বিএনপিহীন নির্বাচনে ঢাকার কয়েকটি আসনে ভোটের হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আমেজ আনছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। আসন্ন নির্বাচনে ঢাকার ২০টি আসনের ১০টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ভোটের লড়াইয়ে রয়েছেন। যাদের মধ্যে আছেন সাবেক সংসদ সদস্যরাও।
রাজধানীর প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আসনগুলোর মধ্যে একটি ঢাকা-৪। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য সানজিদা খানম। তাকে লড়তে হবে গত দুইবারের সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার সঙ্গে। স্বতন্ত্র প্রার্থী আওলাদ হোসেন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিন হাজারের কম ভোটের ব্যবধানে আবু হোসেনের কাছে হেরেছিলেন। ফলে নৌকা-লাঙ্গলের লড়াই জমিয়ে দিতে পারেন ট্রাক প্রতীকে লড়া আওলাদ হোসেন।
ঢাকা-৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ (মুন্না)। ডেমরা-যাত্রাবাড়ী এলাকার এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। আসনটিতে নৌকার সঙ্গে লড়ছেন ঢাকা দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন এবং ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা সজল। ত্রিমুখী লড়াইয়ে কে জয়ী হবেন তা নিয়ে হিসেব-নিকেশ চলছে ভোটারদের মধ্যে।
ঢাকা–১৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাইনুল হোসেন খান নিখিল। তবে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্যের মনোনয়ন পাওয়া যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নিখিলের প্রচারণায় অনেকটাই গাছাড়া ভাব দেখা যাচ্ছে। এই আসনে সবচেয়ে বেশি ৫ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে সাবিনা আক্তার তুহিন দশম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন।
জাতীয় পার্টির শেরীফা কাদেরের জন্য ঢাকা-১৮ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিলেও দলটির স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আছেন নির্বাচনে। সদ্য সাবেক এমপি আলহ্বাজ হাবিব হাসান নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারলেও পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী তোফাজ্জল হোসেনকে। অন্যদিকে নির্বাচনের মাঠ গরম করে রেখেছেন আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজিএমই-এর পরিচালক খসুরু চৌধুরী। পুরো ঢাকা-১৮ আসনে সবচেয়ে বেশি প্রচারণার মাধ্যমে নিজেকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছেন এই ব্যবসায়ী।
ঢাকা-১৯ আসনে গত দুইবারের সংসদ সদস্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান এবারও আওয়ামী লীগের প্রার্থী। ঝুট ব্যবসা, জায়গা দখলসহ নানা প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকাণ্ডে এখন অনেকটাই ব্যাকফুটে তিন। এবারেরে নির্বাচনে তার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন নৌকার টিকিট না পাওয়া তালুকদার মোহাম্মদ তৌহিদ জং (মুরাদ)। সাভার পৌর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সাবেক এই সংসদ সদস্য এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী।
নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক দেখাতে দলীয় নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে উৎসাহিত করেছে আওয়ামী লীগ। তবে বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের ভোট বর্জনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কতটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে সেটিই এখন দেখার বিষয়।
নির্বাচন ঢাকা সানজিদা খানম হারুনুর রশিদ মুন্না মাইনুল হাসান খান নিখিল এনামুর রহমান তৌহিদ জং শেরীফা কাদের খসরু চৌধুরী কামরুল হাসান রিপন
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
আজিজ আহমেদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসলে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদীর দিকে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান বলেও আম আদমি পার্টির এই নেতা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আর এই বক্তব্য নিয়েই বিএনপির মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির নেতারা শুধু ইউটিউবেই এটি রিপোস্ট করেনি, তারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারেও এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ভারত বিরোধী প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভারতের সমালোচনা করা এবং ভারত এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে এমন বক্তব্য বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল। যদিও ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বার্তা দিয়েছেন। ভারতের অন্য একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসও আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান সরকারের সমর্থক। বিজেপি গত এক দশকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এরকম অবস্থায় ভারতের নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যত্যয় হবে না বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
এর মধ্যে আম আদমি পার্টির বক্তব্য নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস নিয়ে অনেকেই নানারকম টীকা-টিপ্পনি কেটেছেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, এর আগে যখন কংগ্রেসকে হারিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন তখনও বিএনপির মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি নেতারা মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। তাদের ধারণা ছিল যে, কংগ্রেস চলে গেলেই আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, বিজেপির সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এখন কেজরিওয়ালের নির্বাচনের মাঠের বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপি আশায় বুক বেঁধে আছে। মুখে মুখে ভারত বিরোধীতা করলেও ভারতের অনুগত এবং ভারতের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য বিএনপি কম চেষ্টা করেনি।
আর এখনও বিএনপি যে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় তার প্রমাণ পাওয়া গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্যকে নিজেদের দলের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেন যে, একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক বক্তব্য, আর ক্ষমতায় এসে তার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড- দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেউলিয়া রাজনীতির কারণে বিএনপি সবসময় অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে কেজরিওয়ালের বক্তব্য বিএনপির ইউটিউবে ছাড়ার মধ্য দিয়ে সেই দেউলিয়াত্ব আরেকবার প্রকাশিত হল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অরবিন্দ কেজরিওয়াল রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
কিছুদিন আগেও বিএনপি যুক্তরাষ্ট্র বলতে অন্ধ থাকত। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে ফোন আসলে বিএনপির নেতারা নাওয়া খাওয়া ভুলে ছুটে যেতেন। এমনকি কোনদিন সকালে মার্কিন দূতাবাসে প্রাতরাশ, রাতে নৈশভোজেও দেখা গেছে বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তারা অবতার হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশে গণতন্ত্র এনে দেবে, যুক্তরাষ্ট্রই এই সরকারের পতন ঘটাবে এমন একটা স্থির বিশ্বাস ছিল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। কিন্তু বিএনপির মধ্যে সেই মোহভঙ্গ ঘটেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনাগ্রহী বিএনপি। এটা যেন অনেকটা আঙুল ফল টকের মতো ঘটনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইতোমধ্যে তিনি একটি হ্যাটট্রিক করেছেন। টানা তিন তিনবার আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র যিনি আওয়ামী লীগের তিনবার বা তার বেশি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এখন ওবায়দুল কাদেরও আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। এবার তিনি আরেক রকম হ্যাটট্রিক করলেন।
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।