নেতা-কর্মীদের দুর্বলতাকে দুষেছেন। গত বৃহস্পতিবার রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়ে আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ‘আপনারা ফেল করায় তারা এসব করতে সাহস পেয়েছে এবং করেছে। ঘুরে দাঁড়ালেই এসব করতে পারত না। আপনারা বসে ছিলেন কেন? আপনাদের নেতারা বসে ছিল কেন? পকেটে হাত দিয়ে যদি ঘরে থাকেন, তাহলে তারা ঘরে ঘরে ঢুকে মেরে ফেলবে।’
এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপচার্য ড. মীজানুর রহমান বলেন, ‘কোটাবিরোধী আন্দোলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। অন্যদিকে বিগত সংসদ নির্বাচনের সময়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের উন্মুক্ত করে দেওয়ার ফলেও অনেক জায়গায় সাংগঠনিক অবস্থা দুর্বল হয়েছে। যেখানে স্বতন্ত্ররা বিজয়ী হয়েছেন, সেখানে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এমপির সঙ্গে কম আছে। আবার কোনো কোনো জায়গায় আওয়ামী লীগের এমপি নির্বাচিত হলেও সাবেক এমপি-মন্ত্রীদের দাপট সেখানে বেশি। সে কারণে বর্তমান এমপিদের সঙ্গে তেমন নেতা-কর্মীও নাই। যার কারণে এমপি-মন্ত্রীরা গা ঢাকা দিয়েছেন।’
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী ফোরামের নেতারা জানান, দীর্ঘদিন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের ওয়ার্ড-থানার কমিটি না থাকায় নেতা-কর্মীরা ঝিমিয়ে পড়েছেন। যে কারণে শনিরআখড়া, রায়েরবাগ, যাত্রাবাড়ী, মালিবাগ আবুল হোটেল, রামপুরায় বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাড্ডা, নতুন বাজার, প্রগতি সরণি, কুড়িল, খিলক্ষেত, উত্তরা, উত্তরখান, দক্ষিণখান, মিরপুর ১০ নম্বর ও কাজীপাড়া মেট্রোরেল স্টেশন, মোহাম্মদপুর, শংকর, ধানমন্ডি, জিগাতলা, আসাদগেট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, গুলিস্তান, বনানীর সেতু ভবন, জাতীয় দুর্যোগ ভবন, ডেটা সেন্টার, স্বাস্থ্য অধিদফতরসহ বিভিন্ন এলাকায় তান্ডব করতে পেরেছে নাশকতাকারীরা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর থেকেই আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীদের সঙ্গে কর্মীদের দূরত্ব বাড়তে থাকে। কেউ কেউ এলাকায় গড়ে তুলেছেন এমপি লীগ, আত্মীয় লীগ। পরীক্ষিত ও দুর্দিনের নেতা-কর্মীদের সরিয়ে হাইব্রিডদের নিয়ে করেছেন কমিটি। হাইব্রিড নেতারা এমপি-মন্ত্রীদের ওপর ভর করে কেউ কেউ হয়েছেন টাকার কুমির। যে কারণে টাকা বাঁচাতে তারাও মাঠে নামেননি। দুঃসময়ের পরীক্ষিত কর্মীরা নিজ তাগিদে মাঠে নামলেও তারা স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীদের কাছে ভিড়েননি। আর এমপি-মন্ত্রীদের স্বজন লীগ, প্রটোকল লীগকে মাঠে নামানো যায়নি। আগের দিনে দলের নেতা-এমপি-মন্ত্রীরা ছিলেন যেমন কর্মিবান্ধব, তেমনি কর্মীরাও নেতার জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলেন। এখন সেই সংস্কৃতি উঠে যেতে বসেছে। নেতা-কর্মীদের ওপর যখন নির্যাতন করা হয়েছে ওইসব নেতারাও ঢাল হয়ে কর্মীদের বাঁচিয়েছেন। বর্তমানে সেটা নেই। এখন সেলফি সংস্কৃতিতে শেষ হচ্ছে মাঠের রাজনীতি। কিছু সময় মাঠে থেকে ছবি তুলে সেলফি দিয়েই দায়িত্ব শেষ করছেন কেউ কেউ।
