ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপি-জামায়াত গণতন্ত্রের শত্রু, সুষ্ঠু নির্বাচনের বাধা: শেখ পরশ

প্রকাশ: ০৬:৪৯ পিএম, ৩০ মে, ২০২৩


Thumbnail যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ।

যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, ‘আমি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে পারি যে, অন্ততপক্ষে এই নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেবার পর থেকে সকল নির্বাচনই অবাধ এবং সুষ্ঠু হয়ে চলেছে। আগামীর নির্বাচন আরও সুষ্ঠু এবং কঠিন নির্বাচন হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু এবং অবাধ আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে হয়। বিশেষ করে সাম্প্রতিক নির্বাচনসমূহ তার জলজ্যান্ত প্রমাণ। সুতরাং আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু নির্বাচনের বাধা না, যারা নির্বাচন প্রত্যাহার করে, নির্বাচনের দিন হরতাল-অবরোধ ডাকে, নির্বাচনের দিন জনগণকে ভয়-ভীতি দেখায়, যারা অগ্নিসন্ত্রাস করে নির্বাচন বানচাল করতে চায়, তারা সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায়। বিএনপি-জামাত গণতন্ত্রের শত্রু, সুষ্ঠু নির্বাচনের বাধা।’

মঙ্গলবার (৩০ মে) বেলা ১১টায় বরিশালে শিল্পকলা একাডেমীতে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত বরিশাল বিভাগীয় প্রতিনিধিবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আফজাল হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. গোলাম কবির রাব্বানী চিনু, নির্মল কুমার চ্যাটার্জী, বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. এ কে এম জাহাঙ্গীর, বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. তালুকদার মো. ইউনূস। সভায় সঞ্চালনা করেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।


যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই বরিশাল নির্বাচনের গুরুত্ব অপরিসীম। এই নির্বাচন শুধু একটা গতি, একটা সময় নির্ধারণ করবে না, একটা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বরিশালের এই নির্বাচনের গুরুত্ব অপরিসীম। এই নির্বাচনটা এমন একটা সময় হচ্ছে, মাত্র ৬ মাস পর জাতীয় নির্বাচন। বরিশালের এই নির্বাচনে নৌকার জয় জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করে। তাই আমরা বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বিশেষ গুরুত্বের সাথে দেখছি। নির্বাচনী প্রচারণা কমিটিতে যাদেরকে রাখা হয়নি তাদের উদ্দেশ্যে বিনয়ের সাথে বলবো, মান অভিমান ভুলে গিয়ে, আপনারা দয়া করে নৌকার পক্ষে কাজ করবেন। আমাদের ব্যক্তিগত মান-অভিমান, অনুভূতি অথবা কষ্টের জন্য, এই নৌকা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। নৌকা ক্ষতিগ্রস্ত হলে আওয়ামী লীগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, আওয়ামী লীগ ক্ষতিগ্রস্ত হলে জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সর্বোপরি বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই আপনাদের কাছে আমার বিনীত এবং হাত জোর করে অনুরোধ করছি, আপনারা সবাই নিঃস্বার্থভাবে এবং নিঃশর্তভাবে নৌকার পক্ষে কাজ করেন।’ 

তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে আনুগত্য ও শৃঙ্খলা একটা বিরাট ব্যাপার। আমাদের আনুগত্য নৌকার প্রতি। নৌকা কিসের প্রতীক? নৌকা বঙ্গবন্ধুর প্রতীক, নৌকা মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক। নৌকা বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতীক। নৌকা আমাদের অনুভূতিরও প্রতীক। কারণ নৌকা আমাদের ভালোবাসার নাম। নৌকার সম্মান রাখার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। এই নির্বাচনে আমাদের নৌকার মান সমুন্নত রাখার শপথ নিতে হবে। ব্যক্তি স্বার্থ বা আত্মকেন্দ্রিক স্বার্থ ভুলে এখন আমাদের নৌকাকে তুলে ধরতে হবে। আপনাদের ঐক্যবদ্ধ চেষ্টা এই নির্বাচনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। আপনাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা নৌকার সম্মান রাখতে পারে।’

