নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৭ মে, ২০১৮
ঈদের আগেই ছাত্রলীগের কমিটি চূড়ান্ত করতে চান প্রধানমন্ত্রী। গতরাতে দেশে ফিরে আজ সকালেই তিনি বলেছেন, ‘ছাত্রলীগের কমিটি তাড়াতাড়ি দিতে হবে। এতদিন কমিটি ঝুলিয়ে রাখা ঠিক না।’ আজই তিনি কমিটি নিয়ে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, গত ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ছাত্রলীগে বহিরাগত অনুপ্রবেশকারীরা ঢুকে গেছে এরকম অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী কমিটি ঘোষণার আগে যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
সরকারের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, প্রধানমন্ত্রী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ছাত্র রাজনীতি, পারিবারিক পরিচয় এবং শিক্ষাগত বিষয় নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে খোঁজ-খবর নেন। গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট তৈরি হয় ৫ টি বিষয়ের ভিত্তিতে। বিষয়গুলো ছিল, ১. ছাত্র রাজনীতির সূচনা কি ছাত্রলীগের মাধ্যমে ছিল কিনা? ২. পারিবারিক ভাবে আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কিনা ৩. তাঁর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ব্যবসা বা অন্যান্য কোনো অভিযোগ আছে কিনা ৪. শিক্ষাক্ষেত্রে মেধাবী কিনা ৫. কোটা সংস্কার আন্দোলনে তাঁর কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা।
গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী তাঁর নিজস্ব টিমের মাধ্যমেও পদ লাভে ইচ্ছুকদের সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেন। এর ভিত্তিতে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগে সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকাদের ব্যাপারে আরও খোঁজ খবর দেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি নিজেও ঐ প্রার্থী যে এলাকার, সেই এলাকার নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে তথ্য নিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের প্রধান দুই পদ চূড়ান্ত করে ফেলেছেন। তবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগে, তিনি দলের সিনিয়র নেতা এবং প্রাক্তন ছাত্রলীগ নেতাদের মতামতগুলো শুনতে চান। একটি সূত্র বলছে যেহেতু কমিটি বিলম্ব হয়েছে; তাই শুধু সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক নয়, পুরো কেন্দ্রীয় কমিটির নাম একসঙ্গে ঘোষণারও একটি চিন্তা আছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ছাত্রলীগের কমিটি চূড়ান্ত করবেন এর সাংগঠনিক প্রধান, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি কখন করবেন এটা তাঁর এখতিয়ারাধীন বিষয়।’ তবে তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা খুব শিগগিরই তিনি দেবেন।’
প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, এই মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী আগামী অর্থ বছরের বাজেট নিয়ে খুব ব্যস্ত। তবে এর মধ্যেই ছাত্রলীগ তাঁর অগ্রাধিকার। ঐ সূত্র বলছে, ছাত্রলীগ নিয়ে বিগত কয়েক বছরে কোটারী স্বার্থ হয়েছে,গড়ে উঠেছে একটা সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট ভাঙতেই কমিটি গঠনে বিলম্ব হয়েছে। যারা ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব নেবেন, তাঁরা বুঝবেন ‘বড় ভাই’রা তাদের নেতা বানায়নি, তাদের নেতা বানিয়েছেন দলের সভাপতি। কাজেই এই ছাত্রলীগ নেতারা বড় ভাইদের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে না।
ঐ সূত্র বলছে, আঞ্চলিক বিবেচনা নয় বরং যোগ্যতার ভিত্তিতেই এবার কমিটি হবে।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা মনে করছেন, ছাত্রলীগের কমিটি গঠনে বিলম্ব হওয়া যৌক্তিক। কারণ, নির্বাচনের আগে এই কমিটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, নির্বাচনের আগে যেন ছাত্রলীগের নামে কোনো বদনাম না ছড়ায় সে ব্যাপারে নজর রাখা হচ্ছে।
একটি সূত্র বলছে, আনুষ্ঠানিক নাম ঘোষণার আগে প্রধানমন্ত্রী নতুন ছাত্রলীগ নেতাদের ডেকে কথাও বলতে পারেন।
Read in English- https://bit.ly/2scgutM
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
ভারতের জাতীয় নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি ও প্রচারণা দেখতে বাংলাদেশ
থেকে আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। বুধবার (০১ মে)
আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে সাতটি ধাপে জাতীয়
নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ক্ষমতাসীন বিজেপি এই নির্বাচনে তাদের সার্বিক প্রস্তুতি ও
প্রচারণা দেখানোর জন্য বিদেশি কিছু রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে
একমাত্র আওয়ামী লীগকে তারা আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, ভারতে বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায়। অন্যদিকে,
বাংলাদেশে পরপর চারটি জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশভাবে
জয়লাভ করে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। এই সময়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে
যুগান্তকারী উন্নয়ন হয়েছে। এই উন্নয়ন পুরো পৃথিবীকে অবাক করেছে।
ভারতের ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে
শুধুমাত্র আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ
গণতন্ত্র ভারত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি যে আস্থাশীল এবং
আওয়ামী লীগকে যে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও তাদের প্রকৃত বন্ধু
মনে করে, এই আমন্ত্রণ সেই ইঙ্গিতই বহন করে।
বিজেপির নির্বাচনী প্রস্তুতি ও প্রচারণা পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ
আওয়ামী লীগকে পাঠানো আমন্ত্রণপত্রে তারা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি পাঠাতে
অনুরোধ করেছে।
এই আমন্ত্রণের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হিসেবে দলের
তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং সংসদ সদস্য ড. সেলিম মাহমুদকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ভারত সফরে
মনোনীত করেছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, এই সফরটি মূলত পাঁচ দিনের। ১
মে থেকে ৫ মে পর্যন্ত। সফরে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধির সঙ্গে বিজেপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের
বৈঠক রয়েছে। দিল্লির বাইরে বিজেপির নির্বাচনী প্রচারণা সরেজমিনে দেখানোর জন্য বিজেপি
আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিকে ছত্রিশগড়ে নিয়ে যাবে।
ভারতের নির্বাচন ১৯ এপ্রিল শুরু হয়েছে যা ১ জুন পর্যন্ত চলবে।
৪ জুন ভোটের ফলাফল ঘোষিত হবে।
ভারত নির্বাচন বিজেপি আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া বিএনপি এভারকেয়ার হাসপাতাল তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
গতকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গটি আলোচনাই হয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে কেবল সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনার জন্য নির্দেশনা দেন। ফলে আওয়ামী লীগের কোন নেতাই আর উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আলোচনায় নিয়ে আসেনি।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বৈঠকে উপস্থিত অন্তত দুজন নেতা বলেছেন যে, আগামী ২৩ জুন দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কীভাবে জাকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করা যায় ও ২১ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা করা এবং শেষদিনে বড় সমাবেশ করার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। এবার আওয়ামী লীগ ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে করবে। সেই প্রসঙ্গটি সামনে নিয়ে আসা হয়।
আর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইচ্ছে করেই উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আনেননি বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু তাই বলে আওয়ামী লীগ সভাপতি যারা উপজেলা নির্বাচনে শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছে, দলের নির্দেশনা অমান্য করে আত্মীয় স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন, তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে মনে করলে ভুল হবে।
বিএনপিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হটকারী ভাবে। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদেরকে বহিষ্কার করে সবকিছু শেষ করে দেওয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন রাজনৈতিক প্রজ্ঞায়, ধীরস্থিরভাবে, আস্তে আস্তে।
জাতীয় সংসদে একবার সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন যে, বাঘে ধরলেও ছাড়ে, কিন্তু শেখ হাসিনা যাকে ধরে তাকে ছাড়ে না। যারা উপজেলা নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন তারা দীর্ঘমেয়াদি প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করবেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তারা শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লেখালে রাজনৈতিক পরিণতি কী হয় তা অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়।
এক এগারোর সময় যারা শেখ হাসিনাকে মাইনাস করতে চেয়েছিলেন সেই সমস্ত ডাকসাইটে নেতাদের কাউকেই তিনি দল থেকে বহিষ্কার করেননি। কিন্তু দলে তাদের অকার্য করেছেন, নিষ্ক্রিয় করেছেন। তাদের প্রায়শ্চিত্ত উপলব্ধি করার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছেন। এটাই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল।
শেখ হাসিনা এক এগারোর পর সংস্কারপন্থিদেরকে দুই ভাগে ভাগ করেছিলেন। যারা কম সংস্কারপন্থী ছিলেন, কম ষড়যন্ত্র করেছেন- তাদেরকে তিনি নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন। প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ দিয়েছেন। তাদের অনেক হেভিওয়েট নেতাকে প্রেসিডিয়াম থেকে সরিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের আলঙ্কারিক পদ দিয়ে শাস্তি দিয়েছেন। এই শাস্তি দল থেকে বহিষ্কারের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তিনি রাজনীতিতে নতুন করে বিদ্রোহী এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করার সুযোগ দেননি। বরং দলে তাদেরকে শাস্তি দিয়ে দলের ঐক্য অটুট রেখেছেন।
আর দ্বিতীয় প্রকার যারা ছিল এক এগারোর সংস্কারপন্থীর মূল হোতা তাদেরকে তিনি মনোনয়ন দেননি। মনোনয়ন না দিয়ে তাদেরকে দলে নিষ্ক্রিয় করেছেন। এদের মধ্যে অনেকে মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে নতুন দল করেছে। কিন্তু রাজনীতিতে জীর্ণ শীর্ণ ভিখারীতে পরিণত হয়েছে। এটাই শেখ হাসিনার কৌশল।
কাজেই এবার যারা উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে, তারা আসলে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেনি, তারা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে। শাস্তি তাদের পেতেই হবে। তবে তারা কবে কীভাবে পাবেন এবং দীর্ঘমেয়াদে তাদের কী হবে সেটি একটি বড় প্রশ্ন।
কারণ যারা আত্মীয়স্বজনদেরকে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী করেছেন তারা অবশ্যই আওয়ামী লীগ সভাপতির কালো খাতায় নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয় তা অতীতে অনেক নেতাই উপলব্ধি করেছেন। অনেকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে।
বহিষ্কার হলে একজন রাজনৈতিক নেতা পরিত্রাণ পায়, নির্বাণ লাভ করে। তিনি নতুন সুযোগ পান অন্য কিছু করার। কিন্তু একজন রাজনৈতিক নেতা যখন দলেই উপেক্ষিত হন, অনাহূত হন, পরিত্যক্ত ঘোষিত হন- তখন তার রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে। আর শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হতে বাধ্য।
শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ তৃণমূল উপজেলা নির্বাচন রাজনীতি ড. আব্দুর রাজ্জাক শাজাহান খান জাহিদ মালেক মোস্তফা কামাল
মন্তব্য করুন
এভারকেয়ার হাসপাতাল খালেদা জিয়া বিএনপি
মন্তব্য করুন