নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৩ জুন, ২০১৮
আন্দোলন শুরুর আগে রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণের চেষ্টা করছে বিএনপি। বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, আগামী ২৬ জুন গাজীপুর নির্বাচনের পর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে দলটি। তবে এবার শুধু ২০ দলীয় জোট নয়, ‘নূন্যতম ইস্যুতে’ বৃহত্তর জোট গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। সে লক্ষ্যে গত এক সপ্তাহে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে কথা বলেছে দলটি। এ ধরনের আলাপ-আলোচনার কথা স্বীকার করে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, ‘আমরা সকল রাজনৈতিক দলকে নিয়ে নূন্যতম ইস্যুতে আন্দোলন গড়ে তুলতে চাই।’ নূন্যতম ইস্যু কি জানতে চাওয়া হলে এই নেতা বলেন, ‘নূন্যতম ইস্যু হলো একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন।’ তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘আমরা মোটামুটি তিনটি ইস্যুতে একটি আন্দোলনের অভিন্ন প্লাটফরম করতে চাই। এই প্লাটফরমে আমরা আওয়ামী লীগ ছাড়া সকল রাজনৈতিক শক্তিকে আনতে চাই।’ এই তিনটি ইস্যু হলো, তাঁর মতে, ১. অবিলম্বে সংসদ ভেঙ্গে নিয়ে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, ২. বেগম জিয়া সহ আটক সকল রাজনৈতিক বন্দীর মুক্তি এবং হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, ৩. সারাদেশে মাদক বিরোধী অভিযানের নামে বিনা বিচারে হত্যা বন্ধ করা।
বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে, এই তিন ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের জন্যে বিএনপি ইতিমধ্যে অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিকল্প ধারা, কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তমের নেতৃত্বাধীন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম, আ. স. ম. আবদুর রবের জে. এস. ডি, মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য এবং বাম মোর্চার সঙ্গে কথা বলেছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ব্যক্তিগত উদ্যোগে এইসব দল ও জোটের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। বিএনপির একজন প্রভাবশালী নেতা বলেছেন ‘গাজীপুর নির্বাচনের যে ঘটনা প্রবাহ দেখছি, তাতে মনে হচ্ছে খুলনার মতো গাজীপুরেও কৌশলে আওয়ামী লীগ জয় ছিনিয়ে নেবে।’ ঐ নেতা মনে করেন, ‘গাজীপুর নির্বাচনই হতে পারে বাংলাদেশের রাজনীতির টার্নিং পয়েন্ট। ওখানে কারচুপি হবার পর আমরা বসে থাকবো না।’
কিন্তু ঐ আন্দোলনের আগে বিএনপি রাজনীতির মাঠ গরম করতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলতে চায়। বিএনপির মতে, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ‘সংলাপ’ রাজনীতিতে বিএনপির ইতিবাচক ঘটনা হতে হবে। এখান থেকে ধাপে ধাপে সরকার পতনের আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিতে চায় দলটি। প্রাথমিক আলাপ-আলোচনায় সবাই তিন ইস্যুতে যুগপৎ বা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে নীতিগত ভাবে সম্মত হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, বিএনপি-জামাত সম্পর্ক নিয়ে। কাদের সিদ্দিকী এবং বাম মোর্চা মির্জা ফখরুলকে জানিয়ে দিয়েছে যে, জামাত জোটে থাকলে বিএনপির সাথে যুগপৎ বা ঐক্যবদ্ধ কোনো আন্দোলনই করা সম্ভব হবে না। বিএনপি মহাসচিব তাদের আশ্বস্ত করেছেন, এই তিন ইস্যুতে যে আন্দোলন হবে তাতে বিএনপি একক ভাবে থাকবে। ২০ দলের কিছু দল থাকলেও তাতে জামাত থাকবে না। শেষ পর্যন্ত বিএনপি আলাদা মোর্চা করতে পারুক আর না পারুক, সরকারের বিরুদ্ধে যে রাজনীতির নতুন মেরুকরণের চেষ্টা চলছে, তা এখন দৃশ্যমান।
Read in English- https://bit.ly/2Kc5VxL
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।