ইনসাইড পলিটিক্স

তৃণমূল আওয়ামী লীগের বাড়াবাড়ি, লাগাম টেনে ধরাই বড় চ্যালেঞ্জ!


Thumbnail তৃণমূল আওয়ামী লীগের বাড়াবাড়ি, লাগাম টেনে ধরাই বড় চ্যালেঞ্জ!

উগ্রতার চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে তৃণমূল আওয়ামী লীগ। গোলাগুলি, মারামারি, খুনোখুনি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখল, নিয়োগ বাণিজ্য এবং ক্ষমতার দাপট দেখানো থেকে শুরু করে নিজেদের আখের গোছাতে হেন কোনো অপকর্ম নেই- যা করছে না তৃণমূল আওয়ামী লীগ। তৃণমূল আওয়ামী লীগের লাগাম টেনে ধরাটাই এখন আওয়ামী লীগের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তৃণমূলের এই ধরনের বাড়াবাড়ি এখন আওয়ামী লীগের বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে এসব নানা ধরনের অভিযোগ ওঠেছে এবং তা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। তৃণমূলের এসব বাড়বাড়ি, অপকর্মের লাগাম এখনই টেনে ধরতে না পারলে আসছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এর প্রভাব পড়বে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, তৃণমূল আওয়ামী লীগে গ্রুপিং রাজনীতির কারণে প্রায়শই সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। একই দলের নেতা-কর্মীকে ঘায়েল করতে মরিয়া হয়ে ওঠছে খুদ সেই আওয়ামী লীগেরই অন্য গ্রুপের নেতা-কর্মীরা। এমনকি নিজস্ব স্বার্থ চরিতার্থ করার লক্ষ্যে খুনোখুনির ঘটনা পর্যন্তও ঘটাচ্ছেন তারা। এ ধরনের ঘটনা হরমামেশাই ঘটছে এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে তা প্রতিদিনই প্রকাশ পাচ্ছে। ফলে একদিকে যেমন আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে, অন্যদিকে তৃণমূল আওয়ামী লীগের এই অন্তঃকোন্দল, অপকর্ম, ক্ষমতার দাপট স্থানীয় নির্বাচনেও প্রভাব ফেলছে। শুধু স্থানীয় নির্বাচনই নয়, আসছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এসব অপকর্মের গুরুতর প্রভাব পড়বে এবং এর জন্য চরম মূল্য দিতে হবে আওয়ামী লীগকেই। 

অতি সম্প্রতি জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর ক্ষমতার দাপট দেখানোকে কেন্দ্র করে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ে আওয়ামী লীগ। চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তার নির্দেশে স্থানীয় সাংবাদিক গোলাম রব্বানিকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ নিহত সাংবাদিক গোলাম রব্বানির পরিবার এবং স্বজনদের। এ ঘটনায় নামীয় ২২ জন এবং অজ্ঞাত ২৫ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলাও দায়ের করেন তার স্ত্রী মনিরা বেগম। সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং যার প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে। সাংবাদিক নেতারাও হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। পরে মামলা দায়েরের পরপরই ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে স্থানীয় থানা পুলিশ এবং চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় র‌্যাব। যদিও এই ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান বাবুকে আওয়ামী লীগ থেকে তাৎক্ষনিকভাবে বহিষ্কার এবং তার ছেলে রিফাতকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

 

তবে এসব ঘটনায় সমালোচনা খানিকটা প্রশমিত হলেও তৃণমূল আওয়ামী লীগের এ ধরনের ঔদ্ধত্যকে ভালো চোখে দেখছে না সাধারণ মানুষ। একজন ইউপি চেয়ারম্যানেরই যদি এই অবস্থা হয়- তাহলে আরও উপরে অর্থাৎ, উপজেলা, জেলার নেতারা কি করছেন? কেমন ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছেন তারা?- এই নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ।  

