পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এখন ভারতে। তিনি কলকাতা থেকে রাত্রে দিল্লিতে পৌঁছাবেন এবং সেখানে আগামীকাল ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে তিনি একান্ত বৈঠক করবেন। তবে পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে এই বৈঠকের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ যে ৯০টি দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের বর্তমান নির্বাচন পরিস্থিতি এবং সরকারের অঙ্গীকারের বিষয়টি নিশ্চিত করবেন। গত কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশের নির্বাচনের ব্যাপারে ভারত প্রভাব বিস্তার করছে এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহলের কাছে একটি সুনির্দিষ্ট বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে। তবে এই বার্তাটি এবার পররাষ্ট্র সচিবের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে দেওয়া হবে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক প্রতিনিধিদের কাছে ।
বাংলাদেশ আগামী নির্বাচন নিয়ে যে অঙ্গীকারগুলো করবে সেই অঙ্গীকারগুলোই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ পর্যবেক্ষণ করবে এবং এই পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তারা দেখবেন যে নির্বাচন কতটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হয় তাহলে পরে আন্তর্জাতিক মহল এই নির্বাচনের পরবর্তী পর্যায়ে কোনো রকম হস্তক্ষেপ করবে না এবং বাংলাদেশের উপর কোনো নেতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে না। কিন্তু যদি নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ না হয়, সেক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বাংলাদেশের ব্যাপারে কঠোর মনোভাব দেখাতে পারে।
বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছেন, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ৫টি সুনির্দিষ্ট সুপারিশ নিয়ে দিল্লিতে গেছেন। এটি আসলে সুপারিশ নয় বরং বলা যেতে পারে সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার ব্যক্ত করবেন তিনি বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের কাছে। অঙ্গীকারগুলোর মধ্যে রয়েছে,
এক, বাংলাদেশের নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। কোনও ভাবে নির্বাচনে কারচুপি বা অন্য কোনো অনিয়মকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।
দুই, নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে তার দায়িত্ব পালন করবেন এবং নির্বাচন কমিশনের কোনও কাজে সরকার কোনওভাবেই হস্তক্ষেপ করবে না।
তিন, নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদেরকে সুযোগ দেওয়া হবে এবং বিদেশি পর্যবেক্ষকরা অবাধে এবং স্বাধীনভাবে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।
চার, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা হবে। সকল রাজনৈতিক দল এবং সকল প্রার্থী সমান সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এই সুযোগ-সুবিধার মাধ্যমে তারা নির্বাচন প্রচারণায় সমভাবে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
পাঁচ, প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে দায়িত্বপালন করবে এবং কোনো রকম প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা হবে না। সরকার এটিকে আশ্রয় প্রশ্রয় দেবে না।
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে সরকারের আনুষ্ঠানিক অবস্থান তিনি কূটনীতিকদেরকে ব্রিফ করবেন বলে জানা গেছে। শুধু তাই নয়, এ ব্যাপারে কূটনীতিকদের কোনও প্রশ্ন, জিজ্ঞাসা ইত্যাদি থাকলেও তিনি সে ব্যাপারে বক্তব্য রাখবেন। দুটি বিষয় তিনি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে সুস্পষ্ট করবেন। তার মধ্যে একটি হল যে বিএনপির অংশগ্রহণ করা না করা। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান খুব সুস্পষ্ট।
পররাষ্ট্র সচিব জানাবেন যে, একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি করবে না সেটি তাঁদের একান্ত ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে অন্য কোন রাজনৈতিক দল হস্তক্ষেপ বা প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। বিএনপিকে বিভিন্ন সময়ের সংলাপের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিল কিন্তু বিএনপি একদফা দাবিতে আন্দোলন করেছে এবং একদফা পূরণ না হলে সংলাপ করবে না এমন বার্তাও দিয়েছে। যেটি একটি গণতান্ত্রিক সরকারের পক্ষে মেনে নেওয়া অসম্ভব। দ্বিতীয়ত, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে অর্থাৎ ভোটার উপস্থিতি থাকবে সন্তোষজনক পর্যায়ে। এই দুটি সুনির্দিষ্ট আশ্বাস পররাষ্ট্র সচিবের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, ভারত বাংলাদেশের নির্বাচনের ব্যাপারে অন্য দেশগুলো যেন অনাহূত এবং অহেতুক হস্তক্ষেপ না করে সেজন্য কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়েছে। তারই অংশ হিসাবে নির্বাচনের আগেই কূটনীতিকদের কাছে এটি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শেষ বার্তা।
বাংলাদেশ নির্বাচন দিল্লি বৈঠক মাসুদ বিন মোমেন পররাষ্ট্র সচিব কূটনীতিক
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
চীন সফর বাম দল জাসদ ওর্য়ার্কাস পার্টি সাম্যবাদী দল
মন্তব্য করুন
শৃঙ্খলা আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু আগামীকাল মঙ্গলবার ঢাকায় আসছেন। এ সফরে তিনি ব্যবসা-বিনিয়োগ, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন, নাগরিক অধিকারসহ দুই দেশের অগ্রাধিকারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে আলোচনা করবেন বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
অবশেষে আর ছাড় নয়, আওয়ামী লীগ তাঁর দলের শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্রগুলো বলছে, দলের ভেতর যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে, দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করছে এবং দলের ভেতরের কোন্দল করছে তাদেরকে আর ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে এবং এই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে কোন্দলরত এলাকাগুলোতে কমিটি বাতিল করে দেওয়া হবে। যারা কোন্দলের সঙ্গে জড়িত তাদেরকে আহ্বায়ক কমিটিতে রাখা হবে না।