সরকারকে উৎখাতের একদফা দাবিতে দেশব্যাপী ব্যাপক গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করছে বিএনপি। অবরোধ-হরতালের চলমান আন্দোলনকে শান্তিপূর্ণ পথে রেখেই সরকারকে ‘বড় ধাক্কা’ দিতে নির্বাচনের পাঁচদিন ‘গণকারফিউ’ দিতে চায় দলটি। দেশের বাইরেও এ নিয়ে ব্যাপক প্রচারণার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে পাঁচটি দফা পালনের আহ্বানও জানানো হয়েছে।
আজ শনিবার
(২৩ ডিসেম্বর) একাধিক নীতিনির্ধারকের
বরাতে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে
এসব তথ্য।
সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দরা
জানান, অনেক পর্যালোচনা করে নীতিনির্ধারকদের পরামর্শে
ও আন্দোলনে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর
সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। এই আন্দোলনে যাওয়া
ছাড়া অন্য কোনো পথ
ছিল না। পাঁচটি দফা
পালনের যে আহ্বান জানানো
হয়েছে তা বাস্তবায়ন কতটুকু
সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন
তুলছেন অনেকে। তবে তা বাস্তবায়নে
দেশের পাশাপাশি বিদেশেও ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
সূত্র জানায়,
গত ২৮ অক্টোবরের পর এই প্রথমবারের
মতো গণসংযোগকে কেন্দ্র করে প্রায় সব
সাংগঠনিক জেলায় নেতাকর্মীরা মাঠে নামতে পেরেছেন।
গত দুই দিনে ৬০
লাখের মতো লিফলেট বিতরণ
করা হয়েছে। যুগপথে থাকা সমমনাদের পাশাপাশি
জামায়াতে ইসলামীরও তৎপরতা বেড়েছে।
নির্ভরযোগ তথ্যসূত্রে
জানা যায়, আগামীকাল (২৪
ডিসেম্বর) রোববার
সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ কর্মসূচি রয়েছে। একদিন বিরতি দিয়ে ৩১ ডিসেম্বর
পর্যন্ত হরতাল অথবা অবরোধ ও
গণসংযোগের কর্মসূচি পালনের কথা রয়েছে। এরপর
আন্দোলনের ধরন আবারও পরিবর্তনের
কথা ভাবছে বিএনপি। যার মধ্যে ৩
জানুয়ারি থেকে ভোটের দিন
৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ‘গণকারফিউ’ দেওয়ার কথা আলোচনায় রয়েছে।
অসহযোগের মধ্যেই ‘গণকারফিউ’ দেওয়া হতে পারে।
বিএনপির
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন
খান গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘লাখ লাখ মানুষের
রক্তের বিনিময়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে
অর্জিত এই স্বাধীন বাংলাদেশকে
এই বাকশালী সরকার দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এক গভীর অমানিশার
অন্ধকারে নিমজ্জিত করে দিয়েছে। এ
অবস্থা থেকে পরিত্রাণের একমাত্র
উপায় হচ্ছে দেশকে গণতন্ত্রের পথে ফিরিয়ে আনা।
আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ একটি সুষ্ঠু ও
নিরপেক্ষ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমেই কেবল এ দেশে
গণতন্ত্র ফিরে আসতে পারে।
যা অর্জন করার উদ্দেশ্যে বিএনপির
প্রতিটি নেতাকর্মী আজ রাজপথে নেমেছে।
বিএনপির জন্য নয়, কোনো
ব্যক্তির জন্য নয়, বরং
এ দেশের সব মানুষের মৌলিক
ভোটের অধিকার তথা সুবিধাবঞ্চিত মানুষের
অর্থনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার এই সংগ্রাম অর্জন
না হওয়া পর্যন্ত আমাদের
রাজপথের আন্দোলন চলতেই থাকবে।’
বিএনপির
স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন,
সারা দেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের
বিরুদ্ধে ১ লাখ ৩৮
হাজারের বেশি মামলায় প্রায়
৫০ লাখ নেতাকর্মীকে আসামি
করা হয়েছে। অসহযোগ আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে এসব নেতাকর্মীও যদি
আদালতে হাজিরা দিতে না যান,
তাহলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী গ্রেফতারি
পরোয়ানা জারি হবে। এ
অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আন্দোলন ও নির্বাচনের দায়িত্ব
পালন করবে, নাকি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার
করবে। দুই কাজ একসঙ্গে
করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষে সম্ভব হবে না। তদুপরি
বর্তমানে বিএনপির ২৩ হাজারেরও বেশি
নেতাকর্মী কারাগারে। সেখানে এখন বন্দিসংখ্যা ধারণক্ষমতার
দ্বিগুণ। এ অবস্থায় আরও
নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে সরকার কোথায়
রাখবে? সব মিলিয়ে বিএনপির
অসহযোগ আন্দোলন সরকারকে নতুন করে কূটনৈতিক,
রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে
ফেলবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।