১৮ জুন রোববার দৈনিক ইত্তফাক পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, নারী কেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন অপকর্মের সংবাদ প্রকাশ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর পরিকল্পনায় সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমকে হত্যা করা হয়। শনিবার (১৭ জুন) চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে গ্রেপ্তারের পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান। র‌্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান বাবু জানায়, ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সাংবাদিক নাদিমকে হত্যা করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে সাংবাদিক নাদিম হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযানে নামে র‌্যাব। শনিবার দুপুরে র‌্যাব-১৩ এর সহযোগিতায় সাংবাদিক নাদিমকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু, মনির ও জাকিরকে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রোববার (১৮ জুন) দৈনিক সমকাল পত্রিকার একটি খবরে বলা হয়েছে, ‘রাজমিস্ত্রী থেকে বাবুর অঢেল সম্পদ’। খবরে জানা গেছে, কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আলম বাবু। এক যুগ আগেও বাবু ছিলেন একজন রাজমিস্ত্রী। বাবুর চাচাতো ভাই ছিলেন পুলিশের বড় কর্তা। তার ছায়া পেয়েই ভাগ্য খুলে বাবুর- হাতে আসে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। তৃণমূল আওয়ামী লীগে চেয়ারম্যান বাবুর মতো এমন অনেক বাবুই রাতারাতি ভাগ্য বদল করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের চৌদ্দ বছরে। তারা এখন টাকার গরমে ক্ষমতার দাপট দেখাতে খুদ আওয়ামী লীগেরই ক্ষতি সাধন করতে মত্ত হয়ে ওঠেছেন।         

এখানেই তৃণমূল আওয়ামী লীগের দৌরাত্বের শেষ নয়। এমপি থেকে শুরু করে মন্ত্রী পর্যন্ত ক্ষমতার দাপট দেখাতে এবং নিজেদের একান্ত ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতে ক্ষমতার বেশ অপব্যবহার করেই চলেছেন তারা। আজ রোববার (১৮ জুন) দৈনিক কালবেলা পত্রিকায় খবর হয়েছে, ‘সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর ইচ্ছাপূরণের ছক’- শিরোনামে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে কমাজকর্মী নিয়োগের দুর্নীতি তথা মন্ত্রীর স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ে। খবরে বলা হয়েছে, সাতটি পদে ৯৬০ জনকে নিয়োগ দিতে ২০১৮ সালের ৯ জুলাই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সমাজসেবা অধিদপ্তর। এর মধ্যে ছয়টি পদে নির্বাচিতরা নিয়োগ পেয়ে চাকরিও শুরু করেছেন। কিন্তু বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পাঁচ বছর পার হতে চললেও শেষ হয়নি সমাজকর্মী পদে ৪৬৩ জনের নিয়োগ। অভিযোগ ওঠেছে, সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে বিভাগীয় নির্বাচন কমিটিকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। 

কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলমের বিরুদ্ধেও সরকারি ও ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি দখল, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি এবং অবৈধ বালু উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের উপর নির্যাতন-নিপীড়নেরও অভিযোগ রয়েছে। এমপি জাফর আলমকে নিয়ে আজ রোববার (১৮ জুন) দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় ‘এমপি হয়েই অঢেল সম্পদের মালিক’- শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদে বলা হয়েছে, এমপি জাফর আলম একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দাখিল করা হলফনামায় অর্ধকোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের কথা উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু এমপি নির্বাচিত হওয়ার মাত্র ৪ বছরের ব্যবধানে তিনি অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছেন। শুধু এমপি জাফরই নন, প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে সম্পদ করার অভিযোগ উঠেছে তার স্কুলশিক্ষিকা স্ত্রী শাহেদা বেগম, ছেলে তানভীর আহমেদ তুহিন ও মেয়ে তানিয়া আফরিনের বিরুদ্ধেও।            

এ হলো মন্ত্রী-এমপিদের পকেট ভরার খবর। কিন্তু তৃণমূলে কলহ-কোন্দলের মাত্রা এতো বড়েছে যে, দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূল আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত একজন বয়জেষ্ঠ্য নেতাকেও মানা হচ্ছে না। তৃণমূলে কিছু নব্য আওয়ামী লীগ ও হাইব্রিটদের কারণেই এ ধরনের ঘটনা অহরহ ঘটছে। আজ রোববার (১৮ জুন) দৈনিক ইত্তফাক পত্রিকায় ‘মতলবে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের গোলাগুলিতে নিহত ১, আহত ৭’- শিরোনামে আরও একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে। খবরের উপ-শিরোনামে আরও বলা হয়েছে, ‘বাগেরহাটে যুবলীগ নেতার হামলায় আওয়ামী লীগ নেতা নিহত’।


আজ (১৮ জুন) দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার একটি খবরে মতলবে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে প্রথম পাতায় ছাপানো হয়েছে। সংবাদটির শিরোনাম করা হয়েছে ‘মতলবে আ. লীগের দুই গ্রুপের সংষর্ষে যুবলীগ কর্মী নিহত’। ওই খবরে বলা হয়েছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এক যুবলীগ কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছেন। 

প্রকৃতপক্ষে বয়জেষ্ঠ্য নেতাদের প্রতি কনিষ্ঠদের সম্মান প্রদর্শনের যে শিষ্ঠাচার- এই শিষ্ঠাচার মানছে না তৃণমূল আওয়ামী লীগ। ফলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত এসব খবরে দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে আওয়ামী লীগ সম্পর্কে একটি নেতিবাচক ধারণা জন্ম নিচ্ছে বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, খবর সত্য-মিথ্যা যাই হোক- সেটি বড় কথা নয়, কিন্তু খবরের অন্তরালে বস্তুত পক্ষেই এ ধরনের ঘটনা ঘটেই চলেছে। স্বাভাবিকভাবেই এসব ঘটনায় আওয়ামী লীগের ইমেজ নষ্ট হচ্ছে এবং এতে করে আওয়ামী লীগ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। কাজেই তৃণমূলের লাগাম টেনে ধরার এখনই সময়। এখন দেখার বিষয় তৃণমূলে এ ধরনের অস্বস্তিকর কর্মকাণ্ড ঠেকাতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয় আওয়ামী লীগ।


তৃণমূল   আওয়ামী লীগ   বাড়াবাড়ি   লাগাম   চ্যালেঞ্জ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির আন্দোলনের সঙ্গীরাও তারেকের ওপর বিরক্ত

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি নির্বাচন বর্জনের জন্য বিএনপি কমবেশি অন্তত ৫০ টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিভিন্ন দফায় বৈঠক করেছিল। এই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যৌথ আন্দোলনেরও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। 

২৮ অক্টোবর পর্যন্ত বিএনপি তাদের সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে আন্দোলন ভালোই জমিয়ে তুলেছিল। এই সময় এই দলগুলোকে নিয়ে একটি জোটবদ্ধ আন্দোলন করার কথাও ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত জোটবদ্ধ আন্দোলন হয়নি। বরং সবাই তাদের নিজ নিজ প্ল্যাটফর্ম থেকে যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু ২৮ অক্টোবর বিএনপির হঠকারিতা এবং ভুল রাজনীতির কারণে আন্দোলন মুখ থুবড়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। 

নির্বাচনের পর শরিকদের পক্ষ থেকে আন্দোলনের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল এবং একটি ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। এ নিয়ে নির্বাচনের পরও বিএনপি নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করেছিলেন শরিকরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া আন্দোলনের সঙ্গীদের বিশ্বাস করতে পারেননি। আর এই অবিশ্বাসের কারণে এখন শরিক দলগুলো মোটামুটি নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে। বিএনপির সাথে তাদের যোগাযোগ আলগা হয়ে গেছে। আর সে কারণেই এখন বিএনপির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে তাদের উৎসাহ নেই। অনেকেই এখন ঘরে উঠেছেন এবং তারেক জিয়ার নেতৃত্বে তারা বিরক্ত হয়েছেন। এবং বিএনপির সঙ্গে নতুন করে যুগপৎ আন্দোলনের ব্যাপারে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন। 

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, সেই আন্দোলনের অন্যতম অংশী ছিলেন নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি অত্যন্ত সরব ছিলেন এবং এই আন্দোলনকে এগিয়ে নেয়ার জন্য তিনি বিএনপির অন্যতম পরামর্শক হিসেবে বিবেচিত হতেন। কিন্তু এখন তিনি লাপাত্তা। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে যে, মাহমুদুর রহমান মান্না তারেক জিয়ার ওপর অত্যন্ত বিরক্ত এবং বিএনপির কৌশল নিয়েও তিনি হতাশ। আর এ কারণেই নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন। একই অবস্থা জেএসডির নেতা আ স ম আবদুর রবের। আবদুর রব মনে করছেন যে, বিএনপির রাজনীতির কৌশলই ভুল ছিল এবং এখন এই কৌশলের মাসুল দিতে হচ্ছে গোটা দেশকে। বিএনপি একদিকে যেমন সরকারবিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলতে পারছে না, অন্যদিকে শরিকদেরকেও বিশ্বাস করছে না। আর এ কারণে বিএনপির প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন এই নেতা।

শরিকদের মধ্যে অন্যতম ছিল ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরের নেতৃত্বাধীন গণ অধিকার পরিষদ। তারাও এখন নিজের আলাদা অবস্থান থেকে রাজনীতি করছে। সরকারবিরোধী আন্দোলনে তারা নেই। সাম্প্রতিক সময়ে নুর বলেছেন যে, উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি। 

শরিকদের যারা বিএনপির সঙ্গে আন্দোলন করেছিল তাদের মধ্যে একমাত্র জোনায়েদ সাকি ছাড়া কেউই বিএনপির প্রতি আর আস্থা রাখতে পারছেন না। বরং বিএনপির সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলছেন। 

অন্যদিকে বিএনপির আদর্শিক জোট জামায়াত মাঝখানে বিএনপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছিল। কিন্তু আবার ঘনিষ্ঠতায় ছেদ ঘটেছে বলে জানা গেছে।

এ সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রধান অভিযোগ হলো তারেকের উদ্ভদ বিভ্রান্তিমূলক এবং অরাজনৈতিক সূলভ সিদ্ধান্ত। শরিকদের মধ্য থেকে একাধিক নেতা বলেছেন, তারেক জিয়ার মধ্যে রাজনৈতিক পরিপক্কতার অভাব রয়েছে। হুটহাট তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরিণতি এবং সুদূরপ্রসারী প্রতিক্রিয়া চিন্তা না করেই সিদ্ধান্ত নেন। একজন রাজনৈতিক নেতার যে গুণাবলি থাকা উচিত তা কিছুই তার মধ্যে নেই। আর এ কারণেই শরিকরা এখন বিএনপি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। একদিকে যেমন বিএনপির দলের মধ্যে হতাশা অন্যদিকে শরিকরাও এখন বিএনপির প্রতি আর আস্থা রাখতে পারছে না।


বিএনপি   তারেক জিয়া   মাহমুদুর রহমান মান্না  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির সরব নেতারাও এখন নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছেন

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির আন্দোলন এখন হতাশার চাদরে ঢাকা পড়ে গেছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা। আর এই হতাশা এখন সংক্রমিত হয়েছে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক সংস্থা স্থায়ী কমিটিতে। স্থায়ী কমিটির নেতারা এখন নিজেদেরকে গুটিয়ে নিয়েছেন এবং হতাশায় তারা আস্তে আস্তে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন;

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে যাচ্ছেন ওমরাহ পালন করতেন। তিনি দুদিন আগেই পয়লা মে জনসভায় সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র গণআন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছিলেন মে দিবসের জনসভায়। আর সেই ঘোষণার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তিনি সৌদি আরবে চলে গেলেন। দলের মূল চালিকাশক্তি যখন বিদেশে চলে যান তখন দলে এক ধরনের অনিশ্চয়তা এবং হতাশা তৈরি হয় এটাই স্বাভাবিক। 

বিএনপির বিভিন্ন নেতার সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে, তারা স্বীকার করেছেন যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখন মানসিক ভাবে দলের নেতৃত্ব এগিয়ে নিতে প্রস্তুত নন। তিনি বারবার নেতাকর্মীদের কাছে বলছেন, আমি থাকতে চাচ্ছি না। আমাকে জোর করে রাখা হচ্ছে। অনীহা সত্ত্বেও বিকল্প কোন মহাসচিব না করার কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে এখনও রাখা হয়েছে। আর তিনি দলে যতটা না সময় দিচ্ছেন তার চেয়ে বেশি সময় দিচ্ছেন নিজের ব্যক্তিগত বিষয়ে।