পরশ বলেন, ‘এই দেশে যে নির্বাচনী পরিবেশ বিরাজমান তার আরেকটা প্রমাণ যে বিএনপি কোন রকম বাধা-বিপত্তি ছাড়াই সভা সমাবেশ করে চলেছে। তাদের রাজনৈতিক অধিকার তারা চর্চা করছে। আমাদের কিন্তু সমাবেশ করতে দেয়া হত না। এমনকি আমাদের সমাবেশে পুলিশের লাঠি চার্জ করা ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। যারা ২১ আগস্ট সন্ত্রাস বিরোধী শান্তি সমাবেশে বোমা মেরে ২৫ জন বিরোধী মতাদর্শের নেতা-কর্মীদের হত্যা করে, তারা আবার সমাবেশ করার অধিকারের কথা বলে কোন মুখে- বুঝি না।’ 


প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত একজন সজ্জন মানুষ। এদেশের ছাত্রসমাজ, যুবসমাজ, বৃদ্ধ-বনিতা সকলের কাছে জনপ্রিয় একজন মানুষ। তার জনপ্রিয়তার ধারে কাছে এই বরিশাল নগরীতে কেউ নেই।’ 

তিনি বলেন, ‘আমরা ঘরে বাহিরে এক ও অভিন্ন। আমাদের সকল নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ভোট চাইছেন। আমরা গাজীপুরের নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়েছি। আমরা জনগণের ভোটে হারি নাই। আমরা ষড়যন্ত্রের কাছে হেরেছি। গাজীপুর সিটি নির্বাচন থেকে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে নতুন করে কৌশল করে সামনের নির্বাচনগুলোতে কাজ করবো। গাজীপুরের নির্বাচনে আমাদের কোন ক্ষতি হয় নাই। আমাদের ক্ষতি হয়েছে আমরা একজন মেয়রকে হারিয়েছি। কাজেই আমরা গাজীপুর থেকে শিক্ষা নিয়েছি। গাজীপুরের পুনরাবৃত্তি আর অন্যান্য সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচনে হবে না বলে বিশ্বাস করি। আমরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ সকল সহযোগী সংগঠন নিয়ে বরিশালে কাজ করছি। আমাদের উদ্দেশ্য হলো বরিশালের মানুষের কল্যাণ করা, বরিশাল সিটির উন্নয়ন করা, জাতির পিতার বাংলাদেশে, শেখ হাসিনার বাংলাদেশে কোন দুর্বৃত্তদের জায়গা নাই। আমরা শেখ হাসিনার উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। এটাই হোক আমাদের শপথ।’

বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ (খোকন সেরনিয়াবাত) বলেন, ‘পরশের নেতৃত্বে যুবলীগ সুসংগঠিত হবে এবং শক্তিশালী হবে। যে কর্মযজ্ঞ দেশরত্ন শেখ হাসিনা বাংলাদেশে শুরু করেছেন সেই উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ থেকে বরিশাল বঞ্চিত। এই বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি আধুনিক, উন্নত-সমৃদ্ধ, স্মার্ট বরিশাল সিটি গঠনের লক্ষ্যে আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়ে পাঠিয়েছেন। যুবলীগ এমন একটি সংগঠন যেটা আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করতে পারবে। আমাদের অভিভাবক জননেত্রী শেখ হাসিনা। তার নির্দেশে যদি আমরা উপেক্ষাা করি তাহলে সেটা হবে আত্মঘাতি। আওয়ামী লীগ একটি গণমানুষের দল। আমি যদি মেয়র হতে পারি তাহলে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনকে উন্মুক্ত করবো। আমি এই পরিণত বয়সে বিত্ত-বৈভব কামাতে আসিনি। জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে যে অঙ্গিকার করেছি- তা পালন করতে এসেছি। আমি মানুষের বন্ধু হতে চাই, মানুষের সেবা করতে চাই, মানুষের ভালোবাসা পেতে চাই।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আফজাল হোসেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দক্ষিণবঙ্গের মানুষের জন্য যা কিছু করেছেন তা অন্যান্য অঞ্চলের মানুষের কাছে বিষ্ময়কর। স্বপ্নের পদ্মাসেতুসহ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, পায়রা বন্দর, পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, অসংখ্য রাস্তা-ঘাট তৈরি করে দিয়েছেন। এতসব উন্নয়ন দেখে কৃতজ্ঞতাস্বরূপ এ অঞ্চলের মানুষের নৌকায় ভোট দেওয়া উচিত। শুধু তাই নয় সারা বাংলাদেশে যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা- আমরা বিশ্বাস করি আগামী ১২ জুন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনসহ সকল নির্বাচনে নৌকার জয় হবে।’

