নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৭ মে, ২০১৮
মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে একান্তে ডেকে নিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে একান্তে প্রায় ১৫ মিনিট কথা বলেন। স্ত্রীর মৃত্যুর পর গত ছয় মাস রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে এক রকম দূরেই ছিলেন আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। গতকাল এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে সৈয়দ আশরাফ নিজেও বলেন ‘আমি অনেকদিন রাজনীতির মাঠে ছিলাম না। আজ থেকে আবার শুরু করলাম।’
যোগাযোগ করা হলে সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘ক্যাবিনেট মিটিং এর পর প্রধানমন্ত্রী তাঁর কক্ষে ডেকে পাঠান। তিনি আমার শরীর স্বাস্থ্যের খোঁজ নিলেন। আর কিছু দায়িত্ব দিলেন।’ কি দায়িত্ব সে সম্পর্কে সৈয়দ আশরাফ কোনে মন্তব্য করেননি। বলেছেন, ‘থাক না এসব।’ তবে একাধিক সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৈয়দ আশরাফকে বিরোধী দল বিশেষ করে বিএনপির সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্যের জবাব দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। মাসে অন্তত দুবার তাকে মিডিয়ার সামনে বিভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে কথা বলার জন্য বলেছেন। সূত্র মতে, সৈয়দ আশরাফও এ ব্যাপারে রাজি হয়েছেন। যেহেতু সৈয়দ আশরাফ দীর্ঘদিন যুক্তরাজ্যে ছিলেন। তাই খুব শীঘ্রই তারেক জিয়া প্রসঙ্গে তিনি কথা বলতে পারেন বলেও আভাস পাওয়া গেছে।
একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্যকে বলেছেন, ‘সাধারণ মানুষ তোমাকে পছন্দ করে, ভালো জানে। তুমি তো দলের অ্যাসেট। নির্বাচনের আগে তোমাকে দলের প্রয়োজন।’
সৈয়দ আশরাফকে শরীরের যত্ন নেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ধরনের কিছু কথা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে হয়েছে কিনা জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, ‘একান্ত কথা একান্তই থাক।’ তবে তিনি বলেন, ‘আমার শরীরে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের রক্ত। এই রক্ত কখনও বেইমানী করে না।’ তিনি বলেন, ‘আমার বাবা বঙ্গবন্ধুর জন্য জীবন দিয়েছেন, আমিও প্রয়োজনে শেখ হাসিনার জন্য জীবন দেবো।’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেনের সময় পাদপ্রদীপে আসেন সৈয়দ আশরাফ। ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি সংস্কার পন্থীদের বিপরীতে শেখ হাসিনার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেন। যাঁদের কারণে আওয়ামী লীগ অনিবার্য ভাঙন থেকে সে সময় রক্ষা পেয়েছিল, সৈয়দ আশরাফ তাঁদের অন্যতম। ২০০৮ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হলে তিনি স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০০৯ এর কাউন্সিলে তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এসময় মন্ত্রণালয়ে অনুপস্থিত থাকা সহ, নেতাকর্মীদের সাক্ষাৎ না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। কিন্তু দলের মধ্যে এসব অভিযোগ সত্ত্বেও দলের বাইরে সাধারণ মানুষের মধ্যে তিনি সৎ এবং নির্লোভ রাজনীতিবিদের প্রতীক হয়ে ওঠেন। তাঁর যেকোন বক্তব্যই মানুষের কাছে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পায়। ২০১৫ সালে ৯ জুলাই সৈয়দ আশরাফকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করা হয়।
এ সময় সৈয়দ আশরাফ পদত্যাগ করলেও প্রধানমন্ত্রী গ্রহণ না করে তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব দেন। সর্বশেষ কাউন্সিলে আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকেও তাকে সরিয়ে ওবায়দুল কাদেরকে দায়িত্ব দেয়া হয়।
স্বল্পভাসী, সৎ এই রাজনীতিবিদ দলের চেয়ে দলের বাইরেই বেশি জনপ্রিয়।
Read In English: https://bit.ly/2I0v1if
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।