আগামী ২৮ অক্টোবর
বিএনপি ঢাকায় মহাসমাবেশ ডেকেছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এটিকে আন্দোলনের
মহাযাত্রা হিসেবে অভিহিত করেছেন। কিন্তু মহাযাত্রার আগে বিএনপি নানারকম মহাবিপদের মধ্যে
পড়তে যাচ্ছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত বিএনপির
সামনে রয়েছে ৫টি মহাবিপদ। এই বিপদগুলো অতিক্রম করে শেষ পর্যন্ত বিএনপি কতটা মহাযাত্রা
সফল করতে পারবে সেটাই দেখার বিষয়। কারণ এর আগে ১০ অক্টোবর বিএনপি একই ধরনের চেষ্টা
করেছিল। কিন্তু সেই চেষ্টা সফল হয়নি। এবার কি বিএনপি পারবে?
বিএনপির সামনে
এই মহাযাত্রার আগে যে ৫টি মহাবিপদ অপেক্ষা করছে তার মধ্যে রয়েছে:
১। বিএনপি নেতাদের
মামলা এবং ধরপাকড়: গতকাল মহাসমাবেশের পরই সারাদেশে বিভিন্ন স্থানে বিএনপির দের শতাধিক
নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই তথ্য
জানিয়েছেন।
কিন্তু অনুসন্ধান
করে দেখা যাচ্ছে যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই সুনির্দিষ্ট
মামলা এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল। যারা আদালত থেকে জামিন নেননি তাদেরকেই গ্রেফতার
করা হয়েছে।
শুধু তাই নয়।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন যে, বিএনপির নেতাদেরকে দণ্ডিত
করা হচ্ছে যেন তারা নির্বাচন করতে না পারেন। এই ধারা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে ২৮ অক্টোবরের
মহাসমাবেশের মহাযাত্রা বড় ধরনের বিপদের মধ্যে পড়তে যাচ্ছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক
বিশ্লেষকরা।
২। দলের ভিতরে
অবিশ্বাস, দ্বন্দ্ব: বিএনপি মহাযাত্রা কর্মসূচির
ঘোষণা করেছে চূড়ান্ত আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে। কিন্তু চূড়ান্ত আন্দোলনের আগে বিএনপির
মধ্যে এক ধরনের অনীহা, এক ধরনের কোন্দল, দ্বন্দ্ব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিএনপির নেতাদের
মধ্যে অবিশ্বাস বেড়ে উঠেছে।
বিএনপির অনেক
নেতাই একে অপরকে বিশ্বাস করতে পারছেন না। তারা মনে করছেন যে কেউ কেউ আন্দোলনের মাঝপথে
পিছুটান দিতে পারে এবং আন্দোলনের পিঠে ছুরিকাঘাত করতে পারে। আর এই সমস্ত কারণেই বিএনপির
মধ্যে এখন সন্দেহ অবিশ্বাস দানা বেঁধে উঠেছে।
বিএনপির মধ্যে
যারা নির্বাচনমুখী স্রোত, তারা যেকোনো সময়ে বিএনপির চূড়ান্ত আন্দোলনকে নস্যাৎ করে
দিতে পারেন বলে বিএনপির মধ্য থেকে অনেকে মনে করছেন।
৩। আন্তর্জাতিক
মনোভাব: আন্তর্জাতিক মনোভাব বিএনপির মহাযাত্রার জন্য একটি মহাবিপদ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
আসলে কি ভূমিকা পালন করবে সেটির উপর নির্ভর করছে বিএনপির আন্দোলনের অনেকখানি।
কারণ বিএনপি
এখন যে আন্দোলন সংগঠিত করতে পারছে তার প্রধান কারণ হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দৃশ্যমান
চাপ। এখন যদি কোনো কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব পরিস্থিতির বাস্তবতায় বাংলাদেশকে
উপেক্ষা করে সেক্ষেত্রে বিএনপির মহাসমাবেশ কর্মসূচি মহাসংকটের মধ্যে পড়বে।
৪। সুশীলদের
প্রলোভন: গত কিছুদিন ধরেই সুশীলরা বিএনপির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন এবং বিএনপির সঙ্গে
তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে একাত্ম হয়েছেন। কিন্তু সুশীলদের প্রলোভন ফাঁদ কিনা
তা নিয়ে বিএনপির অনেকেই সন্দেহ করছেন। বিশেষ করে সুশীলরা তাদের নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের
জন্য বিএনপিকে ব্যবহার করছে কিনা সেটি এখন অনেকের কাছে বড় প্রশ্ন।
শেষ পর্যন্ত
যদি সুশীলরা তাদেরকে ব্যবহার করে তাহলে মহাযাত্রার কর্মসূচী বিএনপির জন্য মরণ যাত্রার
কর্মসূচি হতে পারে বলেও কেউ কেউ মনে করছেন।
৫। আওয়ামী
লীগের সংগঠন: আওয়ামী লীগ অত্যন্ত শক্তিশালী সংগঠন। আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা ইতিমধ্যে
ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির কর্মসূচির সাথে তারা সমান্তরাল কর্মসূচি দেবেন। ২৮ অক্টোবর
ঢাকা তারা দখলে রাখবেন এমন ঘোষণাও দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম।
এরকম পরিস্থিতিতে
মহাযাত্রা কর্মসূচি বিএনপি সফল করতে পারবে সেটিই এখন দেখার বিষয়।
বিএনপি মাহাযাত্রা আন্দোলন একদফা
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নাশকতা মামলা বিএনপি ইশরাক কারাগা
মন্তব্য করুন
‘ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?
রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত ২ নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।
রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
‘ব্যাংক মাফিয়া মাস্তান ঋণখেলাপি
মন্তব্য করুন
সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।
তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন
মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল। সারা দেশেই বাড়ছে দলটির গৃহদাহ। দল পুনর্গঠন ও চলমান স্থানীয় সরকার নির্বাচন ঘিরে দলীটির বিবাদ প্রকাশ্যে আসছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে কেন্দ্রীয় নির্দেশ সবচেয়ে বেশি লঙ্ঘন করছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির নেতারা। তাদের অনেকে এলাকায় গিয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করতে গোপনে উসকে দিচ্ছেন স্থানীয় নেতাদের। ঢাকায় ফিরে তারাই আবার দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনের দায়ে সংশ্লিষ্ট নেতাদের বহিষ্কারের মাধ্যমে নিজেদের পথ প্রশস্ত করছেন। এতে পারস্পরিক সন্দেহ-অবিশ্বাস ঘনীভূত হচ্ছে।
দলের নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো জানায়, গত বছরের ২৮ অক্টোবরের দলীয় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে কারাগারে যাওয়া নেতাদের অনেকের ভূমিকা রহস্যজনক বলে মনে করছেন দলীয় অনেকে। এ নিয়ে দলের ভিতরে রয়েছে বিতর্ক। সুনির্দিষ্ট প্রমাণের (অডিও-ভিডিও) ভিত্তিতে বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে। অনেককে অঘোষিতভাবে ‘ওএসডি’ করা হয়েছে সাংগঠনিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে। এ নিয়ে ক্ষোভে কেউ কেউ রাজনীতি থেকেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছেন। চলে যাচ্ছেন দেশ ছেড়ে।
এসব বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপি মহাসাগরের মতো বিস্তৃত একটি বিশাল রাজনৈতিক দল। এ দলে নেতাদের মধ্যে কোনো বিষয়ে মতামত প্রদানের ক্ষেত্রে পার্থক্য থাকতেই পারে। তবে কোনো রকমের অভ্যন্তরীণ বিরোধ বা কোন্দল নেই।
জানা গেছে, সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি বিরোধ-কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে চলমান উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। এই নির্বাচনের প্রাক্কালে দলের হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে বয়কটের পক্ষে নেতা-কর্মীদের মধ্যে গণসচেতনতা সৃষ্টির জন্য সারা দেশে সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু বেশির ভাগ নেতাই তাদের নিজ নিজ এলাকায় সেই দায়িত্ব পালন করেননি। অনেকে এলাকাতেই যাননি। জেলা বিএনপির শীর্ষকর্তারাও তেমন কোনো ভূমিকা রাখেননি। বরং উল্লিখিত নেতাদের এলাকাতেই ভোট কেন্দ্রে সবচেয়ে বেশি ভোটারের উপস্থিতি দেখা গেছে। নির্বাহী কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত এসব নেতার দ্বৈত ভূমিকায় তৃণমূলের নেতারা ক্ষুব্ধ।
মন্তব্য করুন