যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, ‘বিএনপি-জামায়াত সম্পূর্ণরূপে একটা জনবিচ্ছিন্ন এবং কুখ্যাত সন্ত্রাসী দল, যারা মানুষ হত্যা করতে সিদ্ধহস্ত। ১৯৭১ এ জামায়াত গণহত্যা চালিয়েছে বাঙালির উপর, ৭৫ এ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু পরিবারের উপর বেপরোয়া হত্যাকাণ্ডের হোতা হিসেবে ভূমিকা রেখেছে। ৭৮ থেকে ৭৯ তেও হত্যাকাণ্ড সমূহেরও হোতা জিয়াউর রহমান। নিকট অতীতে ২০০১ সালে জোট বেধে বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগ নিধনে নেমে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রায় ২৫ হাজার নেতা-কর্মী-সমর্থকদের হত্যা করেছে। আর ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে বিএনপি-জামায়াতের কুখ্যাত জঙ্গি-সন্ত্রাসী জোট সরকারের- তা আপনাদের মনে থাকার কথা। সুতরাং, খুন, হত্যার রাজনীতির ক্ষেত্রে এদের উদ্দেশ্য এবং অভিলাস ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নাই। এরা শুধু হত্যা, ক্যু এবং সন্ত্রাসই করতে জানে, জনগণের জন্য কিছু করার মুরদ নাই। এখন ক্ষমতা দখল করার জন্য মরিয়া হয়ে গেছে!’
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) সকাল ১০ টায় ‘৫ই জুন: বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ উপলক্ষ্যে রাজধানীর গুলিস্থানে অবস্থিত মহানগর নাট্যমঞ্চের কাজী বশির মিলনায়তন প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ও সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উক্ত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপ-মন্ত্রী হাবিবুন নাহার এমপি। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
তিনি বলেন, ‘আমি তাদেরকে বলবো, এখনো সময় আছে মানুষের পাশে দাঁড়ান, গঠনমূলক রাজনীতিতে মনোনিবেশ করেন, তা না হলে এদেশের মানুষ আপনাদের ক্ষমা করবে না। আপনারা পালানোরও পথ খুঁজে পাবেন না। আপনাদের এক শীর্ষ নেতাতো ইতোমধ্যে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। আর এক সাজাপ্রাপ্ত শীর্ষ নেত্রীও পালানোর পথ খুঁজছেন বিভিন্ন অজুহাতে। আপনাদের এই সকল নিম্নমানের রাজনীতি আজকের প্রজন্ম বুঝে। তাই এদেশের জনগণ আপনাদের সাথে নাই এবং একারণেই আপনারা এখন পর্যন্ত সকল আন্দোলন-সংগ্রামে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমি সারাদেশের যুবলীগের নেতৃবৃন্দকে আহ্বান জানাবো যে, এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিতে। নামে মাত্র দায়সারাভাবে গাছ লাগাবেন না, গাছের পরিচর্যাও প্রয়োজন। এমন জায়গায় লাগাবেন না-মানুষের যাতায়াতের পথের মথ্যে পরে-যে পরের দিন মানুষজন গাছটা তুলে ফেলতে বাধ্য হয়। গাছ শুধু লাগালে হবে না, গাছ বাঁচাতেও হবে। গাছে যত্ন নেওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করে আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘শুধু গাছ লাগালে হবে না, গাছ যাতে টিকে থাকে সে জন্য যত্ন করতে হবে। সেই গাছ একদিন ফল দেবে, কাঠ দেবে বা ওষুধ দেবে; আপনারা নানাভাবে উপকৃত হবেন।’ আমাদেরকেই আমাদের পরিবেশ রক্ষা করতে হবে। এই দেশ আমাদের। আজকে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হলে, আমাদের সবুজ বাংলাকে আরও সবুজ রঙে আঁকতে হবে। সুতরাং মনে রাখবেন, শুধু গাছ লাগালেই চলবে না, গাছের যত্ন নেওয়া অপরিহার্য। গত ২ বছরে বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা ১ কোটিরও বেশি বৃক্ষরোপণ করেছি। এবারও আমাদের সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। গত ৫ জুন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে ‘বিশ্ব পরিবেশ মেলা-২০২৩’ এবং ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান বৃক্ষমেলা-২০২৩’- এর শুভ উদ্বোধন করেছেন। সুতরাং এটা শুধু একটা কর্মসূচি না, এটা বৃক্ষরোপণ অভিযান। এই উদ্বোধন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যুবলীগের নেতা-কর্মীরা প্রতিটি ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌরসভা, উপজেলা, জেলা ও মহানগরে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি করবে। এখনি বৃক্ষরোপণের উপযুক্ত সময়: আষাঢ়-শ্রাবণ এবং ভাদ্র মাস। তবে এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। কারণ শুধু বৃক্ষরোপণ করলে চলবে না, বৃক্ষ পরিচর্যা করতে হবে সারা বছর। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশে পরিবেশ সুরক্ষায় যুবলীগ সর্বদা মাঠে থাকবে। আগামী প্রজন্মের টেকসই বাংলাদেশ এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য বৃক্ষরোপণ, তথা উন্নত প্রাকৃতিক পরিবেশের কোন বিকল্প নাই।’
পরশ বলেন, ‘আজকে বঙ্গবন্ধুকন্যার সরকার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিকে একটি সফল সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করেছে। যে আন্দোলনে ইতোমধ্যে সারা বাংলার যুবসমাজ একাত্মতা প্রকাশ করছে। সরকারের প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সময় সারাদেশে ৫২,০০০ একর বনভূমি এবং উপকূল বরাবর ৪০,০০০ একর বনভূমি তৈরি করা হয়েছে। দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সময় ১৩,০০০ একর জমিতে নতুন বন তৈরি করা হয়েছে। প্রায় ১৫,০০০ হাজার এক জমিতে নতুন বন তৈরির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশের যুবসমাজ ঝাঁপিয়ে পড়েছে বঙ্গবন্ধু জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে; জনগণ একটা উন্নত পরিবেশ বান্ধব স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আওয়ামী লীগের পতাকাতলে একত্রিত ও সঙ্ঘবদ্ধ হয়েছে। এই দৃঢ় বিশ্বাস ব্যক্ত করে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি-২০২৩ এর কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করছি।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের জন্ম বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে তার সুযোগ্য ভাগ্নে শহীদ ফজলুল হক মণি’র হাত ধরে। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। আপনারা জানেন ৬ দফা ঘোষণার পরে আওয়ামী লীগের অনেক নেতারাই বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে সরে এসেছিল, কিন্তু ছাত্রলীগ সরেনি। কারণ ছাত্রলীগ তখন যা করতো আমাদের মণি ভাইয়ের নির্দেশেই করতো। এই ৬ দফাকে জনপ্রিয় করে তোলার পিছনে মণি ভাইয়ের ভূমিকা অপরিসীম।’
তিনি বলেন, ‘মণি ভাই থাকতেন জহুরুল হক হলে। আমরা তার সাথেই থাকতাম এবং তিনি যা বলতেন- তা আমরা মেনে চলতাম। কারণ মণি ভাইয়ের নির্দেশনা মানেই বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা। স্বাধীন বাংলাদেশ বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধু যাদের উপর ভরসা রেখেছিলেন তাদের মধ্যে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মণি অন্যতম। তিনি হলেন এই যুবলীগের সূর্য সন্তান। আপনারা তারই প্রতিনিধিত্ব করছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বৃক্ষরোপণ অবশ্যই করবেন। আপনারা না করলে কারা করবে। বঙ্গবন্ধু যে সোনার ছেলেদের কথা বলতেন সেটা মূলত ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের ভাই-বোনদের উদ্দেশ্য করেই বলতেন। তিনি জানতেন যুবকরাই এই দেশের চেহারা পাল্টে দিতে পারে। যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে সুন্দর করে তোলার স্বপ্ন আপনাদের নিয়েই দেখতেন।’
তিনি উপস্থিত যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তি ও ষড়যন্ত্রকারী, ৭৫’এর ষড়যন্ত্রকারীরা, ২০০১ সালের ষড়যন্ত্রকারীরা, ২০১৩-১৪ ও ২০১৮ সালের ষড়যন্ত্রকারী বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীদের সাথে হাত মিলিয়ে আবারও মাঠে নেমেছে। সামনে নির্বাচন, এই নির্বাচনে আপনাদেরকে অতন্দ্র প্রহরীর মতো পাহাড়া দিতে হবে। আজকে যে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশগত বিপর্যয় এর দায় কিন্তু উন্নত দেশের আমাদের নয়। তারপরেও পরিবেশকে বাঁচাতে বৃক্ষরোপণ করতে হবে, এর কোন বিকল্প নাই।’
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপ-মন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, ‘আমরা এখন বিভিন্ন সভা-সেমিনারে পরিবেশ নিয়ে কথা বলি, নানা ধরণের সচেতনতামূলক প্রচারণা চালায়। কিন্তু আমাদেরকে এই পথ দেখিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশে পরিবেশ রক্ষায় নিয়মিত কর্মসূচি করেছেন, পরিবেশ সুরক্ষায় আইন প্রণয়ন করেছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘একটি গাছ বড় করতে যতটা কঠিন কাটতে খুবই সহজ। একটি গাছ বড় হতে কত বছর সময় লেগেছে আর আপনি মুহূর্তের মধ্যে কেটে ফেলছেন। অনেকে আবার একটির পরিবর্তে ৩টি গাছ লাগান ঠিক আছে, লাগানোর পরে সে গাছ কি সুস্থভাবে বড় হচ্ছে। তার পরিচর্যা কি করছেন সে দিকে কি খেয়াল রেখেছেন? রাখেন না, খেয়াল রাখতে হবে।’
সঞ্চালকের বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশের পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে আমরা নিজেদের অর্থ-সময় ব্যয় করে এই বর্ষার মৌসুমে প্রতি বছর বৃক্ষরোপণ করে থাকি। করোনার মহামারির সময়ও বঙ্গবন্ধুকন্যা বাংলাদেশের পরিবেশের কথা ভুলে যাননি। তিনি নেতা-কর্মীদের অন্তত ৩টি করে গাছ লাগানোর নির্দেশনা দেন। যার ফলে সেই সময়ে সারাদেশে প্রায় ৪০ লক্ষ বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। গত ২ বছরে ১ কোটিরও অধিক বৃক্ষরোপণ করেছে যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। আমরা যখন বৃক্ষরোপণ করার মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষার চেষ্টা করছি তখন দেশবিরোধী, স্বাধীনতা বিরোধী শত্রুরা বিএনপি-জামায়াত পরিবেশ ধ্বংসে মত্ত হলো। ২০১৩-২০১৪ সাল বিএনপি-জামায়াত একটি দিকে মানুষেকে পুড়িয়ে মারলো, স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দিলো, অন্যদিকে হাজার হাজার গাছ কেটে রাস্তার উপর ফেলে রাখলো, বৃক্ষনিধন করলো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যখন করোনার সময় রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশে জীবনের ঝুকি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদেরকে সহায়তা করেছি, ফ্রি-অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে, অক্সিজেন দিয়ে, খাদ্য দিয়ে। অন্য দিকে বিএনপি-জামায়াত করোনার সময় মানুষের পাশে না গিয়ে, খাদ্য সহায়তা না দিয়ে ৩১ কোটি টাকা দিয়ে লবিষ্ট নিয়োগ করেছে দেশের বিরুদ্ধে। এটাই বিএনপির চেহারা। আজকে সেন্টমার্টিন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেছেন; শেখের বেটি দেশ বিক্রি করে, সেন্টমার্টিন বিক্রি করে ক্ষমতায় থাকতে চান না। আমরা এদেশের মানুষকে ভালোবাসি, এদেশের মানুষই আমাদের শক্তি। যারা দেশ নিয়ে দেশের মানুষকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে তাদেরকে দাঁতভাঙ্গা জবাব দিবে যুবলীগ।’
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক হারিছ মো. শেখ সাগর, উপ-পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মো. সামসুল ইসলাম পাটোয়ারী, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা।
আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. হাবিবুর রহমান পবন, মো. নবী নেওয়াজ, মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, তাজউদ্দিন আহমেদ, মো. আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বদিউল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মো. মাজহারুল ইসলাম, ডা. হেলাল উদ্দিন, মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, মো. জহির উদ্দিন খসরু, আবু মুনির মো. শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, মশিউর রহমান চপল, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. শামছুল আলম অনিক, উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা প্রমুখ।
রাজনীতি বিএনপি আওয়ামী লীগ শেখ পরশ বৃক্ষরোপণ
মন্তব্য করুন
বিএনপি আমির খসরু মির্জা ফখরুল রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রথম দফায় ১৩৯টি উপজেলা নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। যথারীতি বিরোধী দল বিহীন এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয় জয়কার। আওয়ামী লীগের নেতারাই অধিকাংশ উপজেলায় নিরঙ্কুশভাবে বিজয়ী হয়েছে। কিন্তু তারপরেও উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে সন্তুষ্টি নেই। আওয়ামী লীগের মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি এবং শীর্ষ নেতাদের মধ্যে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিরক্তি কাজ করছে।
নানা কারণে উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্য ইতিবাচক ফলাফল আনতে পারেনি বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। তারা উপজেলা নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করে উদ্বিগ্ন এবং দল ও গণতন্ত্রের জন্য সামনের দিনগুলোতে আরও সংকট অপেক্ষা করছে বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল নেতা।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সামনে পাঁচটি সংকটকে উন্মোচন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে-
১. ভোটার উপস্থিতি কম: উপজেলা নির্বাচনে ভোটের হার এবার সর্বনিম্ন হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর যতগুলো উপজেলা নির্বাচন হয়েছে তার মধ্যে এবার ভোট পড়েছে সবচেয়ে কম। ২০০৮ এর ভূমিধস বিজয়ের পর প্রথম আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন হয় ২০০৯ সালে। সেই উপজেলা নির্বাচনে ৬৮ ভাগের বেশি ভোট পড়েছিল। দ্বিতীয় দফায় ৬১ ভাগ ভোটার উপজেলা নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছিলেন। ২০১৯ সালে এই হার ছিল ৪০ শতাংশের বেশি।
কিন্তু এবার নির্বাচন কমিশনের হিসেব অনুযায়ী ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ ভোটার উপজেলা নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে। এটি কখনোই স্বস্তি দেওয়ার খবর নয়। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সাধারণত ভোটাররা উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে ভোট দেয়। কিন্তু এবার উপজেলা নির্বাচনে ভোটাররা উৎসাহ নেয়নি। এমনকি আওয়ামী লীগের যে রিজার্ভ সমর্থক বলে যারা পরিচিত সেই ভোটাররাও ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত ছিল না।
আওয়ামী লীগ সভাপতি দলের নেতা কর্মীদেরকে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা, তারা যেন ভোটকেন্দ্রে যায় সে জন্য উৎসাহিত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই নির্দেশ মাঠে প্রতিফলিত হয়নি। ভোটার উপস্থিতি কম থাকার ফলে আওয়ামী লীগের জন্য অস্বস্তির কারণ।
২. অভ্যন্তরীণ কোন্দল: আওয়ামী লীগের জন্য এই নির্বাচন ছিল অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটানোর মাধ্যম। এ কারণেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরপরই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপজেলা নির্বাচন উন্মুক্ত করে দেন। তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে, দলীয় প্রতীক উপজেলা নির্বাচনে ব্যবহার করা যাবে না। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা আশা করেছিলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্তের ফলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের যে কোন্দল এবং বিভক্তি প্রকাশ্য রূপ নিয়েছিল তার কিছুটা হলেও অবসান ঘটবে।
কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে উল্টো। উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগকে আরও বিভক্ত করেছে। বিশেষ করে যে সমস্ত স্থানে স্বতন্ত্রদের সাথে আওয়ামী লীগের বিরোধ ছিল, সেই বিরোধে গুলো আরও সহিংস রূপ নিয়েছে। এটি আওয়ামী লীগের জন্য একটি অশনী সংকেত।
৩. কেন্দ্রের নির্দেশ অমান্য করার প্রবণতা: আওয়ামী লীগের জন্য উপজেলা নির্বাচনে একটি বড় অস্বস্তির বিষয় ছিল কেন্দ্রের নির্দেশ অমান্য করা। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদেরকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশ মাঠে প্রতিফলিত হয়নি। দু একজন মন্ত্রী-এমপি ছাড়া অধিকাংশই তাদের আত্মীয় স্বজনদেরকে নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন এবং প্রভাব বিস্তার করে জিতিয়ে এনেছেন। এটি আওয়ামী লীগের জন্য একটি সতর্কবার্তা। কেন্দ্রীয় নির্দেশ অমান্য করার এই প্রবণতা যদি বাড়তে থাকে সেটি ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের জন্য একটি খারাপ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে বলেও অনেকে মনে করছেন।
৪. এলাকায় এলাকায় জমিদারতন্ত্র-পরিবারতন্ত্র কায়েম: এবার উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিরা তাদের আত্মীয় স্বজনদেরকে মনোনয়ন দিয়েছেন, তারা এলাকায় এলাকায় একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করার চেষ্টা করছেন। এর ফলে বিভিন্ন এলাকায় একটি গোষ্ঠীতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র বা জমিদারতন্ত্র কায়েম হচ্ছে। এটিও আওয়ামী লীগের জন্য একটি খারাপ সংবাদ বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
৫. অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনে অনীহা: আওয়ামী লিগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার নেতাকর্মীদেরকে বলেছিলেন যে- অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হবে। কিন্তু দেখা গেছে, নির্বাচনে যারা শক্তিশালী প্রার্থী হয়েছেন তারা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছেন। পেশিশক্তির প্রয়োগ ঘটিয়েছেন, কালো টাকা ছড়িয়েছেন। আর এগুলো আওয়ামী লীগের ইমেজ নষ্ট করেছে এবং জনগণের কাছে ভুল বার্তা দিয়েছে। এই সমস্ত অস্বস্তিগুলো উপজেলা নির্বাচনের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে। এখন ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগ কীভাবে এই সংকটগুলো কাটিয়ে উঠবে, সেটাই দেখার বিষয়।
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
বিএনপিতে নতুন মহাসচিব নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া বিভিন্ন জেলার স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে নৈশ বৈঠকের আয়োজন করছেন। এ পর্যন্ত নোয়াখালী, কুমিল্লা, সিলেট, বরিশালসহ অন্তত দশটি জেলায় এই ধরনের জুম বৈঠক আয়োজন করা হয়েছে। যে বৈঠকগুলোতে লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়া সরাসরি তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন। তৃণমূলের নেতাকর্মী ছাড়াও ছাত্রদল, যুবদল, কৃষক দলের মতো বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ তারেক জিয়ার সঙ্গে কথা বলছেন।
প্রথম দফায় ১৩৯টি উপজেলা নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। যথারীতি বিরোধী দল বিহীন এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয় জয়কার। আওয়ামী লীগের নেতারাই অধিকাংশ উপজেলায় নিরঙ্কুশভাবে বিজয়ী হয়েছে। কিন্তু তারপরেও উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে সন্তুষ্টি নেই। আওয়ামী লীগের মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি এবং শীর্ষ নেতাদের মধ্যে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিরক্তি কাজ করছে।