আজ গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বর্ধিত সভায় বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের এমপি সহ তিন সহস্রাধিক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি আগামী নির্বাচনের কৌশল এবং নির্বাচনের প্রস্তুতির কারণেই এই বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন। উল্লেখ্য যে, ২০১৭ সালেও এই বৈঠক এরকম বর্ধিত সভার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনী অভিযাত্রা শুরু করেছিল।
আজকের বর্ধিত সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নীতিনির্ধারণী বক্তব্য ছাড়াও তৃণমূলের ৪৩ জন নেতা বক্তব্য রাখেন। তৃণমূলের নেতারা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন এমপির কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করেন। তারা বলেন, পক্ষপাত পূর্ণভাবে টিআর-কাবিখা দিয়ে অনেক এমপি এলাকায় বদনাম করছেন এবং তারা মাই লীগ তৈরি করেছেন। শেখ হাসিনার মনোনয়ন পেয়ে অনেকে শেখ হাসিনার চেয়ে নিজেকে জনপ্রিয় মনে করেন বলেও মন্তব্য করেছেন তৃণমূলের অন্তত দুজন নেতা। তাদের একজন বলেছেন, তারা এলাকায় গিয়ে আওয়ামী লীগ করে না, করে মাই লীগ।
তৃণমূল নেতাদের কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, কিছু কিছু এমপি টিআর-কাবিখার নিয়ে অনিয়ম করেন, দুর্নীতি করেন। টাকা খেয়ে কোন কোন এমপি বিএনপি-জামায়াতের জন্য চাকরির সুপারিশ করেন। ফলে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। তৃণমূলের একটা একাধিক নেতা আওয়ামী লীগের অন্তঃকলহ এবং বিভক্তির জন্য এমপিদের ভূমিকাকে দায়ী করেছেন। এমপিরা এলাকায় আওয়ামী লীগের কাজ করেন না বরং তাদের নিজস্ব একটি বলয় তৈরি করেন এবং এই বলয়ের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করতে চান।
বিভিন্ন নির্বাচনের উদাহরণ দিয়ে তৃণমূলের একাধিক নেতা বলেছেন, এ সমস্ত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি যাদেরকে মনোনয়ন দিয়েছে তাদের বাদ দিয়ে এমপিরা তার নিজের পছন্দের ব্যক্তির পক্ষে কাজ করেছেন এবং তাকে জয়ী করার জন্য সহায়তা করেছেন। এর ফলে নৌকার ভরাডুবি হয়েছে। এই সমস্ত এমপিদের বিরুদ্ধে তৃণমূলের নেতারা ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতিকে আহ্বান জানান।
অনেক জায়গায় এমপিরা আওয়ামী লীগ সংগঠনকে বিভক্ত করেছেন বলে অভিযোগ উত্থাপিত হয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি এই ৪৩ জনের বক্তব্যই মনোযোগ দিয়ে শোনেন। তৃণমূলের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতিকে অনুরোধ জানানো হয় যে, আগামী মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে যেন যাচাই-বাছাই করে যথাযথ যোগ্য এবং জনপ্রিয় প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া হয়। অযোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দিলে আওয়ামী লীগের জন্য সর্বনাশ অপেক্ষা করছে বলেও কেউ কেউ মন্তব্য করেন। তৃণমূলের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয় আওয়ামী লীগ সভাপতি বিচার-বিবেচনা করে যাকেই মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে দল কাজ করবে। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে তারা কাজ করবে না বলেও অঙ্গীকার করেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন, মনোনয়ন যোগ্য ব্যক্তিকে দেয়া হবে। তারপরও ভুলত্রুটি যদি হয় যাকেই মনোনয়ন দেয়া হোক না কেন তার পক্ষে যেন দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে। সে ব্যাপারে সবাইকে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ হতে হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি তার বক্তব্যে নির্বাচনী প্রচারণার কৌশল বর্ণনা করেন যে আওয়ামী লীগ কি কি উন্নয়ন করেছে এবং ভবিষ্যতে কি কি ধরনের উন্নয়ন করবে। এটির পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে কি অনিয়ম অরাজকতা তৈরি হয়েছিল তার বিবরণও তুলে ধরার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, এই বর্ধিত সভার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনী অভিযাত্রা শুরু করল বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।
বর্ধিত সভা আওয়ামী লীগ নির্বাচন অন্তঃকলহ
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নাশকতা মামলা বিএনপি ইশরাক হোসেন
মন্তব্য করুন
‘ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?
রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত ২ নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।
রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
‘ব্যাংক মাফিয়া মাস্তান ঋণখেলাপি
মন্তব্য করুন
সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।
তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি যেন কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। নির্বাচন পরবর্তী কোন্দল বন্ধে বিভিন্ন রকম উদ্যোগও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই একাধিক বার দলীয় কোন্দল বন্ধের জন্য তাগাদা দিয়েছেন। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। বরং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাংগঠনিক অবস্থা রীতিমতো ভেঙে পড়েছে। এই কোন্দল এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন বা অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই। দলের এই কোন্দল এতদিন তৃণমূল পর্যায় থাকলেও সেটি এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও শুরু হয়েছে।