দ্বাদশ জাতীয়
সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জয়জয়কার। সংখ্যার বিচারে স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসনে জয়ী হয়েছেন। সরকারের মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যসহ ক্ষমতাসীন দলের
বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা নিজ দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে ধরাশায়ী হয়েছেন।
হবিগঞ্জে প্রতিমন্ত্রী
মাহবুব আলীকে এক লাখ ভোটে পরাজিত করেছেন আলোচিত তরুণ সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ব্যারিস্টার
সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। টানা দশ বছর সংসদ সদস্য ও পাঁচ বছর মেয়াদে মন্ত্রী পরিষদে থাকা
এই নেতাকে পরাজিত করে আবারও আলোচিত হলেন সুমন।
মাদারীপুর-৩
আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের কাছে হেরে গেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক
ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী আবদুস সোবহান মিয়া (গোলাপ)। দুর্নীতি, প্রভাব বলয় তৈরি
ও অনিয়মের নানা অভিযোগের কারণে জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছিল গোলাপের। অন্যদিকে স্থানীয় আওয়ামী
লীগ নেতা-কর্মীদের পাশে নিয়ে নীরব বিপ্লব ঘটিয়েছেন ঈগল প্রতীকে লড়া তাহমিনা।
মানিকগঞ্জ-২
আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর কাছে হেরে গেছেন তিনবারের এমপি
কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম।
নেত্রকোনা-৩
আসনে আওয়ামী লীগের ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী হিসেবে খ্যাত বর্তমান সংসদ
সদস্য অসীম কুমার উকিল হেরে গেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের ইফতিকার উদ্দিন
তালুকদারের কাছে।
ফরিদপুর-৩ আসনে
ঈগল প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন শিল্পপতী এ কে আজাদ। নিকটতম প্রতিদ্বদন্দ্বী শামীম হকের
বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রচারণায় হামলা-হুমকির অভিযোগ ছিল এ কে আজাদের কর্মী সমর্থকদের।
তবে সব কিছু মোকাবিলা করেই শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি হাসলেন আজাদ।
চট্টগ্রাম-১৫
আসনে প্রবল প্রতাপশালী সংসদ সদস্য হিসেবে পরিচিত আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ
নেজামউদ্দিন নদভী হেরে গেছেন তারই একসময়ের ঘনিষ্ঠ আব্দুল মোতালেবের কাছে। ‘জামায়াত
তকমা’ ও নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে স্থানীয় অনেক আওয়ামী
লীগ নেতাই ছেড়ে যান নদভীকে। আর তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নির্বাচনের মাঠে নেমে জয়ের তুলে
আনলেন সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব।
পল্লী উন্নয়ন
ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যও এবার ভোটে জিততে পারেননি। যশোর-৫ আসনের স্বতন্ত্র
প্রার্থী ইয়াকুব আলীর কাছে হেরেছেন তিনি।
মুন্সিগঞ্জ-৩
আসনে আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস হেরেছেন কাঁচি প্রতীকে
লড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ ফয়সালের কাছে।
টাঙ্গাইল-৪
আসনে আওয়ামী লীগের মো. মাজহারুল ইসলাম তালুকদারকে প্রায় ১৬ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন
ট্রাক প্রতীকে লড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আলোচিত সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী।
এছাড়া গত দুটি
নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় এবারও ফরিদপুর-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান চৌধুরী
নিক্সনের কাছে হেরেছেন নৌকার প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহ।
এবারের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছে হেরেছেন তিন প্রতিমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের অন্তত ১৯ এমপি।
স্বতন্ত্র নির্বাচন আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাতীয় সংসদ নির্বাচন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।