আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে আশা প্রকাশ করে জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেছেন, ‘সেই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশ নেবে, ইশাআল্লাহ।’
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদের ২৪তম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ আশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে পূর্ণ প্রস্তুতি নিচ্ছে। জাতীয় পার্টি তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সব জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। আমরা গণতান্ত্রিক ধারায় বিশ্বাস করি বলেই কখনই নির্বাচন বয়কট করিনি। আমরা আশা করি যে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। আর সেই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশ নেবে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সমালোচনা করে রওশন এরশাদ বলেন, নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় খাদ্য অধিদফতরের ওএমএস ও সরকারি ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবির পণ্য কিনতে স্বল্প আয়ের মানুষের দীর্ঘলাইন এখন সাধারণ চিত্র। এ লাইনে প্রতিনিয়ত যুক্ত হচ্ছে মধ্যবিত্তরাও। আয় না বাড়লে স্বল্প আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা আরও কমে যাবে। তারা আরও চাপে পড়বে। তাই এখন অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি জরুরি। সামাজিক সুরক্ষামূলক কর্মসূচির ব্যাপ্তি ও প্রবৃদ্ধি বাড়াতে হবে। রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে গোটা সমাজের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী নিশ্চিত করা সম্ভব না হলে সামাজিক অস্থিরতাও সামনে নতুন রূপে হাজির হতে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। এজন্য এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারকে আহ্বান জানান তিনি।
স্যালাইন সংকট ও জনস্বাস্থ্য বিপর্যয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অনেক উদ্যোগ নেওয়ার পরও আমাদের স্বাস্থ্যখাত যে নাজুক অবস্থায় রয়েছে, তা করোনা মহামারির সময় স্পষ্ট হয়েছিল। বর্তমানে ডেঙ্গু পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল। ডেঙ্গু এসে সেই অবস্থা ফের প্রমাণ করছে। স্যালাইন সংকটে চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্যালাইন আমদানির আশ্বাস দিলেও আশার আলো দেখা যাচ্ছে না। অথচ প্লাটিলেট কিট, শয্যা এবং স্যালাইন সংকটে রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকারকে আশু হস্তক্ষেপের আহ্বান করেন রওশন এরশাদ।
মূল্যস্ফীতি রোধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, করোনা-পরবর্তী চাহিদা বৃদ্ধি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্ববাজারে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের উচ্চ মূল্যস্ফীতি হচ্ছে। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোয় বিশ্ববাজারে বেশিরভাগ পণ্যের দাম বেড়ে আবার কমেছে এবং কমার এ প্রবণতা অব্যাহত। এর সঙ্গে অর্থনীতির ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা দেখিয়ে অনেক দেশ মূল্যস্ফীতি কমাতে পেরেছে। দেশে দীর্ঘদিন ধরে ডলার সংকট চলছে। অনিয়মের কারণে ব্যাংক খাত বারবার আলোচনায় আসছে। আইএমএফের (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) মানদণ্ডে হিসাব করতে গিয়ে আর্থিক খাতের করুণ অবস্থা আরও প্রকটভাবে ফুটে উঠেছে। সুতরাং বিশ্ববাজারের দোহাই দিয়ে অর্থনীতির সংকটের ব্যাখ্যা দেওয়ার আর অবকাশ নেই। দেশের মানুষের কথা বিবেচনা করে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
রিজার্ভ সংকট কাটানোর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বৈশ্বিক ও দেশীয় সংকটের কারণে গত দুবছর ধরেই রিজার্ভ নিম্নমুখী। বকেয়া ও মেয়াদ বাড়ানো বৈদেশিক ঋণ এবং আমদানির দায় পরিশোধের চাপে পড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। এতে রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। রেমিট্যান্স, রপ্তানি আয়, বিদেশি বিনিয়োগ ও বৈদেশিক অনুদান নিম্নমুখী। এসব কারণে রিজার্ভের ওপর আগামীতে চাপ আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। দেশে ডলার সংকটের প্রধান কারণ এবং সমাধানে কী করণীয় তা বহুল আলোচিত। ডলার সংকট কাটাতে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর পদক্ষেপ জরুরি। ব্যাংকগুলো এসব মানুষের কাছে সহজে সেবা পৌঁছে দিতে পারলে রেমিট্যান্স প্রবাহে গতি আসবে। বিদেশে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে দক্ষকর্মী পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রে সংসদ সব রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু। সংসদকে প্রাণবন্ত অংশগ্রহণমূলক ও কার্যকর করতে জাতীয় পার্টি সংসদীয় দল সবসময় আন্তরিক এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। একাদশ জাতীয় সংসদে ২৩তম অধিবেশন পর্যন্ত ২৫৪ কার্যদিবস পরিচালিত হয়েছে এবং এতে মোট ১২২টি আইন পাস হয়েছে। বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা প্রতিটি অধিবেশনে যোগদান, আইন প্রণয়ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ, গঠনমূলক সমালোচনাসহ বিভিন্ন আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। জনস্বার্থে বিভিন্ন দিক এ সংসদে তুলে ধরেছেন।
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নাশকতা মামলা বিএনপি ইশরাক হোসেন
মন্তব্য করুন
‘ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?
রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত ২ নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।
রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
‘ব্যাংক মাফিয়া মাস্তান ঋণখেলাপি
মন্তব্য করুন
সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।
তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন
মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল। সারা দেশেই বাড়ছে দলটির গৃহদাহ। দল পুনর্গঠন ও চলমান স্থানীয় সরকার নির্বাচন ঘিরে দলীটির বিবাদ প্রকাশ্যে আসছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে কেন্দ্রীয় নির্দেশ সবচেয়ে বেশি লঙ্ঘন করছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির নেতারা। তাদের অনেকে এলাকায় গিয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করতে গোপনে উসকে দিচ্ছেন স্থানীয় নেতাদের। ঢাকায় ফিরে তারাই আবার দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনের দায়ে সংশ্লিষ্ট নেতাদের বহিষ্কারের মাধ্যমে নিজেদের পথ প্রশস্ত করছেন। এতে পারস্পরিক সন্দেহ-অবিশ্বাস ঘনীভূত হচ্ছে।
দলের নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো জানায়, গত বছরের ২৮ অক্টোবরের দলীয় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে কারাগারে যাওয়া নেতাদের অনেকের ভূমিকা রহস্যজনক বলে মনে করছেন দলীয় অনেকে। এ নিয়ে দলের ভিতরে রয়েছে বিতর্ক। সুনির্দিষ্ট প্রমাণের (অডিও-ভিডিও) ভিত্তিতে বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে। অনেককে অঘোষিতভাবে ‘ওএসডি’ করা হয়েছে সাংগঠনিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে। এ নিয়ে ক্ষোভে কেউ কেউ রাজনীতি থেকেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছেন। চলে যাচ্ছেন দেশ ছেড়ে।
এসব বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপি মহাসাগরের মতো বিস্তৃত একটি বিশাল রাজনৈতিক দল। এ দলে নেতাদের মধ্যে কোনো বিষয়ে মতামত প্রদানের ক্ষেত্রে পার্থক্য থাকতেই পারে। তবে কোনো রকমের অভ্যন্তরীণ বিরোধ বা কোন্দল নেই।
জানা গেছে, সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি বিরোধ-কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে চলমান উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। এই নির্বাচনের প্রাক্কালে দলের হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে বয়কটের পক্ষে নেতা-কর্মীদের মধ্যে গণসচেতনতা সৃষ্টির জন্য সারা দেশে সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু বেশির ভাগ নেতাই তাদের নিজ নিজ এলাকায় সেই দায়িত্ব পালন করেননি। অনেকে এলাকাতেই যাননি। জেলা বিএনপির শীর্ষকর্তারাও তেমন কোনো ভূমিকা রাখেননি। বরং উল্লিখিত নেতাদের এলাকাতেই ভোট কেন্দ্রে সবচেয়ে বেশি ভোটারের উপস্থিতি দেখা গেছে। নির্বাহী কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত এসব নেতার দ্বৈত ভূমিকায় তৃণমূলের নেতারা ক্ষুব্ধ।
মন্তব্য করুন