ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের পাঁচ ভয়

প্রকাশ: ০৯:০১ পিএম, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

এবার এমন একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যে নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পরাজয়ের কোনো শঙ্কা নেই। পরাজয়ের কোন ভয়ও নেই এই নির্বাচনে। এই নির্বাচনে যাই ফলাফল হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত যদি নির্বাচন হয় তাহলে পরে আওয়ামী লীগ যে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করবে সেটি মোটামুটি নিশ্চিত। কিন্তু তারপরও এই নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ স্থানীয় নেতারা অন্য রকম আতঙ্কে আছেন। আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজও একটি নির্বাচনী জনসভায় বলেছেন যে, নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে। আন্তর্জাতিক মহলের কেউ কেউ ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত। 

নির্বাচনের মাত্র এক সপ্তাহ আগে প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ। শুধু প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যই নয়, নির্বাচনের আগে আন্তর্জাতিক মহল সহ নানা মহলে নির্বাচন বানচালের যেমন চক্রান্ত রয়েছে, তেমনই এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করারও একটি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। 

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নীতি নির্ধারকরা বলছেন, নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের পাঁচটি ভয় কাজ করছে। এই পাঁচটি ভয় কাটিয়ে উঠতে পারলেই নতুন সরকার শক্তিশালী হবে এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাবে। যে পাঁচটি ভয় নিয়ে আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করছে তার মধ্যে রয়েছে;

১. আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার ভয়: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগে পরে যে কোনো সময়ে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে এমন শঙ্কার কথা আকাশে বাতাসে উঠছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে তারা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আতঙ্কিত নয়। এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়নি। আবার সরকারের পক্ষ থেকে কেউ কেউ বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্বিমুখী আচরণ করছে। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে একটি লাইনেই কথা বলা হচ্ছে তা হল আমরা বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়। বাংলাদেশের জনগণও তেমনই চায়। এর বাইরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের আলাদা করে বক্তব্য লক্ষ্য করা যায়নি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনের আগ মুহূর্তে বা নির্বাচনের পরবর্তীতে কী ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে বা আদৌ কোন নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে কি না, এ নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে নানা রকম আতঙ্ক এবং ভীতি কাজ করছে। এটি অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। 

২. কারচুপির ভয়: আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় ভয় হল নির্বাচনে কারচুপি। যদিও আওয়ামী লীগ সভাপতি এখন পর্যন্ত তার অবস্থানে অটুট রয়েছে। তিনি বলেছেন, কোন প্রার্থীকে জেতানোর দায়িত্ব আওয়ামী লীগ নেবে না। নির্বাচন হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই বার্তা সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই বার্তা অতি উৎসাহীরা এবং জয়ের জন্য মরিয়া স্বার্থপর নেতারা মেনে নেবেন কি না সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কারণ কিছু কিছু ব্যক্তি আছেন যারা দলের কথা চিন্তা করবেন না বরং যে কোনো মূল্যে নিজেরা বিজয়ী হতে চাইবেন। এই ধরনের ব্যক্তিদের কারণে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে কারচুপি হয় কি না, সেই আতঙ্ক আওয়ামী লীগের আছে। এ রকম ঘটনা ঘটলে সেই নির্বাচন আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা পাবে না বলে মনে করছেন অনেকে।

৩. ভোটার উপস্থিতি: আওয়ামী লীগের আরেকটি ভয়ের বিষয় হল ভোটার উপস্থিতি। আওয়ামী লীগ এবার নির্বাচনে নিজেদের জয়ের চেয়ে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে তা হল ভোটার উপস্থিতি যেন বেশি থাকে। এটি নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপি একটি ঠান্ডা লড়াই চলছে। আওয়ামী লীগ মনে করছে, ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ভোটার যদি ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয় তাহলে সেই নির্বাচন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পাবে। কিন্তু সব আসন ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ভোটার উপস্থিত থাকবে এমন নিশ্চয়তা আওয়ামী লীগ নিজেরাই পাচ্ছে না। কারণ ভোটারদের মধ্যে এক ধরনের অনীহা এবং উদাসীনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভোটাররা জানে যে নির্বাচনের ফলাফল কী হতে যাচ্ছে, কাজেই তাদের নিয়ে কোন উৎসাহ নেই। কাজেই ভোটার উপস্থিতি এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ এবং একটি বড় ভয়ের বিষয়ও বটে।

৪. আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি: এই নির্বাচনের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিটি হল সবচেয়ে বড়। এটি যতটা না জনগণের ভোটে নির্বাচন তার চেয়ে বেশি হলো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে নির্বাচন। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যদি এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয় তাহলে নতুন সরকার টেকসই হবে। আর যদি গ্রহণযোগ্যতা না পায় তাহলে পরে নানা রকম নিষেধাজ্ঞা আসবে। নানারকম অবরোধ দেওয়া হবে। এটি নতুন সরকারের জন্য আস্থা সঙ্কট তৈরি করবে। এই আতঙ্ক আওয়ামী লীগের মধ্যে রয়েছে।

৫. নির্বাচন পরবর্তী রাজনীতি: আওয়ামী লীগের ভয়ের আরেকটি বড় কারণ হল নির্বাচন পরবর্তী রাজনীতি। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যে জোটগত দলগুলো আছে জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলের শরিকরা আছে তারা নির্বাচনের পর ভোল পালটে ফেলতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। নির্বাচনে নানা রকম কারচুপির অভিযোগে তৃণমূল বিএনপি বা বিএনএম সরে যেতে পারে এমন গুঞ্জনও বাজারে রয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে যেন আওয়ামী লীগ একলা না হয়ে যায় সেটি আওয়ামী লীগের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ এবং ভয়ও বটে।

আওয়ামী লীগ   দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

এখন যুক্তরাষ্ট্রে অরুচি বিএনপির?

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২১ মে, ২০২৪


Thumbnail

কিছুদিন আগেও বিএনপি যুক্তরাষ্ট্র বলতে অন্ধ থাকত। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে ফোন আসলে বিএনপির নেতারা নাওয়া খাওয়া ভুলে ছুটে যেতেন। এমনকি কোনদিন সকালে মার্কিন দূতাবাসে প্রাতরাশ, রাতে নৈশভোজেও দেখা গেছে বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তারা অবতার হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশে গণতন্ত্র এনে দেবে, যুক্তরাষ্ট্রই এই সরকারের পতন ঘটাবে এমন একটা স্থির বিশ্বাস ছিল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। কিন্তু বিএনপির মধ্যে সেই মোহভঙ্গ ঘটেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনাগ্রহী বিএনপি। এটা যেন অনেকটা আঙুল ফল টকের মতো ঘটনা।

কদিন আগে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফর করে গেলেন। তিনি বিএনপি নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। এই সাক্ষাৎ নিয়ে বিএনপির মধ্যে এক ধরণের অভিমান। তারা বলছেন ডোনাল্ড লু তাদের কাছে কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় না। গত সোমবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে স্যাংশন দিয়েছে। এই স্যাংশনের ঘটনায় বিএনপির উল্লসিত হওয়ার কথা। কিন্তু বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ এক অনুষ্ঠানে বললেন সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা। তিনি বললেন, এটি আরেকটি বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। এই সব স্যাংশনের ব্যাপারে তাদের কোন আগ্রহ নেই, উৎসাহ নেই। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই স্যাংশন নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্য রাজনীতিতে তীব্র কৌতুকের সৃষ্টি করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন বাংলাদেশের ওপর নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছিল তখন বিএনপি নেতাদের উল্লাসের ছিল। তখন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন যে, এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রতি একটা উপহার। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্র সংহত হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেছিলেন। 

ভিসা নীতি ঘোষণার পরদিনই তিনি মার্কিন দূতাবাসে ছুটে গিয়েছিলেন। সেখানে মধ্যাহ্নভোজে মিলিত হয়েছিলেন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সাথে। সেখানেও তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার প্রশংসা করেছিলেন। এখন হঠাৎ কী হল? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তাদের অরুচি তৈরি হল কেন? 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছে, বিএনপি প্রত্যাশা করেছিল ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রুদ্র রূপ দেখাবে। বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। নির্বাচনকে অগ্রহণযোগ্য বলবে এবং এই নির্বাচনের যে সরকার গঠিত হয়েছে সেই সরকারকে স্বীকৃতি দেবে না। কিন্তু বাস্তবে এ সব কিছুই হয়নি। নির্বাচনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রীতিমতো ইউটার্ন নিয়েছে। তারা বলেছে যে, নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও তারা অংশীদারিত্বের সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চায়। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিবর্তন ইতিবাচক ভাবে নেয়নি বিএনপি। এখন তারা মনে করছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত যৌথভাবে বিএনপিকে ধোঁকা দিয়েছে। আর সেই কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপে তারা খুশি নন। কূটনৈতিক মহল মনে করেন যে, বিএনপি বা কাউকে ক্ষমতায় আনার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কখনোই কোনো তৎপরতা গ্রহণ করে না। প্রত্যেকটা দেশের তাদের একটা নিজস্ব নীতি বা কৌশল রয়েছে। বাংলাদেশের ব্যাপারেও তাদের সুনির্দিষ্ট একটি কর্মপরিকল্পনা রয়েছে। সেই কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবেই তারা যা করেছে। 

তবে গণতন্ত্র, সুশাসন, আইনের শাসন এবং মানবাধিকার সুরক্ষা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি আন্তর্জাতিক অঙ্গিকার। আর এই অঙ্গিকার পূরণে জন্য তারা বাংলাদেশে বিভিন্ন রকম অবস্থান গ্রহণ করেছিল। আর সেই অবস্থান বিএনপির পক্ষে বা বিপক্ষেও যেতে পারে। কাউকে খুশি করা বা কাউকে চাপে ফেলা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাজ নয়। রবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের স্বার্থের জন্য যেটিকে সঠিক বিবেচনা করে সেটি তারা করে থাকে। আর এখন যেহেতু বিএনপি মনে করছেন যে, শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ভর করে কোন কিছু করা যাবে না এ কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তাদের অরুচি তৈরি হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র   বিএনপি   মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আজিজের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় বিভ্রান্ত ফখরুল

প্রকাশ: ০৪:৫৫ পিএম, ২১ মে, ২০২৪


Thumbnail

সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এসেছে আরেকটা বিভ্রান্ত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা সবসময় বিভ্রান্ত হচ্ছি। এর আগে র‌্যাবের বিরুদ্ধে সংগঠন হিসেবে হয়েছে। পুলিশের ৯ জনের বিরুদ্ধে হয়েছে। তাতে কী তাদের ভয়ংকর যাত্রা বন্ধ হয়েছে? হয়নি।

মঙ্গলবার (২১ মে) রাজধানীর সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটেতে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। শফিউল আলম প্রধানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সভার আয়োজন করে জাগপা। সভায় সভাপতিত্ব করেন দলটির চেয়ারম্যান খন্দকার লৎফুর রহমান।

সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা সবাই জানেন আজকে খবর এসেছে সাবেক সেনাপ্রধানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। কেন? দুর্নীতি এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রভাবিত করা ও জনগণের বিশ্বাস ক্ষুণ্ন করা। এটা মাত্র একটা ঘটনা এসেছে।

তিনি আরো বলেন, আমরা বারবার বলেছি- আপনারা (আওয়ামী লীগ) ব্যবহার করেছেন রাষ্ট্রযন্ত্রকে। আপনারা ব্যবহার করার চেষ্টা করছেন সেনাবাহিনীকে, বিচারবিভাগ ও প্রশাসনকে। সারা দেশে একটা ত্রাস সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। ভয়ের রাজত্ব তৈরি করেছে।  

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফখরুল বলেন, নিজের ঘরকে যদি নিজে সামলাতে না পারি, অন্য কেউ সামাল দেবে না। নিজের শক্তি নিয়ে দাঁড়াতে হবে, নিজের শক্তি দিয়ে তাদের (আওয়ামী লীগ) পরাজিত করতে হবে।

দুনিয়া বলছে বাংলাদেশের বর্তমান শাসকগোষ্ঠী আকণ্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত— এমনটা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন তারা এটা অস্বীকার করে। বলে ,তারা দুর্নীতি করে নাই।

এখনও বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বিএনপির হাজারের বেশি নেতাকর্মী কারাগারে রয়েছেন দাবি করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, আমাদের দেশনেত্রী কারারুদ্ধ। আমরা বারবার তাকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে পাঠানোর দাবি করছি। কিন্তু সরকার দিচ্ছে না।

উল্লেখ্য, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদকে ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট, ফরেন অপারেশন অ্যান্ড রিলেটেড প্রোগ্রামস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস অ্যাক্টের ৭০৩১ (সি) ধারার আওতায় অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।

স্থানীয় সময় সোমবার (২০ মে) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে একথা জানানো হয়। এই পদক্ষেপের ফলে আজিজ আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যরা সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন বলেও জানানো হয়েছে।

আজিজ আহমেদ   মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

অবশেষে ১৪ দলের বৈঠক

প্রকাশ: ০৮:০৬ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের বৈঠক ডাকা হয়েছে আগামী বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সন্ধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন জোটের প্রধান শেখ হাসিনা।


নির্বাচনের প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস পরে প্রধানমন্ত্রী জোটসঙ্গীদের নিয়ে বসতে যাচ্ছেন। তবে এবারের বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হতে পারে সে বিষয়ে জানেন না বলে দাবি করেছেন শরিক দলগুলোর নেতারা।  

এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আসন বণ্টন প্রশ্নে গত ৪ ডিসেম্বর বৈঠকে বসেছিল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটে। 





১৪ দল   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ওবায়দুল কাদেরের হ্যাটট্রিক

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইতোমধ্যে তিনি একটি হ্যাটট্রিক করেছেন। টানা তিন তিনবার আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র যিনি আওয়ামী লীগের তিনবার বা তার বেশি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এখন ওবায়দুল কাদেরও আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। এবার তিনি আরেক রকম হ্যাটট্রিক করলেন। 

ওবায়দুল কাদের গত এক মাসে তার তিনটি নীতি নির্ধারণী বক্তব্য ধরে রাখতে পারলেন না। তার এই বক্তব্যগুলোর উল্টো ফল হল। এবং হিতে বিপরীত ফলাফলের দিক থেকে তার বক্তব্যগুলো হ্যাটট্রিক করেছে। ওবায়দুল কাদের উপজেলা নির্বাচনের আগে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের কোনো আত্মীয় স্বজন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। উপজেলা নির্বাচনে যদি কেউ প্রার্থী হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ রকম বক্তব্য তিনি তিনবার দিয়েছিলেন। কিন্তু তার বক্তব্যে সাড়া দিয়ে কেউই উপজেলা নির্বাচনে তাদের আত্মীয়স্বজনকে প্রার্থিতা থেকে সরিয়ে দেয়নি। একমাত্র প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক তার শ্যালককে উপজেলা নির্বাচন থেকে তার প্রার্থীতা প্রত্যাহারের সমর্থ হয়েছিলেন। কিন্তু নোয়াখালীর একরামুল করিম চৌধুরী, ড. রাজ্জাক কিংবা শাহজাহান খান কেউই তাদের পুত্রদেরকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে আনেননি। 

এরপর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আত্মীয় স্বজনদের ব্যাপারে তার ভিন্ন রকম অবস্থা ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, পরিবার বলতে শুধুমাত্র স্ত্রী, পুত্র এবং স্বামী বোঝাবে। তিনি এটাও বলেন যে, যারা দীর্ঘদিন রাজনীতি করেছে, আগে থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান আছে, তারা কেন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবে? এর ফলে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য আর ধোপে টেকেনি। পরবর্তী পর্যায়ে কেউই ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য আমলে নেননি। ওবায়দুল কাদেরও আত্মীয় স্বজনদের ব্যাপারে যে রুদ্রমূর্তি অবস্থানে ছিলেন সেখান থেকে সরে আসেন। 

দ্বিতীয় হিতে বিপরীত ঘটনা ঘটে মেট্রোরেলে ভ্যাট না দেওয়ার ঘটনা। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ যখন এনবিআর-এর কাছে আবারও ভ্যাট প্রত্যাহারের জন্য সুপারিশ করেছিল, তখন এনবিআর তা নাকচ করে দেয় এবং ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কিন্তু এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন এবং এই ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্তকে তিনি অযৌক্তিক বলে মনে করেন। এর পরপরই আসন্ন অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নে এনবিআর মেট্রোরেলের ওপর ১৫ শতাংশ প্রস্তাবের সুপারিশ করেছে। 

গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে আবারও একই রকম বক্তব্য রেখেছেন। তিনি ভ্যাট আরোপের বিরোধিতা করে এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করবেন বলে জানিয়েছেন। কিন্তু ওবায়দুল কাদের এক মাস আগে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন সেই বক্তব্য এনবিআর আমলে নেয়নি। 

সর্বশেষ ঘটনা ঘটল ঢাকায় অটোরিকশা নিয়ে। ওবায়দুল কাদের আকস্মিকভাবে ঘোষণা করেছিলেন যে, ঢাকায় অটোরিকশা চলবে না। গতকাল থেকে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী অটোরিকশা ঢাকায় চলাচল বন্ধ হয়েছিল। এ নিয়ে অটোরিকশা চালকরা রাজপথে নেমেছিল। গতকাল বিভিন্ন স্থানে তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। কোথাও কোথাও সহিংসতার ঘটনাও ঘটে। আজ মন্ত্রিপরিষদ সভায় অনির্ধারিত ভাবে বিষয়টি আলোচিত হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সরাসরি এর বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেন। তিনি বলেন যে, বিকল্প ব্যবস্থা না করে কেন অটোরিকশা প্রত্যাহার করা হবে। দরিদ্র মানুষেরা তারা কী করে খাবে। এরপর তিনি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে নির্দেশনা দেন। মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক থেকে বেরিয়ে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদেরকে জানান, ঢাকায় অটোরিকশা থাকবে, এটি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা। তার কথার হিতে বিপরীতের ঘটনা এটি ঘটল তৃতীয়বার।

ওবায়দুল কাদের   আওয়ামী লীগ   সাধারণ সম্পাদক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

কেজরিওয়ালে উজ্জীবিত বিএনপি?

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।

অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসলে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদীর দিকে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান বলেও আম আদমি পার্টির এই নেতা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আর এই বক্তব্য নিয়েই বিএনপির মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির নেতারা শুধু ইউটিউবেই এটি রিপোস্ট করেনি, তারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারেও এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ভারত বিরোধী প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভারতের সমালোচনা করা এবং ভারত এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে এমন বক্তব্য বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল। যদিও ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বার্তা দিয়েছেন। ভারতের অন্য একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসও আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান সরকারের সমর্থক। বিজেপি গত এক দশকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এরকম অবস্থায় ভারতের নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যত্যয় হবে না বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।

এর মধ্যে আম আদমি পার্টির বক্তব্য নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস নিয়ে অনেকেই নানারকম টীকা-টিপ্পনি কেটেছেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, এর আগে যখন কংগ্রেসকে হারিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন তখনও বিএনপির মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি নেতারা মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। তাদের ধারণা ছিল যে, কংগ্রেস চলে গেলেই আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, বিজেপির সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এখন কেজরিওয়ালের নির্বাচনের মাঠের বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপি আশায় বুক বেঁধে আছে। মুখে মুখে ভারত বিরোধীতা করলেও ভারতের অনুগত এবং ভারতের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য বিএনপি কম চেষ্টা করেনি।

আর এখনও বিএনপি যে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় তার প্রমাণ পাওয়া গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্যকে নিজেদের দলের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেন যে, একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক বক্তব্য, আর ক্ষমতায় এসে তার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড- দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেউলিয়া রাজনীতির কারণে বিএনপি সবসময় অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে কেজরিওয়ালের বক্তব্য বিএনপির ইউটিউবে ছাড়ার মধ্য দিয়ে সেই দেউলিয়াত্ব আরেকবার প্রকাশিত হল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।


বিএনপি   মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর   অরবিন্দ কেজরিওয়াল   রুহুল কবির রিজভী  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন