ইনসাইড পলিটিক্স

তারেকের দশ ভুলে বিএনপির যত সর্বনাশ

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail তারেকের দশ ভুলে বিএনপির যত সর্বনাশ।

বিএনপি বর্তমানে এক দফা আন্দোলন করছে। বিএনপির অধিকাংশ নেতাই মনে করছেন, এখন এক দফা আন্দোলনে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এক দফা আন্দোলন নয়, বরং সরকারের সঙ্গে একটি সমঝোতা করে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনে যাওয়াই কৌশলগতভাবে সুবিধাজনক। এবার আন্তর্জাতিক মহল নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে। ২০১৮ বা ২০১৪’র মতো নির্বাচন বিএনপিকে করতে হবে না। তাছাড়া বিএনপি এখন সাংগঠনিকভাবেও অনেক শক্তিশালী। তাই নির্বাচন করলে বিএনপির ফলাফলও ইতিবাচক হতে পারে। 

কিন্তু লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া নির্বাচন নিয়ে অনড় অবস্থানে রয়েছেন। তিনি যে কোনো মূল্যে এক দফা আন্দোলন অব্যাহত রাখার পক্ষে এবং এক দফা আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পতন ঘটাবেন- এমন আশার বাণীও তিনি দলের নেতাদেরকে শোনাচ্ছেন। কিন্তু বিএনপিতে যারা দীর্ঘ রাজনীতিতে পরিপক্ক, অভিজ্ঞ, তারা মনে করছেন, তারেক জিয়ার ভ্রান্ত নীতির কারণে বিএনপি আরেকটি সংকটের দ্বারপ্রান্তে। 

বিএনপির প্রবীণ নেতারা মনে করেন, তারেক জিয়ার কারণেই বিএনপি বারবার সংকটে পড়েছে এবং আজকের এই অবস্থার জন্য দায়ী প্রধানত তারেক জিয়াই।  বিভিন্ন প্রবীণ নেতাদের সাথে কথা বলে তারেক জিয়ার ভুলে বিএনপির যে সর্বনাশ হয়েছে- এরকম দশটি ঘটনার তথ্যাদি বাংলা ইনসাইডার সংগ্রহ করেছে। পাঠকদের অবগতির জন্য তারেকের ভুলে বিএনপির দশ সর্বনাশের চিত্রটি উপস্থাপন করা হলো- 

১. দশ ট্রাক অস্ত্র: ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিল ভারতের সহায়তায়। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার ‘র’-এর সাথে তারেক জিয়ার একাধিক বৈঠক হয়েছিল এবং সেই বৈঠকে তারেক জিয়া ভারতকে আশ্বস্ত করেছিল, তারা ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সংঘাত, সহিংসতা ইত্যাদি বন্ধ হবে। কিন্তু তারেক জিয়া ক্ষমতায় এসে উল্টো কাজ করেছেন। তিনি আইএস’র কাছ থেকে অর্থ নিয়ে বাংলাদেশকে বিচ্ছিন্নতাবাদের রুট হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। আর দশ ট্রাক অস্ত্রের ঘটনা তার একটি প্রমাণ। অনেকেই মনে করেন, দশ ট্রাক অস্ত্রের ঘটনার পরেই ভারত বিএনপির ব্যাপারে নেতিবাচক অবস্থান গ্রহণ করেছে এবং সেই অবস্থান থেকে এখনো ভারত সরে আসেনি।

২. একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা: একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা ছিল তারেকের আরেকটি সর্বনাশা খেলা। এই ঘটনাটি বিএনপির কোনো শীর্ষ নেতারা জানতেন না। তারেক একাই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করার জন্য এই নারকীয় যজ্ঞের পরিকল্পনা এঁটেছিল এবং এটি বিএনপিকে একটা বড় ক্ষতির মুখোমুখি দাঁড় করায়, যে ক্ষত বিএনপি এখনো সারাতে পারেনি। 