মাঠপর্যায়ের নেতারা বলছেন, নির্বাচনি এলাকার এমপিদের আমরা অভিভাবক হিসেবে মানি। সঠিক দিকনিদের্শনা না পেলে আমরা কী করব। বিগত কয়েক দিনের কোটাবিরোধী আন্দোলনে অনেক এমপি-মন্ত্রীই গা ঢাকা দিয়েছিলেন। যে কারণে সঠিক নির্দেশনা না পাওয়ায় তেমন প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায়নি। তারা আরও জানিয়েছেন, সংকটের সময়ে যারা দলকে অনিরাপদ রেখে নিজে নিরাপদ থাকতে চায় আগামীতে দলীয় মনোনয়নের সময়ে দলের হাইকমান্ডকে চিন্তাভাবনা করেই মনোনয়ন দেওয়া প্রয়োজন।
(তথ্যসূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন,
২৭ জুলাই ২০২৪)
তান্ডব মাঠ আওয়ামী লীগ এমপি মন্ত্রী
মন্তব্য করুন
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
সাইবার যুদ্ধ আওয়ামী লীগ কোটা আন্দোলন তথ্য ডিজিটাল বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গ্রেপ্তার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলামগীর
মন্তব্য করুন
কোটা আন্দোলন গ্রেপ্তার তারেক জিয়া নাশকতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি
মন্তব্য করুন
কোটা সংস্কার আন্দোলনে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী তান্ডবের সময় মাঠে ছিলেন না আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীরা। কোথাও কোথাও ছিলেন নীরব দর্শক। সহিংস তান্ডবের সময়ে এমপি-মন্ত্রীদের অনেকেই ছিলেন নিরাপদ আশ্রয়ে। কেউ কেউ নিজ বাসা বা অফিসে বসে টেলিভিশনে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। পরিস্থিতি ঘোলাটে দেখে কেউ কেউ অসুস্থতার কথা বলে পাড়ি জমিয়েছেন বিদেশে, কেউ ছিলেন হাসপাতালে। পরিস্থিতির অবনতি দেখে কেউ কেউ মন্ত্রীপাড়ার বাসা কিংবা ন্যামভবন থেকে বাইরে বের হননি। রাজধানী, বিভাগীয় শহরসহ সারা দেশেই একই চিত্র পাওয়া গেছে।
এখন ষড়যন্ত্র এবং আন্দোলনের দু’টি অংশ হচ্ছে। একটি দৃশ্যমান অংশ যেটি মাঠে হচ্ছে। সরকার পতনের লক্ষ্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ওপর ভর করে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, পেশাদার সন্ত্রাসীরা এক জোট হয়ে দেশে নাশকতা সৃষ্টি করেছে। একটি ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টির চেষ্টা করে সরকারকে হটানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলো। অন্যটি সাইবার জগতে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
বিএনপির বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযান চলছে। নির্বাচনের আগে ২৮ অক্টোবর বিএনপির তাণ্ডবের পর যেভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনা করেছিল সরকার ঠিক একইভাবে এবারও ১৭ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে যে সন্ত্রাস, সহিংসতা হচ্ছে তার হোতাদেরকে চিহ্নিত করা হচ্ছে এবং আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এই সময় নাশকতায় ছাত্রশিবির এবং জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতায় ছাত্রদল এবং বিএনপি নেতারা সরকার পতনের একটা নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন। সেই চেষ্টা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তারা আন্দোলনকে সহিংস এবং নাশকতার পথে নিয়ে যান। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো যেমন বিটিভি, সেতু ভবন ইত্যাদি হামলার পিছনে বিএনপির সরাসরি সম্পৃক্ততার খবর পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আর এই কারণেই যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।