সঞ্চালকের বক্তব্যে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ‘আমরা যুবলীগের নেতা-কর্মীরা অনেক স্থানীয় নির্বাচনকে গুরুত্বের সাথে দেখি না। ফলে নির্বাচনে অনেক ক্ষেত্রে খারাপ বয়ে আনে। আমাদের দায়িত্বহীনতা আর গুরুত্বহীনতার কারণে অযোগ্য প্রার্থী, বিএনপি-জামায়াতের লোক জয় লাভ করে। তাই আমাদের শপথ নিতে হবে আগামী ১২ জুন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকা মার্কা প্রতীকে ভোট দিয়ে আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতকে জয় লাভ করিয়ে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘একটি উন্নত, সমৃদ্ধ, উন্নত বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকার কোন বিকল্প নাই। আমি বিশ্বাস করি আগামী ১২ জুনের নির্বাচনে নৌকাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।’

এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. গোলাম কবির রাব্বানী চিনু, নির্মল কুমার চ্যাটার্জী, বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. এ কে এম জাহাঙ্গীর, বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. তালুকদার মো. ইউনূস। 

এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু আহমেদ নাসিম পাভেল, যুগ্ম-আহ্বায়ক ও বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বদিউল আলম, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মো. মাজহারুল ইসলাম।

উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার, তাজউদ্দিন আহমেদ, মো. জসিম মাতুব্বর, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, জহির উদ্দিন খসরু, আবু মুনির মো. শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, মশিউর রহমান চপল, অ্যাড. ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেল, স্বাস্থ্য জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. ফরিদ রায়হান, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মীর মো. মহি উদ্দিন, ক্রীড়া সম্পাদক মো. নিজাম উদ্দিন চৌধুরী পারভেজ, ধর্ম সম্পাদক মাওলানা খলিলুর রহমান সরদার, মহিলা সম্পাদক অ্যাড. মুক্তা আক্তার, উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার সম্পাদক কাজী খালিদ আল মাহমুদ টুকু, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. মো. গোলাম কিবরিয়া শামীম, উপ-ধর্ম সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বৈদ্যসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও বিভিন্ন জেলা-উপজেলা যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।


যুবলীগ   চেয়ারম্যান   ফজলে শামস্ পরশ   বরিশাল   নির্বাচন   সিটি করপোরেশন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিলুপ্তির পথে জাতীয় পার্টি?

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

কাগজে কলমে জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধীদল তারা। কিন্তু দলটি সাংগঠনিক অবস্থা এত নাজুক যে, এই দলটি কবে বিলুপ্ত হবে তার দিনক্ষণ এখনও গননা হচ্ছে। জাতীয় পার্টি এখন অস্তিত্বের সংকটে। আওয়ামী লীগের কৃপায় বেঁচে থাকা এই দলটি এখন আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করে কোন রকমে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ জাতীয় পার্টিকে মনে করছে না সরকারি দলের না বিরোধী দলের! সবকিছু মিলিয়ে একটি বিভ্রান্ত আদর্শিক অবস্থা জাতীয় পার্টিকে ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু করতে করতে এখন বিলীন প্রায় করে ফেলেছে।

