ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির কাউন্সিল নিয়ে বেগম জিয়া-তারেকের দুই মত

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির কাউন্সিল হবে কি হবে না- এই নিয়ে বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়ার মধ্যে প্রকাশ্য বিরোধ দেখা দিয়েছে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে অসুস্থ অবস্থায় ফিরোজায় অবস্থান করছেন। নিজেকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু এর মধ্যেই দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একাধিকবার তার সঙ্গে দেখা করেছেন এবং দলের কিছু নীতি নির্ধারণী বিষয় নিয়ে তার মতামত জানতে চেয়েছেন। 

সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মহাসচিবের দায়িত্ব ছাড়ার জন্য বেগম খালেদা জিয়ার কাছে গিয়ে অনুরোধ করেন। বেগম খালেদা জিয়া তাকে অপেক্ষা করার পরামর্শ দেন এবং দ্রুত একটি কাউন্সিল করার জন্য নির্দেশনা দেন। কিন্তু লন্ডনে পলাতক বেগম খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক জিয়া এই পরামর্শে সন্তুষ্ট হতে পারেননি। তিনি এখনই কাউন্সিল করার পক্ষে নন বলেই জানা গেছে। 

গত মঙ্গলবার রাতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দ্বিতীয়বারের মতো বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং সেখানে তিনি দলের অবস্থা, সাংগঠনিক বিভিন্ন পদ পূরণ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কথা বলেন বলে জানা গেছে। আর এই সমস্ত বিষয় উত্থাপনের প্রেক্ষিতে বেগম খালেদা জিয়া দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংক্ষিপ্ত আকারে হলেও একটি কাউন্সিল অধিবেশন করার জন্য নির্দেশনা দেন। সেই নির্দেশনা নিয়ে গতকাল লন্ডনে পলাতক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কিন্তু লন্ডনে পলাতক বিএনপির এই নেতা এই মুহূর্তে কাউন্সিল করার বিরুদ্ধে মত দিয়েছেন বলে জানা গেছে। বরং তিনি কাউন্সিল ছাড়াই বিভিন্ন শূন্য পদ পূরণ এবং কমিটি রদবদলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন বলে জানা গেছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, তারেক জিয়া মনে করেন যে, এসময় দল সরকার বিরোধী আন্দোলনে ব্যস্ত। কাজেই এখন কাউন্সিল করাটা যৌক্তিক এবং সময়োচিত হবে না। তবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কাউন্সিলের মাধ্যমে সংগঠন পুনর্বিন্যাস করা যাবে এবং সংগঠনকে সঠিকভাবে পরিচালনা করার ক্ষেত্রে নেতাকর্মীদের মতামতও জানা যাবে। তবে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া বলেছেন, কর্মীদের মতামত জানার জন্য কাউন্সিলের দরকার নেই। তিনি সার্বক্ষণিকভাবে কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন বলে জানা গেছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানাচ্ছে, তারেক জিয়া কাউন্সিল ছাড়াই তার পছন্দের লোকজনকে বিভিন্ন পদে বসাতে চান এবং এই কর্মটি শেষ হওয়ার পর পরবর্তীতে কাউন্সিলের মাধ্যমে তা অনুমোদন করিয়ে নেওয়াই তার মতামত। 

নানা কারণে তারেক জিয়া এখন কাউন্সিলের বিরুদ্ধে অবস্থান করছেন। বিশেষত ২০১৮ সালে তার নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত, আবার ২০২৪ সালের নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত, দলের মধ্যে ঢালাও বহিষ্কার এবং অবিবেচকের মতো অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা, ২৮ অক্টোবর হঠাৎ করে রাজনৈতিক কর্মসূচি ইত্যাদি নানা বিষয় নিয়ে তৃণমূলের মধ্যে প্রশ্ন আছে। যদি দলের কাউন্সিল ডাকা হয় তাহলে এই প্রশ্নগুলো প্রকাশ্যে উত্থাপিত হবে এবং তারেক জিয়ার নেতৃত্ব এবং কর্তৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।

