প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জনগণের শক্তিই আওয়ামী লীগের শক্তি। আওয়ামী লীগের কোনো প্রভু নেই। জনগণই আওয়ামী লীগের প্রভু। তাঁরা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ।’
রোববার (৬ আগস্ট) ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে দলের বিশেষ বর্ধিত সভার সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগই শুধু দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ কারণেই আমরা নির্বাচনের সময় দেশবাসীর কাছে আমাদের অঙ্গীকার করে থাকি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা কতটুকু করতে পেরেছি এবং ভবিষ্যতে কী করব, তা আমরা শুধু জনগণকে বলি, অন্য কাউকে নয়।’
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি চাই, সবাই এটা মাথায় রেখে একসঙ্গে কাজ করবেন।’
শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের সাড়ে ১৪ বছরের অর্জন তৃণমূলের মানুষের সামনে তুলে ধরতে দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দেন। আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি নেতা-কর্মীদের দলকে শক্তিশালী করতে বলেন। জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার ফলে আজ বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে জাতিসংঘ প্রদত্ত ‘উন্নয়নশীল দেশের’ মর্যাদা পেয়েছে। এ জন্য দীর্ঘ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে হয়েছে।
২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হবে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি দেশের মানুষের কাছ থেকে জানতে চান, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা নিয়ে এগিয়ে চলুক, এটা তাঁরা চান কি না।
দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা বাংলাদেশের জনগণকে প্রশ্ন করবেন। কারণ, তাঁরাই (জনগণ) ভোটের মালিক। তাঁরা যদি চান, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা নিয়ে এগিয়ে যাবে, তাহলে নৌকা মার্কায় আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে হবে। আর আওয়ামী লীগ ভোট পেলেই এটা সম্ভব হবে। তা ছাড়া অন্য কেউ এটা করবে না।’
দেশের কামার, কুমার, তাঁতি, জেলেসহ সব পেশার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা সবার জন্যই কাজ করব, এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।’
আওয়ামী লীগ প্রতিটি মানুষের জন্য কাজ করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এর আগে আর কেউ জনগণের জন্য চিন্তা বা কাজ করেনি। এই বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব।’
দলের বিশেষ বর্ধিত সভায় আওয়ামী লীগের প্রায় ৫ হাজার নেতা-কর্মী ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি অংশ নেন। দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, উপদেষ্টা পরিষদ, আওয়ামী লীগের জেলা, মহানগর, উপজেলা ও পৌরসভা ইউনিটের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, সংসদ সদস্য, জেলা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মেয়র, সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকেরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের আগে দলের নেতাদের নির্দেশনা দিতে এ ধরনের সভা করে আওয়ামী লীগ। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৭ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগ এমন সভা করেছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ বর্ধিত সভা
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।