বিএনপির বিভিন্ন নেতা মনে করেন যে, আন্দোলনের ব্যর্থতা এবং ভুল নেতৃত্ব, তারেক জিয়ার বাড়াবাড়ি ইত্যাদি কারণে মির্জা ফখরুল ইসলাম হতাশ এবং এ কারণেই তিনি আস্তে আস্তে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন। নির্বাচনের আগেও ২৮ অক্টোবর আগ পর্যন্ত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে যেভাবে সরব এবং সক্রিয় দেখা গিয়েছিল এখন তার ছিঁটেফোঁটাও দেখা যাচ্ছে না এবং এটি বিএনপির মধ্যে একটি বড় আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: কারাগার থেকে বের হওয়ার পরে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে অনেকটা নিষ্ক্রিয় দেখা গেছে। বিভিন্ন দূতাবাসের অনুষ্ঠানে যোগদান ছাড়া আনুষ্ঠানিক বিভিন্ন কর্মসূচি ছাড়া তাকে খুব একটা দেখা যায়নি। তবে সম্প্রতি তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে চলে গেছেন। 

বিভিন্ন সূত্র বলছে যে, তিনি দলের কার্যক্রমে বিরক্ত হতাশ। এ কারণে তিনি তার সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। তিনি কারাগার থেকে বেরোনোর পর খুব একটা সক্রিয় ছিলেন না। 

নজরুল ইসলাম খান: নজরুল ইসলাম খান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং একজন ত্যাগী নেতা হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এই সময় নজরুল ইসলাম খানকেও খুব একটা পাদপ্রদীপে দেখা যাচ্ছে না। বিভিন্ন কর্মসূচিতেও তিনি থাকছেন না। নজরুল ইসলাম খান অবশ্য বলছেন, শারীরিকভাবে তিনি অসুস্থ। যতটুকু তার পক্ষে সম্ভব ততটুকু চেষ্টা করছেন। কিন্তু বিএনপির নেতারাই বলছেন, নজরুল ইসলাম খানকে তারা যে অবস্থায় দেখেছেন অতীতে তার ধারেকাছেও এখন তিনি নেই। 

মির্জা আব্বাস: মির্জা আব্বাস বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা এবং ঢাকা মহানগরীর অন্যতম চালিকাশক্তি মনে করা হয় মির্জা আব্বাসকে। কিন্তু মির্জা আব্বাসও এখন নিষ্ক্রিয়। কারাগার থেকে বেরোনোর পর তার কর্মসূচি তিনি সীমিত করেছেন। এখন দলের কার্যক্রমে তাকে উদ্যোগী দেখা যায় না। উদ্যোগ নিয়ে তিনি কোন কিছু করেনও না। দলের যে সমস্ত কর্মসূচি গুলো ঘোষিত হয় সেখানে রুটিন উপস্থিতির মাধ্যমে তিনি তার দায়িত্ব সম্পন্ন করেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায়: গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক জন সদস্য। কিছু দিন আগ পর্যন্ত তাকে অত্যন্ত সরব দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এখন তিনি আস্তে আস্তে যেন পর্দার আড়ালে চলে যাচ্ছেন। তাকে কোন আগ বাড়িয়ে কর্মসূচি পালনের জন্য দেখা যাচ্ছে না। কোন বিবৃতি দিতেও তিনি আগ্রহী নন। এক ধরনের হতাশা থেকে তিনি আস্তে আস্তে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন।

স্থায়ী কমিটির পাঁচ জন সদস্য অনুপস্থিতি। আর পাঁচ জনের অবস্থা এ রকম। কয়েকজন একেবারেই অসুস্থ। এই অবস্থায় বিএনপি এখন স্থায়ী কমিটি শূন্য হয়ে পড়ছে। 

বিএনপি   মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলায় বেপরোয়া মন্ত্রী-এমপিরা

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচনের দুই ধাপের প্রস্তুতি এবং প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই দুই ধাপে আওয়ামী লীগের প্রায় ৫০ জন মন্ত্রী এমপির স্বজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর মন্ত্রী-এমপিদের নিজস্ব ব্যক্তি বা মাইম্যান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে একশরও বেশি। উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে যখন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নমনীয় অবস্থান গ্রহণ করেছেন তখন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।