দলের ভিতরে অনেকেই এখন অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চার গুরুত্ব দিচ্ছেন। তারা মনে করছেন, একটি সুনির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্ম থাকা উচিত। দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সকলের মতামত গ্রহণ করাও বাঞ্ছনীয়। কিন্তু বাস্তবে এ সব কিছুই হচ্ছে না। আর এই কারণেই কাউন্সিলের মাধ্যমেই বিষয়গুলো সামনে আসতে পারে। সেক্ষেত্রে তারেক জিয়ার ক্ষমতা খর্ব হতে পারে, তার অনেক সিদ্ধান্ত সমালোচিত হতে পারে। তাই তিনি কাউন্সিল না করে একটি অনুগত নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন। কাউন্সিলের মাধ্যমে নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা হলে কমিটি বাণিজ্য খুব একটা ভালো মত সম্ভব না। তারেক জিয়ার কাউন্সিল না করার পিছনে এটিও একটি বড় কারণ। কারণ এখন যদি বিএনপিতে স্থায়ী কমিটির সদস্য বা অন্য পদ গুলো পূরণ করা হয় তাহলে একক ভাবে তারেক জিয়া মোটা অংকের টাকা পাবেন। কিন্তু কাউন্সিল করা হলে বিএনপির কর্মীদের মতামতকে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। সেক্ষেত্রে তারেক জিয়ার যে অর্থ উপার্জনের এজেন্ডা তা হোচট খেতে পারে। এ কারণে তিনি কাউন্সিল করার পক্ষে না। তবে খালেদা জিয়া যেহেতু কাউন্সিল করার পক্ষে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কাজেই বিএনপি শেষ পর্যন্ত কি সিদ্ধান্ত নয় সেটিই এখন দেখার বিষয়।
 

বিএনপি   কাউন্সিল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিতে গণপদত্যাগের প্রস্তুতি

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

ঈদের মধ্যেই বিএনপিতে নাটক জমে উঠেছে। কোরবানির ঈদে বিভিন্ন নেতাকে কোরবানি দেওয়ার প্রতিবাদে বিএনপি এখন টালমাটাল। ক্ষোভে ফেটে পড়ছে বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতৃবৃন্দ। বিশেষ করে যারা রাজপথে থাকেন না, বিভিন্ন টকশোতে যান, সন্ধাবেলা তারেক জিয়ার কাছে সত্য মিথ্যা বানিয়ে বিভিন্ন রকম কথাবার্তা বলেন, চাটুকারিতা করেন, নগদ অর্থ প্রেরণ করেন তাদেরকেই দলে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে রাজপথের কর্মীদেরকে মূল্যায়ন করা হয়নি- এমন বক্তব্য এখন বিএনপির টেবিলে টেবিলে। 

বিএনপির কার্যালয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন আড্ডাতে বিএনপির নেতৃবৃন্দদের একটিই কথা চাটুকারিতা, সংস্কারপন্থীরা এবং টকশোতে কথা বলা ব্যক্তিদেরকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। যাদের সাথে সরকারের গোপন সম্পর্ক রয়েছে, তারাই আবার টকশোতে যায় এবং এই টকশোর মাধ্যমে তারা একটা পরিচিতি পেয়েছে। এই সমস্ত ব্যক্তিদেরকে দলের নেতৃত্বে সামনে আনা হয়েছে। এরা রাজপথে বড় ধরনের আন্দোলন করার কোনো যোগ্যতা রাখেনা বলেও তৃণমূলের নেতৃবৃন্দ মনে করছেন। আর এর ফলে বিএনপিতে এখন গণ পদত্যাগের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। অনেকে বিএনপি থেকে পদত্যাগের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন বলে জানা গেছে। 

ইতিমধ্যে বিএনপির সাংগঠনিক বিষয়ে কঠোর অবস্থান গুলো হালকা হয়ে গেছে। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। কিন্তু এবার তারেক জিয়ার দেওয়ার এই হুমকিতে ভয় পাননি বিএনপির মাঠের নেতারা। তারা তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছে এবং এদের মধ্যে থেকে অন্তত ৩৭ জন বিভিন্ন উপজেলার চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। আর এর ফলে তারেক জিয়ার যে সমস্ত নির্দেশ এবং হুমকি তা অকার্যকর হয়ে পড়েছে।

উপজেলা নির্বাচনের পথ ধরেই এবার বিভিন্ন যে কমিটিগুলো বাতিল করে দেওয়া হয়েছে সেই কমিটিগুলো বাতিল নিয়েও বিএনপিতে এখন উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপির অনেক নেতা মনে করছেন যে, এভাবে কমিটি বাতিল করার ফলে দলের দীর্ঘদিনের আন্দোলন সংগ্রাম করা নেতাকর্মীদেরকে অপমান করা হয়েছে। তারেক জিয়ার যদি আন্দোলনের ব্যাপারে আগ্রহী থাকত তাহলে তিনি ঝুঁকি নিয়ে দেশে আসতেন। 

গতকাল বিএনপির নয়াপল্টনের কার্যালয়ে তারেক জিয়া দেশে আসুন, আন্দোলনে নেতৃত্ব দিন বা বিদেশ থেকে নেতৃত্ব দেওয়া সম্ভব নয়- এমন পোস্টার এবং স্লোগান দেখা গেছে। এটি নিয়ে বিএনপির নেতৃবৃন্দ বিব্রত হন। পরবর্তীতে কয়েকজন নেতার হস্তক্ষেপে এই সমস্ত পোস্টার এবং ব্যানারগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে বিএনপির অধিকাংশ নেতৃবৃন্দের মনের কথা এটি। বিএনপির বিভিন্ন জেলা এবং উপজেলার নেতৃবৃন্দ এখন পদত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছে। 

ছাত্রদলের যে কমিটি বিলুপ্ত হয়েছে সে বিলুপ্ত কমিটির অন্তত ৫০ জন পদত্যাগপত্র লিখে ফেলেছেন এবং তারা আজকালের মধ্যে এই পত্রত্যাগ জমা দেবেন বলে জানা গেছে।

যুবদলের যারা দায়িত্ব পালন করছিলেন তাদের সাথে ন্যূনতম সৌজন্যতা না দেখিয়ে তাদের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। তারাও দল থেকে সরে দাঁড়াবেন বলে আলাপ আলোচনা করছেন। দল থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণের একাধিক নেতা। সব মিলিয়ে বিএনপিতে এখন গণপদত্যাগের মহড়া চলছে, যে কোন সময় গণপদত্যাগের বিস্ফোরণ ঘটবে দলটিতে। আর এর প্রধান কারণ হলো তারেক জিয়ার স্বেচ্ছাচারীতা, দলের গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে একক ভাবে কমিটি গঠন এবং কমিটি বাতিল ইত্যাদি স্বৈরচারী সিদ্ধান্ত। বিএনপির এই গণপদত্যাগ দলটিকে কোথায় নিয়ে যাবে সেটি এখন দেখার বিষয়।

বিএনপি   গণপদত্যাগ   তারেক জিয়া   কমিটি বাতিল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে শূন্যপদে কারা আসছে

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম শূন্যপদ পূরণ নিয়ে নানামুখী আলাপ আলোচনা শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অন্তত দুজনকে ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, তাদের পদোন্নতি হচ্ছে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের পদ নিয়ে এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নতুন করে আলাপ আলোচনা চলছে। আগামী ২৩ জুন দলটির ৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। আর এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর পরপরই আওয়ামী লীগ তাদের সাংগঠনিক বিষয়ে মনোযোগ দেবে। দলের ভেতর নতুন করে শুদ্ধি অভিযান শুরু হবে। যারা দলের ভেতর বিভক্তির সৃষ্টি করছে, কোন্দল তৈরি করছে  তাদেরকে শেষবারের মতো সতর্ক করা হবে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় কমিটির শূন্যপদ পূরণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম শূন্যপদে কারা আসছেন—এ নিয়ে বিভিন্ন রকমের আলাপ আলোচনা শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের মধ্যে যারা অতীতে বিভিন্ন সময়ে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, এবার নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন তাদের কাউকে কাউকে প্রেসিডিয়ামে আনার বিষয়টি নিয়ে ভাবা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেলের নাম আলোচনায় আছে। 


আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অন্তত দুদিন তার নিয়মিত ব্রিফিংয়ের আগে নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় বলেছেন যে, বিএম মোজাম্মেলের পদোন্নতি হচ্ছে। তবে কী পদোন্নতি হচ্ছে সে সম্পর্কে তিনি কিছু বলেননি। এখান থেকেই ধারণা করা হচ্ছে যে, প্রেসিডিয়ামে শূন্যপদে হয়তো তাকে আনা হতে পারে। 


তবে এ ব্যাপারে ভিন্নমতও রয়েছে, যেহেতু আওয়ামী লীগের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এবার কোন কিছুই পাননি। হুইপ, মন্ত্রিত্ব কিংবা সংসদীয় কমিটির সভাপতি হিসেবেও তাকে রাখা হয়নি। সাতবারের নির্বাচিত এই এমপির এই অপাংক্তেয় অবস্থায় থাকাটাকে অনেকে বিস্ময়কর মনে করছে। এজন্য অনেকের ধারণা আওয়ামী লীগের এই ত্যাগী এবং পরীক্ষিত নেতাকে হয়তো প্রেসিডিয়ামে আনা হতে পারে। তবে কারও কারও মতে, দুর্দিনে আওয়ামী লীগের আরেক গুরুত্বপূর্ণ সাথী বিশেষ করে আওয়ামী লীগের কঠিন সময়ে দলের জন্য অবদান রাখা নেতা আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী নাসিম প্রেসিডিয়ামে আসতে পারেন। এর আগে তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছিলেন। এবার ফেনীর একটি আসন থেকে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রেসিডিয়ামে আসার সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে নোয়াখালী অঞ্চলে যে রাজনৈতিক বিভক্তি অনৈক্য এবং কোন্দল তার প্রেক্ষিতে আলাউদ্দিন নাসিমকে প্রেসিডিয়ামে আনার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে বলে কেউ কেউ মনে করেন। কারণ ওই অঞ্চলে তার একটা আলাদা গ্রহণযোগ্যতা আছে। 

আবার গত নির্বাচনে মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে মহিলা কোটায় সংসদ সদস্য হওয়া মুন্নুজান সুফিয়ানের নাম নিয়েও কথাবার্তা বলা হচ্ছে। তবে অনেকের ধারণা মুন্নুজান সুফিয়ান যেহেতু বয়সে প্রবীণ এবং তার অতীত অবদানের কথা বিবেচনা করে তাকে প্রেসিডিয়ামে আনা হতে পারে। 


আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, প্রেসিডিয়ামে বা মন্ত্রিসভায় কে আসবে না আসবে ইত্যাদি সিদ্ধান্তগুলো একান্তই আওয়ামী লীগ সভাপতির নিজস্ব সিদ্ধান্ত। আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহীর বৈঠকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা তাকেই দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, এর আগে কাউন্সিলের বাইরে অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এবং মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এখনও প্রেসিডিয়ামে দুটি পদ শূন্য রয়েছে বলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন।

আওয়ামী লীগ   মির্জা আজম   ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

তারেক তাণ্ডবে বিভক্ত বিএনপি, হতাশ খালেদা

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ১৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

তারেক জিয়া এখন বিএনপিতে রীতিমতো তাণ্ডব শুরু করেছেন। দলের ভেতর এখন চলছে একধরনের অজানা আতঙ্ক। কে কখন দল থেকে বাদ পড়বেন, কোন কমিটি কখন বিলুপ্ত হবে—এ নিয়ে দলের ভেতর তীব্র অস্থিরতা বিরাজ করছে। আর এই অস্থিরতায় বিএনপির নেতারা বিভক্ত হয়ে পড়েছে। 

বিএনপির কোন নেতা মনে করছেন যে, তারেক জিয়া যেটা করেছেন এটা দরকার ছিল। বিএনপিকে গোছানো এবং আন্দোলনের গতি আনার জন্য এর কোন বিকল্প নেই। তবে অন্য নেতারা মনে করছেন, এটি সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক অন্যায় এবং এভাবে দলে স্বৈরচারী কায়দায় রদবদল করলে বা কমিটি বাতিল করলে দলের অস্তিত্ব সঙ্কটের মধ্যে পড়বে। এ নিয়ে বিএনপি এখন স্পষ্টতই দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে। দলের ভেতর স্থায়ী কমিটির সিংহভাগ সদস্যই তারেক জিয়ার এই তাণ্ডবের বিরুদ্ধে। 


তবে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ কয়েকজন নেতা এই সিদ্ধান্তের পক্ষে। তারা মনে করছেন যে, যারা দলের জন্য কাজ করছে, যারা দলের জন্য সময় দিচ্ছে তাদেরকে নেতৃত্বে আনা উচিত। তবে সকলে একমত যে যথাযথ প্রক্রিয়ায় এটি হচ্ছে না। 

গতকাল বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে এই বিষয় নিয়ে কথা বলতে গিয়েছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, বেগম খালেদা জিয়াও তারেক জিয়ার এই স্বৈরচারী আচরণে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি নিরুপায় বলেও উল্লেখ করেছেন। বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন যে, এই বিষয়গুলো সকলের সাথে আলাপ আলোচনা করে করা উচিত ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কারো সাথে আলাপ আলোচনা না করে এটি করা নিয়ে তার মধ্যে এক ধরনের দীর্ঘশ্বাস আছে। তবে কোন প্রতিবাদ নেই। 


বিএনপির বিভিন্ন নেতারা বলছেন যে, তারা দীর্ঘদিন ধরে দল করছেন, দলের ভেতরে রকম নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি কখনও দেখেননি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাস এবং নজরুল ইসলাম খান এ ধরনের সিদ্ধান্তের ঘোরতর বিরোধী। তারা মনে করছেন যে, এটির ফলে দলে একটি নৈরাজ্য সৃষ্টি হবে, দলে আতঙ্ক বিরাজ করবে এবং কেউই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে উৎসাহী হবে না। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলছেন, টকশো দেখে দেখে যদি কমিটি করা হয় তাহলে সংগঠন টিকবে না। মজার ব্যাপার হল, এবার যারা কমিটিতে পদোন্নতি পেয়েছেন, তাদের মধ্যে দু ধরনের প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একটি হল যারা নিয়মিত বিভিন্ন টকশোতে উপস্থিত থাকেন তারা। অন্যটি হল যারা এক এগারোর সময় সংস্কারপন্থী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ছিল। 


জহিরউদ্দিন স্বপন বাম রাজনীতি থেকে আসা। তিনি এক এগারো সময় সংস্কারপন্থিই শুধু ছিলেন না, বেগম খালেদা জিয়াকে মাইনাস করার জন্য যে গ্রুপটি সক্রিয় ছিল সেই গ্রুপের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি এক এগারোর পর বিএনপি থেকে সাময়িক বহিষ্কৃত হয়েছিলেন কিন্তু এখন তিনি তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠ হিসেবে জায়গা পেয়েছেন এবং এবার তিনি পদোন্নতি পেয়েছেন।


একই অবস্থা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের। তিনি একজন সংস্কারপন্থি নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করার জন্য বিএনপির মধ্যে যে সংঘবদ্ধ চক্র সে চক্রের অন্যতম অংশীদার ছিলেন। এমরান সালেহ প্রিন্স আব্দুল মান্নান ভূঁইয়ার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে বিএনপিতে পরিচিত। তাকেও পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, এক এগারোর সময় যারা সংস্কারপন্থি ছিলেন, বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে যারা অবস্থান নিয়েছিল তারাই এখন ক্ষমতাবান হয়ে উঠেছেন। এই বিষয়গুলো নিয়ে বিএনপিতে এখন তোলপাড় চলছে। কার্যত বিএনপি বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আর এর ফলাফল কি হয় সেটা বুঝা যাবে অদূর ভবিষ্যতে।

তারেক জিয়া   রুহুল কবির রিজভী   মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর   জহিরউদ্দিন স্বপন   সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উচ্চমধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্তরাও কোরবানির সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেছেন: রিজভী

প্রকাশ: ০৪:০৬ পিএম, ১৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, উচ্চমধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্তরাও এখন পশু কোরবানি করার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেছেন। সরকার মানুষের ঈদের আনন্দ কেড়ে নিয়েছে। তাই গরুর হাটে লোক নেই। এরপরে যারাও আছেন, হাটে গরু কিনছেন তাদের বেশির ভাগ সরকারের দুর্নীতিবাজ লোক।

রোববার (১৬ জুন) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় কোরবানির বাজারে পশুসহ নানা পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য সরকারকে দায়ী করেন রিজভী।

রিজভী বলেন, দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রেই চরম অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। শেয়ারবাজার থেকে আরম্ভ করে পাড়া-মহল্লার কাঁচাবাজার পর্যন্ত প্রতিটি সেক্টরেই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে অসহায় সাধারণ জনগণ। বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৮০০ টাকা, এলাচির কেজি চার হাজার টাকা, লবঙ্গের কেজি প্রায় দুই হাজার, দারুচিনির কেজি প্রায় ৬০০ টাকা, তেজপাতার কেজি ৩০০ টাকা। জনগণ যেন খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির এক আগ্নেয়গিরির ওপর বসে আছে।

তিনি বলেন, দুর্নীতির কারণে ব্যাংকগুলো শূন্য হয়ে গেছে। তারল্য সংকটে সাধারণ গ্রাহকরা টাকা তুলতে পারছে না। বুথে টাকা নেই। ডলার সংকটের কারণে ব্যবসায়ীরা এলসি খুলতে পারছেন না। উচ্চশিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীরা বিদেশে যেতে পারছেন না। ব্যাংকগুলোকে অনিরাপদ করে তোলা হয়েছে।

মিয়ানমার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেন্টমার্টিন সীমান্তে মিয়ানমার যা করছে তা দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। সরকার এহেন কাণ্ডে নির্বিকার ভূমিকা পালন করছে।

আজিজ-বেনজীরদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হলে সরকারি আরও দুর্নীতিবাজদের তথ্য বের হয়ে আসবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।


বিএনপি   রিজভি   কোরবানি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

‘সেন্টমার্টিন নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে বিএনপি-জামায়াত’

প্রকাশ: ০৩:৩২ পিএম, ১৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে কঠোর নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার কখনো নতজানু আচরণ করেনি এবং ভবিষ্যতেও করবে না। সেন্টমার্টিন ইস্যুতে বিএনপি মহাসচিব দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য রাখছেন। ‘কোরাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন দখল হয়ে যাচ্ছে এসব গুজব ছড়ানো হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে। বিএনপি-জামায়াত এসব গুজব ছড়াচ্ছে,' বলেও মন্তব্য করেন তিনি। রোববার (১৬ জুন) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, একটা ইস্যু নিয়ে অহেতুক বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য রেখেছেন। তিনি কূটনৈতিক প্রজ্ঞা ও কৌশলের বাইরে গিয়ে এমন কথা বলেছেন যা শুনে মনে হয় পরিস্থিতি নিয়ে তাদের ন্যূনতম ধারণা নেই। 

মির্জা ফখরুল ইসলামের বলার আগেই আমি বলেছি সরকার এখানে নিষ্ক্রিয় নয়। আক্রান্ত হলে পাল্টা আক্রমণে প্রস্তুত আছে সরকার। সেখান থেকে যুদ্ধজাহাজ এরইমধ্যে প্রত্যাহার হয়েছে। যান চলাচল নিয়মিত হয়ে গেছে, লোকজন যাওয়া আসা করছে। আমরা গায়ে পড়ে ঝগড়া করব না। মির্জা ফখরুলকে বলতে চাই এখানে উসকানি দিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে যুদ্ধ বাঁধাব? সারা বিশ্ব রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। যেকোনো সমস্যা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে চায় সরকার। 

রোহিঙ্গারা যখন দলে দলে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছিল ওইদিক থেকে তখনও কিছু উসকানি ছিল, আমরা উসকানিতে পা দেইনি। গায়ে পড়ে যুদ্ধ বাঁধানোর ইচ্ছে নেই। আলাপ আলোচনার দরজা এখনও খোলা আছে। আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আগ্রহী শেখ হাসিনার সরকার। ভিশনারি লিডার শেখ হাসিনা জানেন কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। 

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘কয়েকদিন আগে মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা নিয়ে বিএনপি বেহুদা মন্তব্য করেছিল। এখনো তারা সেটাই করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তে নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। সেনাবাহিনীসহ দায়িত্বপ্রাপ্তরা সতর্ক আছে। সেন্টমার্টিন সীমান্তে গোলাগুলি নিয়ে উদ্বিগ্ন, তবে আমরা সতর্ক আছি। সেন্টমার্টিনে গুলিটা আরাকানরা করেছে, মিয়ানমার সরকার করেনি।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশের উপর বোঝা হয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের প্রথম বাংলাদেশি পাসপোর্ট দিয়েছিল বিএনপি সরকার। রোহিঙ্গাদের জঙ্গি কাজে ব্যবহার করেছে। রোহিঙ্গারা বোঝা হয়ে আছে তাদের ফিরে যেতেই হবে। সে প্রয়াস অব্যাহত আছে। আমরা নতজানু আচরণ কখনো করিনি, ভবিষ্যতেও করব না। 

মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।


ওবায়দুল কাদের   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন