জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান পুর্নব্যক্ত
করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, বাংলাদেশের ৭ই জানুয়ারির
নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ ছিল কিন্তু এটা সত্ত্বেও বাংলাদেশের সঙ্গে তারা সম্পর্ক এগিয়ে
নিয়ে যাবে। শুধুমাত্র ওয়াশিংটন থেকে যে এ বার্তা দেওয়া হচ্ছে যে তা না। নিজের দায়িত্বপালনের
২ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিভিন্ন গণমাধ্যমে লেখা এক কলামে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি.
হাস বলেছেন, বাংলাদেশের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং সেখানে
বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ত্রুটি, গণমাধ্যমের অধিকার হরণসহ বিভিন্ন প্রসঙ্গ আনলেও পিটার
হাস সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তাটির উপরই জোড় দিয়েছেন।
প্রশ্ন হলো যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কেন বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের
বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকলো না?
যদিও অনেকে মনে করছেন, ভারতের প্রভাবের কারণেই শেষপর্যন্ত মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান থেকে সরে এসেছে। কিন্তু একাধিক কূটনৈতিক সূত্র মনে করছে যে,
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শুধুমাত্র ভারতের কারণেই তাদের কৌশল পরিবর্তন করবে না। মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির নিজস্ব নীতি, এজেন্ডা ও কৌশল রয়েছে। তারা যেকোন নীতি,
এজেন্ডা এবং কৌশল বাস্তবায়ন করে তাদের স্বার্থ বিবেচনা করে।
বিভিন্ন কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে সমস্ত
দেশে আগ্রাসন চালিয়েছে, যে সমস্ত দেশে সরকারকে বদল করেছে বা ক্ষমতাচ্যুত করেছে। প্রত্যেকটি
দেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগে একটি বিকল্প চূড়ান্ত করেছিল। বিকল্প চূড়ান্ত না করে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোথাও ক্ষমতার পালাবদল ঘটায় না।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে যেটি হয়েছে তা হল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বা প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার বিকল্প তারা তৈরি করতে পারেননি। আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনার বিকল্প হিসাবে
দু’টি সম্ভাব্য বিকল্প তাদের কাছে ছিল। একটি হলো বিএনপি অন্যটি হলো সুশীল সমাজ। বিএনপি
নিজেও এখন ক্ষমতায় আসতে আগ্রহী না। বিএনপি সবসময় মনে করে যে, কোন কারণে যদি আওয়ামী
লীগ ক্ষমতা ছেড়ে দেয় বা ক্ষমতা চলে যায় তাহলে মাঝখানে একটি অন্তর্বর্তীকালীন একটি সরকার
রাখবে। কারণ, বিএনপির এখন যে অবস্থা তাতে বিএনপির কোন নীতি নির্ধারকই সরকার প্রধান
হওয়ার যোগ্য না। বিশেষ করে দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এবং লন্ডনে পলাতক ভারপ্রাপ্ত
চেয়ারম্যান তারেক জিয়া দু’জনেই নির্বাচনের অযোগ্য। আর এটি বিএনপি ভালো করেই জানে
তাই বিএনপি সরাসরি আওয়ামী লীগকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায় না। এই কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
বিএপির ব্যাপারে আগ্রহী না।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের জায়গা ছিল সুশীল সমাজ এবং এখানে
তারা ড. মোঃ ইউনুসের নেতৃত্বে একটি সুশীল মেরুকরণ করতে চেয়েছিল বলেই অনেকেই মনে করে।
যেমনটি তারা করেছিল এক এগারোর সময়। কিন্তু এক এগারোর অভিজ্ঞতার কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
সুশীলদের উপর নির্ভরতার উপর থেকে সরে এসেছে বলে বিভিন্ন মহল মনে করে।
এক এগারোতে মার্কিন প্রভাবের কারণেই সেনা সমর্থিত সুশীল সমাজ ক্ষমতা
গ্রহণ করেছিলো। কিন্তু সে ক্ষমতা গ্রহণের ফলাফল ইতিবাচক হয়নি। বরং সুশীলরা যে দায়িত্ব
পালনে কতটুকু অযোগ্য ও ব্যর্থ সেটি প্রমাণিত হয়েছে। সে অভিজ্ঞতা থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল ঘটিয়ে কোন সুশীলদেরকে আনতে চায়নি। কারণ, এরকম সঙ্কটময় সময়
এবং রাজনীতির কঠিন সন্ধিক্ষণে সুশীলরা এসে শেখ হাসিনার বিকল্প হতে পারবেন না।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তারা দেখেছে যে, আওয়ামী লীগ নিয়ে অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে। আওয়ামী লীগ নিয়ে অনেক
সমালোচনা এবং অভিযোগও রয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের মধ্যে শেখ হাসিনার ব্যাপারে একটি
ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে এবং শেখ হাসিনা ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়। আর এ কারণেই শেষ পর্যন্ত
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি বা সুশীলদের উপর নির্ভর করতে পারেনি।
যুক্তরাষ্ট্র ড. ইউনুস পিটার ডি হাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।