নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে ততই বাংলাদেশের রাজনীতি ক্রমশ সহিংস হয়ে উঠছে। আর এ নিয়ে উদ্বিগ্ন দেশের সাধারণ মানুষ। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি এখন মুখোমুখি। আজ আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির পাল্টাপাল্টি সমাবেশ করার কথা ছিল। কিন্তু পুলিশ বিএনপিকে গোলাপবাগে এবং আওয়ামী লীগকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়াম মাঠে সমাবেশ করার পরামর্শ দিলে দুটি দলই তা প্রত্যাখ্যান করে। আগামীকাল ছুটির দিনে দুই দলই সমাবেশ করবে। বিএনপির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে নয়াপল্টনে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সমাবেশ করবে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে। অর্থাৎ যে যার অবস্থানে অনড় থাকছে। এই অনড় অবস্থান রাজনৈতিতে সহিংসতার পূর্বাভাস দিচ্ছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আজ সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেছেন যে, বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতাদেরকে ধরপাকড় করা হচ্ছে, গ্রেফতার করা হচ্ছে এবং নেতারা বাড়িতে থাকতে পারছেন না। এ কারণে তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। স্পষ্টতই বিএনপি আগামীকালের সমাবেশ থেকে আরও কঠোর রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যাবে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। বিএনপির বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, তারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি রাজনীতিকে সহিংস অবস্থায় নিয়ে যেতে পারে বলে অনেকে ধারণা করছে। আর রাজনীতিকে এ রকম সহিংসতার দিকে উস্কে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল নয়, নেপথ্যে অন্য কারো ভূমিকা রয়েছে বলে কোন কোন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন।
বিশেষ করে বিএনপির সমাবেশের আগে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সাথে বিএনপির দুই নেতার বৈঠক, ঢাকা ১৭ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের উপর আঘাতের প্রেক্ষাপটে ১৩ দেশের নিন্দা বিবৃতির প্রতিবাদ জানাতে ১১ রাষ্ট্রদূতকে তলব ইত্যাদি বিষয়গুলো রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যুক্ত হচ্ছে। আর এই সমস্ত ঘটনাবলীও বাংলাদেশের রাজনীতিকে উত্তপ্ত করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে বলে কেউ কেউ মনে করেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বিএনপির এখন প্রধান লক্ষ্য হলো আওয়ামী লীগের ক্ষমতাচ্যুত করা। আর এই ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য তারা বিভিন্ন শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। আর এ সমস্ত শক্তির পরামর্শেই বিএনপি এখন বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করছে।
একাধিক বিশ্লেষক মনে করেন, বিএনপিকে পরিচালিত করার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিদেশি দূতাবাস এবং কিছু সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা ভূমিকা রাখছেন। বিএনপি এখন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করছে। এই ধরনের সরকার আসলে সুশীল সমাজের যেমন সুবিধা হয়, তেমনি পশ্চিমা দেশগুলো বাংলাদেশের উপর আধিপত্য বিস্তারের সুযোগ পায়। এই বাস্তবতায় বাংলাদেশের রাজনীতি যদি সহিংস হয়ে ওঠে, তাহলে অনির্বাচিত সরকারের ক্ষমতায় আসার পথ তৈরি হয়। আর এ কারণেই রাজনীতিকে উত্তপ্ত করার মিশনে কেউ কেউ কাজ করছে বলে জানা গেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশের প্রধান কয়েকটি গণমাধ্যমকে বিএনপির প্রতি পক্ষপাত পূর্ণ বলেই দৃশ্যমান হচ্ছে। অর্থাৎ তারাও রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে উস্কে দিতে চাচ্ছে। বিদেশী দূতাবাসগুলোর বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রকাশ্য হস্তক্ষেপ রাজনীতিকে উত্তপ্ত করে তুলছে। সুশীল সমাজের বিভিন্ন দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলছে। সাম্প্রতিক সময়ে সুশীলরা বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যে মনগড়া তথাকথিত গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেটিও রাজনীতিতে এক ধরনের উত্তাপ ছড়িয়েছে।
সবকিছু মিলিয়ে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তৃতীয় শক্তির ভূমিকা এখন আস্তে আস্তে দৃশ্যমান হচ্ছে। তারাই আওয়ামী লীগ-বিএনপিকে পাল্টাপাল্টি অনড় অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের যে সময়গুলোতে অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় এসেছে, সেই সময়গুলোতে এ ধরনের তৃতীয় শক্তি নেপথ্যে থেকে কলকাঠি নাড়িয়েছে। এখনও তেমন কোন প্রক্রিয়া চলছে কিনা সেটি খোঁজ নেওয়া দরকার বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগ ঢাকা-৮
মন্তব্য করুন
নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান
বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের প্রতি ভোটার ও প্রার্থীদের ধারণা পাল্টিয়েছে, বিশ্বাস জন্মেছে।
তার কারণেই প্রার্থীরা আবারও ভোটাদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছে। প্রার্থীরা ভোটাদের দ্বারে
যাওয়ার যে সংস্কৃতি সেটা আবারও ফিরে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) যশোর শিল্পকলা
একাডেমির মিলনায়তনে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে
অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে যশোর, নড়াইল ও মাগুরার জেলার প্রার্থী নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে
মতবিনিময় শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এ কথা বলেন।
একদিন বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন বিশ্বের
রোল মডেল হবে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ৩৬ শতাংশ
এ সময়ে অনেক। দেশের কয়েকটা রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ না নেয়াতে ভোটার উপস্থিতি কম।
আগামীতে দেশের যত ভোট আসছে, ততই আমাদের ভোটের পরিবেশ, ভোট গ্রহণ পরিবর্তন ঘটছে। বিগত
সময়ে নির্বাচন নিয়ে কি ঘটেছে সেটা ফিরে তাকানোর আর কোন সুযোগ নেই। বাংলাদেশের নির্বাচন
কমিশন সকল বির্তক, সমালোচনা পিছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়িয়ে দিন দিন উন্নতির দিকে যাচ্ছে।
ইসি আহসান হাবিব বলেন, নির্বাচনে ভোটারের
উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য নির্বাচন কমিশন ও প্রার্থীরা কাজ করবে। উপজেলা নির্বাচনের প্রথম
ধাপে মোট ভোট গ্রহণের শতাংশ প্রকাশ করা হয়েছে। আমরা এবার থেকে ভোট গ্রহণে উপজেলা ভিত্তিক
তালিকা প্রকাশ করা হবে। ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য নির্বাচন কমিশন ও প্রার্থীরা আলাদাভাবে
প্রচারণা করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যারা ভোটাদের বাঁধা দিবে তাদের প্রতিহত করবে প্রশাসন।
আমরা প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছি আইনের হাত ও ক্ষমতা অনেক বেশি। নির্বাচন বানচাল করতে
সেই ক্ষমতা কঠোরভাবে প্রয়োগ করবে প্রশাসন।
ইসি আরও বলেন, বিগত সময়ের চেয়ে বর্তমান
কমিশন সততার সঙ্গে কাজ করছে। শুধু কমিশন নয়, নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টরা সততার
সঙ্গে কাজ করছে। নির্বাচনে সাংবাদিকদের সুরক্ষার জন্য আইন পাস করেছে এ কমিশন। কেউ সাংবাদিকদের
কাজে বাধাগ্রস্ত করলে জেল জরিমানার বিধান করা হয়েছে। মিডিয়াকে এ অবস্থানে নেয়ার ক্ষেত্রে
এ কমিশন ও সরকার ভূমিকা রাখছে।
যশোর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল
হাছান মজুমদারের সভাপতিত্বে সভায় যশোর, নড়াইল ও মাগুরা জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপাররা
বক্তব্য রাখে। সভায় যশোর, মাগুরা ও নড়াইল জেলার সকল প্রার্থী, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট উপজেলাসমূহের
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাবৃন্দ, আচরণবিধি ও আইনশৃঙ্খলা
রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটবৃন্দ, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাবৃন্দ
এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বিভিন্ন বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ অংশ
নেয়।
অনুষ্ঠান শেষে বিকেলে শার্শা উপজেলা
পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রশিক্ষণে অংশ নেন ইসি আহসান
হাবিব খান।
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।