ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপি কঠোর কর্মসূচি দিতে চায়, কিন্তু.....

প্রকাশ: ০৬:০৮ পিএম, ২০ অগাস্ট, ২০২৩


Thumbnail বিএনপি কঠোর কর্মসূচি দিতে চায়, কিন্তু.....

নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে দীর্ঘদিন থেকেই আন্দোলন করছে বিএনপি। বিভিন্ন সময়ে বিএনপি পদযাত্রা, গণমিছিল, অবস্থান কর্মসূচি, সমাবেশ, মহাসমাবেশের মতো কর্মসূচি দিয়ে থাকলেও কঠোর কোনো কর্মসূচি দিতে পারছে না দলটি। বিএনপির একাধিক সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, নানা কারণে বিএনপি বড় ধরনের কঠোর কোনো কর্মসূচি দিতে পারছে না। কিংবা কঠোর কোনো কর্মসূচির পরিকল্পনা থাকলেও বিশ্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং অভ্যন্তরীণ সমসাময়িক বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এসব কর্মসূচি থেকে পিছু হঠছে বিএনপি। 

গত বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) টানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামে বিএনপি। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তাঁর বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে দলটি সারাদেশে প্রচারপত্র বিলির কর্মসূচি পালন করে। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ কেন্দ্রীয় নেতারা ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় প্রচারপত্র বিলির এই কর্মসূচিতে অংশ নেন। এছাড়া সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিএনপি শুক্রবার (১৮ আগস্ট) ঢাকাসহ সব মহানগরে গণমিছিল করে। শুক্রবার ঢাকায় দুটি গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি গণমিছিল করে বেলা তিনটায় গুলশান-২ থেকে এবং মিছিলটি গুলশান-১, তিতুমীর কলেজ হয়ে মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হয়। একই সময় রাজধানীর দয়াগঞ্জ থেকে গণমিছিল শুরু করে  ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি। এই গণমিছিল সায়েদাবাদ ব্রিজ, ধলপুর কমিউনিটি সেন্টার, গোলাপবাগ, কমলাপুর, বৌদ্ধমন্দির হয়ে খিলগাঁও, শাজাহানপুর, ফকিরাপুল হয়ে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। পরের দিন শনিবার (১৯ আগস্ট) সারাদেশে পদযাত্রার কর্মসূচি দেয় বিএনপি। এক দফা দাবিতে গণমিছিল এবং পদযাত্রার দুই দিনের এই কর্মসূচি বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা অন্য দল ও জোটগুলোও পালন করে। কিন্তু এসব কর্মসূচিগুলো তেমন জমাতে পারেনি বিএনপি। 

সর্বশেষ বড় কোনো কর্মসূচির মধ্যে বিএনপির মহাসমাবেশ ছিলো চোখে পড়ার মতো। বিএনপি সরকার পতনের এক দফা দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করে। গত ২৮ জুলাই (শুক্রবার) নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আয়োজন করা হয়। মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে সভাপতিত্ব করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস এবং সঞ্চালনা করেছেন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান ও আব্দুস সালাম। 

ওই মহাসমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করেন। পরদিন শনিবার (২৯ জুলাই) সমমনা সকল দলকে নিয়ে রাজধানী ঢাকার সকল প্রবেশমুখে  শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কিন্তু পরদিন রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশমুখে বিএনপির নেতা-কর্মীদের অবস্থান কর্মসূচির সময় পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ফলে পণ্ড হয়ে যায় বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি। গত ২৯ জুলাই (শনিবার) বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে পিটুনি খাওয়ার পর ডিবি অফিসে নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে আপ্যায়ন করান ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ। সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এর পরই এ নিয়ে শুরু হয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া। শুধু তাই নয়, এ ইস্যু ‘টক অব দ্য কান্ট্রিতে’ পরিণত হয়। এখানেও বিএনপির কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত হয়, জনমনে সন্দেহের ডালপালা ছড়াতে শুরু করে। এর পর থেকেই বিএনপি অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে। 

একাধিক সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতকালও বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ভারতের প্রকাশ্য অবস্থান স্পষ্ট হওয়ায় বিএনপি কোনো কর্মসূচি দেয়নি। ভারতের এই অবস্থানে এখন অন্য পথে হাটছে বিএনপি। তাছাড়া বিএনপির নির্বাচনমুখী অংশটি আন্দোলন থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। নির্বাচনমুখী বিএনপির এই অংশটি এখন রাজনৈতিক মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা কেন্দ্রীয় কমান্ডের কোনো বাধা না মেনেই নিজস্ব এলাকায় নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ফলে বিএনপির মধ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার একটা চাপ পরিলক্ষিত হচ্ছে। 

এছাড়াও, গত সোমবার (১৪ আগস্ট)  যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে বৈঠক করেন। বৈঠকে যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার বলেন, তাঁরা চান বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে ব্রিটিশ এই রাষ্ট্রদূত বিএনপির আন্দোলন কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যু নিয়ে কোনো আলোচনাই করেননি। বরং তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, কোনো অবস্থাতেই তারা সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেবেন না। এছাড়া তার দেশটি বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী বলেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করেন যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক। 

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে একটি বিভাজন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের স্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে, কোনো অবস্থাতেই সহিংস কোনো আন্দোলন করা যাবে না। কিন্তু সহিংস কোনো আন্দোলন না করলে, এসব শান্তিপূর্ণ গণমিছিল, পদযাত্রা করে বিএনপি আন্দোলনে কোনো কাঙ্খিত ফলাফল পাবে না বলেই মনে করছে দলটির নীতি নির্ধারণী মহল। যার ফলে বিএনপির নীতি নির্ধারনী মহল একটি দোদুল্যমান অবস্থার মধ্যে রয়েছে। তারা কি ধরনের কর্মসূচি দিবে, কি ধরনের কর্মসূচি দিলে- কি ধরনের প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে?- এসব নিয়েই ভাবছে বিএনপির নীতি নির্ধারণী মহল। শেষ পর্যন্ত ভারত যদি সরকারের পক্ষে অবস্থান নেয় এবং সে রকম পরিস্থিতিতে যদি বিএনপি আন্দোলন করে, তাহলে তাদের এই আন্দোরন পণ্ড হবে। আন্দোলন যদি ফলপ্রসু না হয় এবং সে সময়ে বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে, তাহলে বিএনপির অস্থিত্ব বিলীন হয়ে যাবে- এমনটাই মনে করছেন বিএনপির নীতি নির্ধারণী মহল।  

এরকম একটি বাস্তবতায় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিকে প্রচ্ছন্ন সহযোগিতা করলেও যদি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য দেশ বিএনপির সহিংস কোনো আন্দোলেনকে সমর্থন না করে, তাহলে দলটির একটি নড়বড়ে অবস্থান তৈরি হবে। ফলে বিএনপি এখন কোনো কর্মসূচি দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি দোদুল্যমান অবস্থার মধ্যে পড়েছে। কাজেই- এসব দিক বিবেচনা করেই বিএনপি বড় ধরনের কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারছে না।   

দেশি, বিদেশি বিভিন্ন চাপের মুখে পড়েই বিএনপি আন্দোলন জমিয়ে তুলতে পারছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিশ্লেষকরা বলছেন, নানামুখী সঙ্কটের মধ্যে পড়েই বিএনপি এখন আর কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারছে না। 


বিএনপি   কঠোর   কর্মসূচি   গণমিছিল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভারত বিরোধীতা সামনে আনছে বিএনপি

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

ভারতে এখন লোকসভা নির্বাচন চলছে। তৃতীয় ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেছে, চতুর্থ ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৩ মে। এই নির্বাচন নিয়ে ভারতের রাজনীতিতে একটা অনিশ্চয়তা চলছে। নির্বাচনের আগে যেমনটি মনে করা হয়েছিল যে, বিজেপির নিরঙ্কুশ বিজয় হবে। এমনকি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৪০০ আসনের আশা করেছিলেন কিন্তু নির্বাচন যতই এগিয়ে যাচ্ছে ততই সে আশা ফিকে হয়ে যাচ্ছে। আর এর মধ্যেই বিএনপি এখন তাদের আন্দোলনের কৌশল পাল্টেছে। ভারত বিরোধীতার রাজনীতি আবার নতুন করে শুরু করেছে। 

কিছুদিন আগে অবশ্য বিএনপির পক্ষ থেকে যে ভারত বিরোধী রাজনীতির সূচনা হয়েছিল। সে সময় রুহুল কবির রিজভী একটি ভারতীয় শাল গা থেকে নামিয়ে পুড়িয়ে ফেলে ভারত বিরোধী রজনীতির সূত্রপাত করেছিলেন। তবে পরবর্তীতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় এটি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল এবং সে আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয় যে, বিএনপি আপাতত প্রকাশ্যে ভারত বিরোধী রাজনীতি করবে না। রুহুল কবির রিজভীর শাল পোড়ানোর ঘটনাকে একটি ব্যাখ্যাও দেয়া হয়। তখন বলা হয়, এটি তার ব্যক্তিগত অবস্থান, দলীয় অবস্থান নয়। ঐ সময় বিএনপি আবার ভারত বিরোধী অবস্থান থেকে সরে আসে। এরপর বিএনপির ডাকা ইফতার পার্টিতে ভারতীয় দূতাবাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তি উপস্থিত হয়েছিলেন। 

আরও পড়ুন: ওবায়দুল কাদের-একরাম চৌধুরীর নোয়াখালীর বিরোধ: যেখান থেকে শুরু

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে নাকি ভারত বিরোধী রাজনীতি করবে তা নিয়ে বিএনপির মধ্যে একধরনের টানাপোড়েন, দ্বিধা এবং বিভ্রান্তি ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এ বিভ্রান্তি কেটে গেছে। গতকাল বিএনপির পক্ষ থেকে ঢাকায় সমাবেশ করা হয়। এ সমাবেশে বিএনপির শীর্ষস্থানীয় প্রায় সব নেতাই ভারত বিরোধীতা করেছেন। তারা দাবি করেছেন, বর্তমান সরকার ভারতের সহযোগীতা নিয়ে ক্ষমতায় টিকে আছে এবং এ এটি তারা বেশিদিন থাকবে না। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, বিএনপির এই ভারত বিরোধী অবস্থান তাদের সুনির্দিষ্ট চিন্তাধারার ফসল এবং দলগতভাবে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একাধিক কারণে তারা ভারত বিরোধী অবস্থানে গেছে বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন: কর্মীদের দাবি রিজভী, তারেকের পছন্দ খসরু

প্রথমত, ভারতের সঙ্গে বর্তমান সরকারের একটি সুসম্পর্ক। যেকারণে বিএনপি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সরকারের বিরুদ্ধে কোন প্রভাব বিস্তার করতে পারছে না বলে তারা মনে করে। বিশেষ করে ৭ জানুয়ারী নির্বাচনের আগে ভারত যেভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মনোভাব পাল্টাতে প্রভাব রেখেছে সেটি বিএনপির জন্য একটি বড় আঘাত বলেই তারা মনে করে। আর একারণে বিএনপির রাজনৈতিক কৌশল এখন ভারত বিরোধীতাকে ঘিরে আবর্তিত হতে শুরু করেছে। 

দ্বিতীয়ত, বিএনপি মনে করে যে, ভারতের নির্বাচনে যেই ফলাফলই হোক না কেন, তাতে বাংলাদেশ নীতির কোন পরিবর্তন হবে না। ভারতে কংগ্রেস বা ইন্ডিয়া জোট আসুক কিংবা বিজেপির নেতৃত্বের জোট আসুক না কেন উভয় দলই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটি চেষ্টা করবে। আর এটি যদি হয় প্রধান দু’টি দলের রাজনৈতিক কৌশল তাহলে বিএনপির জন্য ভবিষ্যত খুব একটা সুখকর নয়। আর তাই তারা ভারতকে নিশানা করছে এবং ভারতের সমালোচনা করছে। 

তৃতীয়ত, বাংলাদেশে ভারত বিরোধী আবহ। বাংলাদেশে একটি ভারত বিরোধী আবহাওয়া রয়েছে। কিছু কিছু মানুষ ভারত বিরোধীতা পছন্দ করে। আর একারণেই রাজনীতিতে প্রায় দেউলিয়া হয়ে যাওয়া বিএনপি এখন ভারত বিরোধীতাকে পুঁজি করে এগুচ্ছে তাতে ৭৫’ পরবর্তী রাজনীতি আবর্তিত হতো। 

চতুর্থত, এই অঞ্চলে ভারতের একাকিত্ব। ভারত পুরো অঞ্চলে ক্রমশ একলা হয়ে পড়ছে। মালদ্বীপ, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা সব গুলো প্রতিবেশী রাষ্ট্রই ভারতের নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে চীনের দিকে ঝুঁকেছে। সেখানে যদি বিএনপি এখন ভারত বিরোধীতার রাজনীতি শুরু করে তাহলে সেটি এ অঞ্চলে চীনের জন্য আশির্বাদ হিসেবে দেখা দেবে এবং চীন বিএনপিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিবে। বিশ্ব রাজনীতি চীনের প্রভাব এখন অনেক বেশি। 

পঞ্চমত, বিএনপির অস্তিত্ব রক্ষা। বিএনপি মনে করছে যে, ভারত বিরোধীতার রাজনীতি করেই জনগণের কাছে যাওয়া যাবে। জনগণের কাছে সমর্থন আদায় করা যাবে। আর এসমস্ত কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে এখন ভারত বিরোধী রাজনীতির নব যাত্রা শুরু হয়েছে। যেটি গতকালের সমাবেশে স্পষ্ট হলো।


বিএনপি   রুহুল কবির রিজভী   ভারত বিরোধীতা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ওবায়দুল কাদের-একরাম চৌধুরীর নোয়াখালীর বিরোধ: যেখান থেকে শুরু

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় ক্ষমতাবান ব্যক্তি। অন্যদিকে একরাম চৌধুরী নোয়াখালী-৪ আসনের এমপি। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা। এই দুইজনের বিরোধ এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অন্যতম আলোচনার বিষয়। এই বিরোধ নতুন নয়, দীর্ঘদিনের পুরনো। ওবায়দুল কাদেরের লেখা ‘কারাগারের লেখা অনুস্মৃতি; যে কথা বলা হয়নি’ গ্রন্থে এই বিরোধের চিত্র তুলে ধরেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

গ্রন্থের ১২১ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে- আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমার ছোটভাই মির্জা বসুরহাট পৌরসভার চেয়ারম্যান হবার পর পরই শত্রুতার ক্ষেত্র তৈরী হতে থাকে। মন্ত্রী না হতে পেরে ফেনীর জয়নাল হাজারী আমার উত্থানকে কখনো সুনজরে দেখেননি। একুশের বইমেলায় তার ‘বাধনের বিচার চাই’ বইটি বাংলা একাডেমীর কোন স্টলে বিক্রির অনুমোদন না পাওয়ায় জয়নাল হাজারী তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমীর সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমার সামান্যতম যোগসূত্র ছিল না। তবু জয়নাল হাজারী আমাকে ভুল বোঝেন এবং আমার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে বিষোদগার করেন। তার সিদ্ধান্তে আমার নির্বাচনী এলাকায় (কোম্পানিগঞ্জ-সদর পূর্বাঞ্চল) ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ১১ দিন বাস চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হওয়ায় এলাকার হাজার হাজার লোক সীমাহীন দুর্ভোগের সম্মুখীন হন। আমি বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেও জয়নাল হাজারীর আক্রোশ থেকে রেহাই পাইনি। ইতোমধ্যে আমার এলাকায় আঞ্চলিকতার হাওয়া তুলে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামানো হয় একরামুল করিম চৌধুরীকে। ঢাকায় ক্ষমতাবান একটি মহলের ইন্ধনে আমি এলাকায় পরবর্তী নির্বাচনকে সামনে রেখে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হই।

শুনেছি, নোয়াখালীর দুই নেতা ভেতরে ভেতরে একরামকে আমার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বী হতে উৎসাহিত করেন। ফেনী থেকে জয়নাল হাজারীও নাকি তাকে সমর্থন করে উজ্জীবিত করে তোলেন। এরকম পরিস্থিতিতে এক পর্যায়ে নির্বাচন করার ইচ্ছাই পরিত্যাগ করি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার ইচ্ছাকে আমি উপেক্ষা করতে পারিনি। আমার সহকর্মী ও বন্ধু আবুল হাসান চৌধুরী অবশ্য শেষ পর্যন্ত নির্বাচন না করার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। সেই থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হাসান চৌধুরী সক্রিয় রাজনীতি থেকেও সরে পড়েন। পয়লা অক্টোবরের পর আমিও কিছুদিন রাজনীতি ছেড়ে পড়াশোনায় ডুবে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমার পক্ষে এই সিদ্ধান্তেও অনড় থাকা সম্ভব হয়নি নেত্রীর কারণে। নির্বাচনের পরের দিন হঠাৎ করে একরামের ফোন। অপরপ্রান্ত থেকে আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই সে বলল: কাদের ভাই, সরি, আমার ভুল হয়ে গেছে। আমি বললাম: ভুল তোমারও হয়েছে, আমারও হয়েছে। কাজেই এখন আর ওসব কথা বলে লাভ নেই। পরে অবশ্য সাবের চৌধুরী, বীর বাহাদুর, টুটুল ও আলাউদ্দিন নাসিমসহ কয়েক দিন বৈঠকে করার পর একরামের সঙ্গে সমস্যার অবসান ঘটে। বৈঠকে হানিফ ভাই ও বেলায়েত ভাইও সক্রিয় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।

একপর্যায়ে একরামকে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করার মতো বিরল ঘটনাও ঘটে যায়। এতে নেত্রীর প্রথমটা আপত্তি থাকলেও পরববর্তী নির্বাচনী এলাকায় আমার ভবিষ্যৎ নিষ্কন্টক হবে মনে করে সম্মতি দেন। এই সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যদিও সঠিক হয়নি তবু ভোটের রাজনীতির কথা ভেবে শেখ হাসিনা বীর বাহাদুরসহ আমাদের অনেকের অনুরোধে সায় দেন। বিষয়টি শুধু নোয়াখালী নয়, অন্যান্য জেলার এ ধরনের সংকটও নেত্রী জন্য খুবই বিব্রতকর বিষয় হয়ে পড়ে। এরকম মানুষ বেশ ‘ইমোশনাল’ ও  ‘সেন্টিমেন্টাল’। তবে ‘ডায়নামিক’ও ভালো সংগঠক। উচ্চাভিলাষ, হঠকারিতা ও আবেগ সংযত করতে পারলে ওর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হতে পারে। জেলায় দলের বৃহত্তর স্বার্থে আমি ঐক্যের এক ভালো দৃষ্টান্ত স্থাপন করি। এর ফলে আমাকে কিছু মূল্যও দিতে হয়। কোম্পানীগঞ্জে আমার ছোট ভাই মির্জা দলীয় রাজনীতিতে বেশ প্রভাবশালী, তবে কর্তৃত্ববাদী। একরামের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়নে সে ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়। একপর্যায়ে থানা আওয়ামী লীগ দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। পরে অবশ্য মির্জা থিজির ও বাবুলসহ সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করে। কিন্তু জাতীয় নির্বাচনকে (২০০৭) সামনে রেখে জেলা আওয়ামী লীগে সংকট ঘনীভূত হয় ওঠে।

নোয়াখালী সদর আসনে একরাম প্রার্থী হওয়ায় দলের একটি অংশ তৎকালীন এলডিপির মেজর (অব.) মান্নানের পক্ষে প্রকাশ্যে অবস্থান নেয়। আমি একরামের পক্ষ নিতে গিয়ে জেলা সদর দফতরে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ি। জেলা নেতৃত্বের কোন্দলের কারণে আমার নিজস্ব এলাকায় নির্বাচনের ওপর প্রভাব না পড়লেও জোট সরকারের ব্যর্থতার পর বিজয়ের অনিবার্য ফসল ঘরে তোলা কঠিন হয়ে পড়ে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি ও আইনশৃঙ্খলার অবনতিতে সারাদেশের সারাদেশের মতো বৃহত্তর নোয়াখালীতেও বেশ কয়েকটি আসনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের বিজয়ের উজ্জ্বল সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু দলীয় অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও কোথাও কোথাও প্রার্থী মনোনয়নে ভুল আমাদের বিজয়ের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। শুধু নোয়াখালীর কেন, সারাদেশেই মহাজোট করতে গিয়ে প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়ায় বেশকিছু এলাকায় আমরা ‘উইনেবল ক্যান্ডিডেট’ দিতে পারিনি। নিরঙ্কুশ বিজয় নব জোয়ারের মুখে ঠেকানো না গেলেও বাঞ্ছিত দুই তৃতীয়াংশ মেজরিটি পাওয়া সাংঘাতিক কঠিন হতো। মহাজোটের মধ্যেও প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া নির্বিবাদে সম্পন্ন করা একরকম অসম্ভবই ছিল। কিছু আসন বাদ দিয়ে দেশের অধিকাংশ আসনে মনোনয়ন পত্রে জমাদানকারীর অতিরিক্ত সংখ্যা গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।


আওয়ামী লীগ   ওবায়দুল কাদের   একরামুল করিম চৌধুরী   বিরোধ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

খালেদা জিয়ার ছবি দিয়ে পোস্টার সাঁটানো কর্মসূচি শুরু

প্রকাশ: ০৩:২২ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্ব মা দিবস উপলক্ষে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছবি সম্বলিত পোস্টার সাঁটানো কর্মসূচি গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি। একইসঙ্গে বিশ্ব মা দিবস উপলক্ষে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা। ওই পোস্টারে লেখা হয়েছে- ‘মা আমায় দিচ্ছে ডাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’।

শনিবার (১১ মে) নয়াপল্টনে মহানগর বিএনপির কার্যালয়ের সামনে এবং আশপাশের এলাকায় খালেদা জিয়ার ছবি সম্বলিত পোস্টার সাঁটানো কর্মসূচি উদ্বোধন করেন মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম।

এ সময় সালাম বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আজ নিপীড়িত জনগণের মা। তাকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় আটকে রাখা হয়েছে। এবারের মা দিবসে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আমাদের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। আমরা দাবি করছি, অনতিবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার। তিনি চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবেন।’

বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম আরও বলেন, ‘ধারাবাহিকভাবে সব ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে এই পোস্টার লাগানোর মধ্য দিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি তরান্বিত করা হবে।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ ইউনুস মৃধা, মোহাম্মদ মোহন, আব্দুস সাত্তার, সদস্য খালেদ সাইফুল্লাহ রাজন, আরিফা সুলতানা রুমা, বিএনপির তথ্য ও প্রযুক্তি দপ্তরের কর্মকর্তা মাহফুজ কবির মুক্তাসহ মহানগর দক্ষিণ বিএনপির অন্যান্য নেতাকর্মীরা।


বিএনপি   চেয়ারপারসন   বেগম খালেদা জিয়া  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আসছেন মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ০২:১৭ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বিএনপি। আগামীকাল রোববার দুপুর ১২টায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

এতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বক্তব্য রাখবেন। এর মধ্য দিয়ে ছয় মাসেরও বেশি সময় পর সংবাদ সম্মেলনে আসছেন মির্জা ফখরুল।

এর আগে ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সে সময় ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপি মহাসমাবেশ ডেকেছিল। গত ২৮ অক্টোবর ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ পুলিশ পণ্ড করে দেওয়ার পরদিনই মির্জা ফখরুল গ্রেপ্তার হন। প্রায় সাড়ে তিন মাস কারাবাসের পর ১৫ ফেব্রুয়ারি জামিনে মুক্তি পান তিনি।

কারাগারে যাওয়ার পর থেকে বিএনপি মহাসচিব ও তার স্ত্রী রাহাত আরা বেগম উভয়ে শারীরিক নানা জটিলতায় ভুগছেন। এ জন্য কারাগার থেকে মুক্তির পর ৪ মার্চ তারা চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যান। সেখান থেকে দেশে ফিরে আবার গত ২ মে পবিত্র ওমরাহ পালনে স্ত্রী রাহাত আরা বেগমকে নিয়ে সৌদি আরব যান মির্জা ফখরুল। প্রথমে তারা মদিনায় হজরত মুহাম্মদ (সা.) রওজা মোবারক জিয়ারত করেন। গত ৫ মে মক্কায় এসে পবিত্র ওমরাহ পালন করেন তারা।


মির্জা ফখরুল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ আজ

প্রকাশ: ০৮:২৩ এএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে আজ শনিবার। বিকেল সাড়ে ৩টায় মোহাম্মদপুর আড়ংয়ের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। শুক্রবার (১০ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দলের এক যৌথ সভার শুরুতে এ কথা জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

ওবায়দুল কাদের বলেন, অনেকে বলে আমরা পাল্টাপাল্টি সমাবেশ করছি, আসলে আমরা কোনো সমাবেশ করছি না। আজ আমরা এখানে যৌথসভা করছি। আগামীকাল শনিবার আমাদের মন্ত্রিসভার সদস্য, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের সংসদীয় এলাকায় আমরা একটি শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করব। সেখানে সবাইকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।

এর আগে দলের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ এবং সব সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের যৌথসভা আজ শুক্রবার (১০ মে) অনুষ্ঠিত হয়।


আওয়ামী লীগ   শান্তি সমাবেশ   ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন