আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা আরাম আয়েশের একটি নির্বাচন চেয়েছিলেন। তারা ভেবেছিলেন যে, তাদের নিজের পছন্দের একজন ডামি প্রার্থী থাকবে, তিনি নামকাওয়াস্তে ভোটে অংশগ্রহণ করবেন এবং নির্বাচনে তার জয় সুনিশ্চিত হবে। আওয়ামী লীগের অধিকাংশ প্রার্থীর প্রথম পরিকল্পনা ছিল ২০১৪ এর মতো একটি নির্বাচন করবেন, যেখানে বিনা খরচে বিনা ভোটে তারা আবার এমপি হবেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ঘোষণা করেন যে, কোনও প্রার্থীরই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া যাবে না এবং কেউ যদি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন তাহলে তাকে গ্রহণ করা হবে না।
তখন প্রার্থীদের দ্বিতীয় ভাবনা ছিল তাদের পছন্দের একান্ত-অনুগত কোনো ব্যক্তিকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করাবেন এবং একটা নির্বাচন নির্বাচন খেলার মাধ্যমে তারা বিজয়ী হবেন, যে নির্বাচনে তাদের পরাজয়ের কোনও সম্ভাবনা থাকবে না। কিন্তু সেই হিসাব নিকেশ পাল্টে গেছে আওয়ামী লীগ সভাপতির সিদ্ধান্তে। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থীদের স্বাগত জানিয়েছেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীকেই বসিয়ে দেওয়া যাবে না- এই বার্তাটা সুস্পষ্ট করেছেন। তার এই বার্তার পর এখন নির্বাচনের মাঠ সরগরম। তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের কাছে যেটা প্রত্যাশিত ছিল যে, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সাথে তারা তাদের নিজ যোগ্যতা এবং জনপ্রিয়তা দিয়ে লড়াই করবেন এবং সেই লড়াইয়ে তারা বিজয়ী হওয়ার চেষ্টা করবেন। কারণ, যাদেরকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল তারা প্রত্যেকেই জনপ্রিয়। কিন্তু বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় দেখা যাচ্ছে যে, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা শুরুতেই আওয়ামী লীগের মূল প্রার্থীকে কোণঠাসা করে ফেলেছেন। এখন স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নানা কায়দা-কানুন করছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরাই।
বরিশালের কথাই ধরা যাক। বরিশালের একটি আসনে প্রার্থী হচ্ছেন বরিশালের সাবেক মেয়র সাদেক আবদুল্লাহ এবং সেই একই আসনে প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান এমপি মেজর অবসরপ্রাপ্ত জাহিদ ফারুক। কিন্তু এই দুই ব্যক্তির মধ্যে জাহিদ ফারুক আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচন করছেন। অন্যদিকে, সাদিক আবদুল্লাহ গত সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি, তার চাচাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। এবার এবার তিনি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে বাজিমাত করতে চান। কিন্তু আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী জাহিদের প্রধান লক্ষ্য এখন যেন নির্বাচনে জয় লাভ নয় বা জনগণের কাছে ভোট চাওয়া নয়, বরং তিনি এখন নির্বাচনের আগে কিভাবে সাদিক আব্দুল্লাহকে কোণঠাসা করা যায় সেই চেষ্টা করছেন। একের পর এক অভিযোগ করেছেন সাদিক আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে। সাদিক আবদুল্লাহর মনোনয়ন বাতিল করাটাই যেন তার প্রধান কাজ, জনগণের কাছে ভোট চাওয়া নয়৷
একই অবস্থা লক্ষ্য করা যাচ্ছে আরও বেশ কয়েকটি নির্বাচনী এলাকায়। রাজশাহীর একটি আসনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তার নির্বাচনী প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের নেতার বিরুদ্ধে যে সমস্ত আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিয়েছেন তা এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে।
একই ঘটনা ঘটেছে আরও বহু নির্বাচনী এলাকায়। যেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থীদেরকে নানারকম হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। গতকাল ফরিদপুরের একটি আসনে ব্যবসায়ী সংগঠনের সাবেক সভাপতি এ.কে আজাদ অভিযোগ করেছেন যে, তার প্রার্থীদেরকে মারধর করা হচ্ছে। ঐ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন শামীম, আর এ.কে আজাদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন। তিনিও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর জন্য বড় ধরনের একটি হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছেন।
বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, এরকম অন্তত ১০০টি আসন পাওয়া গেছে যেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের এখন প্রধান কাজ হচ্ছে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে বসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা বা তাকে শক্তি প্রয়োগ করে নিষ্ক্রিয় করা। আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা যদি জনপ্রিয়ই হবেন, তাহলে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিরুদ্ধে তাদের কেন এই নজিরবিহীন তৎপরতা?
আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্র প্রার্থী ভোট লড়াই
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।