স্বৈরাচারী হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ জাতীয় পার্টি গঠন করেছিলেন ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ ক্ষমতা গ্রহণ করে। তার পর আস্তে আস্তে ক্ষমতায় থেকে ক্ষমতার সুযোগ সুবিধা ভোগ করে বিভিন্ন দলছুট উচ্ছিষ্টভোগীদের কে নিয়ে এই জাতীয় পার্টি গঠন করেছিলেন। জাতীয় পার্টি গঠিত হওয়ার পর দীর্ঘদিন ক্ষমতায় ছিল এবং ক্ষমতার হালুয়া রুটি খাওয়াই জাতীয় পার্টির নেতা কর্মীদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল। ৯০ এর দশকে স্বৈরাচার পতনের পর অনেকে ধারণা করেছিলেন যে জাতীয় পার্টি কালের গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। কিন্তু সেই সময় অস্তিত্বের পরীক্ষায় নাটকীয়ভাবে জয়ী হয় জাতীয় পার্টি। বিশেষ করে জাতীয় পার্টি সেই সময়ে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মিজানুর রহমান চৌধুরী অসাধারণ ভূমিকা রাখেন। তার কারণেই স্বৈরাচারের পতনের পর ১৯৯১ এর নির্বাচনে জাতীয় পার্টি তৃতীয় স্থান লাভ করে এবং সকলকে চমকে দেয়। এর পর জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগ, বিএনপি যখন যায়, তখন তারা এই নীতি অনুসরণ করে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখে।

বাংলাদেশে বাংলাদেশের রাজনীতিতে জাতীয় পার্টি একটা ফ্যাক্টর হয়ে ওঠে। জাতীয় পার্টিকে ছাড়া ক্ষমতা গঠন করা, কোনও দলের পক্ষে সরকার গঠন করা প্রায় অসম্ভব এ রকম একটি রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হয়। যে সমীকরণের সুবিধা নিয়ে জাতীয় পার্টি এখনও টিকে আছে। ২০০১ সালে নির্বাচনে দলটি সমর্থন দেয় বিএনপিকে। বিএনপি ক্ষমতায় আসে। আবার ২০০৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সঙ্গে মহাজোট গঠণ করে। সেই থেকে মহাজোটেই আছে জাতীয় পার্টি। কিন্তু জাতীয় পার্টির প্রধান নেতা এরশাদের মৃত্যুর পর জতীয় পার্টি এখন শুধু মাত্র নেতৃত্বের সংকট নয় অস্তিত্বের সংকটই হচ্ছে। এরশাদের মৃত্যুর পর জাতীয় পার্টির হাল ধরেছেন তার ছোট ভাই জিএম কাদের। জিএম কাদের একজন সৎ পরিচ্ছন্ন মানুষ কিন্তু রাজনীতির অভিজ্ঞতায় তিনি একেবারেই কাঁচা পরিপক্ক এবং অদূরদর্শী বটে। রাজনীতিতে তার অবস্থান কি সেটি সুস্পষ্ট নয়। আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকেই জাতীয় পার্টি ক্ষমতার ভাগবাটোয়ারা করেছে। কিন্তু ২০১৮ সালে এসে জাতীয় পার্টি সম্পূর্ণ উল্টো অবস্থান নেয় এবং সরকারের বিরোধিতার একটা আবরণ পড়ে। কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে এই আবরণ গ্রহণযোগ্যতা হয়নি। জাতীয় পার্টি ২০২৪ নির্বাচন বর্জন করার কথাও ভেবেছিল কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং নির্বাচনে হতাশাজনক ফলাফল পায়।

জাতীয় পার্টির এই দিকবদল এবং বার বার অবস্থান পরিবর্তন সাধারণ মানুষের কাছে একটা নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করেছে। আর এ কারণেই সাধারণ মানুষ জাতীয় পার্টি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এর মধ্যে রওশন এরশাদের পৃথক অবস্থান জাতীয় পার্টির নেতাদেরকে বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে। দলটিতে নতুন কর্মীর আগমণ ঘটছেনা। পুরোনো নেতারা নানা রকম সুযোগ সুবিধার আসায় দিনের বেলায় সরকারের সঙ্গে যোগসাজশ করছেন। রাতের বেলায় তাদেরকে দেখা যাচ্ছে ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডে। জাতীয় পার্টিতে এখন পার্ট টাইম রাজনীতির প্রধান্য আর এ সমস্ত রাজনীতিবিদরা দলের চেয়ে নিজের স্বার্থরক্ষার জন্যেই বেশি ব্যস্ত।

