দ্বাদশ
জাতীয় সংসদ নির্বাচন এগিয়ে আসছে। এরই মধ্যে
প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিসহ বেশ কয়েকটি দল।
পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের আসনসহ
(ময়মনসিংহ-৪) ১১ আসন
শূন্য রেখে ২৮৯ আসনে
প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। প্রথমে
নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে
দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকলেও শেষ সময়ে এসে
দলীয় প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছে দলটি। তবে সেখানে জায়গা
হয়নি দলটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের ছেলে সাদ এরশাদের।
বাদ পড়েছেন রওশনপন্থি অন্য নেতারাও।
জাপার
মনোনয়ন না পাওয়া রওশনপন্থি
নেতারা বলছেন, গতবছর কাউন্সিল করতে ব্যর্থ হওয়ায়
দলটিতে একক কর্তৃত্ব অর্জন
করতে পেরেছেন জাপা চেয়ারম্যান জি
এম কাদের। গুঞ্জন রয়েছে, এবার জাতীয় পার্টি
থেকে পুরোপুরি ছেটে ফেলা হতে
পারে রওশন এরশাদকে। তবে
এখনো জাতীয় পার্টির প্রতীকে দ্বাদশ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার স্বপ্ন
দেখছেন রওশনপন্থিরা। যেকোনো মুহূর্তে মিরাকল ঘটতে পারে বলেও
মনে করছেন তারা। অন্যদিকে, রওশন এরশাদকে নির্বাচনে
আনতে তার সঙ্গে দেখা
করেছেন জি এম কাদের।
সমঝোতার মাধ্যমে দুইপক্ষ একসঙ্গে নির্বাচনে লড়বে বলে আশা
উভয়পক্ষের নেতাকর্মীদের।
তবে
রওশনপন্থিদের ধারণা, আসন নিয়ে দ্বন্দ্ব,
কাউন্সিল না হওয়া ও
‘উপর মহলের’ নির্দেশ মানাসহ নানান কারণে আম-ছালা দুটোই
হারিয়েছেন তারা। প্রতিবারের মতো জাতীয় পার্টিতে (জাপা) এবারও নির্বাচনের আগে দেখা দিয়েছে
নাটকীয়তা। দলটির মধ্যে নতুন অন্তর্দ্বন্দ্ব ও
বিরোধের সূত্রপাত গত বছরে রওশন
এরশাদের একটা চিঠিকে ঘিরে।
যে চিঠিতে তিনি কাউন্সিলের তারিখ
ঘোষণা করেন ২০২২ সালের
২৬ নভেম্বর। এরপর নানান নাটক
মঞ্চস্থ হয় দলটিতে। জাপা
থেকে বহিষ্কার হন মশিউর রহমান
রাঙ্গাসহ বেশ কয়েকজন নেতা।
এরপর ওই বছরের (২০২২
সালের) ৩১ অক্টোবর কাউন্সিল
স্থগিত করেন রওশনপন্থিরা।
জাপার
রওশনপন্থি নেতা ওয়াহিদ রহমান
বলেন, ‘সম্মেলন না করা আমাদের
সবচেয়ে বড় ভুল। গতবছর
যদি সম্মেলন করতে পারতাম, তাহলে
আজ আমাদের এই পরিণতি হতো
না। আমরা এলাকার মানুষদের
জবাব দিতে পারবো না।’
রওশনপন্থি
আরেক নেতা ইকবাল হোসেন
রাজু বলেন, ‘আমাদের কাউন্সিল হলে তো এই
সমস্যা হতো না। কাউন্সিল
তো উপর মহলের নির্দেশে
হলো না।’
নির্বাচনের
তফসিল ঘোষণার পর ২০ থেকে
২৪ নভেম্বর পর্যন্ত প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়নপত্র বিক্রি করে জাতীয় পার্টি।
দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু সেসময়
গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রওশন এরশাদ শ্রদ্ধার
পাত্র, তার মনোনয়নপত্র রেডি
আছে। তিনি চাইলেই তা
পাঠিয়ে দেওয়া হবে। নিজেরটা ছাড়াও
রওশন এরশাদ আরও দুটি মনোনয়নপত্র
চেয়েছেন।’
তবে
সূত্র জানায়, দুটি নয়, নিজের
বলয়ের নেতাকর্মীদের জন্য অর্ধশতাধিক আসনের
মনোনয়নপত্র চেয়েছিলেন রওশন। তবে রওশনকে সাফ
জানিয়ে দেওয়া হয়, ‘এত মনোনয়নপত্র
তার অনুসারীদের দেওয়া হবে না। এছাড়া
জাতীয় পার্টি থেকে যারা বহিষ্কার
হয়েছেন তাদের সহজে দলে ভেড়াবেন
না জি এম কাদের।’
এতে নতুন করে টানাপোড়েন
শুরু হয় দেবর-ভাবির
মধ্যে।
এমন
পরিস্থিতিতে আগুনে ঘি ঢালার মতো
হয়ে দেখা দেয় রংপুর-৩ (সদর) আসনে
জি এম কাদের নিজে
প্রার্থী হওয়া। জাপার দুর্গ বলে খ্যাত এই
আসনে বর্তমান এমপি এরশাদপুত্র রাহগীর
আল মাহি সাদ এরশাদ।
এই আসনে জি এম
কাদের নির্বাচন করতে চাওয়ায় আরও
ক্ষুব্ধ হন রওশন। এরপরেই
মূলত জাতীয় পার্টির মনোনয়ন না নেওয়ার সিদ্ধান্ত
নেন তিনি। পরবর্তীসময়ে জি এম কাদের
নিজে রওশন এরশাদের বাসায়
গিয়েও সেই বরফ গলাতে
পারেননি।
এসব
বিষয়ে কথা হয় রওশন
এরশাদের রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসীহ’র সঙ্গে। গোলাম
মসীহ বলেন, ‘রওশন এরশাদের আসনে
আরেকজনের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তারা (জিএম কাদেরপন্থিরা)।
সাদ এরশাদের আসনে জি এম
কাদের নিজে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন।
এখানে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে।
জি এম কাদেরপন্থিরা আমাদের
নির্বাচনের বাইরে রাখতে বাধ্য করেছেন।’
তিনি
বলেন, ‘এটা (জাতীয় পার্টি)
রওশন এরশাদ ও হুসেইন মুহাম্মদ
এরশাদের গঠন করা দল।
রওশন এরশাদ অন্য কোনো প্রতীক
নেবেন না, আর চুন্নু
(মুজিবুল হক চুন্নু) আসন
দেওয়ার কে? রওশন এরশাদ
সবসময় চেয়েছেন সবাই একসঙ্গে নির্বাচনে
যাবেন। উনি ভাগাভাগি বিশ্বাস
করেন না।’
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার সঙ্গে রওশন এরশাদের সাক্ষাৎ
হলে সমস্যার সমাধান এখনো সম্ভব বলে
মনে করেন রওশনপন্থিরা। তারা
বলেন, রওশন এরশাদ বেশ
কয়েকবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে সময় চেয়েছেন।
তবে তা পাননি।
গোলাম
মসীহ বলেন, ‘ভোটে যেতে হলে
সবাইকে একসঙ্গে যেতে হবে। রওশন
এরশাদের নির্দেশ দলে কোনো ভাঙন
করা যাবে না। আমরা
এখনো আশাবাদী।’
জাতীয়
পার্টিতে মিরাকল ঘটবে মন্তব্য করে
মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘ওই পক্ষ (জিএম
কাদেরপন্থিরা) কতগুলো (আসন) দেবে- না
দেবে সেটা নিয়ে আলোচনা
হচ্ছে। যদি (সমঝোতা) হয়
হবে। যদি আলোচনা ফলপ্রসূ
না হয় রওশন এরশাদ
নির্বাচন করবেন না। আমরাও নির্বাচন
করবো না।’
তবে
রওশনপন্থিদের মনোনয়ন না দেওয়ার বিষয়ে
জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন,
‘সাদ এরশাদ তো মনোনয়ন চাননি
আমাদের কাছে। কেউ যদি নিজে
না আসেন, তাকে তো বাদ
বলা যাবে না। দলের
সঙ্গে যাদের সংশ্লিষ্টতা নেই, যাদের দল
থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে, তাদের
মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এখানে বলার আর কিছু
নেই।’
নির্বাচন জাতীয় পার্টি জিএম কাদের
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।