ইনসাইড পলিটিক্স

সাঈদীর মৃত্যুতে ‘শোকাহত’ ছাত্রলীগের অর্ধশতাধিক নেতা বহিষ্কার

প্রকাশ: ১০:২৭ পিএম, ১৭ অগাস্ট, ২০২৩


Thumbnail সাঈদীর মৃত্যুতে ‘শোকাহত’ ছাত্রলীগের অর্ধশতাধিক নেতা বহিষ্কার।

মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ করায় জামালপুর, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রামসহ পাঁচ জেলায় অর্ধশতাধিক ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

বরখাস্ত হওয়া নেতাদের মধ্যে জামালপুরে ১৮, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৭, চট্টগ্রামে ১৬, পাবনায় ৭, নরসিংদীতে ছয়জন রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে সংগঠনের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়। সাময়িক বরখাস্তের পাশাপাশি কিছু কিছু জায়গায় দল থেকে তাদের স্থায়ী বরখাস্তের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ করা হয়েছে।

সাঈদীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করার অভিযোগে জামালপুরে ১৮ নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে জেলা ছাত্রলীগ। বুধবার (১৬ আগস্ট) রাতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খাবিরুল ইসলাম খান বাবু ও সাধারণ সম্পাদক নাফিউল করিম রাব্বি স্বাক্ষরিত আলাদা তিনটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

ওই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কৃতরা হলেন ইসলামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মিজানুর রহমান, সহসম্পাদক মুসা আহমেদ, ইসলামপুর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সদস্য মুরসালিন উদ্দিন, কর্মী মো. আব্দুল কাইয়ুম, মো. জয় মামুন, গাইবান্ধা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মনির সরকার, চরপুটিমারী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি আমিনুল ইসলাম, নোয়ারপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি আশিকুর রহমান আশিক, মেলান্দহ উপজেলা ছাত্রলীগের সমাজসেবা সম্পাদক মো. ইউসুফ আলী, সদস্য আশরাফুল সালেহিন রিয়াদ, মেলান্দহ পৌর শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসিফ আহমেদ, মেলান্দহ সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মেহেদী হাসান সেতু, নাংলা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক মো. বরকতুল্লাহ ফারাজী, হাজরাবাড়ি পৌর শাখার অন্তর্গত ১ নম্বর ওয়ার্ড শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফাহিম চৌধুরী, কুলিয়া ইউনিয়ন শাখার অন্তর্গত ২ নম্বর ওয়ার্ড শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুমন ইসলাম সানি, জামালপুর সদর উপজেলার (পূর্ব) শরিফপুর ইউনিয়ন শাখার অন্তর্গত ৯ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সাইম কবির, বকশিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক শোয়েব আল হাসান এবং দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সানন্দবাড়ি সাংগঠনিক থানা শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম মুসা।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কেনো তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার উপযুক্ত কারণসহ লিখিত জবাব আগামী সাত দিনের মধ্যে ছাত্রলীগের জামালপুর জেলা শাখার দপ্তর সেলে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামালপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খাবিরুল ইসলাম খান বাবু বলেন, ‘একজন যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করায় তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া

সাঈদীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় ছাত্রলীগের ১৭ নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগ। সেই সঙ্গে তাদের স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ করা হয়েছে। বুধবার বিকেল ও রাতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল এ সংক্রান্ত আলাদা দুটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেন। যেখানে সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভনেরও স্বাক্ষর রয়েছে।

বহিষ্কৃত ১৭ নেতার মধ্যে জেলার কসবা উপজেলার সাতজন, আখাউড়া উপজেলার চারজন, সরাইল উপজেলার চারজন এবং আশুগঞ্জ ও নবীনগর উপজেলার একজন করে রয়েছেন। তারা হলেন- কসবা উপজেলার মেহারি ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাফ ইসলাম, খাড়েরা ইউনিয়ন শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক দীপু মিয়া, একই কমিটির সদস্য আসিফুল আলম, কুটি ইউনিয়ন শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক সাব্বির আহমেদ, একই ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ড শাখার সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম হাছিব, গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ছয় নম্বর ওয়ার্ড শাখার সদস্য নাজমুল সরকার, বিনাউটি ইউনিয়ন শাখার সদস্য সৈকত আলী, আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফুরকান আহম্মেদ, একই শাখার কর্মী আমিন সুমন, আখাউড়া পৌর ছাত্রলীগের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি রবিন খান খাদেম ও আখাউড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক বাইজিদ খান, সরাইল উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমির খন্দকার, একই শাখার কর্মী রিয়াজ উদ্দিন খান মাইনুর, শাহবাজপুর ইউনিয়ন শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক সোহাগ নিয়ামুল ও একই কমিটির সদস্য আজহার উদ্দিন, আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ সোহান ও নবীনগর উপজেলার বড়াইল ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের কর্মী মো. মমিন সরকার।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল বলেন, আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত একজন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে যেসব ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তারা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি কাজ করেছেন। এজন্য তাদের ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম

সাঈদীর মৃত্যুতে সমবেদনা জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় চট্টগ্রামের লোহাগাড়া, সন্দ্বীপ ও দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের ১৬ নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ছয় নেতাকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বড়হাতিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি হামেদ হুসাইন মেহেদী ও সাধারণ সম্পাদক রেমি হাসান ইমন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

অব্যাহতি পাওয়া নেতারা হলেন- বড়হাতিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি মো. ইরফান, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বাইজিদ, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইমন চৌধুরী, আইনবিষয়ক সম্পাদক শাহরিয়া আলম, উপক্রীড়া সম্পাদক মো. কায়েস ও উপদপ্তর সম্পাদক মো. ইরফান।

এর আগে মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) রাতে আধুনগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সাইমুন ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মো. জুনাইদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চার নেতাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। অব্যাহতি পাওয়া নেতারা হলেন- আধুনগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি মো. জিসান, সাংগঠনিক সম্পাদক ইমাম হোসেন, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক রাকিবুল হোসেন এবং উপত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক হেফাজ উদ্দিন।

লোহাগাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এরশাদুর রহমান রিয়াদ বলেন, সংগঠনের নীতি-আদর্শ ও সংগঠনবিরোধী কার্যক্রমে জড়িত ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ১০ নেতাকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য লিখিত সুপারিশ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে সিদ্ধান্ত নেবে উপজেলা ছাত্রলীগ।

এ ছাড়াও সাঈদীর মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সমবেদনা জানিয়ে পোস্ট করায় ছয় নেতাকে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা, সাতকানিয়া উপজেলা ও সন্দ্বীপ উপজেলা ছাত্রলীগ। তিন সংগঠনের আলাদা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। এদের মধ্যে সন্দ্বীপের তিনজন, সাতকানিয়ার একজন ও দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের দুই নেতা রয়েছেন।

অব্যাহতিপ্রাপ্ত নেতারা হলেন- সন্দ্বীপ উপজেলা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক মো. রুস্তম, কার্যনির্বাহী সদস্য মো. আফসার ও পৌরসভা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান, সাতকানিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ তারেক এবং দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের কর্মসংস্থানবিষয়ক উপসম্পাদক সাজেদুল হক ও সহসম্পাদক শাহজাহান হাবীব।

সকালে সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ তারেকের অব্যাহতির কথা জানানো হয়।

গতকাল দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের প্রকাশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সই করেন সভাপতি এস এম বোরহান উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মো. আবু তাহের।

পাবনা

সাঈদীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় পাবনায় ছাত্রলীগের পাঁচজন নেতা ও দুই জন কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে জেলা ছাত্রলীগ। বৃহস্পতিবার সন্ধায় পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সাময়িক বহিষ্কৃতরা হলেন- পাবনা সদরের ভাঁড়ারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম শেখ রকি, গয়েশপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমন খান, চাটমোহরের ফৈলজানা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সমাজসেবা সম্পাদক মামুন হোসেন, আতাইকুলা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসম্পাদক আশিক খান, আতাইকুলা থানার ভুলবাড়িয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ৮ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, চাটমোহর উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মী রাকিবুল হাসান, বেড়া উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মী আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্স।

পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজ সাংবাদিকদের বলেন, এ জেলায় আরও কোনো নেতাকর্মী যদি পোস্ট দিয়ে থাকে, তাহলে আমাদের নলেজে আসলে এমন বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

নরসিংদী

সাঈদীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে স্ট্যাটাস দেওয়ায় নরসিংদী জেলার চার উপজেলার ছয় ছাত্রলীগ নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) বিকেলে নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসানুল হক রিমন ও সাধারণ সম্পাদক শাহজালাল আহমেদ শাওন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর মধ্যে নরসিংদী সদর উপজেলার দুজন, পলাশ উপজেলার দুজন, বেলাব উপজেলার একজন এবং মনোহরদী উপজেলার একজন রয়েছেন। তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ করা হয় বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

সাময়িক বহিষ্কৃত ছাত্রলীগের নেতারা হলেন, মাধবদী থানা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সুজন-ভূঁইয়া, পাইকার চর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি শরিফুল ইসলাম শরীফ, পলাশ থানা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মো. নাদিম মিয়া, জিনাদরি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাফিজুর রহমান অপু, বেলাব উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক সাকিব আহাম্মেদ ও মনোহরদী উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক জে এস জুনায়েদ।

নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসানুল হক রিমন ছয় নেতার সাময়িক বহিষ্কারের তথ্য নিশ্চিত করে জানান, রাজাকারের পক্ষে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিরা দায়িত্ব নিতে পারে না। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ছিলেন আদালতে রায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী। তার মৃত্যুর পর অভিযুক্ত নেতারা ফেসবুকে যেসব পোস্ট দিয়েছেন সেটা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি।


সাঈদী   মৃত্যু   শোকাহত   ছাত্রলীগ   নেতা   বহিষ্কার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

২৩ জুনের পর আওয়ামী লীগের শুদ্ধি অভিযান

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

আগামী ২৩ জুন আওয়ামী লীগের ৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পর্যন্ত আওয়ামী লীগ দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী, দলের ভেতর সুবিধাবাদী, লুটেরা এবং দলের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না। কিন্তু ২৩ জুনের পর আওয়ামী লীগের ক্র্যাশ প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ক্র্যাকডাউন হবে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী এবং দলের সুনাম নষ্টকারীদের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি অনুসরণ করবে। আওয়ামী লীগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। 

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন, দলের ভেতর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, দলের ভেতরের কোন্দল, বিভক্তি এবং নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য দলকে ব্যবহার করা, দলের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করা এই সমস্ত বিষয়গুলোকে একেবারেই বরদাস্ত করা হবে না। 

তিনি বলেন, আগামী ২৩ জুন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ব্যস্ত। এবার আওয়ামী লীগ তাঁর প্রতিষ্ঠার ৭৫ বছর বার্ষিকী পালন করবে। এটি নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে এক ধরনের আবেগ অনুভূতি রয়েছে। ইতোমধ্যে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ব্যাপক জাঁকজমকপূর্ণভাবে করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। আর সে কারণেই আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা এখন প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর ঠিক পরপরই আওয়ামী লীগের ভেতর যারা কোন্দল সৃষ্টি করছেন, যারা দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করছেন এবং বিভিন্ন এলাকায় মাই ম্যান তৈরি করছেন, তাদের বিরুদ্ধে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম নেওয়া হবে। 

আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক বলেছেন, সারাদেশে আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে যারা অপকর্ম করছেন, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ লঙ্ঘন করছেন এবং দলের ভেতর নানা রকম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করছেন তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে এবং এই তালিকা আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দেওয়া হবে। 

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, যে সমস্ত মন্ত্রী, এমপি এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ দলের শৃঙ্খলা লঙ্ঘন করেছেন উপজেলা নির্বাচনে এবং জাতীয় নির্বাচনের পর এলাকায় কোন্দল জিইয়ে রেখেছেন তাদের সঙ্গে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী কথা বলবেন, সতর্ক করবেন এবং কোন্দল মিটিয়ে ফেলার জন্য একটি আল্টিমেটাম দেবেন। এই সময়ের মধ্যে যদি তারা কোন্দল না মেটায় এবং সহিংসতার পথ থেকে সরে না আসে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অ্যাকশন গ্রহণ করা হবে। 

আওয়ামী লীগের একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি অনেক সহ্য করেছেন। নির্বাচনের পর থেকে তিনি বারবার বলছেন যে, দলের ভেতরে যেন কেউ বিভক্তি সৃষ্টি না করে, নির্বাচনের পর এখন সকলে যেন ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে কিন্তু বাস্তবতা হল যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী তারা কারও কথাই শুনছেন না। 

উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয়স্বজনদের নির্বাচনে না দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই আহ্বানও সাড়া দেয়নি মন্ত্রী-এমপিরা। এখন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকরা পর্যবেক্ষণ করে দেখছেন যে, কোন কোন মন্ত্রী, এমপির আত্মীয়রা চর দখলের মতো এলাকা দখলের জন্য আধিপত্য বিস্তার করছেন এবং আত্মীয়করণ করছেন। যারা এটির সঙ্গে জড়িত থাকবে তাদের নামের তালিকা আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে দেওয়া হবে। তবে যারা দলের ভেতর শৃঙ্খলা ভঙ্গ করছেন এবং কোন্দল সৃষ্টি করছেন তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া যাবে এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের নেতারা কিছু বলেননি। তারা মনে করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।

আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ক্ষমতাসীনদের চীন সফর: নজর রাখছে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগ এবং তার আদর্শিক জোট ১৪ দলের নেতাদের চীন সফরে হিড়িক পড়েছে। আওয়ামী লীগ এবং তার সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর এই চীন সফরকে ঘিরে কূটনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানামুখী আলাপ আলোচনা। ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশই ১৪ দল এবং আওয়ামী লীগের নেতাদের চীন সফরের ব্যাপারে দৃষ্টি রাখছেন। তবে তারা এই বিষয় নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হচ্ছেন না। বিষয়টি তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয় হিসেবেই মনে করছেন। 

রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ এখন চীন সফর করছেন। রাশেদ খান মেনন ছাড়াও আওয়ামী লীগের শরিক এই জোটের অন্যান্য নেতারাও এই সফরে রয়েছেন। চীনপন্থী রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত দিলীপ বড়ুয়া, শিরীন আখতার সহ শরিকদের প্রায় সবাই এই সফরে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। আর এই সফরের পরপরই আওয়ামী লীগের অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের একটি ৫০ সদস্যের বিশাল দল যাচ্ছে চীন সফরে। সেই সফরে নেতৃত্ব দেবেন সিরাজগঞ্জ-১ আসনের এমপি তানভীর শাকিল জয়। এর পরপরই কাজী জাফরউল্লাহ নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল চীন সফরে যাবেন। 

পরপর তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের চীন সফর নিয়ে কূটনৈতিক অঙ্গনে নানারকম প্রশ্ন উঠেছে। আর এই ব্যাপারে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র দৃষ্টি রাখছে বলে কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে।

হঠাৎ করে আওয়ামী লীগে চীন সফরের হিড়িক কেন এই নিয়ে নানামূখী আলোচনা হচ্ছে। তবে আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বলছেন, এটি হঠাৎ করেই নয়। আওয়ামী লীগের নেতারা বিভিন্ন সময়ে ভারত সফরও করেন। ভারতেও বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা এবং রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ডের আলাপ আলোচনার জন্য মতবিনিময় করা হয়। ভারতীয় প্রতিনিধিদলও বাংলাদেশে আসেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিধি দল নিয়মিতভাবে যায়। কিন্তু এবার চীনের সফরগুলো সব পাশাপাশি সময় এসেছে। আমন্ত্রণ গুলো কাছাকাছি সময়ে এসেছে। এই জন্য বিষয়টিকে বড় করে দেখা হচ্ছে৷ এটি আসলে একটি রুটিন কাজ। 

আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলছেন, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। আর এই রাজনৈতিক সম্পর্কের কারণেই আওয়ামী লীগকে তারা আমন্ত্রণ জানিয়েছে। তবে কূটনৈতিক মহল মনে করছেন, চীনের আগ্রহেই এই সফরগুলো হচ্ছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক বলয়ে চীনের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা হিসেবে এই সফরকে দেখছেন অনেকে। 

তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পরিষ্কার বলা হচ্ছে, আওয়ামী লীগের নিকটতম বন্ধু হল প্রতিবেশী ভারত। চীন তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পার্টনার। আর এই কারণেই আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করেন, ভারতের সাথে তাদের এক ধরনের রাজনৈতিক এবং মনস্তাত্ত্বিক সম্পর্কের বন্ধন রয়েছে, যা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে সৃষ্টি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চীনের অর্থনৈতিক বলয় বিস্তার এবং আওয়ামী লীগ এবং শরিকদের নেতৃবৃন্দের চীন সফর নিয়ে ভারত কোন মন্তব্য না করলেও বিষয়টি নিয়ে তারা দৃষ্টি রাখছে।

সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের রাষ্ট্রদূত প্রণয় কুমার ভার্মা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান এবং আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বস্ত্র এবং পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের সঙ্গেও এক সপ্তাহের মধ্যে সাক্ষাৎ করেছেন। কাজেই আওয়ামী লীগ যেন চীনমুখী রাজনীতির দিকে ঝুঁকে না পরে সে বিষয়ে  ভারতের নজর আছে। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই বিষয় নিয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছে বলেও জানা গেছে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ   চীন সফর   ভারত   যুক্তরাষ্ট্র  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির আরও ৫২ নেতাকে বহিষ্কার

প্রকাশ: ০৬:১৫ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা পরিষদের তৃতীয় ধাপের ভোটে অংশ নেওয়ায় আরও ৫২ জন নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে আছেন ১৭, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) ২৬ এবং ভাইস চেয়ারম্যান (নারী) ৯ জন নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।

বুধবার (১৫ মে) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় দলটি। শুরুতে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করার ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হয়েছে তাদের কাছে। জবাব দিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় দেয়া হয়েছে তাদের।

বিবৃতিতে জানানো হয়, ২০২৪ সালের ৩য় ধাপে ১১২টি উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় ৯ সাংগঠনিক বিভাগ থেকে ৫২ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এ ৫২ জনের মধ্যে রংপুর বিভাগের ২২ জন। রাজশাহী বিভাগর আট জন। বরিশাল বিভাগে ৫ জন, ঢাকা বিভাগে চারজনের মধ্যে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ৩ জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ১ জন। ময়মনসিংহ বিভাগে ৯ জন, সিলেট বিভাগে ৭ জন, কুমিল্লায় ছয়জন, খুলনায় চারজন এবং চট্টগ্রামে একজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এ পর্যন্ত ১৯৩ জনকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হলো। তবে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নির্বাচন থেকে ফিরে আসায় কয়েকজনের বহিষ্কারাদেশ তুলেও নেওয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপের নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট করায় ৮০ জন নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি। দ্বিতীয় ধাপে বহিষ্কার করা হয় ৬১ জনকে।

প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় বিএনপির ২৮ জন নেতা চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে জয়ী হন ৭ জন।

তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদে ভোটগ্রহণ হবে আগামী ২৯ মে। গত রবিবার ছিল এই ধাপের নির্বাচনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন।


বিএনপি   বহিষ্কার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ডোনাল্ড লু’র সফরকে ঘিরে বিএনপিতে হতাশা

প্রকাশ: ০৬:০১ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল বিএনপির আশা ভরসার কেন্দ্রস্থল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারণ সরকার শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করতে পারবে না- এমন বক্তব্যগুলো বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে বহুল প্রচারিত ছিল। বিএনপির সব নেতারা প্রকাশ্যেই এ কথা বলত।

বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন র‌্যাবের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, বাংলাদেশকে গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানায় না তখন বিএনপি নেতারা উল্লাসে ফেটে পড়েছিলেন। তারা দলীয় কার্যালয়ে মিষ্টিমুখের ব্যবস্থাও করেছিলেন।

আবার ডোনাল্ড লু নির্বাচনের আগে যখন বাংলাদেশ সফর করেছিলেন এবং ভিসা নীতি প্রয়োগ করেছিলেন তখন বিএনপি নেতাদের প্রকাশ্যে মার্কিন বন্দনা করতে দেখা গেছে। ২৮ অক্টোবরের আগ পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই মার্কিন দূতাবাসে বা মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের বাসভবনে বিএনপির নেতাদের আনাগোনা ছিল। তারা সেখানে চা চক্রে মিলিত হয়েছেন, নৈশভোজে মিলিত হয়েছেন এবং বিভিন্ন রকমের শলাপরামর্শ করেছেন।

