নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০১৮
যেকোনো মূল্যে বেগম খালেদা জিয়া কারান্তরীণ দশা থেকে মুক্তি চান। এমনকি রাজনীতি ও নেতৃত্ব ছেড়ে হলেও। আজ শনিবার বিকেলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির তিন সদস্যের এক প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি ঐ মন্তব্য করেন। নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগারে বিকেল ৪ টা থেকে সোয়া ৫ টা পর্যন্ত বিএনপির তিন নেতা কারাগারে বেগম জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বিএনপি মহাসচিব ছাড়া অন্য যে দুই নেতা দলের চেয়ারপারসনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তাঁরা হলেন মির্জা আব্বাস এবং নজরুল ইসলাম খান।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি বেগম জিয়া কারান্তরীণ হওয়ার পর এটা তাঁর সঙ্গে মির্জা ফখরুলের চতুর্থ সাক্ষাৎ। প্রত্যেকবারই রাজনৈতিক সমঝোতা এবং তাঁর মুক্তি প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা হয়। আজকের বৈঠকেও বেগম জিয়া অবিলম্বে কারামুক্তির চেষ্টা গ্রহণের জন্য নেতাদের নির্দেশ দেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানাচ্ছে, মুক্তির শর্ত হিসেবে তাঁর (বেগম জিয়ার) রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণের প্রসঙ্গটিই মূলত: আজকের বৈঠকে আলোচিত হয়। এর আগে দলের সিনিয়র নেতাদের আপাতত: দলের পদ ছাড়ার প্রসঙ্গ নিয়ে কথা হয়েছিল। সে সময় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে একটি বড় অংশ বেগম জিয়ার বিএনপির পদ ছাড়া কোনো ভাবেই মেনে নেবেন না বলে জানিয়েছিলেন। সে জন্যই আজ মির্জা ফখরুলের সঙ্গে কট্টরপন্থী দুই নেতারও সাক্ষাতের ব্যবস্থা করা হয়।
বৈঠকে মূলত: বেগম জিয়া তাঁর শারীরিক বিভিন্ন অবস্থার বর্ণনা দেন। বেগম জিয়া নেতাদের জানান তাঁর বাম হাত ক্রমশ: অবশ হয়ে আসছে। ডান চোখে রক্ত জমেছে। বেগম জিয়া মির্জা আব্বাসকে বলেন, তুমি কি আমার মৃত্যু চাও? না চাইলে এখন ওরা যা বলে সব মেনে নাও। আগে তো বাঁচতে হবে। না বাঁচলে কি করবে? এই অবস্থায় আর বেশিদিন থাকা সম্ভব নয়।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ম্যাডাম আপনি তো দল ছাড়ছেন না। শুধু সাময়িক ভাবে অফিসিয়ালি আপনি দলের চেয়ারপারসন থাকবেন না। তারেক সাহেব ভাইস চেয়ারম্যান থাকবেন না। এটা মাত্র অল্প দিনের ব্যাপার।’ বেগম জিয়া বলেন, ‘আমি বিএনপির পদ ছাড়লেও, আমি নেতা, আমাকেই মানুষ ভালোবাসে। তাই তাড়াতাড়ি ওদের প্রস্তাবে রাজি হন। আগে আমার মুক্তি দরকার, তারপর অন্য বিষয়।’ বেগম জিয়া দ্রুত দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডেকে গঠনতন্ত্রের ৭ ধারা পুনরুজ্জীবিত করার নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানা গেছে।
তবে বৈঠকে নজরুল ইসলাম খান কর্মীদের আবেগ অনুভূতি নিয়ে কথা বলেন। নজরুল ইসলাম খান বলেন, কর্মীদের এরকম সিদ্ধান্ত জানানো কঠিন হবে। তারা এজন্য নেতাদের দায়ী করবেন। এর উত্তরে অবশ্য বেগম জিয়া কিছুই বলেন নি। বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্য শামসুল ইসলামের মৃত্যুতে বেগম জিয়া শোক জানান। মন্তব্য করেন, ‘স্থায়ী কমিটি তো শূন্য হয়েই আছে। এগুলো ভরানোর উদ্যোগ নেন। বৈঠকের শেষ পর্যায়ে আপ্লুত বেগম জিয়া মির্জা ফখরুলকে বলেন, ‘শুধু দল নয়, আমার ভাগ্যও এখন আপনার হাতে। আশা করি আমার বিশ্বাসের মর্যাদা রাখবেন।’ এসময় মির্জা ফখরুলও কেঁদে ফেলেন।
Read in English- https://bit.ly/2jcXUwE
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।