ঢাকা-১৭ আসনে নির্বাচনের প্রচারণা শুরু হয়েছে ঈদের পর পরই। ঈদের কারণে নির্বাচনীয় প্রচারণা এখন পর্যন্ত জমজমাট হয়নি। এই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। আর তাকে মোকাবেলা করার জন্য বিএনপি, বিজেপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সম্মিলিতভাবে হিরো আলমকে প্রার্থী করেছে। হিরো আলম স্বতন্ত্র প্রাথী হিসেবে একতারা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছে। ঢাকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভিআইপি একটি আসনে হিরো আলমের প্রার্থী হওয়াটা রাজনীতির জন্য এক বিস্ময়কর ঘটনা। ধারণা করা হচ্ছে, যারা রাজনীতিকে নানাভাবে কলুষিত করতে চায়, রাজনীতিকে বির্তকিত করতে চায় এবং রাজনীতি সর্ম্পকে সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরি করতে চায়, তারা সুপরিকল্পিতভাবে হিরো আলমকে মাঠে নামিয়েছে। রাজনীতিতে হিরো আলম নতুন এক উপদ্রব হয়েছে।
বিএনপি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য অংশগ্রহণ করবে না বলে ঘোষণা করেছে। সেই ঘোষণা অনুযায়ী তারা সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন উপনির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোকে বর্জন করছে। সেই ধারাবাহিকতায় ঢাকা-১৭ আসনের নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করবে না। বিএনপির দেখাদেখি আরও কিছু রাজনৈতিক দলও এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। কিন্তু এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা, আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা নষ্ট হয়ে গেছে- এটি প্রমান করার জন্য বিএনপি স্থানে নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছে।
বাংলা ইনসাইডারের অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, গাজীপুর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লাকে হারানোর জন্য বিএনপি জাহাঙ্গীর আলমের মা’কে সমর্থন দিয়েছিলো এবং সেখানে জাহাঙ্গীর আলমের মায়ের বিজয়ের পর বিএনপির বিভিন্ন নেতারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং বিভিন্ন টকশোতে সুস্পষ্টভাবে বলেছিল, আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা কমে গেছে। আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা নেই, এটা প্রমাণের জন্য তারা এখন হিরো আলমকে মাঠে নামিয়েছে। উল্লেখ্য যে, এর আগেও বগুড়ার একটি উপনির্বাচনে হিরো আলম প্রার্থী হয়েছে এবং সেখানেও বিএনপির ভূমিকা ছিল একই রকম। বগুড়া ঐতিহাসিকভাবে বিএনপি অধ্যুষিত এলকা। বিএনপি ওই উপনির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। সেখানে বিএনপির সমর্থকরা হিরো আলমকে সমর্থন করেছে। বিএনপির কর্মীরা হিরো আলমের পক্ষে কাজ করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হিরো আলম নূন্যতম ভোটের ব্যবধানে হিরো আলম পরাজিত হন। যদিও হিরো আলম ওই নির্বাচনের ফলাফলকে কারচুপিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন।
হিরো আলমের মত একজন ব্যক্তিকে রাজনীতির মাঠে নিয়ে আসা এবং রাজনীতিতে তাকে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর মুখোমুখি করার পিছনে একটি দূরভিসন্ধি রয়েছে। কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশে আবার একটি বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়া দৃশ্যমান হয়েছে। আর বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে, রাজনীতি মানে খারাপ, রাজনীতি মানুষের উপকার করে না, বরং রাজনীতিতে যে কেউ- যে কোনোভাবে বিজয়ী হতে পারে, এ রকম একটি ধারণা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেই চেষ্টার অংশ হিসেবেই হিরো আলমকে প্রার্থী করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রগুলো বলছে, হিরো আলম এখন পর্যন্ত যে নির্বাচনী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন এবং তার সাথে যারা নির্বাচনের কর্মকান্ডে যুক্ত হয়েছে, তারা সবাই কোনো না কোনো ভাবে হয় বিএনপি কিংবা বিজেপির সাথে সংযুক্ত। এই আসনে আওয়ামী লীগও নতুন ও আনকোরা প্রার্থীকে দিয়েছেন, যার তৃণমূলের সঙ্গে সংস্রব নেই। ফলে মেহাম্মদ আলী আরাফাতের পক্ষে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে, এমনটি নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। এ রকম পরিস্থিতে হিরো আলমের মত আপদকে রাজনীতির মাঠে নামিয়ে রাজনীতিকে তামাশায় পরিণিত করার চেষ্টা করছে কেউ কেউ। এখন দেখার বিষয় আওয়ামী লীগ এই পরিস্থিতি কিভাবে মেকাবেলা করে।
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
আজিজ আহমেদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসলে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদীর দিকে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান বলেও আম আদমি পার্টির এই নেতা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আর এই বক্তব্য নিয়েই বিএনপির মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির নেতারা শুধু ইউটিউবেই এটি রিপোস্ট করেনি, তারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারেও এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ভারত বিরোধী প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভারতের সমালোচনা করা এবং ভারত এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে এমন বক্তব্য বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল। যদিও ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বার্তা দিয়েছেন। ভারতের অন্য একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসও আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান সরকারের সমর্থক। বিজেপি গত এক দশকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এরকম অবস্থায় ভারতের নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যত্যয় হবে না বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
এর মধ্যে আম আদমি পার্টির বক্তব্য নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস নিয়ে অনেকেই নানারকম টীকা-টিপ্পনি কেটেছেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, এর আগে যখন কংগ্রেসকে হারিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন তখনও বিএনপির মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি নেতারা মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। তাদের ধারণা ছিল যে, কংগ্রেস চলে গেলেই আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, বিজেপির সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এখন কেজরিওয়ালের নির্বাচনের মাঠের বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপি আশায় বুক বেঁধে আছে। মুখে মুখে ভারত বিরোধীতা করলেও ভারতের অনুগত এবং ভারতের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য বিএনপি কম চেষ্টা করেনি।
আর এখনও বিএনপি যে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় তার প্রমাণ পাওয়া গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্যকে নিজেদের দলের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেন যে, একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক বক্তব্য, আর ক্ষমতায় এসে তার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড- দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেউলিয়া রাজনীতির কারণে বিএনপি সবসময় অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে কেজরিওয়ালের বক্তব্য বিএনপির ইউটিউবে ছাড়ার মধ্য দিয়ে সেই দেউলিয়াত্ব আরেকবার প্রকাশিত হল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অরবিন্দ কেজরিওয়াল রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
কিছুদিন আগেও বিএনপি যুক্তরাষ্ট্র বলতে অন্ধ থাকত। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে ফোন আসলে বিএনপির নেতারা নাওয়া খাওয়া ভুলে ছুটে যেতেন। এমনকি কোনদিন সকালে মার্কিন দূতাবাসে প্রাতরাশ, রাতে নৈশভোজেও দেখা গেছে বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তারা অবতার হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশে গণতন্ত্র এনে দেবে, যুক্তরাষ্ট্রই এই সরকারের পতন ঘটাবে এমন একটা স্থির বিশ্বাস ছিল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। কিন্তু বিএনপির মধ্যে সেই মোহভঙ্গ ঘটেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনাগ্রহী বিএনপি। এটা যেন অনেকটা আঙুল ফল টকের মতো ঘটনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইতোমধ্যে তিনি একটি হ্যাটট্রিক করেছেন। টানা তিন তিনবার আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র যিনি আওয়ামী লীগের তিনবার বা তার বেশি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এখন ওবায়দুল কাদেরও আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। এবার তিনি আরেক রকম হ্যাটট্রিক করলেন।
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।