আগামী ৮ মে যে ১৫০ উপজেলায় নির্বাচন হবে সেখানে প্রায় ৭০ টিতেই মন্ত্রী-এমপিদের নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তি রয়েছেন। সেই পছন্দের ব্যক্তিদেরকে জেতাতে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালীরা এখন মরিয়া হয়ে উঠেছে। নির্বাচন কমিশনও এদের নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং নির্বাচন কমিশন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব ঠেকানোর জন্য করণীয় নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করছে। 

একাধিক উপজেলার খবর নিয়ে দেখা গেছে, সেখানে মন্ত্রী-এমপিরা তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে জেতানোর জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করছেন। যেমন, তারা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নানা রকম পরামর্শ দিচ্ছেন। বিশেষ করে নির্বাচনে যারা প্রতিপক্ষ রয়েছে তাদেরকে নানা রকম হয়রানি করার জন্য মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। কোথাও কোথাও ভোটারদের ভীতি দেখানোর জন্য সহিংস ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই সমস্ত প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্র-এমপিদের স্বজন এবং তাদের পছন্দের প্রার্থীদেরকে জেতানোর জন্য নির্বাচনের উৎসবমুখর আমেজ ক্ষুণ্ণ হতে পারে বলেও বিভিন্ন মহল আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। 

গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে একটি নমনীয় এবং সহনীয় অবস্থান গ্রহণ করেছেন। তিনি থাইল্যান্ড সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন যে, আওয়ামী লীগের বহু মন্ত্রী-এমপির আত্মীয় স্বজনরা আগে থেকেই রাজনৈতিক দল করে এবং রাজনৈতিক বিভিন্ন কমিটিতে আছে। তাদেরকে আমরা কীভাবে নির্বাচন করতে বাধা দেব। তার এই বক্তব্যের পর চাপে থাকা মন্ত্রী-এমপিরা এখন যেন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। 

তারা মনে করছেন যে, যেহেতু প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচনে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে আপাতত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না, সেহেতু এখন তাদেরকে জিতিয়ে আনার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা যেতে পারে। আর এই কারণেই তারা একের পর এক উপজেলাগুলোতে নানা রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। নিজস্ব প্রভাব বিস্তারের জন্য তারা এলাকায় নানারকম কৌশল গ্রহণ করছেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরকে তাদের পক্ষে আনার জন্য প্রলুদ্ধ করছেন। যা তাদের প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগকে ঘায়েল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ফলে উপজেলা নির্বাচন এখন কার্যত আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। 

তবে আওয়ামী লীগের কোন কোন নেতা বলছেন, এটা আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ নেতার লড়াই না। উপজেলা নির্বাচন এখন আসলে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপির পছন্দের প্রার্থীর সাথে তৃণমূলের পছন্দের প্রার্থীর লড়াইয়ের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। যেখানে তৃণমূল শক্তিশালী সেখানে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের বিরুদ্ধে তারা প্রতিবোধ করতে পারছেন। যেখানে তারা শক্তিশালী নন সেখানে মন্ত্রী-এমপিদের কাছে তারা কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন।

উপজেলা নির্বাচন   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

খালেদার বিদেশে চিকিৎসা: পর্দার আড়ালে কী হচ্ছে?

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

বেগম খালেদা জিয়া একদিনের জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে তাকে আবার বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে গতকাল সন্ধ্যায়। বাড়িতে ফেরার পর বিএনপি পন্থী চিকিৎসক এবং ড্যাব নেতা ডা. জাহিদ দাবি করেছেন যে, খালেদা জিয়াকে এখন লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে এবং এর জন্য তাকে বিদেশ নেওয়ার কোন বিকল্প নেই।

এর আগে বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি থেকে কয়েকজন চিকিৎসককে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছিল এবং তারা একটি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থাকে স্থিতিশীল করেছিলেন। এবার অবশ্য বিএনপির নেতারা সে পথে হাঁটছে না। বরং তারা মনে করছেন যে, বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়াই উত্তম এবং বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুরোধ বা দাবিটি আবার সামনে চলে আসছে। 

তবে বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়া নিয়ে বিএনপি এবং বেগম জিয়ার ভাই বোনের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিএনপির নেতৃবৃন্দ মনে করছেন যে, সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে অনুমতি দেওয়াই আসল কৌশল। সরকারের ওপর যদি চাপ সৃষ্টি করা যায় তাহলে সরকার শেষ পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেবে।

বিএনপি নেতারা মনে করছেন, এই চাপের মধ্যে শুধু রাজনৈতিক আন্দোলন নয়, কূটনৈতিক অঙ্গনে বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে সঠিক ভাবে জানানো এবং আন্তর্জাতিক জনমত গড়ে তোলার জন্য তারা গুরুত্ব দিচ্ছেন। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার এ সম্পর্কে সম্পূর্ণ ভিন্ন মত পোষণ করেন। তিনি মনে করেন যে, বেগম খালেদা জিয়াকে এই মুহূর্তে যদি বিদেশ না নেওয়া যায় তাহলে তার অবস্থা সংকটাপন্ন। আর এ কারণেই তার বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারটাকে রাজনীতির বাইরে রাখা উচিত। আর এ ক্ষেত্রে যে কোন শর্তে বেগম জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার পক্ষে তিনি অবস্থান নিয়েছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

শামীম ইস্কান্দার নিজে এবং কয়েকদফা সরকারের বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং যে কোনো শর্তে তিনি তার বোনকে বিদেশ নিয়ে যেতে চান চান বলেও আশ্বস্ত করেছেন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার জন্য যদি সরকারকে অনুমতি দেওয়া হয় তা হলে সেখানে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করতে হবে। এ নিয়ে শামীম ইস্কান্দার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এবং বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকনের সঙ্গেও দেখা করেছেন বলে জানা গেছে। আজ ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বেগম খালেদা জিয়াকে কোনো এক সময় দেখা করতে যেতে পারেন বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছেন। 

বেগম খালেদা জিয়া এখন আগের অবস্থানে নেই। তিনি যে কোন প্রকারে বিদেশ যেতে চান। তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠরা বলছেন যে, রাজনীতিতে তার এখন কোন আগ্রহ নেই এবং তিনি নিজেও মনে করেন যে, তার চিকিত্সাটাই উত্তম। তবে এটি আসলে কোন রাজনৈতিক কৌশল নাকি সত্যি সত্যি বেগম জিয়া অসুস্থ সেটি নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। 

চিকিৎসক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেগম খালেদা জিয়ার যে অস্ত্রোপচার হয়েছে তাতে তার এক থেকে দেড় বছর স্থিতিশীল থাকার কথা। আর বেগম খালেদা জিয়ার যে বয়স এবং তার যে অন্যান্য শারীরিক অবস্থা তাতে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করার মতো পরিস্থিতি তার নাই। লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করার একটা বয়স লাগে। অন্যান্য রোগ শোক থেকেও মুক্ত থাকতে হয়। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া একাধিক রোগে আক্রান্ত। তার কিডনির অবস্থা ভালো না। তার হার্টে রিং পরানো হয়েছে। তার উচ্চ রক্তচাপ আছে। এছাড়াও তিনি ডায়াবেটিস এ আক্রান্ত। এ রকম পরিস্থিতিকে একজন রোগীর লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এটি একটি রাজনৈতিক বাহানা কি না সেটি নিয়েও কেউ কেউ সংশয় প্রকাশ করেছেন। তবে শামীম ইস্কান্দার সরকারের কাছে বলেছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার যে শারীরিক অবস্থা তাতে তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। সেটার জন্য তারা সিঙ্গাপুর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অথবা সৌদি আরবে যেতে চান।

খালেদা জিয়া   এভারকেয়ার হাসপাতাল   বিএনপি   শামীম ইস্কান্দার   ডা. জাহিদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড সভা শনিবার

প্রকাশ: ০৪:৪০ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা শনিবার (৪ মে) সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত হবে।

সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা।

শুক্রবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সায়েম খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন দলের সভাপতি ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা।

সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।


আওয়ামী লীগ   মনোনয়ন বোর্ড   সভাপতি   শেখ হাসিনা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন