অঘোষিতভাবে তিনি এখন বিএনপির প্রধান নেতা। তিনি লন্ডনে পলাতক। ২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলার মামলাসহ মানি লন্ডারিং মামলায় তিনি দণ্ডিত। বিদেশে বসে বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে নানারকম কূটচাল চালছেন। তার প্রধান অস্ত্র হলো বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা কিছু সাইবার সন্ত্রাসী এবং বিপুল পরিমাণ টাকা। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি বিএনপির এক মিটিংয়ে বলেছেন, ‘যত টাকা লাগে লাগুক, আমি বর্তমান সরকারকে অপসারণ করতে চাই’- তারেক জিয়ার কথা এখন বিএনপিতে এভাবেই আলোচনা হয়। মূলত বেগম খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার পর থেকেই বিএনপির অঘোষিত কর্ণধার হয়েছেন তারেক জিয়া। তার নির্দেশেই বিএনপি চলছে। এমনকি গণতান্ত্রিক কোনো রীতি নীতিও মানা হচ্ছে না। তারেক জিয়া যেভাবে চাইছেন, সেভাবেই দল সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। দলের স্থায়ী কমিটি হিসেবে পরিচিত সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী কমিটি হয়ে গেছে‘ঠুঁটো জগন্নাথ’।
কিন্তু বিএনপির মধ্যে এই তারেক জিয়াকে নিয়েই সবচেয়ে বেশি আতঙ্ক। বিএনপির অনেক নেতাই মনে করছেন, তাদের এখন ভয়, তারেক জিয়াকে নিয়ে। কারণ তারেক জিয়া সিদ্ধান্ত পাল্টাতে সময় নেন না এবং তাকে বোঝা অনেক কঠিন কাজ। সবচেয়ে বড় কথা হলো, তিনি রাজনৈতিক কৌশলে কি ভাবছেন, সেটা এখনও দুর্বোধ্য! তবে বিএনপির অনেক বলছেন, তারেক জিয়ার সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো- ‘অর্থলোভ’। যে কোনো সময় টাকার কাছে বিলি হয়ে যেতে পারেন এবং বিলি হয়ে গেলে- এই আন্দোলন ভেস্তে যাবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ২০১৮- এর নির্বাচনের ব্যাপারেও বিএনপির সিংহভাগ নেতাদের একটি অনঢ় অবস্থান ছিল। তারা বলেছিল যে, এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হবে আত্মঘাতী এবং নির্বাচনে গিয়ে বিএনপি কোনো কিছু অর্জন করতে পারবে না। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া সে কথা শুনেননি। বরং তিনি সেসময় বিএনপি নেতাদেরকে ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে জোট গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। মূলত তারেকের আগ্রহে ড. কামালের সঙ্গে জোটে যুক্ত হয় বিএনপি এবং ওই নির্বাচনে অসন্মানজনক পরাজয়ের মুখোমুখি হয়।
বিএনপির অনেক নেতাই মনে করেন, তারেক জিয়া শুধু ভুল সিদ্ধান্তই নেননি,আত্মঘাতী রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ‘কেন তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন’- এর উত্তরে অনেক বিএনপি নেতাই মনে করেন, ওই সময় তারেক জিয়ার অর্থের প্রয়োজন ছিল। আর্থিক কারণে তারেক জিয়া মনোনয়ন বাণিজ্য করার জন্যই ওই নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ওই সময়ে বিএনপির মনোনয়ন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় তিন থেকে পাঁচজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল এবং প্রত্যেকের কাছ থেকেই নেওয়া হয়েছিল বিপুল পরিমাণ অর্থ। এখন অবশ্য তারেক জিয়ার অর্থের অভাব নেই। বাংলাদেশে যারা ব্যবসায়ী, বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগকে চিরস্থায়ী ক্ষমতায় রাখার জন্য যারা গলা ফাঁটিয়ে চিৎকার করছেন, তারাই গোপনে গোপনে তারেক জিয়াকে অর্থ দেন। এ সম্পর্কে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছে একাধিক তথ্যও রয়েছে। কিন্তু তারপরও তারা এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না, নানা বাস্ততবতার কারণে। কিন্তু টাকার অভাব না থাকলেও তারেক জিয়া বিএনপিকে ব্যবহার করতে পারেন নানা করণেই।
বিএনপির একজন নেতা বলছেন, তারেক জিয়ার টাকার অভাবের বিষয় না, তারেক জিয়া ‘টাকা যেখানে আছে’ সেখানেই উৎসুক হয়ে পড়েন এবং সেই ফাঁদেই ‘পা’ দেন। আর এ কারণেই শেষ পর্যন্ত সরকার যদি তারেক জিয়ার সাথে বড় রকম আর্থিক লেনদেন করার মাধ্যমে সমঝোতা করার উদ্যোগ নেন, তাহলে তারেক জিয়া সে সমঝোতায় যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে সকল আন্দোলন বিফলে যাবে এবং তারেক জিয়ার নির্দেশে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। এছাড়া আরেকটি বিষয়ে তারেকের ভূমিকা নিয়ে বিএনপি নেতারা উদ্বিগ্ন। সেটি হলো তার রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টি। তারেক জিয়া এর আগেও ব্রিটিশ হাইকমিশনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু সেই ধরনের প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি আওয়ামী লীগ। এখন যখন আন্দোলনের চাপ বাড়ছে, তখন আওয়ামী লীগ যদি তারেকের প্রস্তাব গ্রহণ করে এবং তারেকের সঙ্গে লন্ডনে বা অন্য কোথাও আলোচনায় বসে, সেক্ষেত্রে তারেক জিয়া বিএনপিকে নির্বাচনমুখী করতে পারেন। আর এসব নিয়েই বিএনপির মধ্যে এখন চিন্তা বাড়ছে। তারেক কখন কি করেন, সেটি বিএনপির সবার কাছেই এক অজানা বিষয়।
তারেক জিয়া বিএনপি সমঝোতা টাকা উদ্বেগ
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগ ঢাকা-৮
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।