৩. ড. ইয়াজদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি করা: অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে রাষ্ট্রপতি করার সিদ্ধান্তটি ছিল বেগম খালেদা জিয়ার। কিন্তু বদরুদ্দোজা চৌধুরী রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তিনি জিয়ার মাজারে যান নাই, এই অভিযোগে তারেক জিয়া বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে অপসারণ করার উদ্যোগ নেন। এইরকম পরিস্থিতির মধ্যে অধ্যাপক চৌধুরী নিজেই পদত্যাগ করেন। এরপর তারেক জিয়ার পরামর্শে ড. ইয়াজউদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি করা হয়। এরকম একজন অযোগ্য, মেরুদণ্ডহীন, ‘জি হুজুর’ টাইপের ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি করার পরিণাম যে কি হয়, তা ১/১১’র সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা হারে হারে টের পেয়েছে। আর এজন্য বিএনপির সিনিয়র নেতারা তারেক জিয়াকে দায়ী করেন। তারেক জিয়ার ভুল সিদ্ধান্তের কারণেই ইয়াজউদ্দিনের মতো একজন অযোগ্য, অথর্ব লোককে রাষ্ট্রপতি করা হয়েছে, যিনি দুর্যোগের সময় বিএনপিকে কোনো সাহায্যই করতে পারেননি। 

৪. মঈন ইউ আহমেদকে সেনা প্রধান করা: সাতজনকে ডিঙ্গিয়ে মঈন ইউ আহমেদকে সেনাপ্রধান করাটাও ছিল তারেকের আরেকটি আত্মঘাতী, বালখিল্য সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তারেক জিয়া সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ নিতে চেয়েছিল। কিন্তু তা বুমেরাং হয়ে যায়। মঈন ইউ আহমেদ কি করেছে?-  বিএনপির নেতাদের কাছে তা নুতন করে বলার প্রয়োজন নেই। 

৫. প্রধান বিচারপতির চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি: তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকেও ধ্বংস করেছে তারেক জিয়া- এমনটি মনে করেন বিএনপির একাধিক নেতা। ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিচারপতি কে এম হাসানকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান করার পরিকল্পনা নিয়েছিল তারেক জিয়া। তার প্রধান কারণ ছিল, সাবেক এই বিএনপি নেতা তত্ত্বাবধায়ক সরকার হয়ে তার কথা মতো চলবে। কিন্তু আন্দোলনের মুখে শেষ পর্যন্ত বিচারপতি কে এম হাসান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হতে অসম্মতি জানান। অনেকেই মনে করেন, এই প্রধান বিচারপতির বয়স সীমা বৃদ্ধির জন্য সংবিধান সংশোধন যদি না করা হতো, তাহলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতো না এবং ১/১১ আসতো না। 

৬. হাওয়া ভবন: বিএনপির সবচেয়ে বড় ক্ষতগুলোর একটা হলো হাওয়া ভবন এবং এই হাওয়া ভবনের মাধ্যমে তারেক জিয়া ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সময় একটি বিকল্প সরকার গঠন করেছিল, যে বিকল্প সরকার দুর্নীতি, লুটপাটের জন্য আলোচিত ছিল। হাওয়া ভবনে টাকা না দিলে কোনো কিছুই হতো না- এমন একটি বাস্তবতা এই দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আর এই কারণেই অনেকে মনে করেন, বিএনপির একটি বড় সর্বনাশের একটি বড় কারণ হলো হাওয়া ভবন।

৭. গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের সাথে বন্ধুত্ব: তারেক জিয়া তার ব্যবসায়িক পার্টনার গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের সাথে বন্ধুত্ব করেছিল এবং এই বন্ধুত্বের কারণেই বিএনপিকে অনেক বদনামের ভাগীদার হতে হয়েছে। 

৮. বেগম জিয়াকে লন্ডন থেকে বের করে দেওয়া: ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বেগম খালেদা জিয়া লন্ডনে গিয়েছিলেন। তার ইচ্ছা ছিল যে, তিনি সেখানেই থাকবেন এবং দুর্নীতির মামলার রায় শুনবেন। রায় যদি তাঁর বিপক্ষে যায়, তাহলে তিনি পুত্রের সঙ্গে লন্ডনে বসেই দল পরিচালনা করবেন। কিন্তু তারেক জিয়া তাকে রীতিমতো গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দেন এবং মামলার রায়ের মাত্র কয়েকদিন আগে তারেক জিয়া বেগম জিয়াকে দেশে আসতে বাধ্য করে। ওই রায়ে বেগম জিয়া কারাগারে যান এবং তার রাজনৈতিক জীবন এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। সেদিন যদি তারেক জিয়া বেগম জিয়াকে লন্ডনে রাখতো, তাহলে পরিস্থিতি অন্য রকম হতো। 

৯. ২০১৮’র নির্বাচন: সরকারের সাথে কোনো রকম দর কষাকষি ছাড়াই তারেক জিয়া শুধুমাত্র মনোনয়ন বাণিজ্য করার জন্য ২০১৮’র নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল এবং ওই নির্বাচনের ফলাফল কি হয়েছিল, তা সকলেই জানে। ওই নির্বাচনের মাশুল এখনো বিএনপিকে দিতে হয়। 

১০. ২০২৩’র আন্দোলন: ২০২৩ সালে এসে তারেক জিয়া এখন আবার আন্দোলনের রূপরেখা ঘোষণা করেছে। সরকারের পতন ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছে। এইটি বিএনপির জন্য আরেকটি আত্বঘাতী সিদ্ধান্ত হতে যাচ্ছে বলেও বিএনপির নেতাকর্মীরা মনে করেন।  


তারেক   দশ ভুল   বিএনপি   সর্বনাশ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচন: কুমিল্লায় চার স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যের চার স্বজন প্রার্থী

প্রকাশ: ০৯:৩৯ এএম, ১২ মে, ২০২৪


Thumbnail

কুমিল্লায় তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া চারটি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র চার সংসদ সদস্যের চার স্বজন প্রার্থী হয়েছেন। ওই চার সংসদ সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হলেও তাঁরা আওয়ামী লীগের নেতা। এ অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা করছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও ভোটাররা।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচনে কুমিল্লার চারটি আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় চার নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচিত হন।

কুমিল্লা-২ (হোমনা ও মেঘনা) আসনের সংসদ সদস্য হোমনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবদুল মজিদের স্ত্রী রেহানা বেগম হোমনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হন। রেহানা বেগম কুমিল্লা উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য।

জানতে চাইলে রেহানা বেগম বলেন, ‘২০১৯ সালেও আমি চেয়ারম্যান হয়েছি নৌকা প্রতীক নিয়ে। এবার দল সবার জন্য প্রার্থিতা উন্মুক্ত রেখেছে। নেতা-কর্মীদের চাপে প্রার্থী হয়েছি।’

কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম সরকারের ছেলে আহসানুল আলম সরকার উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী হয়েছেন। ২০১৯ সালেও আহসানুল চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীক নিয়ে জয়ী হন। আহসানুল আলম সরকার মুরাদনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।

কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (বর্তমানে বহিষ্কৃত) আবুল কালাম আজাদের ছোট ভাই মামুনুর রশিদ কুমিল্লা উত্তর জেলা যুবলীগের সদস্য। তিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন।

কুমিল্লা-৫ ( বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক এম এ জাহেরের বড় ভাইয়ের ছেলে আবু তৈয়ব ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তৃতীয় ধাপে প্রার্থী হয়েছেন। আবু তৈয়ব কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন।

স্বজনদের প্রার্থী হওয়া বিষয়ে সংসদ সদস্য মো. আবদুল মজিদ ও জাহাঙ্গীর আলম সরকারে ভাষ্য, প্রার্থীরা গতবার নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন। তাই এবারও তাঁরা প্রার্থী।

সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, দল প্রার্থিতা সবার জন্য উন্মুক্ত রেখেছে। সারা দেশে বড় নেতাদের ভাই, ছেলে, স্ত্রী, সন্তানেরা প্রার্থী হয়ে ইতিমধ্যে অনেকে জয়ী হয়েছেন। দেবীদ্বারের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা মামুনুরকে চান। অনেকটা একই রকম বক্তব্য দিয়েছেন সংসদ সদস্য এম এ জাহের। 


উপজেলা   নির্বাচন   কুমিল্লা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিলুপ্তির পথে জাতীয় পার্টি?

