নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০২ পিএম, ২৬ মে, ২০১৮
শান্তিনিকেতনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একান্ত বৈঠকের পর বিএনপিতে হতাশা নেমে এসেছে। বিএনপির নেতারা একযোগে ভারত সফর নিয়ে সমালোচনামূলক বক্তব্য দিলেও ভেতরে বলছে, ‘সব আশা শেষ হয়ে গেল। আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে। ভারত বিএনপির অংশগ্রহণ করা না করাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন কোনো রাখঢাক না রেখেই বলেছেন, ‘আবার ক্ষমতায় আসার জন্যই আওয়ামী লীগ নেতারা ভারত সফর করছে।’ তিনি মনে করেন, ‘জনগণের ইচ্ছাতে সরকার বদল হবে ভারতের ইচ্ছায় নয়।’ আজ এক অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন। কিন্তু প্রেসক্লাবের অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়েই তিনি তাঁর এক ঘনিষ্ঠ একজন সংবাদকর্মীকে বলেন, ‘ভারতে সম্ভবত বিএনপির অংশগ্রহণ করা না করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ড. খন্দকার মোশাররফ মনে করেন, আওয়ামী লীগ চায় না, আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিক। বিএনপি ছাড়াই আগামী নির্বাচন করে আবার ক্ষমতায় আসতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।’ ঐ সংবাদকর্মীকে তিনি বলেছেন, ‘বিএনপি অংশগ্রহণ না করলে, এই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না। আমরা যখন বিভিন্ন কূটনীতিকদের সঙ্গে কথা বলেছি তখন তারাও একই মত পোষণ করেছেন। এখন ভারত যদি বিপরীত অবস্থান নেয় তাহলে সরকারের ওপর বিদেশি রাষ্ট্রদের চাপ দেওয়া কঠিন এবং অসম্ভব হয়ে পড়বে।’
শুধু ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন নয়, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও আজ এক প্রেস ব্রিফিং এ বলেছেন, ‘সরকার ভারত তোষণ নীতি গ্রহণ করেছে।’ আজ সকালে বিএনপিতে মনোনয়ন প্রত্যাশী দুই নেতা রিজভীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে তাদেরও তিনি নির্বাচনের ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করেন। রিজভী তাঁদের বলেছেন, ‘নির্বাচন করে কি করবেন। আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আনতে চায় ভারত। আগামী নির্বাচন হবে ভারত প্রযোজিত, আওয়ামী লীগ পরিচালিত।’ রিজভী বলেছেন, ‘ একমাত্র আন্দোলন করেই সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পথ খোলা আছে। কিন্তু আন্দোলনের ইচ্ছা তো বিএনপির নেতাদের নেই।’
রিজভীর মতো বিএনপির অনেক নেতাই মনে করেন, ‘ভারতের এখনো প্রথম পছন্দ আওয়ামী লীগ। বিএনপি তার ভারত বিরোধী চরিত্রও হারিয়েছে, ভারতের আস্থাও হারিয়েছে।’ বিএনপির একজন নেতা বলেছেন ‘ ভারত এখন বিএনপিকে বিশ্বাসও করেনা, ভয়ও পায়না। ফলে আমরা গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছি।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভারত সফরে যাবার আগ্রহ জানিয়েছিল, কিন্তু ভারতের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।