ক্রমশ
অবিশ্বাস, সন্দেহ দানা বেঁধে উঠছে
বিএনপিতে। কেউ কাউকে বিশ্বাস
করছেন না। কোন নেতা
কখন ঝাঁপ দেন বা
নির্বাচনে যান এ নিয়ে
চলছে নানা রকম গুঞ্জন।
কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না।
অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে,
যে কোনও সময় বিএনপির
মধ্যে এক ধরণের বিস্ফোরণ
দেখা দিতে পারে।
গত
কিছুদিন ধরে বিএনপির সঙ্গে
আন্দোলন করা রাজনৈতিক দলগুলোর
মধ্যে অস্থিরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিভিন্ন
রাজনৈতিক দল এখন নির্বাচনে
অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এছাড়াও বিএনপি করা এমন শতাধিক
নেতা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং তারা বিএনপির
কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ রক্ষা করছেন না। আত্মগোপনের নামে
আসলে তারা নির্বাচনী এলাকায়
অবস্থান করছেন এবং নির্বাচনের মনোনয়নের
দিন তারা আকস্মিকভাবে মনোনয়ন
জমা দেবেন এমন তথ্য পাওয়া
যাচ্ছে।
বিভিন্ন
সূত্রগুলো জানাচ্ছে, বিএনপির অন্তত ১৭৫জন বিভিন্ন স্তরের নেতা আগামী জাতীয়
সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক এবং
প্রার্থী হওয়ার জন্য তারা এলাকায়
প্রস্তুতি শুরু করেছে এবং
তাদের কর্মীরা এ নিয়ে জনসংযোগও
করছে। ফলে সরকারের বিরুদ্ধে
এক দফা আন্দোলন এবং
অবরোধ, হরতাল ইত্যাদি পানসে হয়ে গেছে। বিএনপির
হাই কমান্ড এর কাছেও এই
তথ্য এসেছে এবং তারা এ
নিয়ে চিন্তিতও বটে।
বিএনপির
মধ্যে এখন এমন অবস্থায়
দাঁড়িয়েছে একজন আরেকজনকে বিশ্বাস
করতে পারছে না। কে কখন
কী অবস্থায় যায় এবং কাকে
সরকার কি টোপ দেয়
এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে
চলছে নানা রকম গুঞ্জন,
কানাঘুষা। বিএনপির যে নেতার ফোন
বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে, যে নেতাকে খুঁজে
পাওয়া যাচ্ছে না, তখনই বিএনপির
কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সন্দেহ করছেন, হয় তিনি নির্বাচনে
যাওয়ার জন্য সরকারের সঙ্গে
গোপন যোগসাজোশ করছেন অথবা তিনি গ্রেপ্তার
হয়েছেন। যখন দেখা যাচ্ছে
তিনি গ্রেপ্তার হননি তখন বিএনপি
নেতাদের মধ্যে সন্দেহ দানা বেঁধে উঠেছে।
আর
বিএনপির মধ্যে এই প্রথমবারের মতো
একটি অবিশ্বাস এবং সন্দেহ দানা
বেঁধে উঠেছে। এ নিয়ে বিএনপির
মধ্যে হতাশা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন
যে, গত ১৭ বছরে
দলটি ভাঙেনি কিন্তু এবার নির্বাচনের আগে
দলটি বড় ধরনের ঝাঁকুনির
মুখে পড়েছে। দলের মধ্যে কী
হচ্ছে না হচ্ছে, তা
নিয়ে তারা নিজেরাই সন্দিহান,
কারণ কাউকেই বিশ্বাস করা যাচ্ছে না।
অনেক নেতা বলছেন আত্মগোপনে
আছেন, কিন্তু যখন দেখা যাচ্ছে
যে তার কর্মীরা নির্বাচনের
জন্য মাঠে জনসংযোগ করছেন,
তখন বিএনপির মধ্যে হতাশা তৈরি হচ্ছে।
কেন
বিএনপির নেতারা এটি করছেন এর
কোনও সঠিক উত্তর কেউ
দিতে পারেনি। তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো
বলছে যে, বিএনপিতে যারা
মাঠের রাজনীতি করেন, জনসম্পৃক্ত এবং জনগণের সঙ্গে
নিয়মিত যোগাযোগ করেন তারা বুঝতে
পারছেন যে, এই আন্দোলন
অর্থহীন। এই আন্দোলনের মাধ্যমে
আর যেই হোক সরকারের
পতন ঘটানো যাবে না। বরং
এই ধরনের আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপিরই ক্ষতি হচ্ছে, ক্রমশ জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে দীর্ঘ
১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে
থাকা দলটি। আর এ কারণেই
বিএনপির নেতারা এখন হতাশায় ভুগছেন।
অনেকে হতাশা থেকে নির্বাচনে যাওয়ার
কথা বলছেন, আবার কেউ কেউ
মনে করছেন যে নির্বাচনে গেলে
সরকারের যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক
থেকে বাঁচা যাবে, আবার অনেককে টোপ
দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া
গেছে। যদিও সরকারের পক্ষ
থেকে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কাউকেই সরকার টোপ দেয়নি। সরকার
ভাঙা-গড়ার রাজনীতি করে
না। বিএনপির নেতারা স্বেচ্ছায় নির্বাচনমুখী হচ্ছে। ফলে বিএনপি তে
এক ধরনের অবিশ্বাস, আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
বিএনপি সন্দেহ অবিশ্বাস ঝাঁপ গুঞ্জন
মন্তব্য করুন
আসন্ন উপজেলা নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে। উপজেলা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন থামছে না। আচরণবিধি অনুযায়ী মন্ত্রী-এমপিরা প্রচারসহ কোনো ধরনের নির্বাচনি কাজে অংশ নিতে পারবেন না। কিন্তু স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে অনেক মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তার ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আসছে নির্বাচন কমিশনে। মন্ত্রী-এমপিরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নির্বাচনি মাঠ রয়েছেন। নির্বাচনি প্রচারে অনেকেই সরকারি গাড়ি ব্যবহার করছেন। প্রার্থীদের অভিযোগ-নির্বাচন কমিশনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে অভিযোগ দিলেও কোনো কাজ হয় না। কমিশন তেমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে না।
নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও অবনতি, খুনোখুনি, কেন্দ্র দখলের আশঙ্কা প্রকাশ করছেন প্রার্থীরা। এ নির্বাচনের প্রচারের শুরু থেকেই বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এবার চার ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হচ্ছে। প্রথম ধাপের নির্বাচন ৮ মে। এ ধাপে ভোট হবে ১৪৮ উপজেলায়। আজ দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। ২১ মে এ ধাপে ১৫৯ উপজেলায় ভোট। তৃতীয় ধাপে ২৯ মে ১১২ উপজেলায় ভোট। সর্বশেষ চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ভোট হবে ৫ জুন।
অনেকের অভিযোগ, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নানা ধরনের চাপ আসছে। আজ প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিনে বিনা ভোটে নির্বাচিত হতে অনেকেই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য হুমকিধমকি ও চাপ দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে কিছু জায়গায় আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বৈঠকে এ শঙ্কার কথা জানান তাঁরা। নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মাঠ প্রশাসন ও পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা ইসিকে বলেছেন, দলীয় কোন্দল ও মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব বিস্তার ঠেকানোই এ নির্বাচনে বড় চ্যালেঞ্জ হবে। এ ছাড়া নির্বাচনে কোথাও কোথাও সংঘাতের আশঙ্কার কথাও বলছেন তাঁরা।
তবে এ বিষয়ে অন্যতম নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান বলেছেন, ভোটারদের বাধাগ্রস্ত করলে সর্বোচ্চ সাত বছরের জেল হবে। এবারের নির্বাচন প্রভাবমুক্ত ও নিরপেক্ষ হবে।
এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘নির্বাচনব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। নির্বাচনে বিরোধী দল নেই। বিকল্প বেছে নেওয়ার সুযোগ নেই। আসলে এটা নির্বাচন নির্বাচন খেলা। তবে নির্বাচনে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো জনগণের অনুপস্থিতি। নির্বাচন হচ্ছে প্রভাবমুক্ত হয়ে বেছে নেওয়া। কিন্তু এ নির্বাচনে প্রভাবমুক্ত হয়ে বেছে নেওয়ার সুযোগ নেই। আসলে এটা নির্বাচন নয়, মূলত প্রতিযোগিতা।’ এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) ইমামুল হক সাগর বলেন, ‘জাতীয় কিংবা স্থানীয় সব নির্বাচনেই পুলিশের বিশেষ কিছু দিকনির্দেশনা থাকে। এবারও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মাঠ পর্যায়ে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সুষ্ঠু, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন যাতে অনুষ্ঠিত হয় এবং স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখার জন্য যা যা প্রয়োজন সবই করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো এবং অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েনেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর যারাই নির্বাচন ঘিরে অপরাধমূলক কাজ করবে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’
শাজাহান খানের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ : মাদারীপুরে উপজেলা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনসহ নানা অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সংসদ সদস্য শাজাহান খানের বিরুদ্ধে। গতকাল দুপুরে ডিসির ব্রিজ এলাকায় উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী পাভেলুর রহমান শফিক খান তাঁর নির্বাচনি অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন। তিনি মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। শফিক খান অভিযোগ করেন, উপজেলা নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী স্থানীয় সংসদ সদস্যের ছেলে আসিবুর রহমান খান। শাজাহান খান তাঁর ছেলেকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে অবৈধভাবে প্রভাব বিস্তার করছেন। তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের ওপর খবরদারি করছেন। কালো টাকা বিলির মাধ্যমে ভোট কেনার চেষ্টা, নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ শফিক খানের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন।
শফিক খান বলেন, নির্বাচন কমিশনে ১৫টি অভিযোগ দিলেও সে বিষয়ে কোনো প্রকার পদক্ষেপ নেয়নি কমিশন। তিনি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যকে এলাকা থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশনা এবং ইলেকটোরাল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আবেদন জানান নির্বাচন কমিশনের কাছে।
তবে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আসিবুর রহমান খান। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা শাজাহান খান এলাকায় থাকলেও তিনি নির্বাচনি কাজে অংশগ্রহন করছেন না।’ শাজাহান খান নিজেও তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি কোনোভাবেই নির্বাচনি কাজে অংশগ্রহণ করিনি। সব অভিযোগ ভিত্তিহীন।’
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট পৌরসভার মেয়র আবদুল মালেকের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ রিটার্নিং অফিসারের কাছে : লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, সরকারি সুবিধা ব্যবহার করে মেয়র আবদুল মালেক একজন প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন।
সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে নির্বাচনি প্রচারের অভিযোগ উঠেছে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুল আনাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে। এ ছাড়া তিনি নিজেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রার্থী ও দলীয় প্রার্থী পরিচয় দেওয়ায় তাঁকে কারণ দর্শনোর নোটিস দিয়েছেন রিটার্নিং অফিসার। ২৪ ঘণ্টার মধ্য তাঁকে নোটিসের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার ও সিনিয়ার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নওয়াবুল ইসলাম বলেন, ‘সুবর্ণচর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুল আনাম চৌধুরী দলীয় প্রার্থী পরিচয় দিয়ে প্রচার করতে পারেন না। তিনি সরকারি গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন না। এ নির্বাচনি আচরণবিধি অঙ্ঘনের অভিযোগে কারণ দর্শানো চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাঁকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।’ এর আগে স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাহার ইশরাক শাবাব চৌধুরী একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
সিরাজগঞ্জে সহিংসতা : উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি ও কাজিপুর উপজেলায় ৮ মে ভোট। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের মধ্যে লড়াই হচ্ছে। নির্বাচন সামনে রেখে বাগ্যুদ্ধ, হামলা এবং সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে নিজ দলের কর্মীদের রক্ত ঝরানো শুরু হয়েছে। রবিবার রাতে এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী বদিউজ্জামান বদি ফকিরের কর্মীরা অন্য প্রার্থী বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল ইসলামের দৌলতপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সেকান্দার মার্কেটে নির্বাচনি প্রচার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকিধমকি দেওয়া হচ্ছে।
ভোটারদের বাধাগ্রস্ত করলে সাত বছরের জেল : নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান বলেছেন, ভোটারদের বাধাগ্রস্ত করলে সর্বোচ্চ সাত বছরের জেল হবে। এবারের নির্বাচন প্রভাবমুক্ত ও নিরপেক্ষ হবে। ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন নির্বিঘ্নে। ভোটে কোনো প্রভাব বিস্তার করতে দেওয়া হবে না। গতকাল চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে নির্বাচনি আচরণবিধি ও মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।
উপজেলা নির্বাচনে এবারই সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকছে : স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অস্ত্রধারী সদস্য থাকবে। কেন্দ্রগুলোয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১৭ থেকে ১৮ জন সদস্যসহ ছয়জন অস্ত্রধারী সদস্য থাকবেন। এর আগে কখনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এত বেশি সদস্য ভোট কেন্দ্রে ছিলেন না। একই সঙ্গে প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। গতকাল সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। সভা শেষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, আমাদের ভোট কেন্দ্রের জন্য আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যে পরিমাণ সদস্য ছিল, সেটা যথেষ্ট পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। এখন প্রতিটি স্বাভাবিক কেন্দ্রে অস্ত্রসহ তিন পুলিশ, অস্ত্রসহ আনসারের পিসি ও এপিসি থাকবেন তিনজন। অর্থাৎ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অস্ত্রধারী ছয়জন সদস্য থাকবেন। প্রতিটি বুথ ব্যবস্থাপনার জন্য সর্বনিম্ন ১০ জন আনসার সদস্য থাকবেন ও ছয়টির বেশি বুথ আছে এমন জায়গায় একজন করে অতিরিক্ত আনসার সদস্য থাকবেন। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোয় অস্ত্রসহ চার পুলিশ সদস্য ও আনসার থাকবেন তিনজন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মোট ১৭ থেকে ১৮ জন সদস্য থাকবেন। উপজেলা নির্বাচনে এর আগে কখনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এত বেশি সদস্য ভোট কেন্দ্রে ছিলেন না।
সিনিয়র সচিব বলেন, যেহেতু ভোটের দিন ব্যালট পেপার পৌঁছানো হবে। এটা পৌঁছানোর কাজে নিয়োজিত থাকবে মোবাইল ফোর্স, স্ট্রাইকিং ফোর্স। ব্যালট পেপার সেন্টারে পৌঁছানোর পর তাদের এলাকাভিত্তিক যে দায়িত্ব বণ্টন করা হবে, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপার ও রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে আলাপ করে তারা যেটা বলবেন, সেভাবে তারা দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। প্রতিটি উপজেলায়ও একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। ভোটের আগের দিন ও পরের দিন পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করবেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভোট কেন্দ্রে এবারই এত বেশি অস্ত্রসহ পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্য থাকছেন। এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীর সংখ্যা বেশি। কাজেই ভোটও বেশি পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জাতীয় নির্বাচনের তুলনায় স্থানীয় নির্বাচন সব সময় প্রতিযোগিতাপূর্ণ হয়।
স্বরাষ্ট্র সচিব বলেন, গড়ে পাঁচটি সেন্টারের জন্য স্ট্রাইকিং ফোর্স ও মোবাইল ফোর্স থাকবে। আনসার, পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও কোস্টগার্ডের সমন্বয়ে এ মোবাইল ফোর্স গঠন করা হবে। আর উপকূলীয় এলাকাগুলোয় বিজিবির বদলে কোস্টগার্ড বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। পার্বত্য এলাকার কিছু দুর্গম সেন্টারে হেলিকপ্টারে পোলিং কর্মকর্তা ও ভোটের উপকরণ পৌঁছানো হবে। উপজেলা নির্বাচন কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত কোনো সহিংসতার খবর নেই বলে জানিয়ে সচিব বলেন, আমাদের কাছে এমন কোনো গোয়েন্দা তথ্য নেই। তার পরও প্রতিটি বাহিনী সতর্ক থাকবে। সব বাহিনীর প্রতিনিধি সমন্বয়ে একটা সমন্বয় সেল হবে। নির্বাচনসংক্রান্ত অভিযোগ ৯৯৯-এর মাধ্যমে গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আসন্ন উপজেলা নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে। উপজেলা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন থামছে না। আচরণবিধি অনুযায়ী মন্ত্রী-এমপিরা প্রচারসহ কোনো ধরনের নির্বাচনি কাজে অংশ নিতে পারবেন না। কিন্তু স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে অনেক মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তার ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আসছে নির্বাচন কমিশনে। মন্ত্রী-এমপিরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নির্বাচনি মাঠ রয়েছেন। নির্বাচনি প্রচারে অনেকেই সরকারি গাড়ি ব্যবহার করছেন। প্রার্থীদের অভিযোগ-নির্বাচন কমিশনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে অভিযোগ দিলেও কোনো কাজ হয় না। কমিশন তেমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে না।