পিটার ডি হাস গত বছরের ১০ অক্টোবর বিএনপি যখন সমাবেশ করতে পারেনি তখনও একতরফা বিবৃতি দিয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি বিতর্কিত সংগঠন মায়ের ডাকের এক নেতার বাসায় গিয়েছিলেন এবং সেখানে তিনি বিএনপির প্রতি এক ধরনের সহানুভূতি জানিয়েছিলেন। এভাবেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির উপর এক ধরনের প্রচ্ছন্ন সমর্থন এবং সহানুভূতি দেখিয়েছিল।

অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সহানুভূতি এবং পরোক্ষ সমর্থনের কারণেই বিএনপির আন্দোলনের পালে হাওয়া লেগেছিল। নেতাকর্মীদের মধ্যে একটি চাঙ্গা ভাব তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের পর থেকে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে শুরু করে। যদিও ২৮ অক্টোবরের পর এই ডোনাল্ড লু শর্তহীন সংলাপের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং এই আহ্বানের চিঠি নিয়ে পিটার ডি হাস তিনটি দলের নেতাদের কাছে গিয়েছিলেন এবং একটি সংলাপ আয়োজনের শেষ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেই সংলাপ আয়োজনে বিএনপি বা আওয়ামী লীগ কেউই সাড়া দেয়নি।

এখন নির্বাচন সমাপ্ত হয়েছে এবং ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর ১১ জানুয়ারি নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলার পরও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া এবং নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছেন। ডোনাল্ড লু’র আগে আফরিন আক্তার নির্বাচনের পরে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন এবং সেই সময় তিনি হোটেল ওয়েস্টিনে বিএনপি নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন। তখন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং শামা ওবায়েদ আফরিন আক্তারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। যদিও সেই সাক্ষাতের পর তারা কোনও কিছুই সাংবাদিকদেরকে জানাননি। কিন্তু এবার ডোনাল্ড লু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। আর এটি বিএনপির মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে।

বিএনপি মনে করছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন তাদেরকে আর আগের মতো গুরুত্ব দিচ্ছেন না, পাত্তা দিচ্ছে না। বরং সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে বিএনপিকে এড়িয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। বিএনপি নেতারা দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ, শামা ওবায়েদ, তাবিথ আউয়ালসহ যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন এবং মার্কিন দূতাবাসে যাদের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে তাদেরকে দুষছেন। তারা মনে করছেন যে, বিএনপির মধ্যেই সমস্যা রয়েছে। বিএনপির নেতারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে পারেননি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিএনপির বক্তব্যগুলো তারা সঠিকভাবে ও যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে পারেননি। আর একারণেই ডোনাল্ড লু’র সফরের পর বিএনপির মধ্যে চলছে এক ধরনের হতাশা।


ডোনাল্ড লু   বাংলাদেশ   রাজনীতি   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের পাঁচ সহযোগী সংগঠনের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ

প্রকাশ: ০৩:০০ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের পাঁচ সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি বর্তমানে মেয়াদোত্তীর্ণ। ২০১৯ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ কৃষক লীগ, আওয়ামী যুবলীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও মৎস্যজীবী লীগের সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠিত হয়। ইতোমধ্যে এসব কমিটি ঘোষণার চার বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। আর তাঁতী লীগের কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে ২০১৯ সালেই। বেশির ভাগ সংগঠনের তৃণমূলও অগোছালো। এসব সংগঠনের বেশির ভাগেরই সুপার ইউনিট খ্যাত ঢাকা মহানগর (উত্তর ও দক্ষিণ) শাখার কমিটিও এলোমেলো। যদিও মেয়াদোত্তীর্ণ সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতাদের দাবি দায়িত্ব নেয়ার পর বেশির ভাগ জেলা, মহানগরীর সম্মেলন তারা করেছেন। করোনা, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে সবগুলো ইউনিটের সম্মেলন শেষ করতে পারেননি। চলতি বছরেই তৃণমূল পর্যায় থেকে সব ইউনিটের সম্মেলন শেষ করার কথা বলছেন নেতারা।

আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ২৫.(২) এর ক ধারা মতে, “বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ কৃষক লীগ, বাংলাদেশ আওয়ামী যুব লীগ, আওয়ামী  স্বেচ্ছাসেবক লীগ, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, বাংলাদেশ তাঁতী লীগ ও বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বলিয়া গণ্য হইবে। তবে জাতীয় শ্রমিক লীগ ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তাদের স্ব-স্ব সংগঠনের গঠনতন্ত্র দ্বারা পরিচালিত হইবে।” মৎস্যজীবী লীগও বর্তমানে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের স্বীকৃতি পেয়েছে।

তাঁতী লীগ: ২০১৭ সালে প্রথম পূর্ণাঙ্গ কমিটি পায় তাঁতী লীগ। এ কমিটিতে ইঞ্জিনিয়ার মো. শওকত আলী সভাপতি ও খগেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ সাধারণ সম্পাদক হন। তাঁতী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রতিবেদককে জানান, ‘আমাদের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ। ৭৮ টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ২-৪ টি ছাড়া বাকি সবগুলোর কমিটি দিয়েছি। তাঁতীদের উন্নয়নে কী করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডে যোগাযোগ করতে বলেন।’ 

বাংলাদেশ কৃষক লীগ: ২০১৯ সালের ৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় কৃষক লীগের সপ্তম সম্মেলন। এতে কৃষিবিদ সমীর চন্দ্র সভাপতি ও অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সংগঠনটির কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ বলেন, নেত্রী যখন চাইবেন তখনি সম্মেলন হবে। যেসব ইউনিটের কমিটি গঠন বাদ আছে আমরা সেগুলোর সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।

বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ: ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের পর ২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বর যুবলীগের সপ্তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তখন তিন বছরের জন্য সভাপতি হন যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনির ছেলে শেখ ফজলে শামস্ পরশ ও সাধারণ সম্পাদক হন মাঈনুল হোসেন খান নিখিল। তিন বছর মেয়াদি বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। যুবলীগের সুপার ইউনিটখ্যাত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তরের কমিটির  মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক আগেই।

বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ: ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর সম্মেলনের মাধ্যমে নির্মল রঞ্জন গুহকে সভাপতি এবং আফজালুর রহমান বাবুকে সাধারণ সম্পাদক করে কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। নির্মল রঞ্জন গুহের মৃত্যুর পর সভাপতি হন গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী স্বেচ্ছাসেবক লীগের মেয়াদও শেষ হয়েছে। তবে অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে তৃণমূলের অনেক ইউনিট। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাচ্চু জানান, ‘৭৯ টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ১২-১৪ টির সম্মেলন হয় নি। আমরা সেগুলোর সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

মৎস্যজীবী লীগ: ২০১৯ সালের ২৯ নভেম্বর মৎস্যজীবী লীগের প্রথম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে মোহাম্মদ সাইদুর রহমান সভাপতি, মোহাম্মদ আজগর নস্কর সাধারণ সম্পাদক হন। মৎস্যজীবী লীগ সারাদেশে যতগুলো কমিটি করেছে তার বেশিরভাগই বিতর্কিত। তবে সব ছাপিয়ে যায় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের কমিটি দেওয়াকে কেন্দ্র করে। নতুন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চাইলে সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী জানেন। ৫০ টির মতো সাংগঠনিক জেলার সম্মেলন করেছি। অধিকাংশ কমিটি দিয়েছি। অল্পকিছু বাকি আছে।’

সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলনের বিষয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, “আমাদের দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা হচ্ছে দ্রুত মেয়াদোত্তীর্ণ সব ইউনিটের সম্মেলন শেষ করা। সেটা কেন্দ্র হোক আর জেলা, মহানগর ও উপজেলা পর্যায়ে হোক। আওয়ামী লীগেরও মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলন শেষ করার কথা বলা হয়েছে। একেবারে তৃণমূল পর্যায় বিশেষ করে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন সম্মেলন করে এরপর পর্যায়ক্রমে পৌর, উপজেলা, জেলা, মহানগর সম্মেলন শেষ করে কেন্দ্রীয় সম্মেলন করা হবে।"


আওয়ামী   লীগ   সহযোগী   সংগঠন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন