২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনার তদন্ত ও বিচারপ্রক্রিয়াকে আওয়ামী লীগের সাজানো নাটক বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এ ঘটনায় তারেক রহমান ও বিএনপি নেতাদের নাম জড়ানো হয়েছে।
সোমবার (২১ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে দলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি নির্ধারণের বিষয়ে যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা ২১ আগস্টের ঘটনার সঙ্গে বিএনপির কয়েকজন শীর্ষ নেতার নাম এনে বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার দাবি জানাচ্ছেন। এই বিষয়ে বিএনপির বক্তব্য কী?
প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, বিচার কার্যক্রম তো শেষ করেই ফেলেছে। পুরো বিষয়টিই সাজানো নাটক। যেখানে মিটিং হওয়ার কথা ছিল, সেখানে না করে অন্য জায়গায় করল। মিটিং শিফট করার বিষয়টি দায়িত্বপ্রাপ্তদের জানানো হয়নি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, তারেক রহমানের নাম এফআইআরে ছিল না। তিনবার এফআইআর হয়েছে, একবারও তারেক রহমানের নাম ছিল না। এরপর একজন অবসরে যাওয়া কর্মকর্তা কাহার আকন্দ, তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তাঁকে চাকরিতে ফিরিয়ে এনে তদন্ত কর্মকর্তা করা হলো। তিনি তারেক রহমানের নাম যুক্ত করলেন।
পুরো তদন্তে তারেক রহমানের নাম কোথাও উচ্চারিত হয়নি দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, একমাত্র মুফতি হান্নানকে দিয়ে বলানো হলো। পরে তিনি অস্বীকার করে হলফনামা (অ্যাফিডেভিট) দিয়েছিলেন, তা গ্রহণ করা হয়নি। তড়িঘড়ি করে অন্য একটি মামলায় তাঁর ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে, তাঁকে আর আদালতে আসার সুযোগই দেওয়া হয়নি।
২১ আগস্টের ঘটনাকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে অন্যতম জঘন্য ঘটনা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘২১ আগস্টের ঘটনার নিন্দা জানাই আমরা।’ তিনি বলেন, এই ঘটনায় অযথা রাজনৈতিক নেতাদের নাম ঢুকিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করা হচ্ছে। তারেক রহমান, আবদুস সালাম পিন্টু, লুৎফুজ্জামান বাবর কেউ জড়িত ছিলেন না, রাজনৈতিক কারণে তাঁদের জড়িত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, কোনো সুষ্ঠু তদন্ত না করেই এটি করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা সরকারের পক্ষ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে ভারতের কূটনৈতিক বার্তা–সংক্রান্ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের বিষয়ে একজন সাংবাদিক মির্জা ফখরুলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বিএনপি ভারত সরকারকে নিজেদের অবস্থান বোঝানোর কোনো চেষ্টা করছে কি না, জানতে চান ওই সাংবাদিক।
জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে আমরা এতটা দেউলিয়া হইনি। আওয়ামী লীগের রাজনীতি নেই, তারা জনগণের কাছে যেতে পারে না, তারা এসব কথা বলে ফায়দা লোটার চেষ্টা করে। আমাদের স্পষ্ট কথা, জনগণের সঙ্গে আছি। যে কথা বলা হচ্ছে, তার কোনো সূত্র নেই। ভারত সরকার কিছু বলেনি, যুক্তরাষ্ট্র বলেনি, ভারত এমন চিঠি দিয়েছে। এখন দেশের মানুষ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। এই বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্যই এসব চেষ্টা করা হচ্ছে।’
বিএনপি মির্জা ফখরুল ২১ আগস্ট সংবাদ সম্মেলন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।