তফসিল ঘোষণার
পর থেকে দেশজুড়ে দ্বাদশ জাতীয়
সংসদ নির্বাচনকে উপলক্ষ্য করে উৎসব
শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। আজ শুক্রবার
(১৭ নভেম্বর) দলটির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রথম সভার মাধ্যমে তাদের নির্বাচনী যাত্রা শুরু হতে চলেছে।
আওয়ামী লীগের
নীতিনির্ধারকগণ বলছেন,
আজ থেকে আওয়ামী লীগের
সাংগঠনিক সব কার্যক্রমই হবে
নির্বাচনকেন্দ্রিক। আগামীকাল (১৮
নভেম্বর) থেকে মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু হবে। দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রুটিন কাজের পাশাপাশি প্রতিদিনই দলের কর্মকাণ্ডে যুক্ত
থাকবেন।
জানা যায়, আওয়ামী
লীগের নির্বাচন পরিচালনাসংক্রান্ত জাতীয় কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা ও
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বেলা তিনটায়।
এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন কমিটির চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচন
পরিচালনা কমিটিতে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি,
উপদেষ্টা পরিষদ ও সহযোগী সংগঠনের
শীর্ষ নেতারা রয়েছেন।
এই বৈঠক থেকেই ভার্চ্যুয়ালি
আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা দ্বাদশ
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দলীয়
প্রার্থী বাছাইয়ের লক্ষ্যে ফরম বিক্রি কার্যক্রমের
উদ্বোধন করবেন। শুরুতে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা নিজের
ফরম সংগ্রহ করবেন। আগামীকাল শনিবার থেকে অন্য আগ্রহীরা
দলীয় ফরম কিনতে পারবেন
বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে। ইতোমধ্যে সেখানে এ আয়োজনের প্রস্তুতিও
শেষ হয়েছে। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণকে সামনে রেখে ইশতেহার প্রণয়নের
কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বিভাগ ও জেলা পর্যায়ের নির্বাচনি জনসভার পরিকল্পনাও রয়েছে।
নির্বাচন সামনে রেখে অপপ্রচারের জবাব দিতে ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরতে মাঠে নামার
নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নেতাকর্মীদের।
আওয়ামী
লীগের দলীয় সূত্র জানিয়েছে,
নির্বাচন পরিচালনাসংক্রান্ত জাতীয় কমিটির আজকের বৈঠকে ১৪টি উপকমিটি অনুমোদন
দেওয়া হতে পারে। এসব
কমিটির নেতৃত্বে দলের কেন্দ্রীয় নেতা
ছাড়াও পেশাজীবী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা
থাকতে পারেন। এ ছাড়া নির্বাচন
পরিচালনা জাতীয় কমিটির কো-চেয়ারম্যান পদ
এখনো ফাঁকা আছে।
তথ্যসূত্রে
জানা যায়, আওয়ামী লীগের
এখন অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে বিএনপির নেতাদের এনে স্বতন্ত্র ও
অন্যান্য ছোট দলের হয়ে
ভোটে অংশ নেওয়ার ব্যবস্থা
করা। এই কাজ জোরেশোরে
চলছে। এ ছাড়া ইসলামি
দল ও অন্যান্য ছোট
দলকে ভোটে আনতে দর-কষাকষি চলছে বলে জানা
গেছে। দলটির নীতিনির্ধারকেরা মনে করছেন, বিএনপির
পক্ষে ভোট ঠেকানো সম্ভব
নয়—এটা মানুষকে বোঝাতে
পেরেছে আওয়ামী লীগ। এখন লক্ষ্য
হচ্ছে দল ও বিএনপির
নেতাদের বোঝানো যে যুক্তরাষ্ট্র ও
পশ্চিমা দেশগুলোর চাপও ভোটের পথে
বাধা হতে পারবে না।
ফলে যাঁরা কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন, তাঁরা ভোটে আসার বিষয়ে
সিদ্ধান্ত নেবেন। এরপরও লক্ষ্য পূরণ না হলে
চাপ বাড়ানো হবে।
গতকাল
বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের তেজগাঁও কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে
দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে জানতে চাওয়া
হয়, বিএনপিসহ আরও অনেক দল
নির্বাচনে না এলে এর
বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে
কি না। জবাবে ওবায়দুল
কাদের বলেন, ‘সামনের কয়েকটা দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
(ক্রুশিয়াল)। ৩০ নভেম্বর
মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার
শেষ তারিখ। এর মধ্যে কত
ফুল ফুটবে। এখন কোন ফুল
কোথায় ফুটছে...হঠাৎ জেগে উঠবে।
অপেক্ষা করুন।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং কর্মকৌশল ঠিক করতে তিনটি কার্যালয় ব্যবহার করবে আওয়ামী লীগ। দলের মনোনয়ন ফরম বিক্রি করা হবে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। সেখানে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ফরম সংগ্রহ ও জমা দেওয়া যাবে। ফরম জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২১ নভেম্বর। ফরম সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার জন্য ১০টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। এবার প্রতিটি ফরমের দাম ধরা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। ফরম জমা নেওয়া শেষ হলে বৈঠকে করে সিদ্ধান্ত নেবে মনোনয়ন বোর্ড।
আওয়ামী
লীগের পক্ষ থেকে জানানো
হয়েছে, কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় ঢাকা, ময়মনসিংহ,
সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগ
এবং তৃতীয় তলায় রংপুর, রাজশাহী,
খুলনা ও বরিশাল বিভাগের
মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হবে। কেন্দ্রীয়
কার্যালয়ের নিচতলায় সব বিভাগের মনোনয়নপত্র
জমা নেওয়া হবে। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের অতিরিক্ত লোকসমাগম
ছাড়া আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে।
এ ক্ষেত্রে প্রার্থী নিজে অথবা প্রার্থীর
একজন যোগ্য প্রতিনিধির মাধ্যমে আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা প্রদান
করতে হবে। আবেদনপত্র সংগ্রহের
সময় অবশ্যই প্রার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি সঙ্গে আনতে হবে এবং
ফটোকপির ওপর মুঠোফোন নম্বর,
বর্তমান সাংগঠনিক পরিচয়সহ তিনটি পদ সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ
করতে হবে।
আওয়ামী
লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ
গণমাধ্যমকে বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী যাত্রা কাঙ্ক্ষিত গতিতে চলা শুরু করেছে।
এখন আর পেছনে তাকানোর
সময় নেই।
মন্তব্য করুন
কাউন্সিল বিএনপি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরে যেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া এই বিষয়টি নিয়ে তাকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে তারেক জিয়া এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি বলে জানা গিয়েছে। বরং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে তারেক জিয়া জানিয়েছেন, কাউন্সিলের আগে বিএনপিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়। তবে বিএনপির কাউন্সিল কবে, কীভাবে হবে- এ সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। তারা সাম্প্রতিক সময়ে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। তবে এসব বৈঠকে যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলা হলেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সরকার বিরোধী কোন জোট করতে রাজি নয়। ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে যাওয়ার পর বিএনপি এখন পর্যন্ত জোটগত ভাবে কোন আন্দোলন করেনি। তবে বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা সম্পর্ক রেখেছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। এখন আবার নতুন করে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে না।