ইনসাইড পলিটিক্স

হঠাৎ চুপ কেন জামায়াত?

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ৩০ অগাস্ট, ২০২৩


Thumbnail হঠাৎ চুপ কেন জামায়াত?

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ, আটক নেতা-কর্মীদের মুক্তি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবিতে চলতি বছরের ১০ই জুন রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে দীর্ঘ এক যুগ পর প্রকাশ্যে সমাবেশ করে জামায়াতে ইসলামী। সমাবেশ থেকে জানানো হয়, সরকার এবং সব দলকে নিয়ে আলোচনা এবং সরকার ও বিরোধীদের ‘ঐক্যের’ আহ্বান। এই ‘ঐক্যের’ মধ্য দিয়ে একটি ‘সঠিক বাংলাদেশ’ গড়ার কথাও বলে দলটি। এরপর থেকেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফের আলোচনায় আসে জামায়াত। এর আগে প্রায় দীর্ঘ এক যুগ জামায়াত প্রকাশ্যে কোনো সভা-সমাবেশ করা থেকে বিরত ছিল। কিন্তু সেই জামায়াত এখন আবারও নিশ্চুপ। জামায়াত চুপ থাকা মানেই হলো, দলটি যে কোনো একটা বড় কিছু করতে চায় বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জামায়াত যখন কোনো সহিংস কর্মকাণ্ড করতে চায়, তখন হঠাৎ করেই চুপ হয়ে যায়। জামায়াতের ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করলে তাই দেখা যায়, বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াত যখনই কোনো বড় ধরনের অপতৎরতা করেছে, ঠিক তার আগ মুহূর্তে হঠাৎ করেই চুপ হয়ে গেছে। এখন এই সময়ে জামায়াত হঠাৎ চুপ কেন?- এটি অবশ্যই একটি বড় প্রশ্ন। 

চলতি বছরের ২০ মার্চ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে জামায়াতের ব্যাপারে সহানুভূতি দেখানো হয়। ওই প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, জামায়াত বাংলাদেশে কোনো সভা-সমাবেশ করতে পারছে না। এছাড়াও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে কেন্দ্র করেও বেশ কিছু প্রশ্ন তুলেছিল যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার বিষয়ক ওই প্রতিবেদন। তারই প্রেক্ষিত্রে ১০ই জুন রাজধানীতে সমাবেশ করার মৌখিক অনুমতি পায় জামায়াত। যুক্তরাষ্ট্রের ওই প্রতিবেদনে জামায়াতসহ যে সূত্রগুলো উল্লেখ করা হয়েছিল, ওই দুটি সংগঠনই অনিবন্ধিত এবং রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত নয়। ওই দুইটি সংগঠনের একটি ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের সমাবেশে হতাহতের সংখ্যা নিয়ে যে তথ্য দিয়েছিল তা বিভ্রান্তিমূলক। যে কারণেই যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশিত ওই মানবাধিকার প্রতিবেদন খুব একটা বেশি হালে পানি পায়নি। এ কারণেও জামায়াত হয়তো নিরব হতে পারে বলেই বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 


বিশ্লেষকরা বলছেন, কিছু দিন আগে একটি গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছিল যে, জামায়াতের আটক নেতা-কর্মীদের মুক্তির ব্যাপারে সরকারের সাথে জামায়াতের একটি সমঝোতা হয়েছে এবং সেই প্রেক্ষাপটে জামায়াত আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩শ’ আসনেই প্রার্থী দিচ্ছে। যদিও জামায়াতের নেতারা এই বিষয়টিকে অস্বীকার করেছেন, তথাপিও বিষয়টি একবারে এড়িয়ে যাওয়ার কোনো বিষয় নয়। সরকারের কাছে জামায়াতের যে ধরনের দাবি, এসব দাবি পূরণ না হলে, হয়তো জামায়াত সরকার বিরোধীদের পথেই হাটবে। যে কারণেই এই সময়ে হঠাৎ জামায়াতের চুপ থাকাটা একটি ভয়ঙ্কর পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।     

