জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ‘সবার অজান্তেই বাংলাদেশ এখন শ্রীলংকা হয়ে গেছে। আমরা আগেই বলেছিলাম, দেশ শ্রীলংকার দিকে যাচ্ছে। তখন শ্রীলংকা তেল ও কয়লা কিনতে পারেনি, বিদ্যুত কেন্দ্র চালাতে পারেনি। আমদানী করতে পারেনি, কলকারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। তাদের জিনিস-পত্রের দাম হুহু করে বেড়েছিলো। ঋণ পরিশোধ করতে পারেনি। আমরা শ্রীলংকাকে দেউলীয়া বলেছিলাম। তখন সারাবিশ্বের মতই আমরা শ্রীলংকা নিয়ে চিন্তিত হয়েছিলাম। এখন তো আমাদের অবস্থাও তাই। বিদ্যুৎ নেই, জিনিস-পত্রের দাম প্রতিদিন বাড়ছে। চিনিসহ অন্যান্য পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের চেয়ে অনেক কম। এখন শ্রীলংকার চেয়ে বাংলাদেশে পণ্যের দাম দ্বিগুণেরও বেশি। সবার আয় কমে গেছে। জিনিস-পত্রের দাম বেড়েই চলছে, এটাই শ্রীলংকা। সরকার বলে, ঋণ পরিশোধে আমরা ব্যর্থ হইনি। যদি আপনারা ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ না হন, তাহলে আন্তর্জাতিক সংস্থা মুডিস কেন বলে বাংলাদেশে ঋণ দেয়া ঝুঁকিপূর্ণ হবে। বাকিতে মালামাল কিনে সরকার দেশের মানুষের মাথায় বিশাল ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে।’
শনিবার (১০ জুন) দুপুরে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে জাতীয় যুব সংহতির কেন্দ্রীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এসব কথা বলেন।
জাতীয় যুব সংহতির আহবায়ক এইচ এম শাহরিয়ার আসিফ এর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আহাদ ইউ চৌধুরী শাহিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘শ্রীলংকা আর আমাদের মধ্যে তফাত হচ্ছে, শ্রীলংকার মানুষ দাবি আদায়ে রাস্তায় নেমেছে। শ্রীলংকার মানুষ রাস্তায় নেমে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছিলো। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ রাস্তায় নামেনি, বিক্ষোভ করেনি। কারণ, শ্রীলংকার পুলিশ আন্দোলনকারীদের গুম করেনি, লাঠিচার্জ করেনি এবং গুলিও করেনি। সে দেশের পুলিশ আন্দোলনকারীদের দেশের মানুষ হিসেবে বিবেচনা করেছে। শান্তি-শৃংখলা রক্ষায় কাজ করেছে সেদেশের পুলিশ। বাংলাদেশের মানুষ রাস্তায় নামেনি দুটি কারণে, এক. তারা জানেনা দেশ শ্রীলংকা হয়ে গেছে। দুই. রাস্তায় নামলে তাদের কী হবে তা কেউ জানে না। রাস্তায় নেমে আন্দোলন করলে জনগণ বাঁচতে পারবে কিনা, ব্যবসা নিয়ে টিকতে পারবে কিনা এবং পরিবার-পরিজন নিয়ে থাকতে পারবে কিনা- তা নিয়ে শংকিত সবাই। আন্দোলন করলে তাদের ভবিষ্যত কি হবে- তা নিয়ে ভিত হয়ে পড়েছে দেশের মানুষ।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কি বৃটিশ আমলে আছি? পাকিস্তান আমলে আছি? আমাদের টাকায় বন্দুক কিনে পুলিশ আমাদের বুকে গুলি চালায়। শ্রীলংকার সাথে আমাদের পার্থক্য একটাই শ্রীলংকার মত জনগণ মঠে নামেনি, কারন আন্দোলন করলে জবাই করার জন্য পুলিশ রেডি হয়ে আছে। আমরা দেশকে শ্রীলংকা হতে দেবো না। যারা দায়ি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চাই।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জি এম কাদের বলেন, ‘দেশের মানুষ চরম সংকটে দিন কাটাচ্ছে। দেশের মানুষ যেনো দোজখের আগুনে পুড়ছে। শারিরিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটে দেশের মানুষ বিপর্যস্ত। রিজার্ভ নেই তাই বিদেশে বাংলাদেশীরা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করলে ডলার তুলতে পারে না। অপরদিকে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেছেন তিন থেকে চার মাস চলার মত রিজার্ভ আছে। সরকারের কাছে সমস্যা নাও থাকতে পারে কিন্তু সারাদেশবাসী বিরাট সমস্যায় পড়েছে। টাকা থাকলে তেল, কয়লা কিনছেন না কেন? সাধারণ মানুষকে বিদ্যুত দিতে পারছেন না কেন? কালকারখানা কাঁচামাল ও যন্ত্রাংশ আমদানী করতে দিচ্ছেন না কেন? তিন-চার মাসের রিজার্ভ থাকলে এমন অবস্থা হবে কেন?’
তিনি বলেন, ‘ঋণ নির্ভর বাজেট করার কারণে দেশের মানুষকে ট্যাক্সের ফাঁদে ফেলে শোষণ করা হচ্ছে। অপরদিকে সারাবিশ্ব থেকে ঋণ এনে সেই টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। আমরা দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করছি। আমরা কোথায় যাই, কি করি -তা প্যাগাসাস দিয়ে অনুসরণ করা হয়। ফাঁদ পেতে আমাদের ছবি তুলতে চেষ্টা করা হয়। যারা কানাডায় বাড়ি তৈরী করে, যারা দুবাইতে ব্যবসা খোলে তাদের পিছনে গোয়েন্দা লাগান না কেন? জিএম কাদের কি সহিংসতার সাথে জড়িত? আমাদের ভয় পাচ্ছেন কেন? আমরা তো জনগণের পক্ষে কাজ করছি। হাজার বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষ মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছে। দেশের মানুষ বৈষম্য, স্বৈরতন্ত্র, অত্যাচার ও নির্যাতন থেকে মুক্তি চেয়েছিলো। একাত্তরে স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে দেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে কিন্তু দেশের মানুষ মুক্তি পায় নি। আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধে জয়লাভ করেছি কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করিনি।’
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, ‘এখনো স্বৈরশাসন আছে, নির্যাতন-নিপিড়ন আছে। দেশের মালিকানা আমাদের হাত ছাড়া হয়ে গেছে, গণতন্ত্র হাতছাড়া হয়ে গেছে। স্বৈরশাসন এসেছে অজান্তে, এক ব্যক্তির শাসন এসেছে সবার অজান্তে। সবার অজান্তে এক ব্যক্তি ও এক দলের শাসন এসেছে দেশে। এখন ‘আওয়ামী লীগ প্লাস’ দেশ চালাচ্ছে। এখন পুলিশ প্রশাসনসহ সবাই আওয়ামী লীগের কথা বলে। তারা দেশ ও দেশের মানুষের কথা বলে না। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও মেগা প্রকল্প থেকে টাকা লুটপাট করে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। আর এ কারণেই স্যাংশন ও ভিসা নীতির কথা এলেই তারা ঘাবড়ে যায়। কারণ, ইউরোপ-আমেরিকায় তাদের বাড়ি-ঘর আছে, সম্পদ আছে। স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আমেরিকা যে ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে- তা বাংলাদেশের মানুষের উপকারে আসবে।’
সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে ১২ বছরে ৯০ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে আওয়ামী লীগের ব্যবসায়ীদের মাঝে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০১৬ সাল পর্যন্ত ৪ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এ পর্যন্ত আর কত টাকা পাচার হয়েছে- তা এখনো অজানা। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিপরীতে জাতীয় পার্টি গণমানুষের আস্থা অর্জন করে তৃতীয় শক্তি হিসেবে আর্বিভূত হতে পারবে।’
কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘পল্লীবন্ধুর সমালোচনা করতে অনেকেই বলেন, সেনা ছাউনি থেকে রাজনীতিতে এসেছেন। দেশের জন্য যারা বড় বড় অবদান রেখেছেন তাদের অনেকেই সেনা ছাউনী থেকে এসেছেন। একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে সেনা কর্মকর্তারাই সেক্টরের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। আবার মাঠের মূল নেতৃত্ব ছিলো জেনারেল ওসমানীর হাতেই। পল্লীবন্ধুর স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়তে আমরা কাজ করছি।’
অপর কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘রাজনীতির আকাশে ঘণ কালো মেঘ জমেছে। সবাইকে সুশৃংল থেকে রাজনীতি করতে হবে। যুব সংহতিকে দায়িত্ব নিয়ে পার্টি চেয়ারম্যান ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ আছি, ঐক্যবদ্ধ থাকবো।’
কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, ‘কোন ষড়যন্ত্রই জাতীয় পার্টির অগ্রযাত্রা রোধ করতে পারবে না। যারা ষড়যন্ত্র করবে তাদের আর ছাড় দেয়া হবে না। জাতীয় পার্টি হচ্ছে দেশের রাজনীতির নিয়ামক শক্তি। জাতীয় পার্টিকে বাদ দিয়ে কেউই দেশের ক্ষমতায় যেতে পারবে না।’
জাতীয় যুব সংহতির কেন্দ্রীয় সম্মেলনে জাতীয় যুব সংহতির আহবায়ক ও ভাইস-চেয়ারম্যান এইচ এম শাহরিয়ার আসিফের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আহাদ ইউ চৌধুরী শাহিনের পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব এডভোকেট মো.0 রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকা।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম, সৈয়দ আব্দুল মান্নান, শফিকুল ইসলাম সেন্টু , লে. জে. (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, নাসরিন জাহান রতনা, নাজমা আকতার, আলমগীর সিকদার লোটন, সৈয়দ দিদার বখত, জহিরুল ইসলাম জহির, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা রওশন আরা মান্নান, হারুন অর রশিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল হক, ইঞ্জিনিয়ার মনির আহমদ, মো. খলিলুর রহমান খলিল, মো. মাশরেকুল আযম রবি, ভাইস চেয়ারম্যান মো. আরিফুর রহমান খান, সেলিম উদ্দিন, মেজর (অব.) আব্দুস সালাম, নিগার সুলতানা রানী, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, শেখ মো. আলমগীর হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু প্রমুখ।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বিরোধীদল গোলাম মোহাম্মদ কাদের
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ফিলিস্তিনের পতাকা ছাত্রলীগ
মন্তব্য করুন
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থেকে চেয়ারম্যান
পদে প্রার্থী হওয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল
কাদেরের ছোট ভাই শাহদাত হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
রোববার (৫ মে) দুপুর ১২টায় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা
ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল হলফনামায় মামলা ও আয় বিবরণীর তথ্য গোপন করায় মনোনয়নপত্র
বাতিল করেন।
জানা যায়, আগামী ২৯ মে তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ, সদর
ও বেগমগঞ্জ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। কোম্পানীগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে সেতুমন্ত্রীর
ভাইসহ চারজন প্রার্থী হয়েছেন। তারা হলেন-
১। ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহদাত হোসেন
২। উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক, ব্যবসায়ী মোহাম্মদ
গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুল
৩। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান
সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল
৪। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ওমর আলী
ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহদাত হোসেন ছাড়া বাকি তিনজনের মনোনয়ন
বৈধ হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল বলেন, যাচাই-বাছাই শেষে হলফনামায় মামলা ও আয় বিবরণীর
তথ্য গোপন করায় চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। সংশোধন
পূর্বক জেলা প্রশাসক মহোদয় বরাবর আপিলের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।
ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহদাত হোসেন বলেন, ‘আমার নামে যে মামলা
ছিল তা আমার জানা ছিল না। এ ছাড়া আয় বিবরণীর হিসাব দেওয়া হয়েছে, রিটার্নিং কর্মকর্তা
তা খেয়াল করেননি। আপিল করার সুযোগ আছে। আমি আপিল করবো। আশা করি আমার মনোনয়ন বৈধ হবে’।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ভাই মন্ত্রী। স্বজন বলতে সন্তান-স্ত্রীকে
বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সেটা ক্লিয়ার করেছেন। আমার ভাই ওবায়দুল কাদের সাহেবও সেটা
ক্লিয়ার করেছেন। আশা করি স্বজনের ভুল ব্যাখ্যা থেকে সবাই সরে আসবে’।
প্রসঙ্গত, আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের তফসিল
অনুযায়ী প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১২ মে, প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে। ভোটগ্রহণ হবে
আগামী ২৯ মে। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান
পদে মোট ১০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে চারজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন এবং সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন। একমাত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহদাত হোসেন ছাড়া বাকি সবার মনোনয়ন বৈধ হয়েছে।
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ ওবায়দুল কাদের শাহদাত হোসেন
মন্তব্য করুন
আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির
স্বজনদের বিরত রাখা আওয়ামী লীগের নীতিগত সিদ্ধান্ত। এখানে আইনগত কোনো বিষয় নেই বলে
জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রোববার (৫ মে) দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির
ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিভিন্ন দেশের
কর্তাব্যক্তিরা আমাদের দেশে মানবাধিকার যে চোখে দেখে, নিজের দেশে সেই দৃষ্টিতে দেখবে
না কেন?
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যুক্তরাষ্ট্রের
সঙ্গে কোনো সংঘাতে নেই। তবে সত্য বললে তাদের স্বার্থে আঘাত লাগলে তো কিছু করার নেই।
ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের
প্রতিবাদ দমনে যে আচরণ করা হয়েছিল, একই রকম নির্মম আচরণ এখন করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের মানবাধিকার
নিয়ে তারা কথা বলে। আমরা কি এসব নিয়ে কথা বলতে পারবো না? আমাদের দেশে তারা যে দৃষ্টিতে
মানবাধিকার দেখে সে দৃষ্টিতে নিজের দেশে দেখবে না কেন? তাদের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব
নেই এমন কথাতো আমরা বলিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যুদ্ধের কারণে
বিশ্বে যে অর্থনৈতিক সংকট চলছে তা বাংলাদেশেও আছে। বাংলাদেশ এ প্রভাব থেকে মুক্ত নয়।
যেমন, দ্রব্যমূল্যের যে চাপ তা তো অস্বীকার করার উপায় নেই।
সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রতীক ছাড়া নির্বাচন
করলে নির্বাচনটি আরও বেশি অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে—এ ভাবনা থেকে আওয়ামী
লীগ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ স্থগিত করেছে। এর মানে এই নয় যে অন্যান্য
দলগুলো নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ করতে পারবে না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক
সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ান আব্দুস সবুর, সংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ
দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
মন্ত্রী-এমপি ওবায়দুল কাদের বিএনপি
মন্তব্য করুন
আগামী ৮ মে অনুষ্ঠিত হবে আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম
ধাপের ভোট। নির্বাচনে ভোট গ্রহণে ২২ উপজেলায় ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের
সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইসি। এক্ষেত্রে শুরুতেই পাঁচটি উপায়ে ভোটারের পরিচিত নিশ্চিত করতে
হবে।
কোনো কারণে যদি পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর ইভিএম মেশিনে আঙ্গুলের
ছাপ ম্যাচিং না হয় তাহলে কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করা সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারকে ওই
ভোটারের ভোটাধিকার প্রয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ দায়ভার
সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারকে বহন করতে হবে।
সম্প্রতি নির্বাচন পরিচালনা-২ (অধিশাখা)-এর উপসচিব আতিয়ার রহমানের
সই করা বিশেষ পরিপত্রে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের সবশেষ প্রকাশিত ভোটার তালিকা অনুসারে
নির্দিষ্ট কেন্দ্রে বৈধ ভোটারকে উপস্থিত হতে হবে। তবে ভোট দেওয়ার আগেই সহকারী প্রিজাইডিং
অফিসার ৫টি উপায়ে ভোটার শনাক্ত করবেন।
সেগুলো হচ্ছে…
১। স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করে।
২। স্মার্ট কার্ডের নম্বর ব্যবহার করে।
৩। ১৭ ডিজিটের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ব্যবহার করে।
৪। ১২ ডিজিটের ভোটার নম্বর ব্যবহার করে।
৫। আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার করে।
আর এসবের যে কোনো একটি উপায়ে ভোটারের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর
ইভিএম মেশিনে আঙ্গুলের ছাপ ম্যাচিং না হলে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ব্যবস্থা নেবেন।
তিনি (সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার) প্রথমে ভোটারের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে
পরবর্তীতে নিজের আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার করে ভোটারকে শনাক্ত করবেন। এক্ষেত্রে সহকারী
প্রিজাইডিং অফিসার উক্ত ভোটারকে শনাক্তকরণের সম্পূর্ণ দায়ভার বহন করবেন বলেও পরিপত্রে
উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে এই উপায়ে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার মোট ভোটারের সর্বোচ্চ ১
শতাংশ ভোটারকে শনাক্ত করে ইলেক্ট্রনিক ব্যালট ইস্যু করতে পারবেন। আর যেসব ভোটারের আঙ্গুলের
ছাপ ম্যাচিং হবে না এবং সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার নিজের আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে ইলেক্ট্রনিক
ব্যালট ইস্যু করবেন, সেসব ভোটারের জন্য আলাদা লগ পোলিং কার্ডে সংরক্ষণ করতে হবে।
এক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি যদি অবৈধভাবে ভোট প্রদানের অপচেষ্টা করেন
এবং উক্ত ব্যক্তির সংরক্ষিত আঙ্গুলের ছাপ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অবৈধ ভোটার হিসেবে প্রমাণিত
হয়, তাহলে তথ্য প্রযুক্তি আইন এবং (ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০ অনুযায়ী
সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
এছাড়া, যে সকল ভোটারকে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার নিজের আঙ্গুলের
ছাপ দিয়ে শনাক্ত করবেন সে সকল ভোটারের তালিকা নির্ধারিত রেজিষ্ট্রারে ভোটারের নাম
ও ভোটার নম্বর লিখে স্বাক্ষর গ্রহণ করবেন এবং নিজেও সই করবেন।
প্রসঙ্গত, ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলায় ভোট
হবে আগামী ৮ মে। এতে সিরাজগঞ্জ জেলার সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি, কাজীপুর, পাবনা জেলার
সাঁথিয়া, সুজানগর, বেড়া, যশোর জেলার মনিরামপুর, কেশবপুর, পিরোজপুর জেলার পিরোজপুর
সদর, নাজিরপুর, ইন্দুরকানী, মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর, হরিরামপুর, শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া,
ভেদরগঞ্জ, জামালপুর জেলার জামালপুর সদর, সরিষাবাড়ী, চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর, মতলব
দক্ষিণ, কক্সবাজার জেলার কক্সবাজার সদর, কুতুবদিয়া, মহেশখালী উপজেলা পরিষদের সাধারণ
নির্বাচন ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এর মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে।
এরপর দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলায় ভোট ২১ মে, তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায়
ভোট ২৯ মে এবং চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ভোট ৬ জুন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
নির্বাচন কমশিন ইভিএম প্রিজাইডিং অফিসার
মন্তব্য করুন