এখন জিএম কাদের জাতীয় পার্টিকে কোন রকমের টেনে তোলার চেষ্টা করছেন বটে কিন্তু এরশাদের যেরকম সারা দেশ জুড়ে একটা আলাদা ইমেজ ছিল, একটা জনপ্রিয়তা ছিল জি এম কাদেরের তা নেই। তার একমাত্র পরিচয় তিনি হোসেন মুহাম্মাদ এরশাদের ছোট ভাই। আর এ কারণেই জাতীয় পার্টির প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ এখন আর নেই। এই রাজনৈতিক দলটিযে তৃতীয় শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার সম্ভাবনা জাগিয়েছিল তা এখন বিলীন হওয়ার পথে।


জাতীয় পার্টি   জি এম কাদের   রওশন এরশাদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ডোনাল্ড লু’র ঢাকা সফরে ক্ষমতায় আসার স্বপ্নে চাঙ্গা বিএনপি: কাদের

প্রকাশ: ০৭:২৩ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মার্কিন কূটনীতিক ডোনাল্ড লু’ ঢাকায় সফর করায় আবারও ক্ষমতায় আসার স্বপ্নে চাঙ্গা বিএনপি।

শনিবার (১১ মে) সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আরে বেকুবের দল, লু আসছেন বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে। বিএনপির স্বপ্ন পূরণের জন্য আমেরিকাও আর আসবে না, কেউ আসবে না।

তিনি বলেন, ‘গয়েশ্বর রায় কোথায় পালিয়ে ছিলেন, ভারতে? মাথায় তো একটা গান্ধী টুপি দিয়েছেন। তিনি আমাদের বলেন ভারতের দালাল। এই অপবাদ আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া, জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়ার সময় থেকে অনেক শুনেছি। দালালি কারা করে? ভারতে নরেন্দ্র মোদির বিজয়ের পরে ভোর হওয়ার আগে ফুল আর মিষ্টি নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। দালালি কারা করে? ভারত সফরের সময় খালেদা জিয়া তিস্তা চুক্তির কথা ভুলে গিয়েছিল। দালাল কারা?’ 

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘ভারত আমাদের বন্ধু। ৪২ শতাংশ লোক আমাদের ভোট দিয়েছিল। শেখ হাসিনার অর্জন, উন্নয়নকে স্বীকৃতি দিয়েছিল দেশের ৪২ শতাংশ জনগণ। নির্বাচনে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। আমরা ক্ষমতা চাই না, বন্ধুত্ব চাই। শত্রুতা আমাদের ক্ষতি করেছে। আমরা সেই অবস্থা আর ফিরে পেতে চাই না।’

বিএনপির উপজেলা নির্বাচন প্রত্যাখ্যানের দাবি প্রসঙ্গে কাদের বলেন, যে ৩৬ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছেন তারা কারা? তারা এই দেশের জনগণ। তারা শেখ হাসিনার উন্নয়নে মুগ্ধ।


আওয়ামী লীগ   ওবায়দুল কাদের   মার্কিন কূটনীতিক ডোনাল্ড লু’  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের ‘ফ্রি স্টাইল’ নেতারা নজরদারীতে

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচনে দলীয় নির্দেশ যারা অমান্য করেছে তাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ এখন পর্যন্ত কোন আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এমনকি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এমন কোন ইঙ্গিতও পাওয়া যায়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৌশলগত কারণে ৩০ এপ্রিল দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এই প্রসঙ্গটি উত্থাপনই করেননি। কিন্তু যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছেন তারা যে পার পেয়ে যাবেন বা ছাড় পাবেন এমনটি নয়। এরকম দাবী করছেন আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ স্থানীয় নেতা। যেসমস্ত নেতারা দলের শৃঙ্খলা লঙ্ঘণ করেছেন এবং ‘ফ্রি স্টাইলে’ কাজ-কর্ম করছেন তারা নজরদারিতে আছেন এবং শীঘ্রই তাদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ব্যবস্থা দেখা যাবে বলেও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানাচ্ছে।

আরও পড়ুন: ওবায়দুল কাদের-একরাম চৌধুরীর নোয়াখালীর বিরোধ: যেখান থেকে শুরু

তবে আওয়ামী লীগ বহিষ্কার বা দল থেকে বের করে দেয়ার মতো অবস্থানে যাবে না। আওয়ামী লীগের শাস্তি হবে কৌশলগত এবং সুদূর প্রসারী। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছেন এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের জন্য চেষ্টা করেছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে ৩ ধরনের নির্দেশনা ছিল।

প্রথমত, উপজেলা নির্বাচনে কোন প্রার্থীকে দলগতভাবে সমর্থন করা যাবে না। আওয়ামী লীগ দলগতভাবে নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকবে।

দ্বিতীয়ত, মন্ত্রী এমপিদের আত্মীয়-স্বজনরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না এবং মাই ম্যান’দের জিতিয়ে আনার চেষ্টা করা যাবে না।

তৃতীয়ত, নির্বাচনে যেন কেউ প্রভাব বিস্তার করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর যেসমস্ত আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এই সমস্ত নির্দেশনা ভঙ্গ করেছেন, তাদেরকে চিহ্নিত করা হয়েছে তারা নজরদারীতে আছেন।

আরও পড়ুন: ভারত বিরোধীতা সামনে আনছে বিএনপি

লক্ষ্য করা গেছে, তারা শুধু এবার নয় অতীতেও দলের অবস্থানের বিপরীতে ফ্রি স্টাইলে’ নিজেদের অবস্থান ব্যক্ত করতেন। তারা যা বিবেচনা করতেন সেটি বলতেন এবং এর ফলে অনেক ক্ষেত্রে দলের স্বার্থ লঙ্ঘিত হতো।

শাজাহান খান

শাজাহান খান এমন একজন ব্যক্তি যিনি দলের নির্দেশ অমান্য করে তার পুত্রকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন। শাজাহান খান এর আগেও আওয়ামী লীগের দলীয় অবস্থানের বিপরীতে বিভিন্ন বক্তব্য রেখেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। শাজাহান খানের বিষয়টি আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। এবং তিনি আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের নজরদারীর মধ্যে আছেন।

ড. আব্দুর রাজ্জাক

ড. আব্দুর রাজ্জাক তার ভাইকে এবার উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন। যদিও আব্দুর রাজ্জাকের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছে, তার ভাই আগে থেকেই উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। কিন্তু এবার যেহেতু পরিস্থিতি ভিন্ন সেহেতু এবার তার ভাইয়ের প্রার্থী হওয়াটা দলগতভাবে পছন্দ করা হয়নি। তাছাড়া স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ড. রাজ্জাকের ভাইয়ের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে বিরোধীতা করেছিলেন এবং এ নির্বাচনে ড. রাজ্জাকের বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগও করা হয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। ড. রাজ্জাক নির্বাচনের আগেও বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোচনায় ছিলেন। অনেকে মনে করেন, এই বিতর্কিত মন্তব্যের কারণেই এবার তিনি মন্ত্রীত্ব হারিয়েছেন। আর একারণেই ড. আব্দুর রাজ্জাক এখন আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকদের নজরদারীতে আছেন। ভবিষ্যতে যদি ড. রাজ্জাক বা শাজাহান খানের প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ চলে যায় তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

একরামুল করিম চৌধুরী

একরামুল করিম চৌধুরী নোয়াখালী-৪ আসনের এমপি। এবার তিনি তার ছেলে সাবাব চৌধুরীকে সুবর্ণচর উপজেলায় চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। ঐ উপজেলায় চেয়ারম্যান ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে হারিয়ে দিয়ে নিজের পুত্রকে নির্বাচিত করার বিষয়টি আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারক মহলে ইতিবাচক হিসেবে দেখা হয়নি। তারা বিষয়টিকে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের সামিল বলে মনে করছেন। একরামুল করিম চৌধুরীর পরিণতি কি হয় তা ভবিষ্যতে বোঝা যাবে।

গাজী গোলাম দস্তগীর

গাজী গোলাম দস্তগীর পুরো রূপগঞ্জকে গাজীগঞ্জ বানিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার নিজস্ব আত্মীয় স্বজন সর্বত্র সবকিছু দখল করে নিয়ে এমন অভিযোগও রয়েছে। গাজী গোলাম দস্তগীর এবার মন্ত্রীত্ব পাননি। ভবিষ্যতে তিনি নতুন রাজনৈতিক সংকটে পড়লেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।   