গত ১৪ই আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মারা যান। সোমবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএসএমইউ) তার মৃত্যু হয়। সে সময়ে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা সাঈদীর মৃত্যুকে ঘিরে সারাদেশে বেশ তাণ্ডব চালায় এবং বিভিন্ন ধরনের প্রপাগাণ্ডা চালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপ এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের কারণে সে সময়ে জামায়াত খুব একটা অস্বস্থিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারেনি। এ ঘটনার আগেও জামায়াত রীতিমতো নিরব ভূমিকায় ছিল এবং এ ঘটনার পর থেকেই আবার নিরব ভূমিকা পালন করছে দলটি। জামায়াতে এখন শুনশান নিরবতা। এই নিরবতার দুইটা কারণ হতে পারে, একটি হচ্ছে সরকারের সাথে কোনোভাবে জামায়াতের একটা সমঝোতা হয়েছিল। যে কারণেই নিরব ছিল জামায়াত। পরে সেই সমঝোতা কোনো কারণে বাস্তব না হওয়ায় সাঈদীর মৃত্যু ইস্যুকে কেন্দ্র করে আবার সরব হয়েছিল জামায়াত। 

অন্যদিকে বাংলাদেশের অন্যতম মিত্র রাষ্ট্র ভারত মনে করে যে, জামায়াত একটি সাম্প্রদায়িক, সহিংস, সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল। বাংলাদেশে একটি সাম্প্রদায়িক দল ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশসহ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। যে কারণেই জামায়াতের মতো সাম্প্রদায়িক দলগুলোকে যেন কোনোভাবেই আশ্রয়-প্রশ্রয় না দেওয়া হয়। এটিই হচ্ছে ভারতের বৈদেশিক নীতির একটি অভিন্ন সত্তা। সেই প্রেক্ষাপটে ভারতের যে দৃষ্টিভিঙ্গি, সে দৃষ্টিভঙ্গির কারণেই হয়তো জামায়াতের প্রতি পশ্চিমা দেশুগুলোর যে সহানুভূতি, তা অনেকাংশেই নষ্ট হয়ে গেছে। যে কারণেই জামায়াত এখন আনেকটা নিরব। 

কিন্তু অনেকেই শঙ্কা করছেন, সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের দিকে একটি বড় ধরনের নাশকতা, আন্দোলনের নামে সরকারে প্রতি চাপ সৃষ্টির জন্য বড় ধরনের কিছু ঘটনা ঘটানোর পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতিতে রয়েছে জামায়াত। কারণ দেখা গেছে, জামায়াত যখনই কোনো বড় ধরনের ঘটনা ঘটায়, তার আগেই ঘাপটি মেরে যায়। যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার পরিচালনার জন্য সরকার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো, তখনও জামায়াত হঠাৎ করে সব কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেওয়ার জন্য নাশকতায় নেমেছিল। শাহবাগে গণজাগরন মঞ্চের যখন আন্দোলন চলছিল, তখনও জামায়াত চুপ হয়েছিল, তারপরই তারা ২০১৩ সালের ৫মে হেফাজতকে দিয়ে শাপলা চত্বরে তাণ্ডব চালিয়েছিল।                   

যে কারণেই অনেকেই মনে করছেন, মূলত জামায়াত একটি ভয়ঙ্কর পরিকল্পনার জন্য চুপ থাকে। এখন সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশে বড় ধরনের নাশকতা, রাজনৈতিক সহিংসতা, সরকারকে চাপে ফেলার জন্য, অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় আনা, -সে ধরনের একটি পরিকল্পনা নিয়েই জামায়াত চুপ হয়ে আছে কি না- সেটিই এখন দেখার বিষয়। 


জামায়াত   পুলিশ   সংঘর্ষ   মামলা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কার্যনির্বাহী কমিটিতে আলোচনা হয়নি: ওবায়দুল কাদের

প্রকাশ: ১০:৪৯ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তবে পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক শেষে গণভবনে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, এ বছর আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর হীরক জয়ন্তী জাঁকজমকভাবে আয়োজনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া ১৭ মে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস, শেখ কামালের জন্মদিবস, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসসহ বিভিন্ন দিবস পালন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

এর আগে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠার ৭৫ বছর পূর্তি উদযাপনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে বৈঠকে বসে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি। বৈঠকে দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে উপজেলা নির্বাচনে দলীয় এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের প্রার্থী হওয়ার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা ছিল।

আজ সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভা শুরু হয়। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।

উপজেলা নির্বাচন   কার্যনির্বাহী কমিটি   ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের জনসভা বুধবার

প্রকাশ: ০৮:০৬ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

মহান মে দিবস উপলক্ষে ১ মে (বুধবার) বিকাল ৩টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শ্রমিক জনসভা করবে আওয়ামী লীগ। জাতীয় শ্রমিক লীগের উদ্যোগে এই শ্রমিক জনসভা অনুষ্ঠিত হবে।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এতে দলের কেন্দ্রীয় ও জাতীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য প্রদান করবেন।

আওয়ামী লীগ   জনসভা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির আরও ৪ নেতাকে বহিষ্কার

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করায় আরও চার নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দলটির সহ-দপ্তর সম্পাদক মো. মনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানোনো হয়।


এতে বলা হয়, আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ঢাকা জেলাধীন কেরানীগঞ্জ মডেল থানা বিএনপির সহ-সভাপতি মোসা. সাবিরা বেগম, সুনামগঞ্জ জেলাধীন শাল্লা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হাজিরুল ইসলাম আজহার, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ এবং যুবদলের সদস্য সাইফুর রহমানকে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় দলীয় গঠনতন্ত্র মোতাবেক বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো।


এর আগে, গত ২৬ এপ্রিল ভোট বর্জনের দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ৭৩ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি।

বহিষ্কারকৃতদের মধ্যে ২৮ জন চেয়ারম্যান পদে, ২৪ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে এবং সংরক্ষিত নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী রয়েছেন ২১ জন।

বিএনপি   বহিষ্কার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

তারেককে নিয়ে টালমাটাল বিএনপি

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

তারেক জিয়ার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। তারেক জিয়া তার পছন্দের ব্যক্তিদেরকে দলে রাখছেন। অপছন্দের ব্যক্তিদেরকে দল থেকে বের করে দিচ্ছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। গঠনতন্ত্রকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে এবং এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা দলের ভিতরে চলছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অসন্তোষ এবং কোন্দল।

সাম্প্রতিক সময়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন নির্বাচিত হয়েছিলেন। দল তাকে আদেশ করেছিল দায়িত্ব গ্রহণ না করার জন্য। কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির পদটি গ্রহণ করেন। আর তার এই পদ গ্রহণের কারণে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম তাকে অব্যাহতি দিয়েছিল। কিন্তু এই অব্যাহতি শেষ পর্যন্ত টেকেনি। এখন তাকে দলে রাখার সিদ্ধান্ত যেমন নেওয়া হয়েছে, তেমনই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তারেক জিয়ার এই সিদ্ধান্তে বিএনপির আইনজীবীদের একাংশ যারা মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে তারা ক্ষুব্ধ হয়েছে। বিশেষ করে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আলীসহ সিনিয়র আইনজীবীরা বলছেন, তারেক জিয়ার নির্দেশেই তারা খোকনের ব্যাপারে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আবার তারেক জিয়াই তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলেন। মাঝখান থেকে তারেক জিয়া তাদেরকে অসম্মান করবেন বলেও এই সিনিয়র আইনজীবী মনে করেন।

তারেক জিয়ার পরামর্শেই তারা মাহবুব উদ্দিন খোকনকে দায়িত্ব না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারেক জিয়াই এখন মাহবুব উদ্দিন খোকনের সঙ্গে কথা বলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব পদে যেমন আছেন, তেমনই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদেও বহাল থাকছেন।

বিএনপির মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে মাহবুব উদ্দিন খোকন যদি নির্বাচন করে এবং জিতে দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে তাহলে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীরা কী দোষ করল? বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত হল বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। আর এই ধারাবাহিকতায় বিএনপির বিভিন্ন পেশাজীবীদের নির্বাচনও বর্জন করছে। এর আগে বিএনপি নিয়ন্ত্রিত ড্যাব চিকিৎসকদের বিএমএ নির্বাচনও বর্জন করেছিল।

প্রকৌশলীদের নির্বাচনেও বিএনপি সরে গিয়েছিল। আর এরকম একটি পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কেন বিএনপি অংশগ্রহণ করল? সেটি যেমন একটি বড় প্রশ্ন, তার চেয়েও বড় প্রশ্ন হল যে- একই সিদ্ধান্ত একেক জনের ব্যাপারে এক রকম হবে কেন? এ নিয়ে বিএনপির নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন?

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ দলের কিছু বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদেরকে বলেছেন, এই সমস্ত কীভাবে হচ্ছে আমি জানি না। আপনাদের যদি কোনও কিছু বলার থাকে আপনারা লন্ডনে যোগাযোগ করেন। এখন বিএনপিতে কেউ দায় নিতে চাচ্ছে না। কেউ জানছেও না যে কাকে কখন কীভাবে বহিষ্কার করা হচ্ছে। যার ফলে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে দলটির মধ্যে।

উপজেলা নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করেছেন সে রকম ৭৩ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অথচ বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, উপজেলা নির্বাচন বা স্থানীয় সরকার নির্বাচন একটি নির্দলীয় ধরনের নির্বাচন। এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক তারা ব্যবহার করবে না।

অনেক বিএনপি নেতা মনে করেন যে, দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করার সিদ্ধান্তটাই সঠিক ছিল। কিন্তু কেউ যদি ব্যক্তিগত উদ্যোগে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে সেটি তার নিজস্ব ব্যাপার। এ জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা বাঞ্ছনীয় নয় বলেই বিএনপির বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা মনে করেন। আর একারণেই বিএনপির সব নেতারাই হাল ছেড়ে দিয়েছেন এবং তারা এখন তিক্ত-বিরক্তও বটে।


বিএনপি   রাজনীতি   মির্জা ফখরুল   তারেক জিয়া   ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের কালো তালিকা ভুক্তরা যে শাস্তি পাবেন (ভিডিও)

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আজ সন্ধ্যা সাতটায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই বৈঠকের প্রধান আলোচ্য বিষয় হবে উপজেলা নির্বাচন। উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছে না। কিন্তু তারপরও এই নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মাথাব্যথার অন্ত নেই।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদেরকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই অনুরোধে সাড়া দেওয়া মন্ত্রী, এমপির সংখ্যা নগণ্য। অধিকাংশ মন্ত্রী, এমপি দলীয় সিদ্ধান্ত বা নির্দিষ্ট করে আওয়ামী লীগ সভাপতির সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এবার উপজেলা নির্বাচনে তাদের স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা যেন কোন প্রার্থীর পক্ষে অংশগ্রহণ না করে। এক্ষেত্রেও নির্দেশনা মানা হয়নি। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। 

নির্বাচন কমিশন নিজেই বলেছে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাবকে একটা বড় সমস্যা হিসেবে তারা মনে করছেন। এরকম বাস্তবতায় উপজেলা নির্বাচনে যারা দলের শৃঙ্খলা লঙ্ঘন করেছে, যারা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কী ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় তা নিয়ে আওয়ামী লীগের আজকে কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক। 

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে দলের সাংগঠনিক সম্পাদকরা সুনির্দিষ্টভাবে তালিকা দেবেন, যে তালিকাতে দেখানো হবে দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে কারা উপজেলা নির্বাচনে স্বজনদেরকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন। এই তালিকা প্রাপ্তদেরকে আওয়ামী লীগ কালো তালিকাভুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করবে বলে আওয়ামী লীগের একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন। তবে আজ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে কী ধরনের শাস্তি নেওয়া হবে সে সম্পর্কে কারও স্পষ্ট ধারণা নেই। আওয়ামী লীগ সভাপতি এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন দলের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য। 

একাধিক সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগের যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে স্বজনদের প্রার্থী করেছেন, তাদেরকে বহিষ্কারের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হবে না। বরং তারা ধাপে ধাপে শাস্তি পাবে। তিল তিল করে তাদের শাস্তি কার্যকর করা হবে। যারা কালো তালিকাভুক্ত, তারা যে সমস্ত শাস্তি পাবে তাদের মধ্যে রয়েছে;

১. এই সমস্ত মন্ত্রী-এমপি এবং তাদের স্বজনরা আওয়ামী লীগের কোনো কমিটিতে থাকতে পারবেন না। তাদের কমিটিতে রাখা হবে না। 

২. ভবিষ্যতে এই সমস্ত ব্যক্তিরা মনোনয়নের জন্য বিবেচিত হবেন না। এ সমস্ত স্বজনরা এবার নির্বাচনে জিতুক বা হারুক যাই হোক না কেন ভবিষ্যতে তারা প্রার্থী হতে পারবেন না।

৩. কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজে তাদেরকে নেওয়া হবে না।

৪. এদের মধ্যে যারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে আছেন তাদের পদ হারাতে হতে পারে। এবং 

৫. ভবিষ্যতে এ সমস্ত নেতারা আওয়ামী লীগ সভাপতির স্নেহ থেকে বঞ্চিত হবেন।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র মনে করছে, এই ধরনের সিদ্ধান্তগুলো যদি নেওয়া হয় তাহলে পরে আস্তে আস্তে দলের ভেতর যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে সেই বিশৃঙ্খলা থেকে দলকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।


আওয়ামী লীগ   কার্যনির্বাহী কমিটির সভা   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন