দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে কুমিল্লার মোট ১১টি আসনের প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থীরা। আগামী ৭ জানুয়ারির ভোটকে কেন্দ্র করে ১১ আসনের মাত্র তিনটিতে বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী না থাকায় স্বস্তিতে আওয়ামী লীগ।
তবে বাকি ৮টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী (হেভিওয়েট) ১২ জন নেতা, এতে দেখা দিয়েছে বিপাক। নৌকার প্রার্থীদের বিরুদ্ধে দলের হেভিওয়েট নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে রয়েছেন।
নির্ভরযোগ্যসূত্র এবং গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বলছে, কুমিল্লার মোট ১১টি আসনে প্রার্থী ৯৩ জন। তবে, উল্লিখিত ৮ আসনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ের প্রভাবশালী নেতারা ‘বিদ্রোহী’ (স্বতন্ত্র) প্রার্থী হওয়ায় কঠিন লড়াইয়ের আভাস পাচ্ছেন ভোটাররা। এই আট আসনের সাতটিতেই নৌকার প্রার্থীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের লড়াই হবে। আসন সাতটি হলো কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-তিতাস), কুমিল্লা-২ (হোমনা-মেঘনা), কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর), কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার), কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া), কুমিল্লা-৬ (আদর্শ সদর, সিটি করপোরেশন ও সেনানিবাস এলাকা), কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) ও কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম)।
কুমিল্লা-৫ আসনে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে রয়েছেন আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট চার প্রার্থী। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা স্বতন্ত্র থাকায় কিছুটা এগিয়ে রয়েছেন শওকত। তবে কুমিল্লা-৮ (বরুড়া) আসনে বর্তমান এমপি নাছিমুল আলম চৌধুরী নজরুল স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। তিনি মনোনয়নপত্র তুলে নেওয়ায় এখানে নৌকার প্রার্থী কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবু জাফর মোহাম্মদ সফিউদ্দিন শামীম স্বস্তিতে আছেন।
কুমিল্লা-১ আসনে নৌকার প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আব্দুস সবুর। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ব্যারিস্টার নাঈম হাসান। তার কারণে কিছুটা হলেও বেকায়দায় পড়েছেন নৌকার প্রার্থী।
কুমিল্লা-২ আসনে নৌকার প্রার্থী বর্তমান এমপি সেলিমা আহম্মাদ মেরী। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হোমনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আবদুল মজিদ ও মেঘনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল আলম। এ দুজনই হেভিওয়েট প্রার্থী।
কুমিল্লা-৩ আসনে নৌকার
প্রার্থী বর্তমান এমপি ইউসুফ আবদুল্লাহ
হারুন। ইগল প্রতীকের স্বতন্ত্র
প্রার্থী কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের
সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকার হেভিওয়েট
প্রার্থী।
কুমিল্লা-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী বর্তমান এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল। এখানে হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী (ইগল প্রতীক) সদ্য পদত্যাগী উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ।
কুমিল্লা-৫ আসনে নৌকার প্রার্থী বর্তমান এমপি আবুল হাশেম খান। নৌকার মনোনয়ন না পাওয়া দলীয় চারজন নেতা এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এখানে আওয়ামী লীগের চার হেভিওয়েট ‘বিদ্রোহী’ এবং বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত শওকত মাহমুদ প্রার্থী থাকায় ভোটের লড়াই জমবে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে আছেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন স্বপন, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করা এম এ জাহের, একই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর খান, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা এহতেশামুল হাসান ভূঁইয়া রুমি।
কুমিল্লা-৬ আসনে নৌকার প্রার্থী বর্তমান এমপি মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। স্বতন্ত্র প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা। তিনি সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও কুমিল্লার বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত আফজল খানের মেয়ে। প্রায় চার দশক ধরে আফজল পরিবারের সঙ্গে বাহারের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব চলছে। তাই ভোটের লড়াইয়ের আভাস দেখছেন ভোটাররা।
কুমিল্লা-৭ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান এমপি প্রাণ গোপাল দত্ত। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী চান্দিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনতাকিম আশরাফ টিটু। তিনি আসনটির পাঁচবারের নির্বাচিত সাবেক এমপি ও সাবেক ডেপুটি স্পিকার প্রয়াত আলী আশরাফের ছেলে।
কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনে
সাবেক রেলপথ মন্ত্রী ও বর্তমান এমপি
মো. মুজিবুল হক নৌকার প্রার্থী।
তিনি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের
সাধারণ সম্পাদক। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক পৌর
মেয়র মিজানুর রহমান। এরই মধ্যে মুজিবুল
হকবিরোধীরা একজোট হয়েছেন ফুলকপি প্রতীকের মিজানের পক্ষে। সে হিসাবে আসনটিতে
জমে উঠতে পারে ভোটের লড়াই।
নির্বাচন আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্রপ্রার্থী কুমিল্লা
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগ ঢাকা-৮
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।