আওয়ামী লীগ   শাজাহান খান   ড. আব্দুর রাজ্জাক   একরামুল করিম চৌধুরী   গাজী গোলাম দস্তগীর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বৈষম্যে নোবেল পুরস্কার থাকলে সরকার পেত: জিএম কাদের

প্রকাশ: ০৬:৪১ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির (একাংশ) চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, 'বাংলাদেশের ইতিহাসে অতীতে কোনো সময় এত বেশি বৈষম্য ছিল না। বৈষম্য তৈরি করার জন্য যদি নোবেল পুরস্কার থাকতো, তাহলে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার সেই নোবেল পুরস্কার পেত।'

শনিবার (১১ মে) দুপুরে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে দলটির ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত মত বিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। 

জিএম কাদের আরও বলেন, ‌'আমি একটা দেশ পেলাম। আমার দেশের প্রজারা বলবেন- আমিই চালাব, আমিই সরকার গঠন করব, আমিই সরকার পরিবর্তন করব। কিন্তু এখন দেখেন, সেই অর্জন, প্রজাদের সেই মালিকানা ছিনতাই হয়ে গেছে। মালিকানা তাদের হাতে নেই! এটা হলো বাস্তব কথা।' 

এই বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, 'এখন জনগণের কথায় যে চলবে, জনগণের কথায় যে সরকার পরিবর্তন হবে—এ রকম কোনো বিষয় ঘটছে না। জনগণের কথা বলারই অধিকার নেই।’ বলতে গেলেই নানা ধরনের সমস্যা। কথা শোনারও কোনো দরকার নেই।'


জিএম কাদের   জাপা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভারত বিরোধীতা সামনে আনছে বিএনপি

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

ভারতে এখন লোকসভা নির্বাচন চলছে। তৃতীয় ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেছে, চতুর্থ ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৩ মে। এই নির্বাচন নিয়ে ভারতের রাজনীতিতে একটা অনিশ্চয়তা চলছে। নির্বাচনের আগে যেমনটি মনে করা হয়েছিল যে, বিজেপির নিরঙ্কুশ বিজয় হবে। এমনকি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৪০০ আসনের আশা করেছিলেন কিন্তু নির্বাচন যতই এগিয়ে যাচ্ছে ততই সে আশা ফিকে হয়ে যাচ্ছে। আর এর মধ্যেই বিএনপি এখন তাদের আন্দোলনের কৌশল পাল্টেছে। ভারত বিরোধীতার রাজনীতি আবার নতুন করে শুরু করেছে। 

কিছুদিন আগে অবশ্য বিএনপির পক্ষ থেকে যে ভারত বিরোধী রাজনীতির সূচনা হয়েছিল। সে সময় রুহুল কবির রিজভী একটি ভারতীয় শাল গা থেকে নামিয়ে পুড়িয়ে ফেলে ভারত বিরোধী রজনীতির সূত্রপাত করেছিলেন। তবে পরবর্তীতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় এটি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল এবং সে আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয় যে, বিএনপি আপাতত প্রকাশ্যে ভারত বিরোধী রাজনীতি করবে না। রুহুল কবির রিজভীর শাল পোড়ানোর ঘটনাকে একটি ব্যাখ্যাও দেয়া হয়। তখন বলা হয়, এটি তার ব্যক্তিগত অবস্থান, দলীয় অবস্থান নয়। ঐ সময় বিএনপি আবার ভারত বিরোধী অবস্থান থেকে সরে আসে। এরপর বিএনপির ডাকা ইফতার পার্টিতে ভারতীয় দূতাবাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তি উপস্থিত হয়েছিলেন। 

আরও পড়ুন: ওবায়দুল কাদের-একরাম চৌধুরীর নোয়াখালীর বিরোধ: যেখান থেকে শুরু

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে নাকি ভারত বিরোধী রাজনীতি করবে তা নিয়ে বিএনপির মধ্যে একধরনের টানাপোড়েন, দ্বিধা এবং বিভ্রান্তি ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এ বিভ্রান্তি কেটে গেছে। গতকাল বিএনপির পক্ষ থেকে ঢাকায় সমাবেশ করা হয়। এ সমাবেশে বিএনপির শীর্ষস্থানীয় প্রায় সব নেতাই ভারত বিরোধীতা করেছেন। তারা দাবি করেছেন, বর্তমান সরকার ভারতের সহযোগীতা নিয়ে ক্ষমতায় টিকে আছে এবং এ এটি তারা বেশিদিন থাকবে না। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, বিএনপির এই ভারত বিরোধী অবস্থান তাদের সুনির্দিষ্ট চিন্তাধারার ফসল এবং দলগতভাবে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একাধিক কারণে তারা ভারত বিরোধী অবস্থানে গেছে বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন: কর্মীদের দাবি রিজভী, তারেকের পছন্দ খসরু

প্রথমত, ভারতের সঙ্গে বর্তমান সরকারের একটি সুসম্পর্ক। যেকারণে বিএনপি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সরকারের বিরুদ্ধে কোন প্রভাব বিস্তার করতে পারছে না বলে তারা মনে করে। বিশেষ করে ৭ জানুয়ারী নির্বাচনের আগে ভারত যেভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মনোভাব পাল্টাতে প্রভাব রেখেছে সেটি বিএনপির জন্য একটি বড় আঘাত বলেই তারা মনে করে। আর একারণে বিএনপির রাজনৈতিক কৌশল এখন ভারত বিরোধীতাকে ঘিরে আবর্তিত হতে শুরু করেছে। 

দ্বিতীয়ত, বিএনপি মনে করে যে, ভারতের নির্বাচনে যেই ফলাফলই হোক না কেন, তাতে বাংলাদেশ নীতির কোন পরিবর্তন হবে না। ভারতে কংগ্রেস বা ইন্ডিয়া জোট আসুক কিংবা বিজেপির নেতৃত্বের জোট আসুক না কেন উভয় দলই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটি চেষ্টা করবে। আর এটি যদি হয় প্রধান দু’টি দলের রাজনৈতিক কৌশল তাহলে বিএনপির জন্য ভবিষ্যত খুব একটা সুখকর নয়। আর তাই তারা ভারতকে নিশানা করছে এবং ভারতের সমালোচনা করছে। 

তৃতীয়ত, বাংলাদেশে ভারত বিরোধী আবহ। বাংলাদেশে একটি ভারত বিরোধী আবহাওয়া রয়েছে। কিছু কিছু মানুষ ভারত বিরোধীতা পছন্দ করে। আর একারণেই রাজনীতিতে প্রায় দেউলিয়া হয়ে যাওয়া বিএনপি এখন ভারত বিরোধীতাকে পুঁজি করে এগুচ্ছে তাতে ৭৫’ পরবর্তী রাজনীতি আবর্তিত হতো। 

চতুর্থত, এই অঞ্চলে ভারতের একাকিত্ব। ভারত পুরো অঞ্চলে ক্রমশ একলা হয়ে পড়ছে। মালদ্বীপ, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা সব গুলো প্রতিবেশী রাষ্ট্রই ভারতের নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে চীনের দিকে ঝুঁকেছে। সেখানে যদি বিএনপি এখন ভারত বিরোধীতার রাজনীতি শুরু করে তাহলে সেটি এ অঞ্চলে চীনের জন্য আশির্বাদ হিসেবে দেখা দেবে এবং চীন বিএনপিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিবে। বিশ্ব রাজনীতি চীনের প্রভাব এখন অনেক বেশি। 

পঞ্চমত, বিএনপির অস্তিত্ব রক্ষা। বিএনপি মনে করছে যে, ভারত বিরোধীতার রাজনীতি করেই জনগণের কাছে যাওয়া যাবে। জনগণের কাছে সমর্থন আদায় করা যাবে। আর এসমস্ত কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে এখন ভারত বিরোধী রাজনীতির নব যাত্রা শুরু হয়েছে। যেটি গতকালের সমাবেশে স্পষ্ট হলো।


বিএনপি   রুহুল কবির রিজভী   ভারত বিরোধীতা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন