এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমলাদের চমক হবে এমনটি অনেকে মনে করেছিল।
সরকারের সবক্ষেত্র দখলের পর আমলারা এবার জাতীয় সংসদও দখল করে নেবে এমনটি অনেকে ধারণা
করেছিলেন। কিন্তু জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এবং নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হবার পর দেখা
যাচ্ছে যে, সংসদে আমলারা অনেকটা কোণঠাসা। আমলাদের প্রভাব আগের চেয়ে আরও কমেছে বলেই
মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এবার জাতীয় সংসদে বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট আমলা নির্বাচিত
হয়েছেন এবং তারা মন্ত্রী হবেন, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারক হবেন এমনটি মনে করা
হয়েছিল।
১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপির টিকিটে দুইজন সিনিয়র আমলা নির্বাচিত
হয়েছিলেন। এদের মধ্যে একজন হলেন, কেরামত আলী অন্যজন এম.কে. আনোয়ার। দু’জনকেই বিএনপি
গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী বানিয়েছিলেন। এবার আওয়ামী লীগের টিকেটে বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট আমলা
মনোনয়ন পেয়েছিলেন এবং ধারণা করা হচ্ছিল তারা দলের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
কিন্তু আমলারা এখন শুধু সরকারেই গুরুত্বহীন না, সংসদেও কোণঠাসা
অবস্থায় রয়েছেন। যে সমস্ত আমলারা এবার জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের টিকিট পেয়ে নির্বাচিত
হয়েছেন, তদের মধ্যে আছেন আবুল কালাম আজাদ, যিনি প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব এবং
প্রধানমন্ত্রীর এসডিজি বিষয়ক সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জামালপুরের আসন
থেকে নাটকীয়ভাবে নির্বাচন করেন এবং জয়ী হন। অনেকে মনে করেছিল, তাকে মন্ত্রী বানানোর
জন্যই জামালপুরের আসন থেকে নির্বাচন করিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু মন্ত্রিসভা গঠনের
পর আবুল কালাম আজাদের জায়গা হয়নি সেখানে। বরং তাকে সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে।
সংসদে তিনি তেমন তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন না। বিশেষ করে ব্যরিস্টার সুমন কিংবা
স্বতন্ত্ররা যেভাবে সংসদে আলো ছড়াচ্ছেন, সে তুলনায় আবুল কালাম আজাদ অনেকটাই ম্রিয়মান।
এবার নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েছিলেন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সাবেক
চেয়ারম্যান মোঃ সাদিক। অনেকে মনে করেছিল, তাকেও মন্ত্রী করা হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত
তিনি মন্ত্রী হন নি। জাতীয় সংসদেও তাকে খুব একটা ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে না। চুপচাপ রুটিন
দায়িত্ব পালন করছেন তিনি সংসদে।
সংসদে ২য় বারের মত এমপি নির্বাচিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর সচিব সাজ্জাদুল
হাসান। তিনি মন্ত্রী হবেন কি হবেন না, সে নিয়ে তেমন কোন আলোচনা ছিল না, তবে জাতীয় সংসদে
সাজ্জাদ হোসেন এখনো বড় ধরনের কোন রেখা-পাত করতে পারেননি। তার উপস্থিতি তিনি সেভাবে
জানান দিতে পারেননি।
এবার সংসদ সদস্য হিসেবে জায়গা পেয়েছেন সাবেক সচিব সৌরেন্দ্র নাথ
চক্রবর্তী। কিন্তু তিনিও জাতীয় সংসদে আলো ছড়াতে পারেননি। তাকে খুব একটা উজ্জ্বল দেখা
যাচ্ছে না।
সংসদে যে সমস্ত আমলারা দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন, তারা সংসদে যাচ্ছেন
আসছেন কিন্তু তাদেরকে কোন স্ব-প্রতিভ বা বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করা কিংবা যেকোন প্রসঙ্গে
কথা বলার ব্যাপারে আগ্রহী দেখা যাচ্ছে না। প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির উপর ধন্যবাদ
প্রস্তাবেও আমলারা এমন কোন বক্তব্য রাখতে পারেননি যাত তাদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষিত হয়।
আমলারা সংসদে কোণঠাসা অবস্থাতেই রয়েছেন।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।