আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের ৪১ নেতার অন্তত ১৪ জন তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়ছেন। ভোটের মাঠে এদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ নৌকার মনোনয়নবঞ্চিত ‘জনপ্রিয় স্বতন্ত্র’ প্রার্থীরা।
নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো বলছে, এবারের
নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ করতে
চায় আওয়ামী লীগ, প্রধানমন্ত্রীও শেখ হাসিনা বদ্ধপরিকর। এই নির্বাচনে সর্বোচ্চসংখ্যক
ভোটারের উপস্থিতি নিশ্চিত করার বিষয়েও তাগিদ
দেওয়া হয়েছে। এ কারণেই দলীয়
নেতাদের মধ্যে যারা স্বতন্ত্র বা বিদ্রোহী প্রার্থী
হয়েছেন, তাদের বিষয়ে কোনো হস্তক্ষেপ করা
হয়নি। এ কারণেই উল্লেখযোগ্যসংখ্যক আসনে নির্বাচন তীব্র
প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও জমজমাট হতে চলেছে।
আওয়ামী
লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান একটি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘নির্বাচনী পরিবেশ এখন পর্যন্ত খুবই
ভালো। প্রার্থী সংখ্যার আধিক্য থাকবেই, এটাই নির্বাচনের সৌন্দর্য।
নির্বাচন করে জনপ্রিয়তা যাচাই
করেই জিততে হবে প্রার্থীদের।’
তথ্যসূত্র বলছে, এবারের নির্বাচনে প্রাথমিকভাবে ২৯৮টি আসনে দলীয় প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছিল আওয়ামী লীগ। তবে নির্বাচনী সমঝোতার মধ্যে দিয়ে ১৪ দলের শরিকদের ৬টি ও জাতীয় পার্টিকে ২৬ আসনে ছাড় দিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। এ ছাড়া তিনটি আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী যাচাই-বাছাইয়ে বাদ পড়েছেন। সব মিলিয়ে শেষ পর্যন্ত দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে নির্বাচন করছেন ২৬৬ জন। এর মধ্যে আছেন কেন্দ্রীয় কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদের ৪১ নেতা। তবে দলের স্বতন্ত্র এবং অন্য দলের শক্তিশালী প্রার্থী থাকায় অন্তত ১৪ জন কেন্দ্রীয় নেতা তীব্র চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে যাচ্ছেন বলে সারা দেখে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।
গত দুই নির্বাচনের মতো ফরিদপুর-৪ আসনে আবারও মুখোমুখি হয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ এবং যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন। নানা কারণে এই দুজনের দ্বৈরথ ফরিদপুরসহ সারা দেশেই আলোচিত। গত দুই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কাজী জাফর উল্লাহ স্বতন্ত্র প্রার্থী নিক্সনের কাছে হেরেছেন। এবারও এই দুজনের মধ্যে তীব্র লড়াই হবে বলে মনে করছেন ওই এলাকার ভোটার ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
নানাবিধ
কারণে নিজ এলাকায় আলোচিত
মাদারীপুর-৩ আসনের বর্তমান
সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ। এবার তার বিরুদ্ধে
লড়ছেন কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংরক্ষিত নারী
আসনের সংসদ সদস্য তাহমিনা
বেগম। এই আসনে হাড্ডাহাড্ডি
লড়াই হবে নৌকা ও
ঈগল প্রতীকের প্রার্থীর মধ্যে। তাদের মুখোমুখি লড়াই এরই মধ্যে
নির্বাচনী এলাকায় উত্তাপও ছড়িয়েছে।
আওয়ামী
লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ কুষ্টিয়া-৩ আসনে নির্বাচন
করছেন। তবে তাকে এবার
চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলীর
ছেলে পারভেজ আনোয়ার তনু। জেলা আওয়ামী
লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আলী কুষ্টিয়া পৌরসভার
পাঁচবারের নির্বাচিত মেয়র। ১৯৯১ ও ১৯৯৬
সালের সংসদ নির্বাচনে এ
আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সামান্য ভোটে
আনোয়ার আলী পরাজিত হন।
দলের আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মণিকে অগ্নিপরীক্ষা দিতে হতে পারে চাঁদপুর-৩ আসনে। এই আসনে মোট ৭ জন প্রার্থী থাকলেও দীপু মনির শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ সামছুল হক ভূঁইয়া। তিনি চাঁদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। এবার সেখানে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে পাশের আসনে দীপু মনির বিপক্ষে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
ফরিদপুর-১ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমানকে কঠিন পরীক্ষায় ফেলতে পারেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাহ্ মোহাম্মদ আবু জাফর। তিনিও এই আসনের সাবেক এমপি। এই নির্বাচনে দলীয় নোঙ্গর প্রতীকে নির্বাচন করছেন প্রবীণ এই নেতা। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র হওয়া আরিফুর রহমানও এখানে শক্ত প্রার্থী।
চাঁদপুর-২ আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। তার সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী আন্তর্জাতিক উপকমিটির সদস্য এম ইসফাক আহসানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে। মায়া চৌধুরীর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সমর্থন নিয়ে ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারেন এই স্বতন্ত্র প্রার্থী।
দলের আরেক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলামকেও ঢাকা-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমানের সঙ্গে লড়াই করতে হবে। এখানেই কামরুল বিরোধীদের ভোট নির্বাচনী হিসাবনিকাশ পাল্টে দিতে পারেন।
দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন মৌলভীবাজার-২ আসনে। এখানে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য এম এম শাহীন। ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েও সংসদ সদস্য হয়েছিলেন তিনি। ফলে এই আসনে শাহীন সব সময়ই শক্ত প্রার্থী।
আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস নৌকার প্রার্থী হয়েছেন মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে। তাকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পদ ত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব। দুই প্রার্থীর দ্বৈরথ এরই মধ্যে জমে উঠেছে। দুজনের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে কয়েকজন আহতও হয়েছেন।
নেত্রকোনা-৩ আসনে আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল মনোনয়ন পেয়েছেন। তার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন এ আসনের সাবেক দুই সংসদ সদস্য ইফতিখার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু ও মঞ্জুর কাদের কোরাইশী। ফলে এই কেন্দ্রীয় নেতাকে নির্বাচনে কঠিন পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হচ্ছে।
ঢাকা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য সানজিদা খানমকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। লাঙ্গল প্রতীকের বর্তমান এমপি বাবলার সঙ্গে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে সানজিদার।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের ৪৪ সদস্যের মধ্যে রাজিউদ্দিন আহম্মেদ রাজু, নুরুল ইসলাম নাহিদ ও সালমান ফজলুর রহমান তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে পারেন।
নরসিংদী-৫ আসনে সংসদ
সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী
রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা
পরিষদ চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চৌধুরী। নানা কারণে আলোচিত-সমালোচিত বর্ষীয়ান রাজনীতিক রাজুকে এবার কঠিন চ্যালেঞ্জের
মুখে পড়তে হতে পারে
বলে ধারণা করছেন ওই এলাকার মানুষ।
দোহার ও নবাবগঞ্জ নিয়ে গঠিত ঢাকা-১ আসনে ফের ভোটযুদ্ধে মুখোমুখি আওয়ামী লীগের সালমান ফজলুর রহমান ও জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সালমা ইসলাম। এই আসনে সেয়ানে সেয়ানে লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
সিলেট-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ। এই আসনে প্রার্থী হয়েছেন তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী। সোনালী আঁশ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন তিনি। রাজনীতির নানা হিসাবনিকাশে এবার নুরুল ইসলাম নাহিদকে কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়তে হচ্ছে বলে ধারণা করছেন এলাকাবাসী।
নির্বাচন আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্র প্রার্থী লড়াই
মন্তব্য করুন
আজিজ আহমেদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসলে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদীর দিকে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান বলেও আম আদমি পার্টির এই নেতা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আর এই বক্তব্য নিয়েই বিএনপির মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির নেতারা শুধু ইউটিউবেই এটি রিপোস্ট করেনি, তারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারেও এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ভারত বিরোধী প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভারতের সমালোচনা করা এবং ভারত এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে এমন বক্তব্য বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল। যদিও ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বার্তা দিয়েছেন। ভারতের অন্য একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসও আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান সরকারের সমর্থক। বিজেপি গত এক দশকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এরকম অবস্থায় ভারতের নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যত্যয় হবে না বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
এর মধ্যে আম আদমি পার্টির বক্তব্য নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস নিয়ে অনেকেই নানারকম টীকা-টিপ্পনি কেটেছেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, এর আগে যখন কংগ্রেসকে হারিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন তখনও বিএনপির মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি নেতারা মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। তাদের ধারণা ছিল যে, কংগ্রেস চলে গেলেই আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, বিজেপির সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এখন কেজরিওয়ালের নির্বাচনের মাঠের বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপি আশায় বুক বেঁধে আছে। মুখে মুখে ভারত বিরোধীতা করলেও ভারতের অনুগত এবং ভারতের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য বিএনপি কম চেষ্টা করেনি।
আর এখনও বিএনপি যে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় তার প্রমাণ পাওয়া গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্যকে নিজেদের দলের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেন যে, একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক বক্তব্য, আর ক্ষমতায় এসে তার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড- দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেউলিয়া রাজনীতির কারণে বিএনপি সবসময় অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে কেজরিওয়ালের বক্তব্য বিএনপির ইউটিউবে ছাড়ার মধ্য দিয়ে সেই দেউলিয়াত্ব আরেকবার প্রকাশিত হল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অরবিন্দ কেজরিওয়াল রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে দেশটিতে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। চলতি মাসের শেষের দিকে ৫০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল চীনে যাবে।
গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার ৭৫ বছরপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। এই সফর কর্মসূচির লক্ষ্য আওয়ামী লীগের সঙ্গে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কোন্নয়ন এবং মতবিনিময়।
দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গত ১৪ এপ্রিল এক চিঠিতে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কাছে ৫০ সদস্যের একটি তালিকা পাঠিয়েছেন। এতে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ ও মহিলা শ্রমিক লীগ এবং আওয়ামী লীগের ডেটাবেজ টিমের সদস্যরা রয়েছেন।
দলীয় একাধিক সূত্র মতে, আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলটিকে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি সংগঠন গড়ে তোলা, সুশাসন, ইতিহাসসহ নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবে।
৫০ সদস্যের প্রতিনিধি টিমে রয়েছেন:
আওয়ামী যুব লীগ:
সহ সভাপতি মৃনাল কান্তি জোয়ারদার ও তাজউদ্দীন আহমদ; যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বদিউল আলম; সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, মো জহির উদ্দিন, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক কাজী সারোয়ার হোসেন, উপ আন্তর্জাতিক সম্পাদক মো সাফেড আসফাক আকন্দ।
আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ:
স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান, সহ সভাপতি আব্দুল রাজ্জাক, তানভীর শাকিল জয় এমপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোবাশ্বের চৌধুরী, একেএম আজিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল ফজল মো নাফিউল করিম, আবদুল্লাহ আল সায়েম৷
বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ:
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিরিন রোকসানা, মিনা মালেক, সুলতানা রেজা, মিসেস রোজিনা নাসরিন, নীলিমা আক্তার লিলি, সাংগঠনিক সম্পাদক ঝর্না বাড়ুই, মরিয়ম বিনতে হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মেহেনিগার হোসেন।
বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ:
সভাপতি আলেয়া সারোয়ার, সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা, সহ সভাপতি বিনা চৌধুরী, রাফিয়া আক্তার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিউটি কানিজ, সাংগঠনিক সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমিন।
মহিলা শ্রমিক লীগ:
সভাপতি সুরাইয়া আক্তার, সাধারণ সম্পাদক কাজী রহিমা আক্তার, কার্যকরী সভাপতি শামসুর নাহার, সহ সভাপতি মেহেরুন নেসা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিনাত রেহেনা নাসরিন।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ:
সহ সভাপতি মো. রাকিবুল হাসান, কুহিনূর আক্তার, খাদেমুল বাশার জয়, খন্দকার মো আহসান হাবিব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো হোসাইন আহমেদ, মো আবদুল্লাহ হিল বারী, এসডিজি বিষয়ক সম্পাদক রাইসা নাহার, সাংস্কৃতিক সম্পাদক জান্নাতুল হাওয়া আখি।
ডেটাবেজ টিম মেম্বার, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ:
মো নুরুল আলম প্রধান, সাজ্জাদ সাকিব বাদশা, কাজী নাসিম আল মমিন, জাফরুল শাহরিয়ার জুয়েল, অদিত্য নন্দী, মো. সাদিকুর রহমান চৌধুরী, সাব্বির আহমেদ।
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইতোমধ্যে তিনি একটি হ্যাটট্রিক করেছেন। টানা তিন তিনবার আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র যিনি আওয়ামী লীগের তিনবার বা তার বেশি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এখন ওবায়দুল কাদেরও আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। এবার তিনি আরেক রকম হ্যাটট্রিক করলেন।
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।