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

কাগজে কলমে জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধীদল তারা। কিন্তু দলটি সাংগঠনিক অবস্থা এত নাজুক যে, এই দলটি কবে বিলুপ্ত হবে তার দিনক্ষণ এখনও গননা হচ্ছে। জাতীয় পার্টি এখন অস্তিত্বের সংকটে। আওয়ামী লীগের কৃপায় বেঁচে থাকা এই দলটি এখন আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করে কোন রকমে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ জাতীয় পার্টিকে মনে করছে না সরকারি দলের না বিরোধী দলের! সবকিছু মিলিয়ে একটি বিভ্রান্ত আদর্শিক অবস্থা জাতীয় পার্টিকে ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু করতে করতে এখন বিলীন প্রায় করে ফেলেছে।

স্বৈরাচারী হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ জাতীয় পার্টি গঠন করেছিলেন ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ ক্ষমতা গ্রহণ করে। তার পর আস্তে আস্তে ক্ষমতায় থেকে ক্ষমতার সুযোগ সুবিধা ভোগ করে বিভিন্ন দলছুট উচ্ছিষ্টভোগীদের কে নিয়ে এই জাতীয় পার্টি গঠন করেছিলেন। জাতীয় পার্টি গঠিত হওয়ার পর দীর্ঘদিন ক্ষমতায় ছিল এবং ক্ষমতার হালুয়া রুটি খাওয়াই জাতীয় পার্টির নেতা কর্মীদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল। ৯০ এর দশকে স্বৈরাচার পতনের পর অনেকে ধারণা করেছিলেন যে জাতীয় পার্টি কালের গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। কিন্তু সেই সময় অস্তিত্বের পরীক্ষায় নাটকীয়ভাবে জয়ী হয় জাতীয় পার্টি। বিশেষ করে জাতীয় পার্টি সেই সময়ে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মিজানুর রহমান চৌধুরী অসাধারণ ভূমিকা রাখেন। তার কারণেই স্বৈরাচারের পতনের পর ১৯৯১ এর নির্বাচনে জাতীয় পার্টি তৃতীয় স্থান লাভ করে এবং সকলকে চমকে দেয়। এর পর জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগ, বিএনপি যখন যায়, তখন তারা এই নীতি অনুসরণ করে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখে।

বাংলাদেশে বাংলাদেশের রাজনীতিতে জাতীয় পার্টি একটা ফ্যাক্টর হয়ে ওঠে। জাতীয় পার্টিকে ছাড়া ক্ষমতা গঠন করা, কোনও দলের পক্ষে সরকার গঠন করা প্রায় অসম্ভব এ রকম একটি রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হয়। যে সমীকরণের সুবিধা নিয়ে জাতীয় পার্টি এখনও টিকে আছে। ২০০১ সালে নির্বাচনে দলটি সমর্থন দেয় বিএনপিকে। বিএনপি ক্ষমতায় আসে। আবার ২০০৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সঙ্গে মহাজোট গঠণ করে। সেই থেকে মহাজোটেই আছে জাতীয় পার্টি। কিন্তু জাতীয় পার্টির প্রধান নেতা এরশাদের মৃত্যুর পর জতীয় পার্টি এখন শুধু মাত্র নেতৃত্বের সংকট নয় অস্তিত্বের সংকটই হচ্ছে। এরশাদের মৃত্যুর পর জাতীয় পার্টির হাল ধরেছেন তার ছোট ভাই জিএম কাদের। জিএম কাদের একজন সৎ পরিচ্ছন্ন মানুষ কিন্তু রাজনীতির অভিজ্ঞতায় তিনি একেবারেই কাঁচা পরিপক্ক এবং অদূরদর্শী বটে। রাজনীতিতে তার অবস্থান কি সেটি সুস্পষ্ট নয়। আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকেই জাতীয় পার্টি ক্ষমতার ভাগবাটোয়ারা করেছে। কিন্তু ২০১৮ সালে এসে জাতীয় পার্টি সম্পূর্ণ উল্টো অবস্থান নেয় এবং সরকারের বিরোধিতার একটা আবরণ পড়ে। কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে এই আবরণ গ্রহণযোগ্যতা হয়নি। জাতীয় পার্টি ২০২৪ নির্বাচন বর্জন করার কথাও ভেবেছিল কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং নির্বাচনে হতাশাজনক ফলাফল পায়।

জাতীয় পার্টির এই দিকবদল এবং বার বার অবস্থান পরিবর্তন সাধারণ মানুষের কাছে একটা নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করেছে। আর এ কারণেই সাধারণ মানুষ জাতীয় পার্টি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এর মধ্যে রওশন এরশাদের পৃথক অবস্থান জাতীয় পার্টির নেতাদেরকে বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে। দলটিতে নতুন কর্মীর আগমণ ঘটছেনা। পুরোনো নেতারা নানা রকম সুযোগ সুবিধার আসায় দিনের বেলায় সরকারের সঙ্গে যোগসাজশ করছেন। রাতের বেলায় তাদেরকে দেখা যাচ্ছে ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডে। জাতীয় পার্টিতে এখন পার্ট টাইম রাজনীতির প্রধান্য আর এ সমস্ত রাজনীতিবিদরা দলের চেয়ে নিজের স্বার্থরক্ষার জন্যেই বেশি ব্যস্ত।

এখন জিএম কাদের জাতীয় পার্টিকে কোন রকমের টেনে তোলার চেষ্টা করছেন বটে কিন্তু এরশাদের যেরকম সারা দেশ জুড়ে একটা আলাদা ইমেজ ছিল, একটা জনপ্রিয়তা ছিল জি এম কাদেরের তা নেই। তার একমাত্র পরিচয় তিনি হোসেন মুহাম্মাদ এরশাদের ছোট ভাই। আর এ কারণেই জাতীয় পার্টির প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ এখন আর নেই। এই রাজনৈতিক দলটিযে তৃতীয় শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার সম্ভাবনা জাগিয়েছিল তা এখন বিলীন হওয়ার পথে।


জাতীয় পার্টি   জি এম কাদের   রওশন এরশাদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ডোনাল্ড লু’র ঢাকা সফরে ক্ষমতায় আসার স্বপ্নে চাঙ্গা বিএনপি: কাদের

প্রকাশ: ০৭:২৩ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মার্কিন কূটনীতিক ডোনাল্ড লু’ ঢাকায় সফর করায় আবারও ক্ষমতায় আসার স্বপ্নে চাঙ্গা বিএনপি।

শনিবার (১১ মে) সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আরে বেকুবের দল, লু আসছেন বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে। বিএনপির স্বপ্ন পূরণের জন্য আমেরিকাও আর আসবে না, কেউ আসবে না।

তিনি বলেন, ‘গয়েশ্বর রায় কোথায় পালিয়ে ছিলেন, ভারতে? মাথায় তো একটা গান্ধী টুপি দিয়েছেন। তিনি আমাদের বলেন ভারতের দালাল। এই অপবাদ আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া, জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়ার সময় থেকে অনেক শুনেছি। দালালি কারা করে? ভারতে নরেন্দ্র মোদির বিজয়ের পরে ভোর হওয়ার আগে ফুল আর মিষ্টি নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। দালালি কারা করে? ভারত সফরের সময় খালেদা জিয়া তিস্তা চুক্তির কথা ভুলে গিয়েছিল। দালাল কারা?’ 

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘ভারত আমাদের বন্ধু। ৪২ শতাংশ লোক আমাদের ভোট দিয়েছিল। শেখ হাসিনার অর্জন, উন্নয়নকে স্বীকৃতি দিয়েছিল দেশের ৪২ শতাংশ জনগণ। নির্বাচনে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। আমরা ক্ষমতা চাই না, বন্ধুত্ব চাই। শত্রুতা আমাদের ক্ষতি করেছে। আমরা সেই অবস্থা আর ফিরে পেতে চাই না।’

বিএনপির উপজেলা নির্বাচন প্রত্যাখ্যানের দাবি প্রসঙ্গে কাদের বলেন, যে ৩৬ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছেন তারা কারা? তারা এই দেশের জনগণ। তারা শেখ হাসিনার উন্নয়নে মুগ্ধ।


আওয়ামী লীগ   ওবায়দুল কাদের   মার্কিন কূটনীতিক ডোনাল্ড লু’  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের ‘ফ্রি স্টাইল’ নেতারা নজরদারীতে

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচনে দলীয় নির্দেশ যারা অমান্য করেছে তাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ এখন পর্যন্ত কোন আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এমনকি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এমন কোন ইঙ্গিতও পাওয়া যায়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৌশলগত কারণে ৩০ এপ্রিল দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এই প্রসঙ্গটি উত্থাপনই করেননি। কিন্তু যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছেন তারা যে পার পেয়ে যাবেন বা ছাড় পাবেন এমনটি নয়। এরকম দাবী করছেন আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ স্থানীয় নেতা। যেসমস্ত নেতারা দলের শৃঙ্খলা লঙ্ঘণ করেছেন এবং ‘ফ্রি স্টাইলে’ কাজ-কর্ম করছেন তারা নজরদারিতে আছেন এবং শীঘ্রই তাদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ব্যবস্থা দেখা যাবে বলেও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানাচ্ছে।

আরও পড়ুন: ওবায়দুল কাদের-একরাম চৌধুরীর নোয়াখালীর বিরোধ: যেখান থেকে শুরু

তবে আওয়ামী লীগ বহিষ্কার বা দল থেকে বের করে দেয়ার মতো অবস্থানে যাবে না। আওয়ামী লীগের শাস্তি হবে কৌশলগত এবং সুদূর প্রসারী। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছেন এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের জন্য চেষ্টা করেছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে ৩ ধরনের নির্দেশনা ছিল।

প্রথমত, উপজেলা নির্বাচনে কোন প্রার্থীকে দলগতভাবে সমর্থন করা যাবে না। আওয়ামী লীগ দলগতভাবে নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকবে।

দ্বিতীয়ত, মন্ত্রী এমপিদের আত্মীয়-স্বজনরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না এবং মাই ম্যান’দের জিতিয়ে আনার চেষ্টা করা যাবে না।

তৃতীয়ত, নির্বাচনে যেন কেউ প্রভাব বিস্তার করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর যেসমস্ত আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এই সমস্ত নির্দেশনা ভঙ্গ করেছেন, তাদেরকে চিহ্নিত করা হয়েছে তারা নজরদারীতে আছেন।

আরও পড়ুন: ভারত বিরোধীতা সামনে আনছে বিএনপি

লক্ষ্য করা গেছে, তারা শুধু এবার নয় অতীতেও দলের অবস্থানের বিপরীতে ফ্রি স্টাইলে’ নিজেদের অবস্থান ব্যক্ত করতেন। তারা যা বিবেচনা করতেন সেটি বলতেন এবং এর ফলে অনেক ক্ষেত্রে দলের স্বার্থ লঙ্ঘিত হতো।

শাজাহান খান

শাজাহান খান এমন একজন ব্যক্তি যিনি দলের নির্দেশ অমান্য করে তার পুত্রকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন। শাজাহান খান এর আগেও আওয়ামী লীগের দলীয় অবস্থানের বিপরীতে বিভিন্ন বক্তব্য রেখেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। শাজাহান খানের বিষয়টি আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। এবং তিনি আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের নজরদারীর মধ্যে আছেন।

ড. আব্দুর রাজ্জাক

ড. আব্দুর রাজ্জাক তার ভাইকে এবার উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন। যদিও আব্দুর রাজ্জাকের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছে, তার ভাই আগে থেকেই উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। কিন্তু এবার যেহেতু পরিস্থিতি ভিন্ন সেহেতু এবার তার ভাইয়ের প্রার্থী হওয়াটা দলগতভাবে পছন্দ করা হয়নি। তাছাড়া স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ড. রাজ্জাকের ভাইয়ের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে বিরোধীতা করেছিলেন এবং এ নির্বাচনে ড. রাজ্জাকের বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগও করা হয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। ড. রাজ্জাক নির্বাচনের আগেও বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোচনায় ছিলেন। অনেকে মনে করেন, এই বিতর্কিত মন্তব্যের কারণেই এবার তিনি মন্ত্রীত্ব হারিয়েছেন। আর একারণেই ড. আব্দুর রাজ্জাক এখন আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকদের নজরদারীতে আছেন। ভবিষ্যতে যদি ড. রাজ্জাক বা শাজাহান খানের প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ চলে যায় তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

একরামুল করিম চৌধুরী

একরামুল করিম চৌধুরী নোয়াখালী-৪ আসনের এমপি। এবার তিনি তার ছেলে সাবাব চৌধুরীকে সুবর্ণচর উপজেলায় চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। ঐ উপজেলায় চেয়ারম্যান ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে হারিয়ে দিয়ে নিজের পুত্রকে নির্বাচিত করার বিষয়টি আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারক মহলে ইতিবাচক হিসেবে দেখা হয়নি। তারা বিষয়টিকে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের সামিল বলে মনে করছেন। একরামুল করিম চৌধুরীর পরিণতি কি হয় তা ভবিষ্যতে বোঝা যাবে।

গাজী গোলাম দস্তগীর

গাজী গোলাম দস্তগীর পুরো রূপগঞ্জকে গাজীগঞ্জ বানিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার নিজস্ব আত্মীয় স্বজন সর্বত্র সবকিছু দখল করে নিয়ে এমন অভিযোগও রয়েছে। গাজী গোলাম দস্তগীর এবার মন্ত্রীত্ব পাননি। ভবিষ্যতে তিনি নতুন রাজনৈতিক সংকটে পড়লেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।   


আওয়ামী লীগ   শাজাহান খান   ড. আব্দুর রাজ্জাক   একরামুল করিম চৌধুরী   গাজী গোলাম দস্তগীর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বৈষম্যে নোবেল পুরস্কার থাকলে সরকার পেত: জিএম কাদের

প্রকাশ: ০৬:৪১ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির (একাংশ) চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, 'বাংলাদেশের ইতিহাসে অতীতে কোনো সময় এত বেশি বৈষম্য ছিল না। বৈষম্য তৈরি করার জন্য যদি নোবেল পুরস্কার থাকতো, তাহলে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার সেই নোবেল পুরস্কার পেত।'

শনিবার (১১ মে) দুপুরে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে দলটির ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত মত বিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। 

জিএম কাদের আরও বলেন, ‌'আমি একটা দেশ পেলাম। আমার দেশের প্রজারা বলবেন- আমিই চালাব, আমিই সরকার গঠন করব, আমিই সরকার পরিবর্তন করব। কিন্তু এখন দেখেন, সেই অর্জন, প্রজাদের সেই মালিকানা ছিনতাই হয়ে গেছে। মালিকানা তাদের হাতে নেই! এটা হলো বাস্তব কথা।' 

এই বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, 'এখন জনগণের কথায় যে চলবে, জনগণের কথায় যে সরকার পরিবর্তন হবে—এ রকম কোনো বিষয় ঘটছে না। জনগণের কথা বলারই অধিকার নেই।’ বলতে গেলেই নানা ধরনের সমস্যা। কথা শোনারও কোনো দরকার নেই।'


জিএম কাদের   জাপা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন